আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ ১৯ লাখ
ভারতের
পূর্বাঞ্চলের বাংলাদেশ সংলগ্ন আসাম রাজ্যে শনিবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে
প্রকাশ করা হয়েছে বহু প্রতীক্ষিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা। খসড়া
তালিকা প্রকাশের শুরু থেকেই বিতর্কিত এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, ১৯
লাখের বেশি মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন। এনআরসিতে নাম তোলার ভিত্তি রাখা
হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চ। এ তারিখের আগে আসামে আসারাই নাগরিক হওয়ার
অধিকারী। অবশ্য বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আগামী ১২০ দিনের মধ্যে ভারতের নাগরিক
হওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে বলে এনআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এ জন্য রাজ্যে
এক হাজার ট্রাইব্যুনাল তৈরি করা হবে। ট্রাইব্যুনালের রায়ে খুশি হতে না
পারলে প্রথমে হাইকোর্ট ও পরে সুপ্রিম কোর্টে যাবার সুযোগ থাকবে বলে জানা
গেছে। কিন্তু আইনগত জটিলতা কাটিয়ে কতদূর কী করা সম্ভব সেটা নিয়েও প্রশ্ন
উঠতে শুরু করেছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেই এক টুইটে বলেছে, নাম বাদ পড়া মানেই তারা বিদেশি তা মোটেই নয়। সমস্ত আইন প্রক্রিয়ার শেষে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করার একমাত্র অধিকারী হলো ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রাজ্যের সব এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এ তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তালিকাটি অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে থাকা নাম বাদপড়া লাখ লাখ মানুষ এদিন নাম রয়েছে কিনা তা জানার জন্য একসঙ্গে এনআরসি’র ওয়েব সাইটে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। ফলে এক সময় সাইটটিই ক্র্যাশ করে দেয়া হয়েছিল। এতে তৈরি হয়েছিল প্রবল উত্তেজনা। পরে অবশ্য কোনোরকমে সাইটটি চালু করা গিয়েছে। তালিকা অনুযায়ী মোট ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন বৈধ ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। অন্যদিকে তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন। খসড়া তালিকায় এই সংখ্যাটি ছিল ৪১ লাখের বেশি। পরবর্তী সময়ে যুক্ত হয়েছিল আরো ১ লাখের বেশি বাদপড়া মানুষের নাম। ফলে যাদের নাম উঠেছে তাদের মুখে হাসি ফুটলেও বাকি লাখ লাখ মানুষকে ফের উৎকণ্ঠা গ্রাস করেছে। ইতিমধ্যেই এক সমীক্ষায় জানা গেছে, খসড়া থেকে নাম বাদ পড়া মানুষদের ৮৯ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এদের অধিকাংশই বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার লজ্জা ও গ্লানি এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় ট্রমাতে রয়েছেন। আর এই আশঙ্কা থেকেই অনেকে আত্মহত্যাও করেছেন। মানবাধিকার সংস্থা সিটিজের ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিসের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে এনআরসি’র আতঙ্কে প্রায় ৬০ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এনআরসি বিষয়ক রাজ্যের সমন্বয়কারী প্রতীক হাজেলা বলেছেন, যারা তালিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নন তারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন।
১৯৫১ সালের পর এই প্রথম আসামে এনআরসি প্রণয়ন করা হয়েছে। এনআরসি প্রণয়নের উদ্দেশ্য হলো আসামে বসবাস করছেন যেসব মানুষ তারা আসলে ভারতীয় নাকি বিদেশি তা শনাক্ত করা। অবশ্য ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও এই ধরনের এনআরসি চালু করার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি ও এনডিএ শরিক দলের নেতারা শনিবারই সোচ্চার হয়েছেন। তবে আসামের এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে খুশি নন রাজ্যটির অর্থমন্ত্রী এবং বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেছেন, এই তালিকা ভুলে ভরা। তিনি দাবি করেছেন, অবৈধ বিদেশি হিসেবে আরো অনেক মানুষের নাম বাদ পড়া উচিত ছিল। বিজেপি নেতারাই এখন দাবি করছেন, এই এনআরসি ত্রুটিপূর্ণ। বহু বাঙালি হিন্দুর নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন। গত নির্বাচনে এই হিন্দুরাই ছিল তাদের ভোট ব্যাংকের একটি বড় অংশ। তবে তারা আশ্বস্ত করে বলেছেন, প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত এবং নাম ওঠা বিদেশিদের নাম বাদ দিতে সংসদ এবং আসাম বিধানসভায় আইন পাস করা হবে।
শনিবার তালিকা প্রকাশের আগে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে স্পর্শকাতর ১৫টি জেলায় অতিরিক্ত আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৬০ হাজার পুলিশ সতর্ক নজর রাখছে। রাজধানী গৌহাটি সহ উত্তেজনাপ্রবন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে তিনজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে সেন্ট্রাল আর্মড প্যারামিলিটারি ফোর্সের ৫১টি কোম্পানি নিযুক্ত করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল জনসাধারণকে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বিজেপি’র সব জনপ্রতিনিধিকে শনিবার থেকে তিনদিন নিজের নিজের এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগেই এক টুইটে বলেছে, নাম বাদ পড়া মানেই তারা বিদেশি তা মোটেই নয়। সমস্ত আইন প্রক্রিয়ার শেষে বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করার একমাত্র অধিকারী হলো ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রাজ্যের সব এনআরসি সেবাকেন্দ্রে এ তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তালিকাটি অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে থাকা নাম বাদপড়া লাখ লাখ মানুষ এদিন নাম রয়েছে কিনা তা জানার জন্য একসঙ্গে এনআরসি’র ওয়েব সাইটে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। ফলে এক সময় সাইটটিই ক্র্যাশ করে দেয়া হয়েছিল। এতে তৈরি হয়েছিল প্রবল উত্তেজনা। পরে অবশ্য কোনোরকমে সাইটটি চালু করা গিয়েছে। তালিকা অনুযায়ী মোট ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন বৈধ ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। অন্যদিকে তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন। খসড়া তালিকায় এই সংখ্যাটি ছিল ৪১ লাখের বেশি। পরবর্তী সময়ে যুক্ত হয়েছিল আরো ১ লাখের বেশি বাদপড়া মানুষের নাম। ফলে যাদের নাম উঠেছে তাদের মুখে হাসি ফুটলেও বাকি লাখ লাখ মানুষকে ফের উৎকণ্ঠা গ্রাস করেছে। ইতিমধ্যেই এক সমীক্ষায় জানা গেছে, খসড়া থেকে নাম বাদ পড়া মানুষদের ৮৯ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এদের অধিকাংশই বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার লজ্জা ও গ্লানি এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কায় ট্রমাতে রয়েছেন। আর এই আশঙ্কা থেকেই অনেকে আত্মহত্যাও করেছেন। মানবাধিকার সংস্থা সিটিজের ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিসের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে এনআরসি’র আতঙ্কে প্রায় ৬০ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এনআরসি বিষয়ক রাজ্যের সমন্বয়কারী প্রতীক হাজেলা বলেছেন, যারা তালিকা নিয়ে সন্তুষ্ট নন তারা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করতে পারবেন।
১৯৫১ সালের পর এই প্রথম আসামে এনআরসি প্রণয়ন করা হয়েছে। এনআরসি প্রণয়নের উদ্দেশ্য হলো আসামে বসবাস করছেন যেসব মানুষ তারা আসলে ভারতীয় নাকি বিদেশি তা শনাক্ত করা। অবশ্য ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও এই ধরনের এনআরসি চালু করার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টি ও এনডিএ শরিক দলের নেতারা শনিবারই সোচ্চার হয়েছেন। তবে আসামের এনআরসি’র চূড়ান্ত তালিকা নিয়ে খুশি নন রাজ্যটির অর্থমন্ত্রী এবং বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি বলেছেন, এই তালিকা ভুলে ভরা। তিনি দাবি করেছেন, অবৈধ বিদেশি হিসেবে আরো অনেক মানুষের নাম বাদ পড়া উচিত ছিল। বিজেপি নেতারাই এখন দাবি করছেন, এই এনআরসি ত্রুটিপূর্ণ। বহু বাঙালি হিন্দুর নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে বলে তারা দাবি করেছেন। গত নির্বাচনে এই হিন্দুরাই ছিল তাদের ভোট ব্যাংকের একটি বড় অংশ। তবে তারা আশ্বস্ত করে বলেছেন, প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম অন্তর্ভুক্ত এবং নাম ওঠা বিদেশিদের নাম বাদ দিতে সংসদ এবং আসাম বিধানসভায় আইন পাস করা হবে।
শনিবার তালিকা প্রকাশের আগে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। আসাম পুলিশের পক্ষ থেকে স্পর্শকাতর ১৫টি জেলায় অতিরিক্ত আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৬০ হাজার পুলিশ সতর্ক নজর রাখছে। রাজধানী গৌহাটি সহ উত্তেজনাপ্রবন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে তিনজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সতর্কতা হিসেবে সেন্ট্রাল আর্মড প্যারামিলিটারি ফোর্সের ৫১টি কোম্পানি নিযুক্ত করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল জনসাধারণকে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বিজেপি’র সব জনপ্রতিনিধিকে শনিবার থেকে তিনদিন নিজের নিজের এলাকায় থাকতে বলা হয়েছে।
No comments