কথা নয়, দরকার মহাপরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়ন -ঢাকার চারপাশে বিপন্ন নদী
স্বীকারোক্তি অনেক সময় অক্ষমতাজনিত বাধ্যবাধকতা হতে পারে, কেবল হুঁশিয়ারি কখনো বাস্তব কাজের প্রয়োজনকে খাটো করে দিতে পারে। ঢাকার চারটি নদীকে ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ বলে সরকারের ঘোষণা এমন মনে না করার কারণ আছে কি? জনদাবি ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার চাপে সংকটের কথা স্বীকার করা হলো, কিন্তু সংকট কাটানোর জরুরি মহাপরিকল্পনা এল না, এটা কেমন দায়িত্বশীলতা? সমস্যার ভয়াবহতা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করাকে মন্দের ভালো ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। ন্যূনতম প্রত্যাশা হলো প্রতিকার। প্রশ্নটা নদী বাঁচানোর এবং নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের ১৭টি নদী মরে গেছে, আরও আটটি মরোমরো। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যাকে প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন হিসেবে স্বীকার করা হলেও ইছামতী, কালীগঙ্গা ও বংশী নদীর উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল। দ্বিতীয়ত, এগুলোর কোনো কোনোটির খাত ও জলপ্রবাহ যে রকম হুমকির মুখে, তাকে শুধু ‘প্রতিবেশগত বিপর্যয়’ বললে কম বলা হয়। দখল-দূষণ-ভরাট হতে হতে এগুলোর অস্তিত্বই আজ হুমকির মুখে। এ কঠিন বাস্তবতাকে জোরালোভাবেই স্বীকার করা এবং দৃঢ় প্রতিকারই জরুরি কর্তব্য। কিন্তু সরকার মনে হয় ঘোষণার আওয়াজ দিয়েই খালাস।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নিজেও নদী বাঁচানোর প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনও বিভিন্ন সময় বিপন্ন নদীসহ বেদখল হওয়া ঢাকার ৫২টি খাল এবং দেশের ১৬৫টি নদ-নদী রক্ষার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এর আগে অনেকবার নদীতীরের অবৈধ দখল উচ্ছেদের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই জায়গাগুলো পুনর্দখল ও পুনর্ভরাট হতে দেখা গেছে। যত দিন উচ্ছেদ আর দখলের এই চোর-পুলিশ খেলা বন্ধ না হবে, নদীতীর স্থায়ীভাবে দখলমুক্ত রাখা না যাবে, তত দিন নদী নিরাপদ হবে না। সরকারিভাবে পানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ১৩টি মন্ত্রণালয় ও ৪০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান। নদী বাঁচাতে এগুলোর সমন্বয়ে দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনাই হওয়া উচিত প্রথম পদক্ষেপ। প্রয়োজনে নদী-রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে।
২০০৩ সালে ঢাকার নদীদূষণের কারণ হিসেবে ৩৬টি শিল্প-কারখানাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরই মধ্যে এ সংখ্যা ও দূষণের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়েছে। দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগেরই দূষণ দূর করার শোধনাগার নেই। হাজারীবাগের ট্যানারি-শিল্প এখনো বুড়িগঙ্গায় বিষ ঢেলে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা ঘোষণার ব্যাপার নয়, করে দেখানোর কাজ। পানির দেশ বাংলাদেশকে পানিহীনতা থেকে বাঁচাতে হলে কেবল জনসচেতনতায় কাজ হবে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ নয়, ক্ষমতাবান লোকেরাই দখল ও দূষণের জন্য দায়ী। তাদের ঠেকানো ও শাস্তি দেওয়া ছাড়া কাজের কাজ হওয়া কঠিন।
যে কায়েমি মহল নদী দখল ও দূষণের জন্য দায়ী, তারা শক্তিমান। তাদের দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে কিছু উচ্ছেদ অভিযান কিংবা সতর্কতা জারি সমুদ্রে ঢিল ছোড়ার মতোই অর্থহীন। আর এমনটা হোক তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সর্বনাশের ষোলকলা যখন পূর্ণ হচ্ছে, প্রতিকারে তখন সর্বশক্তি নিয়োগ না করা অন্যায়।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের ১৭টি নদী মরে গেছে, আরও আটটি মরোমরো। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যাকে প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন হিসেবে স্বীকার করা হলেও ইছামতী, কালীগঙ্গা ও বংশী নদীর উল্লেখ থাকা প্রয়োজন ছিল। দ্বিতীয়ত, এগুলোর কোনো কোনোটির খাত ও জলপ্রবাহ যে রকম হুমকির মুখে, তাকে শুধু ‘প্রতিবেশগত বিপর্যয়’ বললে কম বলা হয়। দখল-দূষণ-ভরাট হতে হতে এগুলোর অস্তিত্বই আজ হুমকির মুখে। এ কঠিন বাস্তবতাকে জোরালোভাবেই স্বীকার করা এবং দৃঢ় প্রতিকারই জরুরি কর্তব্য। কিন্তু সরকার মনে হয় ঘোষণার আওয়াজ দিয়েই খালাস।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নিজেও নদী বাঁচানোর প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনও বিভিন্ন সময় বিপন্ন নদীসহ বেদখল হওয়া ঢাকার ৫২টি খাল এবং দেশের ১৬৫টি নদ-নদী রক্ষার জন্য আন্দোলন করে আসছে। এর আগে অনেকবার নদীতীরের অবৈধ দখল উচ্ছেদের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সেই জায়গাগুলো পুনর্দখল ও পুনর্ভরাট হতে দেখা গেছে। যত দিন উচ্ছেদ আর দখলের এই চোর-পুলিশ খেলা বন্ধ না হবে, নদীতীর স্থায়ীভাবে দখলমুক্ত রাখা না যাবে, তত দিন নদী নিরাপদ হবে না। সরকারিভাবে পানি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ১৩টি মন্ত্রণালয় ও ৪০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান। নদী বাঁচাতে এগুলোর সমন্বয়ে দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনাই হওয়া উচিত প্রথম পদক্ষেপ। প্রয়োজনে নদী-রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে।
২০০৩ সালে ঢাকার নদীদূষণের কারণ হিসেবে ৩৬টি শিল্প-কারখানাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরই মধ্যে এ সংখ্যা ও দূষণের মাত্রা কয়েক গুণ বেড়েছে। দেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বেশির ভাগেরই দূষণ দূর করার শোধনাগার নেই। হাজারীবাগের ট্যানারি-শিল্প এখনো বুড়িগঙ্গায় বিষ ঢেলে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা ঘোষণার ব্যাপার নয়, করে দেখানোর কাজ। পানির দেশ বাংলাদেশকে পানিহীনতা থেকে বাঁচাতে হলে কেবল জনসচেতনতায় কাজ হবে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ নয়, ক্ষমতাবান লোকেরাই দখল ও দূষণের জন্য দায়ী। তাদের ঠেকানো ও শাস্তি দেওয়া ছাড়া কাজের কাজ হওয়া কঠিন।
যে কায়েমি মহল নদী দখল ও দূষণের জন্য দায়ী, তারা শক্তিমান। তাদের দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে কিছু উচ্ছেদ অভিযান কিংবা সতর্কতা জারি সমুদ্রে ঢিল ছোড়ার মতোই অর্থহীন। আর এমনটা হোক তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সর্বনাশের ষোলকলা যখন পূর্ণ হচ্ছে, প্রতিকারে তখন সর্বশক্তি নিয়োগ না করা অন্যায়।
No comments