পুলিশের মিছিল -অপরাধ দমন by এ কে এম জাকারিয়া
নানা ধরনের মিছিল দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু পুলিশের মিছিল! বুধবার অফিসে যাওয়ার পথে কারওয়ান বাজারে পুলিশের এই মিছিল দেখে চমকিত না হয়ে উপায় ছিল না। কেন এই মিছিল? কৌতূহল অনেকই হয়েছিল কিন্তু তখন তা জানার সুযোগ হয়নি। পরদিন প্রথম আলোর প্রতিবেদন পড়ে বিষয়টি খোলাসা হলো। এক জায়গায় প্রতিবেদক লিখেছেন, ‘যেন রাজপথে পুলিশের মিছিল।’ মানে আসলে তা মিছিল ছিল না, তবে মিছিলের মতো মনে হয়েছে। যাঁরা দেখেছেন, তাঁদের কাছে এমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক। প্রথম আলোয় ছাপা ছবিটি দেখলেও এমন মনে হবে।
প্রতিবেদক এর পরের লাইনেই লিখেছেন, ‘তবে এ মিছিল কোনো দাবি আদায়ের জন্য নয়, মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, মাদক ব্যবসা বন্ধ ও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতেই পুলিশের এই বিশেষ উদ্যোগ।’ উদ্যোগ মহত্ এতে কোনো সন্দেহ নেই। জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য এমন কিছু হতেই পারে। পুলিশের এই বিশেষ অভিযান বা ‘মিছিলের’ সময় তারা মাইকে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন, একটি সমাবেশও করেছেন। জনগণকে সচেতন করার এই চেষ্টার গুরুত্ব রয়েছে। আখেরে নিশ্চিয় তার ফল পাওয়া যাবে। জনগণকে সচেতন করা বা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য জনগণকে সাহস জোগানোর জন্য শুধু পুলিশের এই ‘মিছিল’ বা বিশেষ অভিযান হয়ে থাকলে কোনো কথা নেই। কিন্তু পত্রিকার খবরে দেখলাম, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরাও নাকি এই ‘মিছিলের’ একটি লক্ষ্য ছিল। ‘মিছিল’ করে কি মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা আদৌ সম্ভব?
পুলিশ যে সমাবেশ করেছে, সেখানে পুলিশের উপকমিশনার প্রায় জনা পঞ্চাশেক নারী-পুরুষের নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁদের কতজন হেরোইন বিক্রি করেন, কতজন গাঁজা বিক্রি করেন, কারা পাইকারি বিক্রি করেন, কারা খুচরা বিক্রি করেন, ফেনসিডিল বিক্রি করেন কতজন—সব তথ্যই তিনি দিয়েছেন। মানে সবকিছুই পুলিশের জানা। ‘মিছিল’ না করে এই মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে তাহলে বাধা কোথায়? ধরে নিচ্ছি এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে পুলিশ জনগণকে সচেতন করতে চেয়েছে। তাহলে খুব দ্রুত এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান কি আমরা আশা করতে পারি? যে এলাকাবাসীকে পুলিশ সচেতন করতে চেয়েছে, তাঁদের অনেকে প্রথম আলোকে বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিলে তাঁরা আর বাঁচতে পারবেন না। এদের পেছেনে পুলিশ যেমন আছে, তেমনি বড় সন্ত্রাসীরাও আছে। এ অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য কী, তা প্রতিবেদনে নেই। অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে অভিযানের নামে গত বুধবার একটি অর্থহীন তবে কৌতূহল-জাগানো ‘পুলিশের মিছিল’ অনেকে উপভোগ করেছেন। আর অভিযোগটি অসত্য হয়ে থাকলে এর প্রমাণ পেতে আমাদের নিশ্চয় খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। ‘এ বস্তিতে মোমিনের মা বলে একজন মাদক ব্যবসায়ী আছে, যাকে ধরা যায় না। মোমিনের মা হোক আর কাফেরের মা হোক, কারও ক্ষমা নেই, ধরা পড়তেই হবে।’ পুলিশের উপকমিশনারের এই আশ্বাসের ওপর ভরসা রেখে অপেক্ষা করা ছাড়া যে আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই।
কারওয়ান বাজারে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান সামনে কোনো না কোনো সময় নিশ্চয়ই হবে। কৌতূহল হচ্ছে, তা এবারের মতো ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘মিছিলের’ আকারে হবে না তো! মাদক ব্যবসায়ীদের তো তাহলে ধরা পড়ার জন্য ‘পুলিশের মিছিলের’ অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে। মাইকে ঘোষণা হবে, পুলিশ মিছিল শুরু করবে, আর মাদক ব্যবসায়ীরা যার যার স্পটে বসে থাকবে, একে একে সবাইকে ধরে নিয়ে পুলিশ থানাহাজতে পুরবে!
মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে হলে অভিযান চালাতে হবে গোপনে আর আকস্মিকভাবে। কারওয়ান বাজার এলাকার বস্তিবাসী পুলিশের কারও কারও সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের যোগসাজশের যে দাবি করেছেন, তা সত্য হলে অভিযানের খবর গোপন রাখা কঠিন হবে। গোপন অভিযানের পরিকল্পনা নিলেও দেখা যাবে যে তা ফাঁস হয়ে গেছে। সেখানকার মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশ যেভাবে চিহ্নিত করছে, তেমনি মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ আছে, এমন পুলিশ সদস্যদেরও শনাক্ত করা জরুরি। অভিযানের খবর তারা যেন জানতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর ‘মিছিল’ করে অভিযানের ফল কী হতে পারে, তা তো আমরা দেখলাম! পত্রিকার তথ্য হচ্ছে, এই বিশেষ অভিযানে একজন মাদক ব্যবসায়ীও ধরা পড়েনি।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে কোনো বিশেষ ঘটনা বা উপলক্ষ ছাড়া পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের রাস্তাঘাটে খুব একটা চোখে পড়ে না। কিন্তু কোনো ঘটনা ঘটে গেলে মুহূর্তের মধ্যে তারা কোথা থেকে যেন এসে হাজির হন। কয়েকটি দেশে একই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাঁরা আশপাশেই থাকেন কিন্তু নিজেদের খুব দৃশ্যমান করে রাখেন না। আমাদের এখানে ঠিক উল্টো। রাস্তাঘাটে আমরা আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখি। তাঁদের তত্পরতা আমাদের বেশ চোখে পড়ে। কিন্তু ছিনতাই বা এ ধরনের কোনো অপরাধ ঘটে গেলে সহজে তাদের দেখা মেলে না। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা খুব বেশি দৃশ্যমান থাকায় অপরাধীদের পক্ষে কোনো অপরাধ ঘটানোর স্থান নির্বাচন খুব সহজ হয়ে যায়। অপরাধীরা সহজেই টের পেয়ে যান, কোথায় পুলিশ আছে আর কোথায় নেই। রাজধানীতে মলম পার্টির ছিনতাই খুব বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে টহল-চৌকি (চেকপোস্ট) বসিয়ে পুলিশ যে বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছিল, তার বেশ ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু টহল-চৌকিগুলো কিছু নির্ধারিত জায়গায় হওয়ায় দু-এক দিনের মধ্যেই অপরাধীরা টের পেয়ে যায়, কোন কোন রাস্তা তাদের জন্য নিরাপদ নয়। সেই রাস্তাগুলো তারা এড়িয়ে চলে। তারা নতুন রুট কাজে লাগায়। অপরাধীদের চেয়ে পুলিশ যদি আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে না থাকে, তবে তাদের দমন করা কঠিন। এ ধরনের বিষয়গুলো নিশ্চয় পুলিশের বিবেচনায় রয়েছে। টহল-চৌকিগুলো যে পরিবর্তিত হয় না তাও নয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এলাকার স্থায়ী টহল-চৌকিগুলো ছাড়া বাকিগুলো প্রায় প্রতিদিন পরিবর্তন করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
রাস্তায় অসংখ্য দৃশ্যমান পুলিশ বা পুলিশের ‘মিছিলের’ চেয়ে অপরাধীদের আস্তানায় নিয়মিত গোপন ও আকস্মিক অভিযান এবং কোনো অপরাধ ঘটে গেলে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হওয়ার সক্ষমতা অর্জনই অপরাধ দমনে কার্যকর ফল দিতে পারে।
এ কে এম জাকারিয়া: সাংবাদিক।
akmzakaria@gmail.com
প্রতিবেদক এর পরের লাইনেই লিখেছেন, ‘তবে এ মিছিল কোনো দাবি আদায়ের জন্য নয়, মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, মাদক ব্যবসা বন্ধ ও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতেই পুলিশের এই বিশেষ উদ্যোগ।’ উদ্যোগ মহত্ এতে কোনো সন্দেহ নেই। জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য এমন কিছু হতেই পারে। পুলিশের এই বিশেষ অভিযান বা ‘মিছিলের’ সময় তারা মাইকে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন, একটি সমাবেশও করেছেন। জনগণকে সচেতন করার এই চেষ্টার গুরুত্ব রয়েছে। আখেরে নিশ্চিয় তার ফল পাওয়া যাবে। জনগণকে সচেতন করা বা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য জনগণকে সাহস জোগানোর জন্য শুধু পুলিশের এই ‘মিছিল’ বা বিশেষ অভিযান হয়ে থাকলে কোনো কথা নেই। কিন্তু পত্রিকার খবরে দেখলাম, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরাও নাকি এই ‘মিছিলের’ একটি লক্ষ্য ছিল। ‘মিছিল’ করে কি মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা আদৌ সম্ভব?
পুলিশ যে সমাবেশ করেছে, সেখানে পুলিশের উপকমিশনার প্রায় জনা পঞ্চাশেক নারী-পুরুষের নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁদের কতজন হেরোইন বিক্রি করেন, কতজন গাঁজা বিক্রি করেন, কারা পাইকারি বিক্রি করেন, কারা খুচরা বিক্রি করেন, ফেনসিডিল বিক্রি করেন কতজন—সব তথ্যই তিনি দিয়েছেন। মানে সবকিছুই পুলিশের জানা। ‘মিছিল’ না করে এই মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে তাহলে বাধা কোথায়? ধরে নিচ্ছি এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে পুলিশ জনগণকে সচেতন করতে চেয়েছে। তাহলে খুব দ্রুত এই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযান কি আমরা আশা করতে পারি? যে এলাকাবাসীকে পুলিশ সচেতন করতে চেয়েছে, তাঁদের অনেকে প্রথম আলোকে বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিলে তাঁরা আর বাঁচতে পারবেন না। এদের পেছেনে পুলিশ যেমন আছে, তেমনি বড় সন্ত্রাসীরাও আছে। এ অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য কী, তা প্রতিবেদনে নেই। অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে অভিযানের নামে গত বুধবার একটি অর্থহীন তবে কৌতূহল-জাগানো ‘পুলিশের মিছিল’ অনেকে উপভোগ করেছেন। আর অভিযোগটি অসত্য হয়ে থাকলে এর প্রমাণ পেতে আমাদের নিশ্চয় খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। ‘এ বস্তিতে মোমিনের মা বলে একজন মাদক ব্যবসায়ী আছে, যাকে ধরা যায় না। মোমিনের মা হোক আর কাফেরের মা হোক, কারও ক্ষমা নেই, ধরা পড়তেই হবে।’ পুলিশের উপকমিশনারের এই আশ্বাসের ওপর ভরসা রেখে অপেক্ষা করা ছাড়া যে আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই।
কারওয়ান বাজারে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান সামনে কোনো না কোনো সময় নিশ্চয়ই হবে। কৌতূহল হচ্ছে, তা এবারের মতো ঢাকঢোল পিটিয়ে ‘মিছিলের’ আকারে হবে না তো! মাদক ব্যবসায়ীদের তো তাহলে ধরা পড়ার জন্য ‘পুলিশের মিছিলের’ অপেক্ষায় বসে থাকতে হবে। মাইকে ঘোষণা হবে, পুলিশ মিছিল শুরু করবে, আর মাদক ব্যবসায়ীরা যার যার স্পটে বসে থাকবে, একে একে সবাইকে ধরে নিয়ে পুলিশ থানাহাজতে পুরবে!
মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে হলে অভিযান চালাতে হবে গোপনে আর আকস্মিকভাবে। কারওয়ান বাজার এলাকার বস্তিবাসী পুলিশের কারও কারও সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের যোগসাজশের যে দাবি করেছেন, তা সত্য হলে অভিযানের খবর গোপন রাখা কঠিন হবে। গোপন অভিযানের পরিকল্পনা নিলেও দেখা যাবে যে তা ফাঁস হয়ে গেছে। সেখানকার মাদক ব্যবসায়ীদের পুলিশ যেভাবে চিহ্নিত করছে, তেমনি মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ আছে, এমন পুলিশ সদস্যদেরও শনাক্ত করা জরুরি। অভিযানের খবর তারা যেন জানতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে ওই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর ‘মিছিল’ করে অভিযানের ফল কী হতে পারে, তা তো আমরা দেখলাম! পত্রিকার তথ্য হচ্ছে, এই বিশেষ অভিযানে একজন মাদক ব্যবসায়ীও ধরা পড়েনি।
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে কোনো বিশেষ ঘটনা বা উপলক্ষ ছাড়া পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের রাস্তাঘাটে খুব একটা চোখে পড়ে না। কিন্তু কোনো ঘটনা ঘটে গেলে মুহূর্তের মধ্যে তারা কোথা থেকে যেন এসে হাজির হন। কয়েকটি দেশে একই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাঁরা আশপাশেই থাকেন কিন্তু নিজেদের খুব দৃশ্যমান করে রাখেন না। আমাদের এখানে ঠিক উল্টো। রাস্তাঘাটে আমরা আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখি। তাঁদের তত্পরতা আমাদের বেশ চোখে পড়ে। কিন্তু ছিনতাই বা এ ধরনের কোনো অপরাধ ঘটে গেলে সহজে তাদের দেখা মেলে না। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা খুব বেশি দৃশ্যমান থাকায় অপরাধীদের পক্ষে কোনো অপরাধ ঘটানোর স্থান নির্বাচন খুব সহজ হয়ে যায়। অপরাধীরা সহজেই টের পেয়ে যান, কোথায় পুলিশ আছে আর কোথায় নেই। রাজধানীতে মলম পার্টির ছিনতাই খুব বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে টহল-চৌকি (চেকপোস্ট) বসিয়ে পুলিশ যে বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছিল, তার বেশ ফল পাওয়া গেছে। কিন্তু টহল-চৌকিগুলো কিছু নির্ধারিত জায়গায় হওয়ায় দু-এক দিনের মধ্যেই অপরাধীরা টের পেয়ে যায়, কোন কোন রাস্তা তাদের জন্য নিরাপদ নয়। সেই রাস্তাগুলো তারা এড়িয়ে চলে। তারা নতুন রুট কাজে লাগায়। অপরাধীদের চেয়ে পুলিশ যদি আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে না থাকে, তবে তাদের দমন করা কঠিন। এ ধরনের বিষয়গুলো নিশ্চয় পুলিশের বিবেচনায় রয়েছে। টহল-চৌকিগুলো যে পরিবর্তিত হয় না তাও নয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এলাকার স্থায়ী টহল-চৌকিগুলো ছাড়া বাকিগুলো প্রায় প্রতিদিন পরিবর্তন করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
রাস্তায় অসংখ্য দৃশ্যমান পুলিশ বা পুলিশের ‘মিছিলের’ চেয়ে অপরাধীদের আস্তানায় নিয়মিত গোপন ও আকস্মিক অভিযান এবং কোনো অপরাধ ঘটে গেলে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হওয়ার সক্ষমতা অর্জনই অপরাধ দমনে কার্যকর ফল দিতে পারে।
এ কে এম জাকারিয়া: সাংবাদিক।
akmzakaria@gmail.com
No comments