‘ভাগ্যে ছিল বলেই এখানে সভাপতি হয়ে ফিরেছি’

চার বছর আগে সহ-সভাপতির নির্বাচনে ফেল করে বাফুফে ছেড়েছিলেন তাবিথ আউয়াল। সেই তাবিথ কাল বাফুফে ভবনে ফিরলেন সভাপতি হয়ে। প্রথমবারের মতো সভাপতি হিসেবে ভবনে এসে সাক্ষাৎ করেন বাফুফের সকল এক্সিকিউটিভের সঙ্গে। সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে বাফুফের কর্মকর্তাদের নানা নির্দেশনা দেন তাবিথ। এরপর নারী ফুটবলারদের সঙ্গেও কথা বলেন বাফুফে বস। আগামী ৯ই নভেম্বর প্রথম সভায় বসবে বাফুফের নতুন কমিটি। ওই সভা শেষে চ্যাম্পিয়ন নারী দলের জন্য বড় ঘোষণা দিতে চান বাফুফের এই নতুন সভাপতি।  

গত ২৬শে অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় বাফুফের নির্বাচন। সেখানে ১২৩ ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন তাবিথ আউয়াল। সভাপতি নির্বাচিত হয়েই এএফসি কংগ্রেসে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। সেখান থেকে থাইল্যান্ড হয়ে গত রোববার ঢাকায় ফেরেন তাবিথ। গতকাল নির্বাহী কমিটির প্রায় সকল সদস্যকে নিয়ে প্রথমবারের মতো বাফুফে ভবনে আসেন নয়া সভাপতি। প্রথমে সভা করেন বাফুফের বেতনভুক্ত সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে। তাবিথ এটাকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বললেও, জানা গেছে পরিষ্কার মেজেজ ছিল তার এই সভাতে। সেখানে অতীত ভুলে সামনের দিকে কাজে মন দিতে বলেছেন নতুন সভাপতি। পাশাপাশি দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাফুফে বস। সভাপতি হয়ে বাফুফেতে ফেরা নিয়ে তাবিথ বলেন, ‘আসলে ভাগ্য বলতে পারেন। একদম চার বছর আগে নির্বাচনে হেরে যাই। সে ব্যাপারে অভিযোগ ছিল এবং আছে। সেটা আসলে মুখ্য বিষয় নয়। তবে সেদিনই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে নিশ্চিত ফিরে আসবো। কিন্তু পরেরবার আমি সভাপতি হয়ে ফিরবো। এর দুটি কারণ ছিল; একটি ছিল, বাফুফে নির্বাচনে দুইবার সহসভাপতি হয়েছি। যদি জিততাম তিনবার হতো। অভিজ্ঞতা ছিল আমার যথেষ্ট। কিন্তু যেভাবে ভেবেছিলাম সেভাবে কাজ করতে পারিনি। তাই ভেবেছিলাম, পরেরবার সভাপতি হয়ে না এলে সেই কাজগুলো করতে পারবো না। শেষের দিকে এসে একরকম জেদ কাজ করেছে। বলতে পারেন সেটা থেকেই সভাপতি হিসেবে ফিরছি।’ নতুন দায়িত্বকে নতুন চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে বাফুফের এই নয়া সভাপতি বলেন, ‘যারা আমাকে নির্বাচিত করেছেন, তারা তো আমার ওপর প্রত্যাশা রাখছেন। আমি যেন ফুটবলকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারি। এখন সেই দায়িত্ব পালন করতে হবে আমাকে।  আমরা যেটা বললাম, অতীতে কী হয়েছে সেটা দেখছি না। সামনে কী করবো, সেসব নিয়ে ভাবছি। আমাদের মেয়েরা ও ছেলেরা যদি মাঠে ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারে, তাহলে এই সুনামের সঙ্গে ব্র্যান্ডিং এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু দুটোই বাড়বে।’ মেয়েদের পুরস্কার নিয়ে তাবিথ বলেন, ‘বাফুফের পক্ষ থেকে ৯ তারিখে একটা ঘোষণা আসবে। এছাড়া আমরা জানতে পেরেছি অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নারী দলকে সংবর্ধনা দিতে চায় এবং উপহার দিতে চায়। বাফুফের পক্ষ থেকে একটা ঘোষণা আসবে একটা আয়োজন করা হবে নির্বাহী কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে যাতে আর্থিক স্বচ্ছতার বিষয়টা নিশ্চিত করা যায়।’ বাফুফের এবারের কমিটির ১৪ সদস্যের মধ্যে সাত জনই নতুন মুখ। এছাড়া সহ-সভাপতি হিসেবে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়ে এসেছেন নাসের শাহরিয়ার জামান জাহেদী, ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, সাব্বির আহমেদ আরেফ ও ফাহাদ করিম চৌধুরী। আগের কমিটির সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান হয়েছেন সিনিয়র সহ-সভাপতি। সবমিলিয়ে এবারের কমিটি কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তাবিথ বলেন, ‘আমার সহযাত্রীদের ব্যাপারে এখনও আমার যোগ্যতা নেই ডেলিগেটের ভোটে যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তাদের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করার। বরং তাদেরকে প্রশ্ন করা উচিত, তারা আমাকে নিয়ে সন্তুষ্ট কী না, আমি নেতৃত্বের জন্য যোগ্য কী না। ওনাদের ডেলিগেটরা নির্বাচিত করে এনেছেন। এখন বাকী দিনগুলো মিলেমিশে আমাদের সবাইকে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে নিজেদের সামর্থ্যের পুরোটা দিয়ে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.