চরমপন্থীদের তৎপরতা -শুধু আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হিসেবে দেখলে চলবে না
দেশের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সক্রিয় চরমপন্থীদের তৎপরতা মাঝে তেমন লক্ষ করা যায়নি। নানা রাজনৈতিক সংগঠনের নামে চরমপন্থীদের তৎপরতা কমে যাওয়ার কারণ ছিল তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত অভিযান। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের অভিযান প্রকৃত অর্থে তেমন কাজে আসেনি, সংগঠিত হয়ে তারা আবার মাঠে নামার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি খুলনায় ফুলতলা উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে বোমা হামলার ঘটনায় এর প্রমাণ মিলেছে। প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেও তাদের সক্রিয় হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
বিপ্লবী ও বাম রাজনীতির নামে এই সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনার কথা বললেও কার্যত তা চাঁদাবাজির রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আর সে কারণেই এ ধরনের সংগঠনগুলো অঞ্চলভিত্তিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য খুনোখুনি, হামলা, অপহরণ, বোমাবাজির মতো অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। গত জোট সরকারের আমলের শেষের দিকে ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা এবং ‘ক্রসফায়ার’ ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এসব সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীর মৃত্যু ও আটক হওয়ার পর তারা স্বাভাবিকভাবেই চাপের মুখে পড়ে। এর পর থেকে তাদের তৎপরতা অনেকটা কমে যায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরও চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়েছিল। গত বছর এই সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চরমপন্থীদের প্রতি আত্মসমর্পণের আহ্বান ও প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টি বিবেচনা করার কথাও বলেছিলেন।
আমরা মনে করি, চরমপন্থীদের তৎপরতার বিষয়টি একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা, অন্যদিকে রাজনৈতিক-সামাজিকভাবেও বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। এ সংগঠনগুলো তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে রাজনীতির নামে; সমাজের শোষিত শ্রেণীর অধিকার রক্ষার কথা বলে তারা লোকজনকে তাদের দলে টানার চেষ্টা করে। বেকারত্ব ও অশিক্ষার এই দেশে এসব কথা বলে দলে লোক টানা অসম্ভব নয়। অন্যদিকে বিভিন্ন সময় দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা এই চরমপন্থীদের ব্যবহার করে এসেছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে—কখনো প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, কখনো নির্বাচনে জিততে, কখনো এলাকায় নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করতে আবার কখনো তা ধরে রাখতে। ফলে চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে শুধু অভিযান পরিচালনা করে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে না। সেটা হলে এত ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’, অভিযানের পর তাদের আবার সক্রিয় হওয়ার সুযোগ ছিল না।
চরমপন্থী-সমস্যার বিষয়টিকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি যারা রাজনীতির নামে খুন ও চাঁদাবাজির পথ বেছে নিয়েছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। আওয়ামী লীগ গত মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময় চরমপন্থীদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন প্রায় আড়াই হাজারের বেশি চরমপন্থী আত্মসমর্পণ করেছিল। অস্ত্র জমা পড়েছিল দুই হাজারের বেশি। উদ্যোগটি ভালো ছিল এতে সন্দেহ নেই, কিন্তু তা সফল হয়নি। আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থীদের অনেককে আনসারে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে চাকরি ছেড়ে পালিয়ে গেছে, অনেকে আবার চরমপন্থী দলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে এখন এ সমস্যার সমাধান করতে গেলে শুধু সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা আর কয়েকজনকে চাকরি দিয়ে দায়িত্ব সারলে হবে না। চরমপন্থীদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করাটা সে কারণে খুবই জরুরি।
খুলনায় এক উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে গত শনিবার চরমপন্থীরা তাদের উপস্থিতির যেভাবে জানান দিল, তাতে আমরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। আমরা আশা করব, সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে এ সমস্যার একটি কার্যকর সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করবে।
বিপ্লবী ও বাম রাজনীতির নামে এই সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রম পরিচালনার কথা বললেও কার্যত তা চাঁদাবাজির রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়। আর সে কারণেই এ ধরনের সংগঠনগুলো অঞ্চলভিত্তিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য খুনোখুনি, হামলা, অপহরণ, বোমাবাজির মতো অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। গত জোট সরকারের আমলের শেষের দিকে ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা এবং ‘ক্রসফায়ার’ ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এসব সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীর মৃত্যু ও আটক হওয়ার পর তারা স্বাভাবিকভাবেই চাপের মুখে পড়ে। এর পর থেকে তাদের তৎপরতা অনেকটা কমে যায়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরও চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথা বলা হয়েছিল। গত বছর এই সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী চরমপন্থীদের প্রতি আত্মসমর্পণের আহ্বান ও প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টি বিবেচনা করার কথাও বলেছিলেন।
আমরা মনে করি, চরমপন্থীদের তৎপরতার বিষয়টি একদিকে যেমন আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা, অন্যদিকে রাজনৈতিক-সামাজিকভাবেও বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। এ সংগঠনগুলো তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে রাজনীতির নামে; সমাজের শোষিত শ্রেণীর অধিকার রক্ষার কথা বলে তারা লোকজনকে তাদের দলে টানার চেষ্টা করে। বেকারত্ব ও অশিক্ষার এই দেশে এসব কথা বলে দলে লোক টানা অসম্ভব নয়। অন্যদিকে বিভিন্ন সময় দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা এই চরমপন্থীদের ব্যবহার করে এসেছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে—কখনো প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, কখনো নির্বাচনে জিততে, কখনো এলাকায় নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করতে আবার কখনো তা ধরে রাখতে। ফলে চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে শুধু অভিযান পরিচালনা করে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে না। সেটা হলে এত ‘ক্রসফায়ার’, ‘বন্দুকযুদ্ধ’, অভিযানের পর তাদের আবার সক্রিয় হওয়ার সুযোগ ছিল না।
চরমপন্থী-সমস্যার বিষয়টিকে সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি যারা রাজনীতির নামে খুন ও চাঁদাবাজির পথ বেছে নিয়েছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে। আওয়ামী লীগ গত মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সময় চরমপন্থীদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিল। তখন প্রায় আড়াই হাজারের বেশি চরমপন্থী আত্মসমর্পণ করেছিল। অস্ত্র জমা পড়েছিল দুই হাজারের বেশি। উদ্যোগটি ভালো ছিল এতে সন্দেহ নেই, কিন্তু তা সফল হয়নি। আত্মসমর্পণকারী চরমপন্থীদের অনেককে আনসারে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তাদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে চাকরি ছেড়ে পালিয়ে গেছে, অনেকে আবার চরমপন্থী দলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে এখন এ সমস্যার সমাধান করতে গেলে শুধু সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা আর কয়েকজনকে চাকরি দিয়ে দায়িত্ব সারলে হবে না। চরমপন্থীদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করাটা সে কারণে খুবই জরুরি।
খুলনায় এক উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে গত শনিবার চরমপন্থীরা তাদের উপস্থিতির যেভাবে জানান দিল, তাতে আমরা শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। আমরা আশা করব, সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে এ সমস্যার একটি কার্যকর সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করবে।
No comments