একজন ‘রিকশাওয়ালা’ আশিকের কথা by মোহাম্মদ আবুল হোসেন
নাম
তার আশিক। বয়স বড়জোর ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। গায়ের টি-শার্ট বলে দিচ্ছে
তার রুচি। মুখাবয়বে স্পষ্ট সে পেশাদার রিকশাওয়ালা নয়। তবু তাকে রিকশার
প্যাডেলে প্রয়োগ করতে হয় শরীরের সমস্ত শক্তি। শক্ত হাতে ধরতে হয় হ্যান্ডেল।
ঘামে ভিজে যায় শরীর। বলল, কি করব স্যার।
বাড়িতে মা আর এক বোন। বাবা মারা গেছেন লিভারের সমস্যায়। তার চিকিৎসায় জমিজমা যা ছিল সব শেষ। এখন বেঁচে থাকার অবলম্বন আমি। মা আর বোনের মুখে ভাত তুলে দেয়ার দায়িত্ববোধ থেকে কাজে নেমে পড়েছি।
আশিক জামালপুরে একটি কলেজে পড়াশোনা করে। গ্রাম শাহবাজপুরে। কয়েকদিন হলো থাকে মগবাজারে মধুবাগ এলাকায়। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ভাল ফল হলে, উচ্চ শিক্ষা নিতে চায়। একটি ভাল চাকরি করে মা, বোনের মুখে হাসি ফোটাতে চায়। নিয়মিত রিকশা চালাও? এ প্রশ্নে তার জবাব- না। জামালপুরে একটি দোকানের কর্মচারী থাকি। সেখানে কাজ করি। যা বেতন দেয় তা দিয়ে পড়াশোনা আর মা, বোনের ভরণপোষণ করি। পড়াশোনায় কোনো ক্ষতি হয় না এতে? আশিকের জবাব, সারাদিন দোকানে বসি না। বিকাল দুটা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। বাকি সময় পড়াশোনা করি। এখন পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। দোকানের মালিক বন্ধ করে বেড়াতে গেছেন। বসে থাকলে পেটে ভাত জুটবে না। তাই এ সময়ের জন্য ঢাকায় চলে এসেছি। উড়নচন্ডিদের মতো ঘুরে বেড়ালে না খেয়ে মরতে হবে। তাই ঢাকায় এসে রিকশা নিয়েছি। নিয়মিত রিকশা চালাই না। তাই হঠাৎ এ কাজে এসে অনেক কষ্ট হয়।
ঘামে ততক্ষণে ভিজে উঠেছে আশিকের গায়ের টি-শার্ট, পরনের লুঙ্গি। মাথা থেকে ঘাম ঝরছে দর দর করে। ক্লান্ত দেখায় তাকে। তা দেখে আস্তে চালাতে বলতেই তার জবাব- আস্তে চালালে কম আয় হয়। মালিকের জমা উঠাতে হবে। তারপর আমার মজুরি। তা থেকে বাড়িতে মা, বোনকে টাকা পাঠাব। আস্তে চালালে তা পারব না। তাছাড়া রাস্তা ফাঁকা। জোরেই চালাই।
আশিকের রিকশা পঙ্খীরাজের মতো উড়ে চলে। বাতাস ফুঁড়ে ছুটতে থাকে সামনে। চারপাশে দামি দামি গাড়িতে ধনাঢ্যরা ছুটে যান। তার পাশ দিয়ে যেতে যেতে আশিক কি ভাবে! সে কি ভাবে এই শহরে কেউ একটা চাকরি দিলে তাকে এমন কষ্ট করতে হতো না! কিন্তু কে তার কথা এসব মানুষের কানে তুলে দেবে! কেউ কি আছেন, যিনি তাকে কাছে ডেকে বলবেন, তোমার পড়ার দায়িত্ব আমি নিলাম! এমন অনেক ভাবনা হয়তো আশিকের বুকে। কিন্তু খুলে বলে না। শুধু বলে, এ ও আসে। বলে, ঘুষ দিলে কাজ নিয়ে দিতে পারবে। আমি টাকা পাব কোথায় যে ঘুষ দেব। টাকা থাকলেও এই অসৎ পথে যেতাম না।
গন্তব্যে থেমে যায় আশিকের রিকশা। তাকে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে বাড়তি টাকা দিতে গেলেই আপত্তি তার। বলে, কেন এটা নেবো! আমার ভাড়া তো ৫০ টাকা।
আরে, এটা দিয়ে চা খাও! খুশি হয়ে দিলাম- বলতেই তার চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। গড়িয়ে পড়ে কয়েকফোঁটা অশ্রু। আশিক অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তার অভিব্যক্তি কি বোঝা গেল না। ছবি তোলার অনুমতি চাইতেই বলল, কোনো অসুবিধা নেই। ছবি তুলবেন তোলেন। কোনো সমস্যা নেই।
যদি এই ছবি পত্রিকায় ছাপা হয় কোন অসুবিধা আছে? এ প্রশ্নে আশিকের জবাব- আমি তো চুরি করি নাই। তাহলে কেন আমার ছবি পত্রিকায় ছাপা হওয়ার ক্ষেত্রে আমার অসুবিধা থাকবে। তার কথা শেষ হতেই ক্যামেরায় বন্দি হয়ে যায় আশিক। তার কথা যেন ছড়িয়ে পড়ে অনেকের কানে।
বাড়িতে মা আর এক বোন। বাবা মারা গেছেন লিভারের সমস্যায়। তার চিকিৎসায় জমিজমা যা ছিল সব শেষ। এখন বেঁচে থাকার অবলম্বন আমি। মা আর বোনের মুখে ভাত তুলে দেয়ার দায়িত্ববোধ থেকে কাজে নেমে পড়েছি।
আশিক জামালপুরে একটি কলেজে পড়াশোনা করে। গ্রাম শাহবাজপুরে। কয়েকদিন হলো থাকে মগবাজারে মধুবাগ এলাকায়। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ভাল ফল হলে, উচ্চ শিক্ষা নিতে চায়। একটি ভাল চাকরি করে মা, বোনের মুখে হাসি ফোটাতে চায়। নিয়মিত রিকশা চালাও? এ প্রশ্নে তার জবাব- না। জামালপুরে একটি দোকানের কর্মচারী থাকি। সেখানে কাজ করি। যা বেতন দেয় তা দিয়ে পড়াশোনা আর মা, বোনের ভরণপোষণ করি। পড়াশোনায় কোনো ক্ষতি হয় না এতে? আশিকের জবাব, সারাদিন দোকানে বসি না। বিকাল দুটা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। বাকি সময় পড়াশোনা করি। এখন পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। দোকানের মালিক বন্ধ করে বেড়াতে গেছেন। বসে থাকলে পেটে ভাত জুটবে না। তাই এ সময়ের জন্য ঢাকায় চলে এসেছি। উড়নচন্ডিদের মতো ঘুরে বেড়ালে না খেয়ে মরতে হবে। তাই ঢাকায় এসে রিকশা নিয়েছি। নিয়মিত রিকশা চালাই না। তাই হঠাৎ এ কাজে এসে অনেক কষ্ট হয়।
ঘামে ততক্ষণে ভিজে উঠেছে আশিকের গায়ের টি-শার্ট, পরনের লুঙ্গি। মাথা থেকে ঘাম ঝরছে দর দর করে। ক্লান্ত দেখায় তাকে। তা দেখে আস্তে চালাতে বলতেই তার জবাব- আস্তে চালালে কম আয় হয়। মালিকের জমা উঠাতে হবে। তারপর আমার মজুরি। তা থেকে বাড়িতে মা, বোনকে টাকা পাঠাব। আস্তে চালালে তা পারব না। তাছাড়া রাস্তা ফাঁকা। জোরেই চালাই।
আশিকের রিকশা পঙ্খীরাজের মতো উড়ে চলে। বাতাস ফুঁড়ে ছুটতে থাকে সামনে। চারপাশে দামি দামি গাড়িতে ধনাঢ্যরা ছুটে যান। তার পাশ দিয়ে যেতে যেতে আশিক কি ভাবে! সে কি ভাবে এই শহরে কেউ একটা চাকরি দিলে তাকে এমন কষ্ট করতে হতো না! কিন্তু কে তার কথা এসব মানুষের কানে তুলে দেবে! কেউ কি আছেন, যিনি তাকে কাছে ডেকে বলবেন, তোমার পড়ার দায়িত্ব আমি নিলাম! এমন অনেক ভাবনা হয়তো আশিকের বুকে। কিন্তু খুলে বলে না। শুধু বলে, এ ও আসে। বলে, ঘুষ দিলে কাজ নিয়ে দিতে পারবে। আমি টাকা পাব কোথায় যে ঘুষ দেব। টাকা থাকলেও এই অসৎ পথে যেতাম না।
গন্তব্যে থেমে যায় আশিকের রিকশা। তাকে নির্দিষ্ট ভাড়ার চেয়ে বাড়তি টাকা দিতে গেলেই আপত্তি তার। বলে, কেন এটা নেবো! আমার ভাড়া তো ৫০ টাকা।
আরে, এটা দিয়ে চা খাও! খুশি হয়ে দিলাম- বলতেই তার চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে। গড়িয়ে পড়ে কয়েকফোঁটা অশ্রু। আশিক অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। তার অভিব্যক্তি কি বোঝা গেল না। ছবি তোলার অনুমতি চাইতেই বলল, কোনো অসুবিধা নেই। ছবি তুলবেন তোলেন। কোনো সমস্যা নেই।
যদি এই ছবি পত্রিকায় ছাপা হয় কোন অসুবিধা আছে? এ প্রশ্নে আশিকের জবাব- আমি তো চুরি করি নাই। তাহলে কেন আমার ছবি পত্রিকায় ছাপা হওয়ার ক্ষেত্রে আমার অসুবিধা থাকবে। তার কথা শেষ হতেই ক্যামেরায় বন্দি হয়ে যায় আশিক। তার কথা যেন ছড়িয়ে পড়ে অনেকের কানে।
No comments