পেশা ছিল লেখা, লিখেই জীবনধারন করেছি
আল মাহমুদ বর্তমান বাংলা সাহিত্যের প্রধান কবি। আজকের এই সময়ে তার সঙ্গে কথা বলেন শ্যামল চন্দ্র নাথ
কী করছেন এখন, কীভাবে কাটছে সময় ?
আল মাহমুদ: চোখে দেখি না, কানেও শুনি না। লেখা ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারি না এখন। তবে একটা মহাকাব্য লিখছি। এখন তো আর চাকরি জীবনের বাধ্যবাধকতা নেই।
চাকরি থকলে অথাৎ ব্যাস্ত থাকলে কী লিখতে পারতেন?
: চাকরি জীবনও ভালোই কেটেছে। আমি তো সাংবাদিকতা পেশায়ও ছিলাম। আবার শিল্পকলা একাডেমিতেও চাকরি করেছি। আমি রিচার্স অ্যান্ড পাবলিকেশনে কাজ করতাম। আমি অনেক প্রতিকুলতার মধ্যেই লিখেছি।
আপনার জলবেশ্যা গল্প নিয়ে কলকাতায় চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে
: হ্যাঁ, শুনলাম। ওদের টেকনিক্যাল দিকটাও ভালো। ওখানে যে ডিরেকশনটা দিচ্ছে সে খুব নামকরা পরিচালক, অভিজ্ঞ লোক। এ জন্য আমার বিশ্বাস খুব ভালো ছবি হবে।
আত্মজীবনী ‘বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ’ লেখা শুরু করেছিলেন কিন্তু তা তো শেষ হল না...
: না, ওটা শেষ করতে পারি নাই। নানা কাজ, নানা রকম অসুবিধা আমার। তাছাড়া মহাকাব্য নিয়েও একটু ব্যাস্ত।
অবসর সময়ে বাইরে বেড়াতে যান ?
নিতান্ত জরুরি কোনো অনুষ্ঠান থাকলে বাইরে যাই। আজকাল বাইরে যাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। ঘরেই বসে থাকি, বন্ধু-বান্ধব থাকলে কথাবার্তা বলি। এখন কোনো বই পড়া হচ্ছে না। আমি তো আর একদম চুপচাপও থাকি না, কোনো না কোনো বিষয়ে মাঝে মধ্যে তো আমি লিখি।
আপনার সোনালি কাবিন নিয়ে তো অনেক আলোচনা হয়েছে কলকাতা এবং বাংলাদেশেও সোনালি কাবিনের ৪০ বছর পূর্তিও হল। কেমন লাগে সেই সময় মনে পড়লে ?
: সোনালি কাবিন তো ১৮ মাত্রার একটি প্রেমের কবিতা। । আমি তখন চট্টগ্রামে এঙ্গো এন্ডিয়ানদের এক বাসায় থাকতাম। ওরা সাধারণত কাউকে পাত্তা দিত না। কিন্তু আমি কবি বলে তারা আমাকে তাদের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়েছিল। তবে আমি ওদের প্রেমে পড়িনি।
আপনিতো ছোটদের জন্যও প্রচুর লিখেছেন এখনো কি ছোটদের জন্য লেখেন ?
: আমি ছোটদের জন্য অনেক লিখেছি। ছড়াসমগ্র রয়েছে আমার। তবে ওই কবিতগুলো ছোট বড় সবার জন্যই সমান আবেদন তৈরি করেছে। আমি তো এক সময় শিশুই ছিলাম। কাজেই শিশুদের বড় হওয়া তো আমি দেখেছি। শিশুদের বিষয় আমি বুঝতে পারি এবং তাদের কথা চিন্তা করে কবিতা, ছড়া, গদ্যও লিখেছি।
আপনার ‘কাবিলের বোন’ উপন্যাসকে এই সময়ে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
: কাবিলের বোন একটা বাস্তব জীবনের কাহিনী। যা আমি দেখেছি, যার ভেতর দিয়ে আমি এসেছি। তবে আমি দাবি করলে তো আর হবে না। মানুষ মেনে নিতে হবে। মানিক বাবুর পদ্মা নদীর মাঝির পর আমি তো আর উপন্যাস দেখি না। এটা আমার মতামত আর কিছু না।
ছাপার হরফে প্রথম যখন লেখা প্রকাশিত হল তখন আপনার অনুভূতি?
: সেটা তো অনেক আগে। খুবই ভালো অনুভূতি ছিল। তখন আমার বয়স খুব কম ছিল। আমি অনেক ছোট ছিলাম। সত্যযুগ পত্রিকায় আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। এতে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। তখন আমি সারা পাড়ার মানুষকে দেখাতাম যে আমার লেখা ছাপা হয়েছে।
চলচ্চিত্র কেমন লাগে ?
: সামাজিক চলচ্চিত্র আমার ভালো লাগে। তবে আমাদের দেশে তো সামাজিক চলচ্চিত্র নেই বললেই চলে। ভালো মেকিং হয় না। ছবি হয় না তা বলছি না। কিন্তু ভালো ছবিও মাঝেমাঝে হয়। ভালো ছবির জন্য যে পরিশ্রম করা, হয়তো হয়েছে আমি ঠিক জানি না ।
সাহিত্যভিত্তিক চলচ্চিত্র কেমন লাগে ?
: আমি তো সত্যজিৎ রায় ঋত্বিক ঘটকের ছবি অনেক দেখেছি। তাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব একবারে কম ছিল এরকম বলা যাবে না। আমি তো তখন ছোট একটা ছেলে তাদের ওখানে আসা যাওয়া করতাম। সত্যজিতের পথের পাঁচালি তো অসাধারণ।
জীবনের অপ্রাপ্তি...
: মানুষের জীবনের সবটা মানুষ পায় না। আমি এক দরিদ্র মানুষ। আমার কোনো সময় এমন পরিস্থিতি হয়নি খুব সচ্ছল, খুব টাকা-পয়সা এগুলো আমার ছিল না কোনোদিন। আমি গরিব মানুষ লিখে-টিকে খেয়েছি। আমার পেশা ছিল লেখা, লিখেছি, লেখা ছাপা হয়েছে পয়সা পেয়েছি। তবে কষ্টের জীবন কাটিয়েছি বলা যায়। হ্যাঁ, খ্যাতি হয়েছে। একজন কবি হিসেবে সবাই আলোচনা, সমালোচনা করুক এটা ভালো ব্যাপার। তবে শ্রদ্ধাও পেয়েছি। দেশব্যাপী লোকজন আমাকে চিনে। এই তো পেয়েছি। একজন লেখকের আর কি পাওয়ার থাকে।
কী করছেন এখন, কীভাবে কাটছে সময় ?
আল মাহমুদ: চোখে দেখি না, কানেও শুনি না। লেখা ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারি না এখন। তবে একটা মহাকাব্য লিখছি। এখন তো আর চাকরি জীবনের বাধ্যবাধকতা নেই।
চাকরি থকলে অথাৎ ব্যাস্ত থাকলে কী লিখতে পারতেন?
: চাকরি জীবনও ভালোই কেটেছে। আমি তো সাংবাদিকতা পেশায়ও ছিলাম। আবার শিল্পকলা একাডেমিতেও চাকরি করেছি। আমি রিচার্স অ্যান্ড পাবলিকেশনে কাজ করতাম। আমি অনেক প্রতিকুলতার মধ্যেই লিখেছি।
আপনার জলবেশ্যা গল্প নিয়ে কলকাতায় চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে
: হ্যাঁ, শুনলাম। ওদের টেকনিক্যাল দিকটাও ভালো। ওখানে যে ডিরেকশনটা দিচ্ছে সে খুব নামকরা পরিচালক, অভিজ্ঞ লোক। এ জন্য আমার বিশ্বাস খুব ভালো ছবি হবে।
আত্মজীবনী ‘বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ’ লেখা শুরু করেছিলেন কিন্তু তা তো শেষ হল না...
: না, ওটা শেষ করতে পারি নাই। নানা কাজ, নানা রকম অসুবিধা আমার। তাছাড়া মহাকাব্য নিয়েও একটু ব্যাস্ত।
অবসর সময়ে বাইরে বেড়াতে যান ?
নিতান্ত জরুরি কোনো অনুষ্ঠান থাকলে বাইরে যাই। আজকাল বাইরে যাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। ঘরেই বসে থাকি, বন্ধু-বান্ধব থাকলে কথাবার্তা বলি। এখন কোনো বই পড়া হচ্ছে না। আমি তো আর একদম চুপচাপও থাকি না, কোনো না কোনো বিষয়ে মাঝে মধ্যে তো আমি লিখি।
আপনার সোনালি কাবিন নিয়ে তো অনেক আলোচনা হয়েছে কলকাতা এবং বাংলাদেশেও সোনালি কাবিনের ৪০ বছর পূর্তিও হল। কেমন লাগে সেই সময় মনে পড়লে ?
: সোনালি কাবিন তো ১৮ মাত্রার একটি প্রেমের কবিতা। । আমি তখন চট্টগ্রামে এঙ্গো এন্ডিয়ানদের এক বাসায় থাকতাম। ওরা সাধারণত কাউকে পাত্তা দিত না। কিন্তু আমি কবি বলে তারা আমাকে তাদের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়েছিল। তবে আমি ওদের প্রেমে পড়িনি।
আপনিতো ছোটদের জন্যও প্রচুর লিখেছেন এখনো কি ছোটদের জন্য লেখেন ?
: আমি ছোটদের জন্য অনেক লিখেছি। ছড়াসমগ্র রয়েছে আমার। তবে ওই কবিতগুলো ছোট বড় সবার জন্যই সমান আবেদন তৈরি করেছে। আমি তো এক সময় শিশুই ছিলাম। কাজেই শিশুদের বড় হওয়া তো আমি দেখেছি। শিশুদের বিষয় আমি বুঝতে পারি এবং তাদের কথা চিন্তা করে কবিতা, ছড়া, গদ্যও লিখেছি।
আপনার ‘কাবিলের বোন’ উপন্যাসকে এই সময়ে কীভাবে বিশ্লেষণ করবেন?
: কাবিলের বোন একটা বাস্তব জীবনের কাহিনী। যা আমি দেখেছি, যার ভেতর দিয়ে আমি এসেছি। তবে আমি দাবি করলে তো আর হবে না। মানুষ মেনে নিতে হবে। মানিক বাবুর পদ্মা নদীর মাঝির পর আমি তো আর উপন্যাস দেখি না। এটা আমার মতামত আর কিছু না।
ছাপার হরফে প্রথম যখন লেখা প্রকাশিত হল তখন আপনার অনুভূতি?
: সেটা তো অনেক আগে। খুবই ভালো অনুভূতি ছিল। তখন আমার বয়স খুব কম ছিল। আমি অনেক ছোট ছিলাম। সত্যযুগ পত্রিকায় আমার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। এতে আমি খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। তখন আমি সারা পাড়ার মানুষকে দেখাতাম যে আমার লেখা ছাপা হয়েছে।
চলচ্চিত্র কেমন লাগে ?
: সামাজিক চলচ্চিত্র আমার ভালো লাগে। তবে আমাদের দেশে তো সামাজিক চলচ্চিত্র নেই বললেই চলে। ভালো মেকিং হয় না। ছবি হয় না তা বলছি না। কিন্তু ভালো ছবিও মাঝেমাঝে হয়। ভালো ছবির জন্য যে পরিশ্রম করা, হয়তো হয়েছে আমি ঠিক জানি না ।
সাহিত্যভিত্তিক চলচ্চিত্র কেমন লাগে ?
: আমি তো সত্যজিৎ রায় ঋত্বিক ঘটকের ছবি অনেক দেখেছি। তাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুব একবারে কম ছিল এরকম বলা যাবে না। আমি তো তখন ছোট একটা ছেলে তাদের ওখানে আসা যাওয়া করতাম। সত্যজিতের পথের পাঁচালি তো অসাধারণ।
জীবনের অপ্রাপ্তি...
: মানুষের জীবনের সবটা মানুষ পায় না। আমি এক দরিদ্র মানুষ। আমার কোনো সময় এমন পরিস্থিতি হয়নি খুব সচ্ছল, খুব টাকা-পয়সা এগুলো আমার ছিল না কোনোদিন। আমি গরিব মানুষ লিখে-টিকে খেয়েছি। আমার পেশা ছিল লেখা, লিখেছি, লেখা ছাপা হয়েছে পয়সা পেয়েছি। তবে কষ্টের জীবন কাটিয়েছি বলা যায়। হ্যাঁ, খ্যাতি হয়েছে। একজন কবি হিসেবে সবাই আলোচনা, সমালোচনা করুক এটা ভালো ব্যাপার। তবে শ্রদ্ধাও পেয়েছি। দেশব্যাপী লোকজন আমাকে চিনে। এই তো পেয়েছি। একজন লেখকের আর কি পাওয়ার থাকে।
No comments