আজ ভুলে যা সব হানাহানি, হাত মেলা হাতে
আবার ঈদ এসেছে, সঙ্গে এনেছে এক মাসের সংযমের পুরস্কার—শান্তি আর আনন্দের সওগাত। কেউ নেই, যার দুয়ারে ঈদের আনন্দ-আবাহন বাজবে না। ঈদ মিলনের পর্বে ঈদগাহ থেকে ঘরে ঘরে, পথ থেকে পথে সেই আনন্দের মুখরতাই অনুভব করতে যাচ্ছি। সকল ভেদ ও পরিচয় ভুলে সেই দিন মানুষ কেবল মানুষকেই বুকে জড়াবে। সেই মিলনের আকুতি, ঈদের সেই রঙিন বারতাই কি সবার মনে অধীর বাঁশরির মতো বাজছে না? বহু বর্ষ আগে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই মর্মের কথাই তাঁর গানে চাউর করে দিয়েছিলেন, ‘আজ ভুলে যা সব হানাহানি, হাত মেলা হাতে’। তাই মুসলিম সম্প্রদায় তাদের সব ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের প্রতিবেশীদের নিয়ে, তাদের সবচেয়ে বড় উত্সবের জন্য তিল তিল করে প্রস্তুত হচ্ছে। এই আয়োজন তো জীবনেরই উদ্যাপন। জীবনকে নতুন করে রাঙানোর উত্সব। সেই উত্সবে যেন ধনী গরিবকে, অগ্রসর অনগ্রসরকে আমন্ত্রণ করে, স্বাগত জানায়।
এই দিনটি রমজানের নৈতিক তৃপ্তির নহর যেমন, শুদ্ধ মনের উচ্ছ্বাসের আঙিনাও তেমনি। সেই আঙিনায় সবাই সমবেত হবে, ফেলে আসা সময়ের তাপ ভুলবে—এটাই কাঙ্ক্ষিত। শান্তি আর উত্সব যেন যমজ ভাইবোন, একটির কমতি হলে অন্যটি তাই সুখে থাকে না। এবার সব দিকে পরিস্থিতি শান্ত; অর্থনীতি জীবন্ত; রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত। এবার শান্তির মধ্যে ঈদ-উত্সব পালিত হচ্ছে, এর থেকে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে? ঈদ ও শারদীয় দুর্গোত্সব পর পর হওয়ায় আনন্দ যেন কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায়।
যে ঐক্য ও শান্তি আমরা উত্সবের দিনগুলোয় দেখাতে পারি, তাকে কেন নিত্যদিনের বিষয়ে পরিণত করতে পারব না? যদি ছোট পরিসরে পারি, তো বড় পরিসরে, রাজনৈতিক জীবনে একই আচরণ করতে না পারার কারণ কী? শুভবোধের এই চর্চা তো অচেনা থাকার কথা নয়। ঈদ ও এই সাধনা যাতে দুই দিনের সাজানো সংসার না হয়ে ধারাবাহিক অগ্রসরতার প্রত্যয় হয়। বৈশ্বিক মুসলিমের এই উত্সবে ধরণী সজীব হবে, যেখানেই তারা থাকবে সেখানে ঈদ-উত্সবের পবিত্র সৌন্দর্যে অপরের মনের প্রীতি আদায় করে নেবে, এই-ই আশা।
বাংলাদেশে ঈদ মিলনের এক বিরল ঐতিহ্যও সৃষ্টি করে রেখেছে। ঈদে প্রবাসীরা দেশে ফিরতে আকুল হন, শহরবাসী গ্রামে ফেরায় রোমাঞ্চ পান, একাকী মানুষ বন্ধুমহলের সঙ্গে মিলবার জন্য ব্যাকুল হন। এবং অনেক ভোগান্তির শেষে নিজ প্রাঙ্গণে প্রিয়জনের আলিঙ্গনের সুখ উপভোগ করেন। বাংলাদেশে সমাজের শেকড় এখনো গ্রামে, শহরবাসী মানুষের মনের শেকড়ও যে গ্রামের ভিটার মধ্যেই পোঁতা; ঈদ যেন বারবার সেটাই মনে করিয়ে দেয়। দেশের মানুষ তখন ‘দেশের’ মানুষের সঙ্গে মিলিত হয়। এই সুযোগ থেকে কেউই যাতে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
ঈদ নিছক উত্সব নয়, জীবনকে নবায়ন করার আহ্বান, উেস ফেরার ডাক। সেই ডাক অনন্তকাল ধরে আসুক—সেটাই প্রত্যাশা
এই দিনটি রমজানের নৈতিক তৃপ্তির নহর যেমন, শুদ্ধ মনের উচ্ছ্বাসের আঙিনাও তেমনি। সেই আঙিনায় সবাই সমবেত হবে, ফেলে আসা সময়ের তাপ ভুলবে—এটাই কাঙ্ক্ষিত। শান্তি আর উত্সব যেন যমজ ভাইবোন, একটির কমতি হলে অন্যটি তাই সুখে থাকে না। এবার সব দিকে পরিস্থিতি শান্ত; অর্থনীতি জীবন্ত; রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত। এবার শান্তির মধ্যে ঈদ-উত্সব পালিত হচ্ছে, এর থেকে বড় আনন্দ আর কী হতে পারে? ঈদ ও শারদীয় দুর্গোত্সব পর পর হওয়ায় আনন্দ যেন কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার অপেক্ষায়।
যে ঐক্য ও শান্তি আমরা উত্সবের দিনগুলোয় দেখাতে পারি, তাকে কেন নিত্যদিনের বিষয়ে পরিণত করতে পারব না? যদি ছোট পরিসরে পারি, তো বড় পরিসরে, রাজনৈতিক জীবনে একই আচরণ করতে না পারার কারণ কী? শুভবোধের এই চর্চা তো অচেনা থাকার কথা নয়। ঈদ ও এই সাধনা যাতে দুই দিনের সাজানো সংসার না হয়ে ধারাবাহিক অগ্রসরতার প্রত্যয় হয়। বৈশ্বিক মুসলিমের এই উত্সবে ধরণী সজীব হবে, যেখানেই তারা থাকবে সেখানে ঈদ-উত্সবের পবিত্র সৌন্দর্যে অপরের মনের প্রীতি আদায় করে নেবে, এই-ই আশা।
বাংলাদেশে ঈদ মিলনের এক বিরল ঐতিহ্যও সৃষ্টি করে রেখেছে। ঈদে প্রবাসীরা দেশে ফিরতে আকুল হন, শহরবাসী গ্রামে ফেরায় রোমাঞ্চ পান, একাকী মানুষ বন্ধুমহলের সঙ্গে মিলবার জন্য ব্যাকুল হন। এবং অনেক ভোগান্তির শেষে নিজ প্রাঙ্গণে প্রিয়জনের আলিঙ্গনের সুখ উপভোগ করেন। বাংলাদেশে সমাজের শেকড় এখনো গ্রামে, শহরবাসী মানুষের মনের শেকড়ও যে গ্রামের ভিটার মধ্যেই পোঁতা; ঈদ যেন বারবার সেটাই মনে করিয়ে দেয়। দেশের মানুষ তখন ‘দেশের’ মানুষের সঙ্গে মিলিত হয়। এই সুযোগ থেকে কেউই যাতে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সর্বোচ্চ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
ঈদ নিছক উত্সব নয়, জীবনকে নবায়ন করার আহ্বান, উেস ফেরার ডাক। সেই ডাক অনন্তকাল ধরে আসুক—সেটাই প্রত্যাশা
No comments