বর্ষায় বুড়িগঙ্গায় এসেছে নতুন রূপ by আশিকুজ্জামান
ঠাসবুনট
এই শহরে নির্মল পরিবেশে প্রশান্তির নিশ্বাস নেওয়ার জায়গা তেমনটা নেই। এমনি
পরিবেশের খোঁজে মতিঝিল থেকে পরিবার নিয়ে বুড়িগঙ্গার পাড়ে বেড়াতে এসেছেন
ব্যবসায়ী রাকিব উদ্দিন।
নদীর পাড়ে খানিকটা জিরিয়ে নেওয়ার পর নৌকায় চড়ার বায়না করে রাকিবের ছোট্ট দুই ছেলে। তাদের আবদার মেটাতে পরিবার নিয়ে নৌকায় উঠে পড়লেন তিনি। সন্ধ্যার খানিক আগে মৃদুমন্দ বাতাসে নৌকায় ঘুরে শিশু দুটির সে কী উচ্ছ্বাস। রাকিব বলেন, ঘন বসতির এই শহরে মুক্ত জায়গায় নিশ্বাস নেওয়ার মতো কোনো স্থান নেই বলে এখানে আসা। কর্মব্যস্ততা ভুলে নিজেদের মতো করে একটু সময় কাটানো যায়।
বর্ষায় বুড়িগঙ্গায় নতুন পানি এসেছে। পানিতে নোংরা এবং কালচে ভাব অনেকটা কেটে গেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় নদীপাড়ের পরিবেশ আগের তুলনায় ভালো হয়েছে। এমন পরিবেশে বুড়িগঙ্গায় নৌকাভ্রমণে নগরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন অনেকে। কেউ আসছে পরিবার–স্বজন নিয়ে। কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। নদীর মনোরম পরিবেশে অবসর সময় কাটানোর স্থান হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গা।
গতকাল শনিবার ঘুরতে আসা কয়েকজন তরুণ বলেন, বুড়িগঙ্গার নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ময়লা–কালো পানির দৃশ্য। দুর্গন্ধময় এক নদী, যার দুই পাড় দখলদারদের কবলে। কিন্তু সেই পরিচিত পরিবেশ পাল্টে বুড়িগঙ্গায় এসেছে নতুন রূপ।
বর্ষায় বেড়েছে নদীর পানি। এখন বুড়িগঙ্গার পাড়ে গেলে চোখে পড়বে নৌকায় বন্ধু বা পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘোরাঘুরি। নতুন রূপের এই বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে উঠেছে নগরবাসীর বিনোদনের অন্যতম স্থান।
গতকাল বিকেলে আকাশ ছিল মেঘলা, সঙ্গে মৃদু বাতাস। বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে শুনে উত্তরা থেকে বুড়িগঙ্গার পাড়ে এসেছেন ব্যবসায়ী তোফাজ্জল আলী। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগেও পুরান ঢাকায় থাকতাম। কিন্তু ঘিঞ্জি পরিবেশ পরিবারের সদস্যরা থাকতে চায় না। তাই মিরপুর চলে গেছি। বর্ষায় সুযোগ পেলে নদীতে ঘুরতে আসি।’ তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন অব্যবস্থাপনায় বুড়িগঙ্গা তার সৌন্দর্য হারিয়েছে। বৃষ্টির মৌসুমে নদী কিছুটা সতেজ হয়ে ওঠে। সব সময় নদীর এমন রূপই চাই। নদীদূষণ আর দখল বন্ধ করে, প্রশাসন চেষ্টা করলেই নদীকে তার আগের রূপে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব।’
গতকাল বিকেলে দেখা যায়, নতুন পানিতে বুড়িগঙ্গা টইটম্বুর। দর্শনার্থীরা সেই পানিতে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকে দল বেঁধে গোসল করছে নদীতে নেমেছে। এপার থেকে ওপারে সাঁতরে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কয়েকজন লঞ্চ কর্মচারী। গত কয়েক মাসে নদীর অধিকাংশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় অনেকে দল বেঁধে পাড়ে বসে গল্প করছেন, অনেকে হাঁটছেন। নদীর এই রূপ দেখে খুশি স্থানীয়রা ও নদীপাড়ে ঘুরতে আসা মানুষেরা। তবে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টিতে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় অনেক নৌকাযাত্রীকেই। নৌকা মাঝির সঙ্গে থাকা পলিথিন মাথায় নিয়ে অথবা ব্যক্তিগত ছাতা মাথায় পারাপার হতে হয়। এ সময় নদী পাড়ে মানুষ কিছুটা কম থাকলেও বিকেল গড়াতে বাড়ে মানুষের ভিড়।
নদীর পাড়ে বসে ছিলেন স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী মামুন হোসেন। কিছুটা সময় নিয়ে স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘নদীতে গোসল করা, মাছ ধরা—এসব করেই ছেলেবেলা কেটেছিল। কিন্তু সেই অবস্থা এখন নেই। গোসল করা তো দূরের কথা মাঝেমধ্যে দূষণে নদীর পানিতে পা লাগলেও পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হয়। কয়েক যুবককে সাঁতার কাটতে দেখে ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল।’
নদীর এই রূপ দেখতে দর্শনার্থীদের দেখে হাসি ফুটেছে মাঝিদের। কারণ দর্শনার্থীদের অধিকাংশই নৌকায় নদী ভ্রমণ করতে আগ্রহী। নৌকায় ওঠার জন্য মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সদরঘাট টার্মিনালের কাছাকাছি নৌকাঘাট থেকে দর্শনার্থীরা ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়ান নদীর বুকে। ঘণ্টার ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে বিকেলে ভাড়া কিছুটা বেশি দাবি করেন মাঝিরা।
নদীর এই রূপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল হাসান গত শুক্রবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ব্যস্ত রুটিন আর যানজটের শহরে গিয়েছিলাম বুড়িগঙ্গার পাড়ে। নতুন পানি আর খোলামেলা পরিবেশের কারণে যা আমাদের জন্য অমৃতের মতোই। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।’
এদিকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সদরঘাট নৌপুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদরঘাট নৌপথের নিরাপত্তায় সব সময় একটি টহল দল দায়িত্বে থাকে। আমরা দর্শনার্থীদের সচেতন করি, তাঁরা যেন নিরাপদ দূরত্বে থেকে ভ্রমণ করেন। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা প্রস্তুত থাকি।’
নদীর পাড়ে খানিকটা জিরিয়ে নেওয়ার পর নৌকায় চড়ার বায়না করে রাকিবের ছোট্ট দুই ছেলে। তাদের আবদার মেটাতে পরিবার নিয়ে নৌকায় উঠে পড়লেন তিনি। সন্ধ্যার খানিক আগে মৃদুমন্দ বাতাসে নৌকায় ঘুরে শিশু দুটির সে কী উচ্ছ্বাস। রাকিব বলেন, ঘন বসতির এই শহরে মুক্ত জায়গায় নিশ্বাস নেওয়ার মতো কোনো স্থান নেই বলে এখানে আসা। কর্মব্যস্ততা ভুলে নিজেদের মতো করে একটু সময় কাটানো যায়।
বর্ষায় বুড়িগঙ্গায় নতুন পানি এসেছে। পানিতে নোংরা এবং কালচে ভাব অনেকটা কেটে গেছে। এ ছাড়া সম্প্রতি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় নদীপাড়ের পরিবেশ আগের তুলনায় ভালো হয়েছে। এমন পরিবেশে বুড়িগঙ্গায় নৌকাভ্রমণে নগরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন অনেকে। কেউ আসছে পরিবার–স্বজন নিয়ে। কেউবা আবার বন্ধুদের সঙ্গে। নদীর মনোরম পরিবেশে অবসর সময় কাটানোর স্থান হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গা।
গতকাল শনিবার ঘুরতে আসা কয়েকজন তরুণ বলেন, বুড়িগঙ্গার নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ময়লা–কালো পানির দৃশ্য। দুর্গন্ধময় এক নদী, যার দুই পাড় দখলদারদের কবলে। কিন্তু সেই পরিচিত পরিবেশ পাল্টে বুড়িগঙ্গায় এসেছে নতুন রূপ।
বর্ষায় বেড়েছে নদীর পানি। এখন বুড়িগঙ্গার পাড়ে গেলে চোখে পড়বে নৌকায় বন্ধু বা পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘোরাঘুরি। নতুন রূপের এই বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে উঠেছে নগরবাসীর বিনোদনের অন্যতম স্থান।
গতকাল বিকেলে আকাশ ছিল মেঘলা, সঙ্গে মৃদু বাতাস। বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে শুনে উত্তরা থেকে বুড়িগঙ্গার পাড়ে এসেছেন ব্যবসায়ী তোফাজ্জল আলী। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগেও পুরান ঢাকায় থাকতাম। কিন্তু ঘিঞ্জি পরিবেশ পরিবারের সদস্যরা থাকতে চায় না। তাই মিরপুর চলে গেছি। বর্ষায় সুযোগ পেলে নদীতে ঘুরতে আসি।’ তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন অব্যবস্থাপনায় বুড়িগঙ্গা তার সৌন্দর্য হারিয়েছে। বৃষ্টির মৌসুমে নদী কিছুটা সতেজ হয়ে ওঠে। সব সময় নদীর এমন রূপই চাই। নদীদূষণ আর দখল বন্ধ করে, প্রশাসন চেষ্টা করলেই নদীকে তার আগের রূপে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব।’
গতকাল বিকেলে দেখা যায়, নতুন পানিতে বুড়িগঙ্গা টইটম্বুর। দর্শনার্থীরা সেই পানিতে নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকে দল বেঁধে গোসল করছে নদীতে নেমেছে। এপার থেকে ওপারে সাঁতরে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কয়েকজন লঞ্চ কর্মচারী। গত কয়েক মাসে নদীর অধিকাংশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করায় অনেকে দল বেঁধে পাড়ে বসে গল্প করছেন, অনেকে হাঁটছেন। নদীর এই রূপ দেখে খুশি স্থানীয়রা ও নদীপাড়ে ঘুরতে আসা মানুষেরা। তবে দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টিতে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয় অনেক নৌকাযাত্রীকেই। নৌকা মাঝির সঙ্গে থাকা পলিথিন মাথায় নিয়ে অথবা ব্যক্তিগত ছাতা মাথায় পারাপার হতে হয়। এ সময় নদী পাড়ে মানুষ কিছুটা কম থাকলেও বিকেল গড়াতে বাড়ে মানুষের ভিড়।
নদীর পাড়ে বসে ছিলেন স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী মামুন হোসেন। কিছুটা সময় নিয়ে স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘নদীতে গোসল করা, মাছ ধরা—এসব করেই ছেলেবেলা কেটেছিল। কিন্তু সেই অবস্থা এখন নেই। গোসল করা তো দূরের কথা মাঝেমধ্যে দূষণে নদীর পানিতে পা লাগলেও পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হয়। কয়েক যুবককে সাঁতার কাটতে দেখে ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে গেল।’
নদীর এই রূপ দেখতে দর্শনার্থীদের দেখে হাসি ফুটেছে মাঝিদের। কারণ দর্শনার্থীদের অধিকাংশই নৌকায় নদী ভ্রমণ করতে আগ্রহী। নৌকায় ওঠার জন্য মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সদরঘাট টার্মিনালের কাছাকাছি নৌকাঘাট থেকে দর্শনার্থীরা ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরে বেড়ান নদীর বুকে। ঘণ্টার ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে বিকেলে ভাড়া কিছুটা বেশি দাবি করেন মাঝিরা।
নদীর এই রূপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যাংক কর্মকর্তা নাজমুল হাসান গত শুক্রবার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ব্যস্ত রুটিন আর যানজটের শহরে গিয়েছিলাম বুড়িগঙ্গার পাড়ে। নতুন পানি আর খোলামেলা পরিবেশের কারণে যা আমাদের জন্য অমৃতের মতোই। চাইলে ঘুরে আসতে পারেন।’
এদিকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সদরঘাট নৌপুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদরঘাট নৌপথের নিরাপত্তায় সব সময় একটি টহল দল দায়িত্বে থাকে। আমরা দর্শনার্থীদের সচেতন করি, তাঁরা যেন নিরাপদ দূরত্বে থেকে ভ্রমণ করেন। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা প্রস্তুত থাকি।’
বর্ষায় বেড়েছে নদীর পানি। এখন বুড়িগঙ্গার পাড়ে গেলে চোখে পড়বে বন্ধু বা পরিবার–পরিজন নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে এসেছেন অনেকে। নতুন রূপের এই বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে উঠেছে নগরবাসীর বিনোদনের অন্যতম স্থান। ছবি: দীপু মালাকার |
No comments