কাশ্মীরে আগুন নিয়ে খেলছে ভারত by ল্যান জিয়ানশিউ
পাকিস্তানের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিকে উদ্ধৃত করে দুবাই-ভিত্তিক গালফ নিউজ
জানিয়েছে যে, তিনি বলেছেন, ভারত যদি কাশ্মীরে অবরুদ্ধ অবস্থাকে আড়াল করতে
বিশ্বের মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরানোর জন্য কোন অপ-অভিযানের চেষ্টা করে, তাহলে
পাকিস্তান সেনাবাহিনী জাতিকে রক্ষার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত আছে। ৫ আগস্ট
নয়াদিল্লী ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের মাধ্যমে ওই
অঞ্চলকে ভারতীয় অঞ্চল ঘোষণা করার পর তিনি এ কথা বলেন।
নয়াদিল্লীর উদ্দেশ্য হয়তো নিজস্ব আইন বদল করে এই অঞ্চলের অচলাবস্থার স্থায়ী অবসান করা। কিন্তু তাদের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নড়বড়ে ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে আরও হুমকির দিকে ঠেলে দিতে পারে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন আগামীতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
কাশ্মীর ইস্যু বহু দিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান বিষয় হিসেবে চলে আসছে। ১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারত ও পাকিস্তান আইনগতভাবে জন্ম নেয়ার পর নয়াদিল্লী ও ইসলামাবাদ কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে।
পাকিস্তানের দৃষ্টিকোণ থেকে, ভারত একতরফাভাবে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থের ক্ষতি করেছে।
ভারতের পদক্ষেপ চীনের সার্বভৌম অধিকারেরও ক্ষতি করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, “চীন সবসময় চীনা অঞ্চলকে ভারতীয় সীমানায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের বিরোধী”। ভারতের পদক্ষেপ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং এশিয়ার কৌশলগত পরিস্থিতির জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে।
তিন বছর আগে কাশ্মীরের দক্ষিণাঞ্চলে পাকিস্তানপন্থী কাশ্মীরী গেরিলা সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের কমান্ডার বুরহান মুজাফফর ওয়ানিকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করার পর থেকে এই অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা ব্যাপক মাথাচাড়া দিয়েছে। একতরফাভাবে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে গেলে সেটা কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি করবে।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর এখানে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ৭ আগস্ট ইসলামাবাদ বলেছে যে, তারা নয়াদিল্লীর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ‘কমিয়ে আনবে’ এবং দিল্লী থেকে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় দূতকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। ভারতের সিদ্ধান্ত দুর্বল সম্পর্কের উপর মারাত্মক আঘাত হানবে এবং দুই পক্ষকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিবে। দুই প্রতিপক্ষ এরই মধ্যে সীমান্তে গুলি বিনিময় শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ জানিয়েছেন।
কাশ্মীরে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী হামলার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। নিরাপত্তার দিক থেকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর সবসময় ছিল নড়বড়ে। স্থানীয়দের সাথে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লীর একতরফা সিদ্ধান্তে সরকার বিরোধী সশস্ত্র শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিতে পারে এবং এতে অস্থিরতা আরও বাড়বে।
কিছু হিন্দু দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান এবং মুসলিমদের প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ দেখিয়ে এসেছে। কাশ্মীরের পরিস্থিতি বাইরের ধর্মীয় ও জাতিগত সঙ্ঘাত আরও তীব্র করে তুলতে পারে। ভারত জাতীয়তাবাদী মানসিকতা জাগিয়ে তুলতে সফল হয়েছে। কিন্তু এটা নিজের জন্যই একটা সমস্যা তৈরি করেছে। মোদি প্রশাসন যখন জাতীয়তাবাদীদের অযৌক্তিক দাবি মেটাতে ব্যার্থ হবেন, তখন তারা দ্বিমুখি আগুনের মাঝখানে পড়ে যাবে।
বাস্তবে কাশ্মীরের সঙ্ঘাতের সূচনা হয়েছে মূলত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের ফেলে যাওয়া সমস্যা থেকে এবং জাতিসংঘ সনদ, সংশ্লিস্ট জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রস্তাবনা এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে এর শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত। এবং সশস্ত্র সঙ্ঘাত এড়ানোর জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দেয়া উচিত।
>>>লেখক চায়না ইন্সটিটিউ অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের এশিয়া-প্যাসিফিক স্টাডিজ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর।
নয়াদিল্লীর উদ্দেশ্য হয়তো নিজস্ব আইন বদল করে এই অঞ্চলের অচলাবস্থার স্থায়ী অবসান করা। কিন্তু তাদের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নড়বড়ে ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্যকে আরও হুমকির দিকে ঠেলে দিতে পারে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন আগামীতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
কাশ্মীর ইস্যু বহু দিন ধরেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান বিষয় হিসেবে চলে আসছে। ১৯৪৭ সালের আগস্টে ভারত ও পাকিস্তান আইনগতভাবে জন্ম নেয়ার পর নয়াদিল্লী ও ইসলামাবাদ কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে।
পাকিস্তানের দৃষ্টিকোণ থেকে, ভারত একতরফাভাবে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থের ক্ষতি করেছে।
ভারতের পদক্ষেপ চীনের সার্বভৌম অধিকারেরও ক্ষতি করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে, “চীন সবসময় চীনা অঞ্চলকে ভারতীয় সীমানায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের বিরোধী”। ভারতের পদক্ষেপ ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং এশিয়ার কৌশলগত পরিস্থিতির জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে।
তিন বছর আগে কাশ্মীরের দক্ষিণাঞ্চলে পাকিস্তানপন্থী কাশ্মীরী গেরিলা সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের কমান্ডার বুরহান মুজাফফর ওয়ানিকে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী হত্যা করার পর থেকে এই অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা ব্যাপক মাথাচাড়া দিয়েছে। একতরফাভাবে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন করতে গেলে সেটা কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরও অবনতি করবে।
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উপর এখানে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। ৭ আগস্ট ইসলামাবাদ বলেছে যে, তারা নয়াদিল্লীর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ‘কমিয়ে আনবে’ এবং দিল্লী থেকে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় দূতকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। ভারতের সিদ্ধান্ত দুর্বল সম্পর্কের উপর মারাত্মক আঘাত হানবে এবং দুই পক্ষকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিবে। দুই প্রতিপক্ষ এরই মধ্যে সীমান্তে গুলি বিনিময় শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ জানিয়েছেন।
কাশ্মীরে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী হামলার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। নিরাপত্তার দিক থেকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর সবসময় ছিল নড়বড়ে। স্থানীয়দের সাথে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সম্পর্কে টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। নয়াদিল্লীর একতরফা সিদ্ধান্তে সরকার বিরোধী সশস্ত্র শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিতে পারে এবং এতে অস্থিরতা আরও বাড়বে।
কিছু হিন্দু দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান এবং মুসলিমদের প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ দেখিয়ে এসেছে। কাশ্মীরের পরিস্থিতি বাইরের ধর্মীয় ও জাতিগত সঙ্ঘাত আরও তীব্র করে তুলতে পারে। ভারত জাতীয়তাবাদী মানসিকতা জাগিয়ে তুলতে সফল হয়েছে। কিন্তু এটা নিজের জন্যই একটা সমস্যা তৈরি করেছে। মোদি প্রশাসন যখন জাতীয়তাবাদীদের অযৌক্তিক দাবি মেটাতে ব্যার্থ হবেন, তখন তারা দ্বিমুখি আগুনের মাঝখানে পড়ে যাবে।
বাস্তবে কাশ্মীরের সঙ্ঘাতের সূচনা হয়েছে মূলত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের ফেলে যাওয়া সমস্যা থেকে এবং জাতিসংঘ সনদ, সংশ্লিস্ট জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রস্তাবনা এবং দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে এর শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া উচিত। এবং সশস্ত্র সঙ্ঘাত এড়ানোর জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়েরই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দেয়া উচিত।
>>>লেখক চায়না ইন্সটিটিউ অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের এশিয়া-প্যাসিফিক স্টাডিজ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর।
No comments