এমন মৃত্যু আর কত? by মরিয়ম চম্পা
‘একটি
বাসায় চারটি পাখি, কত যে আনন্দে থাকি’। কিন্তু তাদের যে আর আনন্দে থাকা
হলো না। চারটি পাখির একটি চলে গেছে না ফেরার দেশে। ঘাতক ডেঙ্গু জ্বরে
আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ছোট্ট রাইয়ান সরকারের বাবা-মা এখন পাগল প্রায়। মা
কখনো ছেলের কক্ষে যান। ছেলের স্কুলের আইডি কার্ড, স্কুল ড্রেস বুকে জড়িয়ে
চিৎকার করে কান্না করেন। পুত্র শোকে পাথর হয়ে গেছেন রাইয়ানের বাবাও। কারো
সঙ্গে কথা বলতে গেলেই শিশুদের মতো কেঁদে ফেলেন।
আর ছেলে মেয়ের জন্য দোয়া চান। ছোট বোন মালিহা বিনতে সরকার বাবাকে বার বার তাগিদ দেয় ভাইকে আইসিইউতে দেখতে যাবে। সে এখনো জানে না যে তার সার্বক্ষণিক খেলার সঙ্গী প্রিয় ভাইটি আর নেই। গত শুক্রবার দুপুরে ১১ বছর ৬ মাস বয়সী রাইয়ান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
রাইয়ানের বাবা এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডের জোনাল সেলস ম্যানেজার মমিন সরকার বলেন, ১১ বছর ৬ মাস বয়সী একটি বাচ্চাকে হারিয়ে একজন মা কেমন থাকতে পারে। তার মা জান্নাত আরা জাহান এখন পাগলপ্রায়। হাসপাতালে বার বার মুর্ছা যাচ্ছে। ছটফট করছে। গতকাল সকালে তাকে বাসায় নিয়ে যাই। বাসায় গেলে সে কখনো ছেলের স্কুলের জামা বুকে চেপে করে কাঁদছে। কখনো ব্যাগ। কখনো মোজা। ছেলের স্কুলের আইডিকার্ড ধরে বারবার তাতে চুমু খাচ্ছে। রাইয়ানের ব্যবহৃত বই-খাতা, কলম সব হাতিয়ে হাতিয়ে দেখছে। আমি বলেছি, থাক এ বাসায় ডেঙ্গু আছে। দ্বিতীয়বার মেয়েকে ডেঙ্গু মশায় কামড়ালে আমরা মেয়েকেও হারাবো। তার চেয়ে বরং আমরা অন্য বাসায় যাই। এসময় সে বলে, আমি এই বাসা ছাড়বো না। এখানেই থাকবো। কারণ এখানে আমার ছেলের স্মৃতি আছে। কোথায় যাব। কই নিয়ে যাবে। বাসা থেকে মেয়ের কাছে হাসপাতালে আসার পথে বলে, চলো ওর স্কুলের সামনে থেকে দেখে আসি। রাইয়ানের মৃত্যুতে শোক জানাতে স্কুলের সামনে বড় করে ব্যানার টাঙ্গিয়ে রেখেছে। রাইয়ান রাজধানীর সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ওইখানে নেমে ওর মা ব্যানারে ছেলের ছবিতে হাত বুলাচ্ছে আর কান্না করছে। বলে, আমি প্রতিদিন স্কুলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকবো।
তিনি বলেন, ছেলেকে যখন ভোর রাতে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যায় তখন শেষবার তার সঙ্গে কথা হয়। এসময় সে কোনো কথা বলেনি। শান্ত ছিল। শুধু তাকিয়ে ছিল। আমি তাকে আদর করে দিয়ে বলেছি, যাও বাবা, আল্লাহ ভরসা। আর কথা হয়নি আমার বাবার সঙ্গে। রাইয়ানের সাইন্সফিকশনের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। সে মঙ্গলগ্রহ, তারকারাজি, এই সংক্রান্ত প্রচুর ভিডিও দেখতো। দু্ই ভাই বোন সারাক্ষণ বাসা মাতিয়ে রাখতো। বাসার মধ্যে ব্যাট বল নিয়ে খেলতো। অফিস থেকে ফেরার পর আমার মোটরসাইকেলের শব্দ শুনে ভাই-বোন ছুটে আসতো। প্রতিযোগীতা করতো কে কার আগে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে। আমার হাত থেকে বাজারের ব্যাগ নিবে।
আমি আমার মেয়েকে কি বলবো। ছোট মেয়ে মালিহা এখনো জানে না তার ভাই বেঁচে নেই। সে বার বার বলে চলো নিচে যাই। এনআইসিইউতে ভাইয়ার সঙ্গে দেখা করে আসি। ছেলে মারা যাওয়ার আগে চিকিৎসক আশা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে তো আর বাঁচানো গেল না। আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত এখন কাটছে আতঙ্কের মধ্যে। মেয়েকে সুস্থ করে যেন বাড়ি ফিরতে পারি। সকলের দোয়া চাই। আর যেন কোনো বাবা মায়ের বুক খালি না হয় আমাদের মতন। এটাই প্রার্থনা করি।
৩০ জুলাই ডেঙ্গু পজিটিভ বলে রিপোর্ট পাওয়া যায় রাইয়ানের। এর মধ্যেই তার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। স্কয়ার হাসপাতালে নেয়ার পর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। ৩১শে জুলাই রাত তিনটার দিকে রাইয়ানকে এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ১লা আগস্ট তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ২রা আগস্ট দুপুরে মারা যায় রাইয়ান।
আর ছেলে মেয়ের জন্য দোয়া চান। ছোট বোন মালিহা বিনতে সরকার বাবাকে বার বার তাগিদ দেয় ভাইকে আইসিইউতে দেখতে যাবে। সে এখনো জানে না যে তার সার্বক্ষণিক খেলার সঙ্গী প্রিয় ভাইটি আর নেই। গত শুক্রবার দুপুরে ১১ বছর ৬ মাস বয়সী রাইয়ান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
রাইয়ানের বাবা এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডের জোনাল সেলস ম্যানেজার মমিন সরকার বলেন, ১১ বছর ৬ মাস বয়সী একটি বাচ্চাকে হারিয়ে একজন মা কেমন থাকতে পারে। তার মা জান্নাত আরা জাহান এখন পাগলপ্রায়। হাসপাতালে বার বার মুর্ছা যাচ্ছে। ছটফট করছে। গতকাল সকালে তাকে বাসায় নিয়ে যাই। বাসায় গেলে সে কখনো ছেলের স্কুলের জামা বুকে চেপে করে কাঁদছে। কখনো ব্যাগ। কখনো মোজা। ছেলের স্কুলের আইডিকার্ড ধরে বারবার তাতে চুমু খাচ্ছে। রাইয়ানের ব্যবহৃত বই-খাতা, কলম সব হাতিয়ে হাতিয়ে দেখছে। আমি বলেছি, থাক এ বাসায় ডেঙ্গু আছে। দ্বিতীয়বার মেয়েকে ডেঙ্গু মশায় কামড়ালে আমরা মেয়েকেও হারাবো। তার চেয়ে বরং আমরা অন্য বাসায় যাই। এসময় সে বলে, আমি এই বাসা ছাড়বো না। এখানেই থাকবো। কারণ এখানে আমার ছেলের স্মৃতি আছে। কোথায় যাব। কই নিয়ে যাবে। বাসা থেকে মেয়ের কাছে হাসপাতালে আসার পথে বলে, চলো ওর স্কুলের সামনে থেকে দেখে আসি। রাইয়ানের মৃত্যুতে শোক জানাতে স্কুলের সামনে বড় করে ব্যানার টাঙ্গিয়ে রেখেছে। রাইয়ান রাজধানীর সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ওইখানে নেমে ওর মা ব্যানারে ছেলের ছবিতে হাত বুলাচ্ছে আর কান্না করছে। বলে, আমি প্রতিদিন স্কুলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকবো।
তিনি বলেন, ছেলেকে যখন ভোর রাতে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যায় তখন শেষবার তার সঙ্গে কথা হয়। এসময় সে কোনো কথা বলেনি। শান্ত ছিল। শুধু তাকিয়ে ছিল। আমি তাকে আদর করে দিয়ে বলেছি, যাও বাবা, আল্লাহ ভরসা। আর কথা হয়নি আমার বাবার সঙ্গে। রাইয়ানের সাইন্সফিকশনের প্রতি খুব আগ্রহ ছিল। সে মঙ্গলগ্রহ, তারকারাজি, এই সংক্রান্ত প্রচুর ভিডিও দেখতো। দু্ই ভাই বোন সারাক্ষণ বাসা মাতিয়ে রাখতো। বাসার মধ্যে ব্যাট বল নিয়ে খেলতো। অফিস থেকে ফেরার পর আমার মোটরসাইকেলের শব্দ শুনে ভাই-বোন ছুটে আসতো। প্রতিযোগীতা করতো কে কার আগে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরবে। আমার হাত থেকে বাজারের ব্যাগ নিবে।
আমি আমার মেয়েকে কি বলবো। ছোট মেয়ে মালিহা এখনো জানে না তার ভাই বেঁচে নেই। সে বার বার বলে চলো নিচে যাই। এনআইসিইউতে ভাইয়ার সঙ্গে দেখা করে আসি। ছেলে মারা যাওয়ার আগে চিকিৎসক আশা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে তো আর বাঁচানো গেল না। আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত এখন কাটছে আতঙ্কের মধ্যে। মেয়েকে সুস্থ করে যেন বাড়ি ফিরতে পারি। সকলের দোয়া চাই। আর যেন কোনো বাবা মায়ের বুক খালি না হয় আমাদের মতন। এটাই প্রার্থনা করি।
৩০ জুলাই ডেঙ্গু পজিটিভ বলে রিপোর্ট পাওয়া যায় রাইয়ানের। এর মধ্যেই তার অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। স্কয়ার হাসপাতালে নেয়ার পর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করেন চিকিৎসকেরা। ৩১শে জুলাই রাত তিনটার দিকে রাইয়ানকে এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ১লা আগস্ট তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ২রা আগস্ট দুপুরে মারা যায় রাইয়ান।
No comments