প্রধানমন্ত্রী গড়ার কারখানা
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ডেভিড ক্যামেরন। ইংল্যান্ডের উইন্ডসরের বিখ্যাত ইটন কলেজের ছাত্র ছিলেন তিনি। এ পর্যন্ত দেশকে ১৯ জন প্রধানমন্ত্রী উপহার দিয়েছে কলেজটি। বলতে গেলে প্রধানমন্ত্রী গড়ার কারখানা ইটন।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকায় ইটন থেকে পাস করা এমন বেশ কয়েকজন রয়েছেন, যাঁদের ব্যক্তিত্ব বিপরীতধর্মী। রবার্ট ওয়ালপোলের সঙ্গে অ্যান্টনি এডেনের কি মিল রয়েছে, অথবা উইলিয়াম গোল্ডস্টোনের সঙ্গে ম্যাকমিলানের মিল কোথায়? এর উত্তর হয়তো লুকিয়ে আছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছেই।
টেমস নদীর তীরে ৫০০ বছরেরও বেশি আগে প্রতিষ্ঠিত হয় ইটন কলেজ। ব্রিটেনের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয় এটি। পরীক্ষার ফলেও দেশের মধ্যে সবচেয়ে সেরা নয় তারা। কিন্তু শুধু ছেলেদের জন্য এই কলেজ ব্রিটেনের ১৯ জন ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের একজন ‘প্রধানমন্ত্রীকে’ শিক্ষা দিয়েছে। থাইল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আপিসিত ভেজ্জাজিওয়াও এই কলেজের ছাত্র ছিলেন। আশির দশকে ইটন কলেজের ছাত্র ছিলেন পলাশ ডেভ। তিনি বিবিসিকে বললেন, ‘মনে পড়ে, ছেলেরা এখানে পড়তে আসত এক ধরনের আত্মবিশ্বাস নিয়ে; আর সেটি হলো তারাই ভবিষ্যতে দেশ চালাতে যাচ্ছে।’
পলাশের মতে, এ ধরনের ধারণা নিয়ে বেড়ে ওঠার একটি কারণ হচ্ছে নিয়মিতভাবে বিশিষ্টদের সফর ও বক্তৃতা। তাঁরা শিক্ষার্থীদের বলতেন, তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ নেতা।
পলাশ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য গড়ে তোলার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়। এখানে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহ দেওয়া হয়।’ ইটনের বৈশিষ্ট্য এর ভিক্টোরিয়ান যুগের পোশাক, আর কয়েক শতকের ঐতিহ্যবাহী নিয়মকানুন। একে প্রায়ই একটি রক্ষণশীল ধারার কলেজ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
দেশের জন্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরিতে ইটনের এই সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ‘দ্য ইমপরটেন্স অব বিইং ইটন’ বইয়ের লেখক নিক ফ্রেজার। তাঁর মতে, কলেজের এই সাফল্যের মূল কারণ, এখানে ছাত্ররা অনেক বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে। রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্যই তাদের প্রস্তুত করা হয়। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি কলেজে বিজ্ঞান, খেলাধুলা ও অন্যান্য বিষয়ে ক্লাব রয়েছে এবং সেগুলো শিক্ষার্থীরাই পরিচালনা করে।
‘ট্যাটলার’ সাময়িকীর টিকি হেডলি-ডেন্ট বলেন, ‘আপনি সহজেই একজন ইটনিয়ানকে (ইটনের ছাত্র) চিনতে পারবেন। কারণ তারা কোথাও গেলে মনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে যায় এবং সেটি অর্জনের চেষ্টা করে। অন্য লোকেরা কী ভাবল, তা নিয়ে অতটা মাথা ঘামায় না তারা।’ হেডলি-ডেন্ট বলেন, ‘একজন ভালো ইটনিয়ান নম্র ও বুদ্ধিমান। এর বেশি আর কী আশা করা যায়?’
ইটন থেকে পাস করা ব্রিটিশ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, স্যার রবার্ট ওয়ালপোল, উইলিয়াম পিট, জন বিউট, জর্জ গ্রেনভিল, ফ্রেডেরিক নর্থ, উইলিয়াম গ্রেনভিল, জর্জ ক্যানিং, আর্থার ওয়েলেসলি, চার্লস গ্রে, উইলিয়াম মেলবোর্ন, এডওয়ার্ড ডার্বি, উইলিয়াম গ্ল্যাডস্টোন, রবার্ট স্যালিসবারি, আর্চিবল্ড রোজবেরি, আর্থার ব্যালফুর, স্যার অ্যান্টনি ইডেন, হ্যারল্ড ম্যাকমিলান, স্যার অ্যালেক ডগলাস-হোম এবং সর্বশেষ ডেভিড ক্যামেরন।
তবে পর্যবেক্ষকেরা বলেন, গত শতকের আশির দশকে ও নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে একটু কোণঠাসাই ছিলেন ইটনের সমর্থকেরা। অনেকে বলেন, ইটনের ভাবমূর্তি অনেকটাই অতিরঞ্জিত। এমনকি ইটনের তকমা নিয়ে অনেকে ভয়েও থাকতেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ইটনের শিক্ষক জো স্পেন্স মনে করেন, ইটন সম্পর্কে অনেক সময় এমন সব কথা বলা হয়, যা অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। স্পেন্স বলেন, ডগলাস হার্ড মনে করেছিলেন, তার ইটনের ‘সিলই’ কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইটনকে আর গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে না বলেই ভয় করছিলেন অনেকে। জো স্পেন্স বলেছেন, কনজারভেটিভ দলে ক্যামেরনের উত্থান এবং কালক্রমে প্রধানমন্ত্রী হওয়া সে আশঙ্কাকে অমূলক প্রমাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন তাঁর সরকারের সম্ভাব্য সদস্যদের যে প্রথম তালিকা করেন, তার মধ্যে ইটনের সাবেক ছাত্র ১৩ জন!
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকায় ইটন থেকে পাস করা এমন বেশ কয়েকজন রয়েছেন, যাঁদের ব্যক্তিত্ব বিপরীতধর্মী। রবার্ট ওয়ালপোলের সঙ্গে অ্যান্টনি এডেনের কি মিল রয়েছে, অথবা উইলিয়াম গোল্ডস্টোনের সঙ্গে ম্যাকমিলানের মিল কোথায়? এর উত্তর হয়তো লুকিয়ে আছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছেই।
টেমস নদীর তীরে ৫০০ বছরেরও বেশি আগে প্রতিষ্ঠিত হয় ইটন কলেজ। ব্রিটেনের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয় এটি। পরীক্ষার ফলেও দেশের মধ্যে সবচেয়ে সেরা নয় তারা। কিন্তু শুধু ছেলেদের জন্য এই কলেজ ব্রিটেনের ১৯ জন ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের একজন ‘প্রধানমন্ত্রীকে’ শিক্ষা দিয়েছে। থাইল্যান্ডের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আপিসিত ভেজ্জাজিওয়াও এই কলেজের ছাত্র ছিলেন। আশির দশকে ইটন কলেজের ছাত্র ছিলেন পলাশ ডেভ। তিনি বিবিসিকে বললেন, ‘মনে পড়ে, ছেলেরা এখানে পড়তে আসত এক ধরনের আত্মবিশ্বাস নিয়ে; আর সেটি হলো তারাই ভবিষ্যতে দেশ চালাতে যাচ্ছে।’
পলাশের মতে, এ ধরনের ধারণা নিয়ে বেড়ে ওঠার একটি কারণ হচ্ছে নিয়মিতভাবে বিশিষ্টদের সফর ও বক্তৃতা। তাঁরা শিক্ষার্থীদের বলতেন, তোমরাই দেশের ভবিষ্যৎ নেতা।
পলাশ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য গড়ে তোলার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হয়। এখানে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহ দেওয়া হয়।’ ইটনের বৈশিষ্ট্য এর ভিক্টোরিয়ান যুগের পোশাক, আর কয়েক শতকের ঐতিহ্যবাহী নিয়মকানুন। একে প্রায়ই একটি রক্ষণশীল ধারার কলেজ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
দেশের জন্য ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরিতে ইটনের এই সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ‘দ্য ইমপরটেন্স অব বিইং ইটন’ বইয়ের লেখক নিক ফ্রেজার। তাঁর মতে, কলেজের এই সাফল্যের মূল কারণ, এখানে ছাত্ররা অনেক বেশি স্বাধীনতা উপভোগ করে। রাজনীতিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার জন্যই তাদের প্রস্তুত করা হয়। শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি কলেজে বিজ্ঞান, খেলাধুলা ও অন্যান্য বিষয়ে ক্লাব রয়েছে এবং সেগুলো শিক্ষার্থীরাই পরিচালনা করে।
‘ট্যাটলার’ সাময়িকীর টিকি হেডলি-ডেন্ট বলেন, ‘আপনি সহজেই একজন ইটনিয়ানকে (ইটনের ছাত্র) চিনতে পারবেন। কারণ তারা কোথাও গেলে মনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে যায় এবং সেটি অর্জনের চেষ্টা করে। অন্য লোকেরা কী ভাবল, তা নিয়ে অতটা মাথা ঘামায় না তারা।’ হেডলি-ডেন্ট বলেন, ‘একজন ভালো ইটনিয়ান নম্র ও বুদ্ধিমান। এর বেশি আর কী আশা করা যায়?’
ইটন থেকে পাস করা ব্রিটিশ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন, স্যার রবার্ট ওয়ালপোল, উইলিয়াম পিট, জন বিউট, জর্জ গ্রেনভিল, ফ্রেডেরিক নর্থ, উইলিয়াম গ্রেনভিল, জর্জ ক্যানিং, আর্থার ওয়েলেসলি, চার্লস গ্রে, উইলিয়াম মেলবোর্ন, এডওয়ার্ড ডার্বি, উইলিয়াম গ্ল্যাডস্টোন, রবার্ট স্যালিসবারি, আর্চিবল্ড রোজবেরি, আর্থার ব্যালফুর, স্যার অ্যান্টনি ইডেন, হ্যারল্ড ম্যাকমিলান, স্যার অ্যালেক ডগলাস-হোম এবং সর্বশেষ ডেভিড ক্যামেরন।
তবে পর্যবেক্ষকেরা বলেন, গত শতকের আশির দশকে ও নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে একটু কোণঠাসাই ছিলেন ইটনের সমর্থকেরা। অনেকে বলেন, ইটনের ভাবমূর্তি অনেকটাই অতিরঞ্জিত। এমনকি ইটনের তকমা নিয়ে অনেকে ভয়েও থাকতেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ইটনের শিক্ষক জো স্পেন্স মনে করেন, ইটন সম্পর্কে অনেক সময় এমন সব কথা বলা হয়, যা অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। স্পেন্স বলেন, ডগলাস হার্ড মনে করেছিলেন, তার ইটনের ‘সিলই’ কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ইটনকে আর গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে না বলেই ভয় করছিলেন অনেকে। জো স্পেন্স বলেছেন, কনজারভেটিভ দলে ক্যামেরনের উত্থান এবং কালক্রমে প্রধানমন্ত্রী হওয়া সে আশঙ্কাকে অমূলক প্রমাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন তাঁর সরকারের সম্ভাব্য সদস্যদের যে প্রথম তালিকা করেন, তার মধ্যে ইটনের সাবেক ছাত্র ১৩ জন!
No comments