অক্ষমতা অধিকারের জন্য লড়াই ভারতের সামরিক বাহিনীর প্রবীণদের by কৃতি সিং
প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদির সরকার সামরিক বাহিনীতে থাকার সময় পঙ্গু হয়ে পড়া সাবেক
সামরিক সদস্যদের পেনশনের ওপর নতুন কর প্রস্তাব করায় ভারতের সামরিক বাহিনীর
প্রবীণেরা বেতনকে ভিন্ন ধরনের যুদ্ধ বিবেচনা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত ২৪ জুন সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস জানায়, যুদ্ধের সময় যারা আহত হয়েছে, তাদেরকে এখন অবসরের পর কর দিতে হবে। তবে কোনো আনুষ্ঠানিক সামরিক মেডিক্যাল বোর্ড যাদেরকে অক্ষম ঘোষণা করেছে, তাদেরকে এই কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। আগে উভয় শ্রেণির সদস্যরা কর থেকে রেহাই পেত।
পঙ্গুত্ব পেনশন স্বাভাবিক পেনশনের অতিরিক্ত পাওনা। পরিমাণের দিক থেকে সরকারের সার্বিক হিসাবে এটি খুবই সামান্য। এমনকি রাজস্ব পাদটীকায় এটি দেখানো পর্যন্ত হয় না। কিন্তু এটি আবেগময় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মোদি সরকার সামরিক বাহিনীর অর্জনকে বিশালাকারে প্রদর্শন করার প্রেক্ষাপটে এটি বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে।
করে অক্ষমতা
সামরিক বাহিনীর টুইটারে বলা হয়েছে, আয়কর থেকে রেহাই দেয়ার ব্যবস্থার ফলে অনেকেই অক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাইছে। অনেকে এমনকি সাধারণ রোগেও আক্রান্ত বলে দাবি করছে। এটি একটি ভয়াবহ প্রবণতা। অথচ জাতির সামনে এখন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেছে।
টেরিটরিয়াল আর্মির সাবেক সদস্য ও সিনিয়র আইনজীবী মেজর নবদ্বীপ সিং বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশ কিংবা সরকারের আপিল কমিটি বা বিচার বিভাগীয় নির্দেশনার পর অক্ষমতা পেনশন মঞ্জুর করা হয়।
তিন বলেন, ফলে কোনো ধরনের অপব্যবহারের কারণ নেই। সবক্ষেত্রেই প্রক্রিয়াটি কয়েকটি মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে যায়। ফলে অক্ষমতা নিয়ে জালিয়াতি করার কোনো অবকাশ নেই।
নবদ্বীপ সিং ‘মাইমড বাই সিস্টেম’ নামের একটি বইও লিখেছেন। এতে তিনি বাহিনীতে থাকার সময় অক্ষম হয়ে পড়া যেসব সামরিক সদস্য কখনো অক্ষমতা পেনশন পাননি, তাদের সত্যিকারের অবস্থা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের কারণে নয়, বরং ব্যক্তিগত অবহেলার কারণে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদেরকে এই পেনশন দেয়া হয় না। বিশেষ করে যারা স্থূল হয়ে পড়েছেন বা অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদেরকে এই পেনশন দেয়া হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় আয়করের আওতায় সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ভাতাকে করের আওতাভুক্ত বিবেচনা করা হয়। তবে যারা অক্ষম হয়ে পড়েছেন, তাদেরকে কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। যুক্তরাজ্যেও প্রায় একই ধরনের নিয়ম রয়েছে।
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পা হারানো পঙ্গু যুদ্ধাহত লে. জেনারেল বিজয় ওবেরিও বলেন, সেনা সদরদফতর বাস্তবতা উপলব্ধি না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছু সদস্য অন্যায় সুবিধা নিচ্ছে বলে যে কথা বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়। এই নির্দেশে কমান্ড ও কন্ট্রোলে ব্যর্থতাই ফুটে ওঠেছে। এর ফলে জনগণের প্রতি সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের আস্থাহীনতাই প্রতিফলিত হয়েছে।
কার্গিল যুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মেজর ডি পি সিং তার পা হারিয়েছিলেন শত্রুর গোলার আঘাতে। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তাদের পদোন্নতি নিশ্চিত করার জন্য সাধারণভাবে তাদের অক্ষমতা গোপন করে থাকে। কিছু জালিয়াতি থাকতেই পারে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ এই নির্দেশ মূল সমস্যার সমাধান করছে না। এখন দরকার এমন একটি ব্যবস্থা যাতে সামরিক বাহিনী তাদের আঘাতের কথাটি গোপন করতে না পারে। আর মেডিক্যাল বোর্ড যাতে কোনো চাপে নতি স্বীকার না করে, সেটিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আঘাত মোকাবিলা
সিং বলেন, তিনি গবেষণা করে দেখতে পেয়েছেন, সেনাবাহিনীর হাসপাতালগুলোতে পিটিএসডি সাপোর্ট সিস্টেম নেই। বস্তুত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের ১০টি পদ শূন্য রয়েছে।
তিনি বলেন, বয়স বাড়ার সাথে সাথে আঘাতজনিত জটিলতাও বাড়তে থাকে। ফলে তাদের আর্থিক প্রয়োজনও বাড়তে থাকে।
তিনি বলেন, এ নিয়ে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। যারা সত্যিই অক্ষম হয়ে পড়েছেন, তাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সামরিক বাহিনীর নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এশিয়া টাইমসের সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নবদ্বীপ সিং বলেন, করারোপ হলো সরকারের একটি সার্বভৌম কাজ। সরকারের করারোপের অধিকার আছে। তবে যে লোকটি পঙ্গু হয়ে গেছে, তাকে এই কর থেকে অব্যাহতি দেয়ার সময় তাকে খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরাটা ঠিক হয়নি।
গত ২৪ জুন সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডিরেক্ট ট্যাক্সেস জানায়, যুদ্ধের সময় যারা আহত হয়েছে, তাদেরকে এখন অবসরের পর কর দিতে হবে। তবে কোনো আনুষ্ঠানিক সামরিক মেডিক্যাল বোর্ড যাদেরকে অক্ষম ঘোষণা করেছে, তাদেরকে এই কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। আগে উভয় শ্রেণির সদস্যরা কর থেকে রেহাই পেত।
পঙ্গুত্ব পেনশন স্বাভাবিক পেনশনের অতিরিক্ত পাওনা। পরিমাণের দিক থেকে সরকারের সার্বিক হিসাবে এটি খুবই সামান্য। এমনকি রাজস্ব পাদটীকায় এটি দেখানো পর্যন্ত হয় না। কিন্তু এটি আবেগময় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মোদি সরকার সামরিক বাহিনীর অর্জনকে বিশালাকারে প্রদর্শন করার প্রেক্ষাপটে এটি বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে।
করে অক্ষমতা
সামরিক বাহিনীর টুইটারে বলা হয়েছে, আয়কর থেকে রেহাই দেয়ার ব্যবস্থার ফলে অনেকেই অক্ষমতা প্রদর্শন করতে চাইছে। অনেকে এমনকি সাধারণ রোগেও আক্রান্ত বলে দাবি করছে। এটি একটি ভয়াবহ প্রবণতা। অথচ জাতির সামনে এখন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ বেড়ে গেছে।
টেরিটরিয়াল আর্মির সাবেক সদস্য ও সিনিয়র আইনজীবী মেজর নবদ্বীপ সিং বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের সুপারিশ কিংবা সরকারের আপিল কমিটি বা বিচার বিভাগীয় নির্দেশনার পর অক্ষমতা পেনশন মঞ্জুর করা হয়।
তিন বলেন, ফলে কোনো ধরনের অপব্যবহারের কারণ নেই। সবক্ষেত্রেই প্রক্রিয়াটি কয়েকটি মেডিক্যাল বোর্ডের মাধ্যমে যায়। ফলে অক্ষমতা নিয়ে জালিয়াতি করার কোনো অবকাশ নেই।
নবদ্বীপ সিং ‘মাইমড বাই সিস্টেম’ নামের একটি বইও লিখেছেন। এতে তিনি বাহিনীতে থাকার সময় অক্ষম হয়ে পড়া যেসব সামরিক সদস্য কখনো অক্ষমতা পেনশন পাননি, তাদের সত্যিকারের অবস্থা তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে যে সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমের কারণে নয়, বরং ব্যক্তিগত অবহেলার কারণে অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদেরকে এই পেনশন দেয়া হয় না। বিশেষ করে যারা স্থূল হয়ে পড়েছেন বা অতিরিক্ত ধূমপানের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তাদেরকে এই পেনশন দেয়া হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় আয়করের আওতায় সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ভাতাকে করের আওতাভুক্ত বিবেচনা করা হয়। তবে যারা অক্ষম হয়ে পড়েছেন, তাদেরকে কর থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। যুক্তরাজ্যেও প্রায় একই ধরনের নিয়ম রয়েছে।
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে পা হারানো পঙ্গু যুদ্ধাহত লে. জেনারেল বিজয় ওবেরিও বলেন, সেনা সদরদফতর বাস্তবতা উপলব্ধি না করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিছু সদস্য অন্যায় সুবিধা নিচ্ছে বলে যে কথা বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়। এই নির্দেশে কমান্ড ও কন্ট্রোলে ব্যর্থতাই ফুটে ওঠেছে। এর ফলে জনগণের প্রতি সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের আস্থাহীনতাই প্রতিফলিত হয়েছে।
কার্গিল যুদ্ধের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন মেজর ডি পি সিং তার পা হারিয়েছিলেন শত্রুর গোলার আঘাতে। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা তাদের পদোন্নতি নিশ্চিত করার জন্য সাধারণভাবে তাদের অক্ষমতা গোপন করে থাকে। কিছু জালিয়াতি থাকতেই পারে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ এই নির্দেশ মূল সমস্যার সমাধান করছে না। এখন দরকার এমন একটি ব্যবস্থা যাতে সামরিক বাহিনী তাদের আঘাতের কথাটি গোপন করতে না পারে। আর মেডিক্যাল বোর্ড যাতে কোনো চাপে নতি স্বীকার না করে, সেটিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
আঘাত মোকাবিলা
সিং বলেন, তিনি গবেষণা করে দেখতে পেয়েছেন, সেনাবাহিনীর হাসপাতালগুলোতে পিটিএসডি সাপোর্ট সিস্টেম নেই। বস্তুত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের ১০টি পদ শূন্য রয়েছে।
তিনি বলেন, বয়স বাড়ার সাথে সাথে আঘাতজনিত জটিলতাও বাড়তে থাকে। ফলে তাদের আর্থিক প্রয়োজনও বাড়তে থাকে।
তিনি বলেন, এ নিয়ে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। যারা সত্যিই অক্ষম হয়ে পড়েছেন, তাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো অধিকার সামরিক বাহিনীর নেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এশিয়া টাইমসের সামনে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নবদ্বীপ সিং বলেন, করারোপ হলো সরকারের একটি সার্বভৌম কাজ। সরকারের করারোপের অধিকার আছে। তবে যে লোকটি পঙ্গু হয়ে গেছে, তাকে এই কর থেকে অব্যাহতি দেয়ার সময় তাকে খলনায়ক হিসেবে তুলে ধরাটা ঠিক হয়নি।
No comments