অপারেশান সুইফট রিটোর্ট: ভারতীয় আগ্রাসনে পাকিস্তানের উপযুক্ত জবাব by ডিজে কামাল মুস্তাফা

২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বিমান বাহিনী কিভাবে আকাশে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটো বিমানকে বিধ্বস্ত করেছিল, সেটা সবারই জানা। হাঁ, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর দুই পাইলট হাসান সিদ্দিকী এবং নুমান আলী খান ভারতীয় মিগ-২১ এবং সু-৩০ বিমান দুটোকে বিধ্বস্ত করেন। তাদের কৃতিত্বে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট অভিনন্দন ভার্তামান আটক হন।

এই শক্তির প্রদর্শনী নিয়ে পাকিস্তানী চলচ্চিত্র নির্মাতা ডিজে কামাল মুস্তাফা একটি অ্যানিমেটেড ছবি তৈরি করেছেন, যেটার শিরোনাম হলো ‘অপারেশান সুইফট রিটোর্ট’। বিমান বাহিনীর অভিযানের অফিশিয়াল নাম ছিল এটা। ২০১৯ সালের ২৬ ও ২৭শে ফেব্রুয়ারির ঘটনাপঞ্জির উপর ভিত্তি করে মুস্তাফা দুই মাসের মধ্যে এই ফিল্মটি তৈরি করেন। চলচ্চিত্রটির দৈর্ঘ ২৪ মিনিট এবং এটা ইউটিউবে দেখা যায়।

চলচ্চিত্রের শুরুতে দেখানো হয়েছে যে, ২৬ ফেব্রুয়ারি দিনের শুরুর দিকে ভারতীয় বিমান বালাকোটের আকাশসীমায় প্রবেশ করছে এবং জাব্বা এলাকায় তাদের বোঝা ফেলছে। বিমানগুলো চমৎকার জাব্বা বনাঞ্চলকে ধ্বংস করছে। ভারত প্রচারণা চালিয়েছে যে, তারা ৩৫০ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে কিন্তু বাস্তবে কোন হতাহত হয়নি। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর ভারতীয় প্রচারণার গুমর ফাঁস করে দেন।

চলচ্চিত্রের পরের অংশে দেখানো হয়েছে যে, একই দিন সকাল ৮টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদরদপ্তরে বৈঠক চলছে। সমস্ত সামরিক জেনারেলরা সেখানে উপস্থিত আছেন তারা দ্রুততার সাথে ভারতকে জবাব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পুরো পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেয়।

২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর রাডারে ভারতীয় বিমানের চলাচল ধরা পড়ে। বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন এবং দুজন পাইলটকে তাৎক্ষণিক ভারতীয় বিমানের মোকাবেলায় পাঠানো হয়। রাডারে লক্ষ্যবস্তু দেখানো হয় আজাদ কাশ্মীরের ভিম্বের এলাকাকে। পাইলট হাসান সিদ্দিকি এবং নুমান আলী খান তাদের জেএফ ১৭ থান্ডার্স বিমান নিয়ে অভিযান শুরু করেন।

ভারতীয় একটি সু ৩০ বিমান প্রথমে তাদের কাছাকাছি হয়। শত্রু বিমান খোলা প্রান্তরে আসার সাথে সাথেই হাসান সিদ্দিকীকে ওয়্যারলেস সেটে নির্দেশ দেয়া শত্রু বিমানকে টার্গেট করে আঘাত হানতে। হাসান সিদ্দিকী তাৎক্ষণিক তার টার্গেট লক্ষ্য করে মিসাইল ছোড়েন। ভারতীয় বিমানটি ভূপাতিত ও বিস্ফোরিত হয়।

হাসান সিদ্দিকীকে এরপর আরেকটি আদেশ দেয়া হয়: দ্বিতীয় ভারতীয় বিমান মিগ-২১কে লক্ষ্য করার জন্য। পাইলট হাসান সিদ্দিকী এবং নুমান আলী খান ভারতীয় মিগ ২১ বিমানকে ধাওয়া করেন এবং একই সাথে মিসাইল রেঞ্জের মধ্যে ছয়টি টার্গেটকে চিহ্নিত করেন। হাসান সিদ্দিকী জানান টার্গেট লক করা হয়েছে এবং এরপর জবাব আসে ‘গুলি করে ভূপাতিত করো’।

হাসান সিদ্দিকী জেএফ১৭ বিমান থেকে মিসাইল ছুড়ে ভারতীয় মিগ ২১ বিমানটি ভূপাতিত করেন। ভারতীয় বিমানটি ভূপাতিত হওয়ার পর এতে আগুন ধরে যায়। ভারতীয় পাইলট কোনরকমে বেঁচে যান।

চলচ্চিত্রের শেষ অংশে দেখানো হয় স্থানীয় অধিবাসীরা ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দন ভার্তামানকে পেটাচ্ছে এবং প্রশ্ন করছে। এর অল্প পরেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী সেখানে উপস্থিত হয় এবং অভিনন্দন তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন বলে দেখানো হয়। সেনাবাহিনী তাকে গ্রেফতার করে।

চলচ্চিত্রে দেখানো হয় বিমান বাহিনীর পাইলটরা নিরাপদে ঘাঁটিতে ফিরছেন। পুরো অভিযান নিয়ে মিডিয়াকে অবগত করেন মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। এবং বন্দী ভারতীয় পাইলটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাকিস্তান বিমান বাহিনী এই অভিযানের নাম দেন ‘অপারেশান সুইফট রিটোর্ট’।

1 comment:

  1. Bangla Language-> মনে হচ্ছে স্কোয়াড্রন লীডার হাসান সিদ্দিকীর ভবূমিকা-কে বেশী ফলাও করা এবং ওয়ুইং কমান্ডার নুমান আলী খানের ভবুমিকাকে কিছুটা ম্লান করে উপস্থাপন/প্রদরশন করা হচ্ছে।

    ReplyDelete

Powered by Blogger.