বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারে গালাপাগোস
গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের ইসাবেলা দ্বীপটি
হলো জায়ান্ট টরটয়েজ বা অতিকায় কচ্ছপদের আস্তানা। এটা ইকুয়েডরের অংশ। কিন্তু
গালাপাগোসের জীববৈচিত্র্য জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হতে চলেছে। এই
কচ্ছপগুলো ঘাসপাতা, ক্যাক্টাস ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। পর্যাপ্ত পরিমাণ
ঘাসপাতা না পেলে তারা ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয়। চার্লস ডারউইন ফাউন্ডেশন আর
গালাপাগোস ন্যাশনাল পার্ক মিলে আগেভাগেই একাধিক হ্যাচিং স্টেশন বা কচ্ছপদের
নার্সারি সৃষ্টি করেছে। কচ্ছপগুলোর পাঁচ বছর বয়স হলে সেগুলোকে মুক্ত
প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। গালাপাগোস ন্যাশনাল পার্কের প্রতিনিধি ড্যানি
রুয়েডা বলেন, একক প্রজাতির সুরক্ষা থেকে শুরু করে গোটা পরিবেশের সুরক্ষা
আমাদের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। গালাপাগোসের জীব ও প্রকৃতিগত পরিবেশের সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এই কচ্ছপ, যা কি-না গালাপাগোসের তৃণভোজীদের শীর্ষে।
ক্রমেই বেশি মানুষ গালাপাগোসে ভিড় করছে। বর্তমানে অধিবাসীর সংখ্যা ৩০
হাজার, সে সঙ্গে প্রতি বছর আসে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার পর্যটক। সে কারণেও
জীবজন্তুদের বসবাসের পরিবেশ বদলে যাচ্ছে। বিকল্প জ্বালানির চাহিদা
বাড়ছে, যেমন ফ্লোরিয়ানা দ্বীপে। এটি হলো গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের ক্ষুদ্রতম
জনবসতিসম্পন্ন দ্বীপ। আগে শুধু ডিজেল দিয়েই এখানে কাজ চালানো হতো। কিন্তু
তা এখন অতীত কাহিনী। কেননা ফ্লোরিয়ানার নতুন জেনারেটরগুলো শুধু উদ্ভিদ তেল
দিয়ে চলে। জার্মানি থেকে আসা বিশেষজ্ঞরা এই জেনারেটরগুলো বসিয়েছেন। এটি হলো
গালাপাগোসের জন্য একটি মডেল প্রকল্প, আন্তর্জাতিক আবহাওয়া সুরক্ষা
উদ্যোগের অর্থানুকূল্যে। জাট্রোফা গাছের তেল আসে ইকুয়েডরের মূল ভূখণ্ড
থেকে। এই তেল পুড়লে প্রায় কোনো কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয় না।
ফ্লোরিয়ানার পর গালাপাগোসের অন্যান্য দ্বীপেও এ ধরনের জেনারেটর বসানোর
পরিকল্পনা চলছে। এই উদ্ভিদজাত তেল থেকে শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনই চলে না,
ইকুয়েডরের মূল ভূখণ্ডে মানুষজনের বাড়তি আয়ও হয়। এখানকার চাষিরা এখন
গালাপাগোসে জ্বালানির প্রয়োজন মেটাতে জাট্রোফা ফল সংগ্রহ করে থাকেন।
No comments