অপরিবর্তিত দুর্নীতির সূচক -নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা স্মরণ করুন
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতি ধারণা সূচকে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের দুর্নীতি-পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় ত্রয়োদশ থেকে দ্বাদশ স্থানে ওঠার অর্থ যদিও আরও এক ধাপ খারাপ হওয়া; তবে বাংলাদেশের পাওয়া নম্বর (স্কোর) আগের বছর ও এ বছর অভিন্ন। মোট ১০-এর মধ্যে বাংলাদেশ গতবার পেয়েছিল ২ দশমিক ৪, এবারও তা-ই। কিন্তু এই অঙ্কের হিসাব ছাড়াও মোটের ওপর ধারণা করা যায়, বাংলাদেশে দুর্নীতি আগের মতোই চলছে।
২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত টিআইবির এই সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেশ নেতিবাচক হয়ে পড়েছিল সেই বছরগুলোতে। ২০০৫ সালের পর থেকে অবশ্য আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেয়েছি। ২০০৬ সালে তৃতীয়, ২০০৭ সালে সপ্তম, ২০০৮ সালে দশম এবং গত বছর ত্রয়োদশ স্থানে ছিল বাংলাদেশের নাম। দেশের ভাবমূর্তির কথা ভাবলে এটা নিশ্চয়ই স্বস্তির বিষয়। কিন্তু এই স্বস্তি থাকে না, যখন আমরা দেখি, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকা থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে আসতে পারছে না।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এই দুর্নীতি ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রসঙ্গে প্রথমত বলতে হয়, এর সঙ্গে জড়িত জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম—এ থেকে মনে হতে পারে, জাতিই বুঝি দুর্নীতিবাজ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়; বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণ অল্পসংখ্যক ক্ষমতাবানের দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার ও লাগামহীন দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারগুলোর ব্যর্থতার দায় বর্তাচ্ছে পুরো জাতির ওপর।
দুর্নীতির কারণে কীভাবে দেশের সুশাসন ও উন্নয়ন-অগ্রগতি ব্যাহত হয়, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ হয়, তা আমরা সবাই জানি। এ নিয়ে অনেক কথা বলা ও লেখা হয়েছে। দুর্নীতি দমন বা হ্রাস করতে হলে কী কী করা দরকার, সেসব নিয়েও অনেক আলোচনা, বক্তৃতা, সভা-সেমিনার হয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতি দমনের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিল। মন্ত্রী-সাংসদদের সম্পদের হিসাব দেওয়া ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ছিল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। কিন্তু সেসব করা হয়নি। বরং এমনভাবে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস পাবে। দুদক আইন সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছে। সরকারের উচিত, দুদক যাতে আরও স্বাধীনভাবে, কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা।
দুর্নীতি হ্রাসের জন্য প্রথমত প্রয়োজন, যাঁরা দেশ পরিচালনা করছেন, তাঁদের আন্তরিক সদিচ্ছা। দুর্নীতি ঘটলে দুদক তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু দুর্নীতি যাতে না ঘটে, সে ব্যবস্থা করতে হবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজ নিজ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে, যেমনটি দেখা গেছে প্রতিবেশী ভারতে। আমরা আশা করি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এই দুর্নীতি ধারণা সূচক সরকারকে তার নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দেবে এবং সেসব প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নিতে সরকার তৎপর হবে।
২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত টিআইবির এই সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বেশ নেতিবাচক হয়ে পড়েছিল সেই বছরগুলোতে। ২০০৫ সালের পর থেকে অবশ্য আমরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেয়েছি। ২০০৬ সালে তৃতীয়, ২০০৭ সালে সপ্তম, ২০০৮ সালে দশম এবং গত বছর ত্রয়োদশ স্থানে ছিল বাংলাদেশের নাম। দেশের ভাবমূর্তির কথা ভাবলে এটা নিশ্চয়ই স্বস্তির বিষয়। কিন্তু এই স্বস্তি থাকে না, যখন আমরা দেখি, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকা থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে আসতে পারছে না।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এই দুর্নীতি ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রসঙ্গে প্রথমত বলতে হয়, এর সঙ্গে জড়িত জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম—এ থেকে মনে হতে পারে, জাতিই বুঝি দুর্নীতিবাজ। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়; বরং সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণ অল্পসংখ্যক ক্ষমতাবানের দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ও বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার ও লাগামহীন দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারগুলোর ব্যর্থতার দায় বর্তাচ্ছে পুরো জাতির ওপর।
দুর্নীতির কারণে কীভাবে দেশের সুশাসন ও উন্নয়ন-অগ্রগতি ব্যাহত হয়, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ হয়, তা আমরা সবাই জানি। এ নিয়ে অনেক কথা বলা ও লেখা হয়েছে। দুর্নীতি দমন বা হ্রাস করতে হলে কী কী করা দরকার, সেসব নিয়েও অনেক আলোচনা, বক্তৃতা, সভা-সেমিনার হয়। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতি দমনের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিল। মন্ত্রী-সাংসদদের সম্পদের হিসাব দেওয়া ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ছিল তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে। কিন্তু সেসব করা হয়নি। বরং এমনভাবে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে দুর্নীতি দমন কমিশনের ক্ষমতা হ্রাস পাবে। দুদক আইন সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছে। সরকারের উচিত, দুদক যাতে আরও স্বাধীনভাবে, কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা।
দুর্নীতি হ্রাসের জন্য প্রথমত প্রয়োজন, যাঁরা দেশ পরিচালনা করছেন, তাঁদের আন্তরিক সদিচ্ছা। দুর্নীতি ঘটলে দুদক তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু দুর্নীতি যাতে না ঘটে, সে ব্যবস্থা করতে হবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজ নিজ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে, যেমনটি দেখা গেছে প্রতিবেশী ভারতে। আমরা আশা করি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের এই দুর্নীতি ধারণা সূচক সরকারকে তার নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতিগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দেবে এবং সেসব প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ নিতে সরকার তৎপর হবে।
No comments