ঘনিষ্ঠতার নতুন অধ্যায়ে পাকিস্তান ও রাশিয়া by তাহির মেহদি
অনেক
আগেই স্নায়ুযুদ্ধের অবসান হয়েছে এবং পাকিস্তান ও রাশিয়া কূটনীতিক,
প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অপরের আরো কাছাকাছি হওয়ার
দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
স্নায়ুযুদ্ধের বেশির ভাগ সময় পাকিস্তানের সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্কে উত্থান-পতন ছিল। ৫০, ৬০ ও ৭০-এর দশকে স্নায়ুযুদ্ধের বেশির ভাগ সময় ভারত ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ এবং পাকিস্তান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ। এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রেরও মিত্র এবং পাকিস্তানও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র। ফলে পাকিস্তান এখন স্নায়ুযুদ্ধের পরিস্থিতিতে নেই।
তাদের সম্পর্কের সবচেয়ে খারাপ সময়টা শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধ যখন দক্ষিণ এশিয়ায় আরো তীব্র হয়ে ওঠে, আফগানিস্তান হয়ে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার প্রক্সি যুদ্ধের রণাঙ্গন। অবশ্য সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙার পর ও এই অঞ্চলের গতিশীলতা বদলে যাওয়ার পর পাকিস্তান ও রাশিয়া তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করার চেষ্টা করছে। সাম্প্রতিক অতীতে উভয় দেশ পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন করে মূল্যায়ন করেছে।
স্নায়ুযুদ্ধের পরিস্থিতি আর টিকে না থাকার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান প্রথমে আশা করেছিল যে ভারতের সাথে উত্তেজনা হ্রাস পাবে এবং দেশটিকে অস্ত্র কিনতে হবে না, কারণ পাকিস্তানি সরকার মানব উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান এখন রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে চায়, সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যেই রুশ সামরিক বাহিনীর সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেছে।
রুশ সংবাদ সংস্থা স্পুটনিককে দেয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, তার সরকার মস্কোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনার কথা ভাবছে। পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা ও যৌথ মহড়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, তাদের যোগাযোগ আরো গভীর হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসলমাবাদ ও মস্কো তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা তাদের সামরিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করেছে। পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্কের প্রধান ক্ষেত্র হলো প্রতিরক্ষা। দুই পক্ষ সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে। রাশিয়া সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে এবং স্নায়ুযুদ্ধকালীন অতীত তিক্ততা ভুলে যেতে আগ্রহী। উভয় পক্ষ অতীতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি বছর বিশকেকে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন। এই বৈঠকটিকে পাকিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য বিবেচনা করা হচ্ছে। বৈঠককালে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান ইমরান।
বিশকেক ইমরান খান বৈঠককালে পুতিনের সাথে অস্ত্র চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে খবর প্রচারিত হয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সম্ভার কিনতে আগ্রহী পাকিস্তান। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছ থেকে পাকিস্তান ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যে ভারী ও মাঝারি জঙ্গি বিমান, মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, ট্যাংক, যুদ্ধ হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজ কিনতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা হ্রাস পাওয়ার পর অনেক বছর ধরে চীনই ছিল পাকিস্তানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী।
নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান এখন রাশিয়ার কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ‘পানসির’ ও টি-২০ ট্যাঙ্ক কিনতে যাচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ। এটি সত্য হলে এটি হবে রাশিয়ার সাথে পাকিস্তানের সবচেয়ে মূল্যবান চুক্তি। আর এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাথে রাশিয়ার সম্পর্কের ভারসাম্য ব্যাপকভাবে বদলে যেতে পারে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কিন্তু পাকিস্তানের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করার কঠোর নীতি অবলম্বন করেছিল। তারা ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়েছিল, নয়া দিল্লির কাছে প্রচুর সামরিক সম্ভার বিক্রি করত। তবে ২০১৪ সাল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। মস্কো ও ইসলামাবাদ প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করেছে। দুই দেশের নৌবাহিনী সম্প্রতি আরব সাগরে যৌথ মাদকবিরোধী মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করার ফলে কেবল অস্ত্র প্রতিযোগিতাই সৃষ্টি হয়নি, এই অঞ্চলে শক্তির নতুন ভারসাম্যও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এটা বিস্ময়ের বিষয় নয় যে পাকিস্তানের নিজস্ব উদ্ভাবিত ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে এবং নিখুঁত আঘাত হানতে পারে।
মস্কো ও আফগান শান্তি এখন বাস্তবতায়। সম্প্রতি পাকিস্তান ও রাশিয়া একমত হয়েছে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একসাথে কাজ করতে ও একে অপরের আঞ্চলিক উদ্যোগকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছে। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি ও আফগানিস্তানবিষয়ক রুশ রাষ্ট্রদূত জামির কাবুলভ বৈঠক করে আফগান শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করতে ও আঞ্চলিক উদ্যোগগুলোর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করতে একমত হন।
ডিসেম্বরে আফগান ইস্যু ও আঞ্চলিক শান্তির মতো ইস্যুতে প্রধান প্রতিবেশীদের একমতে আনতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত নভেম্বরে রাশিয়া আফগানিস্তানবিষয়ক এক শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে আফগান নেতারা ছাড়াও চীন, ইরান ও পাকিস্তান অংশ নেয়।
প্রতিরক্ষা ছাড়াও রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করতে চায় পাকিস্তান। রাশিয়া হলো জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ। পাকিস্তানের রয়েছে জ্বালানি স্বল্পতা। ফলে এ ক্ষেত্রেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়তে পারে।
রাশিয়ার স্থল বাহিনীর কমান্ডার আর্মি জেনারেল ওলেগ স্যালিকভ গত মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদরদফতরে পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল জাভেদ বাজওয়ার সাথে সাক্ষাত করেছেন। তারা এস সময নিরাপত্তা, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। জেনারেল বাজওয়া বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতার ফলে কেবল এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাতেই সহায়ক হবে না, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথও দেখাবে। রুশ জেনারেল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অর্জনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের অর্জন নিয়ে বিশ্বের আরো প্রশংসা করা উচিত।
উল্লেখ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে ১৯৪৮ সালের ১ মে। ২০১৮ সালের ১ মে পাকিস্তান এই সম্পর্কের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করে।
স্নায়ুযুদ্ধের বেশির ভাগ সময় পাকিস্তানের সাথে সোভিয়েত ইউনিয়নের সম্পর্কে উত্থান-পতন ছিল। ৫০, ৬০ ও ৭০-এর দশকে স্নায়ুযুদ্ধের বেশির ভাগ সময় ভারত ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘনিষ্ঠ এবং পাকিস্তান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ। এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রেরও মিত্র এবং পাকিস্তানও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র। ফলে পাকিস্তান এখন স্নায়ুযুদ্ধের পরিস্থিতিতে নেই।
তাদের সম্পর্কের সবচেয়ে খারাপ সময়টা শুরু হয় স্নায়ুযুদ্ধ যখন দক্ষিণ এশিয়ায় আরো তীব্র হয়ে ওঠে, আফগানিস্তান হয়ে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার প্রক্সি যুদ্ধের রণাঙ্গন। অবশ্য সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙার পর ও এই অঞ্চলের গতিশীলতা বদলে যাওয়ার পর পাকিস্তান ও রাশিয়া তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করার চেষ্টা করছে। সাম্প্রতিক অতীতে উভয় দেশ পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন করে মূল্যায়ন করেছে।
স্নায়ুযুদ্ধের পরিস্থিতি আর টিকে না থাকার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান প্রথমে আশা করেছিল যে ভারতের সাথে উত্তেজনা হ্রাস পাবে এবং দেশটিকে অস্ত্র কিনতে হবে না, কারণ পাকিস্তানি সরকার মানব উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান এখন রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কিনতে চায়, সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যেই রুশ সামরিক বাহিনীর সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেছে।
রুশ সংবাদ সংস্থা স্পুটনিককে দেয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, তার সরকার মস্কোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনার কথা ভাবছে। পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতা ও যৌথ মহড়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, তাদের যোগাযোগ আরো গভীর হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে ইসলমাবাদ ও মস্কো তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা তাদের সামরিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করেছে। পাকিস্তান-রাশিয়া সম্পর্কের প্রধান ক্ষেত্র হলো প্রতিরক্ষা। দুই পক্ষ সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে। রাশিয়া সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে এবং স্নায়ুযুদ্ধকালীন অতীত তিক্ততা ভুলে যেতে আগ্রহী। উভয় পক্ষ অতীতকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি বছর বিশকেকে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন। এই বৈঠকটিকে পাকিস্তানের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সাফল্য বিবেচনা করা হচ্ছে। বৈঠককালে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান ইমরান।
বিশকেক ইমরান খান বৈঠককালে পুতিনের সাথে অস্ত্র চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে খবর প্রচারিত হয়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সম্ভার কিনতে আগ্রহী পাকিস্তান। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছ থেকে পাকিস্তান ৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যে ভারী ও মাঝারি জঙ্গি বিমান, মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, ট্যাংক, যুদ্ধ হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজ কিনতে আগ্রহী। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা হ্রাস পাওয়ার পর অনেক বছর ধরে চীনই ছিল পাকিস্তানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী।
নয়া দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান এখন রাশিয়ার কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ‘পানসির’ ও টি-২০ ট্যাঙ্ক কিনতে যাচ্ছে বলে খবরে প্রকাশ। এটি সত্য হলে এটি হবে রাশিয়ার সাথে পাকিস্তানের সবচেয়ে মূল্যবান চুক্তি। আর এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের সাথে রাশিয়ার সম্পর্কের ভারসাম্য ব্যাপকভাবে বদলে যেতে পারে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কিন্তু পাকিস্তানের কাছে অস্ত্র বিক্রি না করার কঠোর নীতি অবলম্বন করেছিল। তারা ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়েছিল, নয়া দিল্লির কাছে প্রচুর সামরিক সম্ভার বিক্রি করত। তবে ২০১৪ সাল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। মস্কো ও ইসলামাবাদ প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করেছে। দুই দেশের নৌবাহিনী সম্প্রতি আরব সাগরে যৌথ মাদকবিরোধী মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
সম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করার ফলে কেবল অস্ত্র প্রতিযোগিতাই সৃষ্টি হয়নি, এই অঞ্চলে শক্তির নতুন ভারসাম্যও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এটা বিস্ময়ের বিষয় নয় যে পাকিস্তানের নিজস্ব উদ্ভাবিত ক্ষেপণাস্ত্র এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে এবং নিখুঁত আঘাত হানতে পারে।
মস্কো ও আফগান শান্তি এখন বাস্তবতায়। সম্প্রতি পাকিস্তান ও রাশিয়া একমত হয়েছে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একসাথে কাজ করতে ও একে অপরের আঞ্চলিক উদ্যোগকে সমর্থন করতে রাজি হয়েছে। সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি ও আফগানিস্তানবিষয়ক রুশ রাষ্ট্রদূত জামির কাবুলভ বৈঠক করে আফগান শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করতে ও আঞ্চলিক উদ্যোগগুলোর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করতে একমত হন।
ডিসেম্বরে আফগান ইস্যু ও আঞ্চলিক শান্তির মতো ইস্যুতে প্রধান প্রতিবেশীদের একমতে আনতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত নভেম্বরে রাশিয়া আফগানিস্তানবিষয়ক এক শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে আফগান নেতারা ছাড়াও চীন, ইরান ও পাকিস্তান অংশ নেয়।
প্রতিরক্ষা ছাড়াও রাশিয়ার সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করতে চায় পাকিস্তান। রাশিয়া হলো জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ। পাকিস্তানের রয়েছে জ্বালানি স্বল্পতা। ফলে এ ক্ষেত্রেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়তে পারে।
রাশিয়ার স্থল বাহিনীর কমান্ডার আর্মি জেনারেল ওলেগ স্যালিকভ গত মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডির সেনা সদরদফতরে পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল জাভেদ বাজওয়ার সাথে সাক্ষাত করেছেন। তারা এস সময নিরাপত্তা, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। জেনারেল বাজওয়া বলেন, দুই দেশের মধ্যকার সহযোগিতার ফলে কেবল এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠাতেই সহায়ক হবে না, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথও দেখাবে। রুশ জেনারেল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অর্জনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের অর্জন নিয়ে বিশ্বের আরো প্রশংসা করা উচিত।
উল্লেখ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে ১৯৪৮ সালের ১ মে। ২০১৮ সালের ১ মে পাকিস্তান এই সম্পর্কের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করে।
No comments