আমানত উত্তোলনে হয়রানি, দুর্ভোগ by এম এম মাসুদ
গ্রাহকদের
আমানত উত্তোলনে অলিখিত কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশের বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক
ব্যাংক। অনেকেই নিজ ব্যাংকের শাখা থেকে বড় অঙ্কের টাকা তুলতে পারছেন না।
তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে গ্রাহকের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে বড় অঙ্কের
টাকা উত্তোলন করতে পারছেন। তাতেও সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা
সাপেক্ষে নিতে পারছেন গ্রাহকরা। রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের
শাখা ঘুরে ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর বাইরের
শাখারও একই চিত্র।
বর্তমানে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট চলছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে, বড় কোনো চেক এলে কোনো কোনো ব্যাংক টাকা দিতে পারছে না। ক্ষেত্রবিশেষে এমনও শোনা যাচ্ছে, ৫ লাখ টাকার চেক রিলিজ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যাংকে রাখা তাদের বাল্ক ডিপোজিট সরিয়ে নিচ্ছে। কোনো ব্যাংক তা পরিশোধে গড়িমসি করলেও চাপ প্রয়োগ করে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ আমানতকারীরা।
অন্যদিকে তারল্য সংকটের কারণে বেসরকা?রি খাতে ঋণ প্রবৃ?দ্ধি কমে গত ৬ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। ফলে সময়মতো ঋণ না পাওয়ায় ভুগছেন দেশি উদ্যোক্তারা। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কমতে থাকা ঋণ প্রবৃদ্ধি জুন মাস শেষে ১১.২৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.২১ শতাংশ কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে ব্যাংক খাতে কোনো তারল্য সংকট নেই বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে তিনি এ দাবি করেন। তার মতে, চল?তি বছরের জুন শেষে ব্যাংকগুলোতে ৮৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। সেই হিসাবে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্র্তারা বলছেন, গ্রাহকরা সর্বোচ্চ কত টাকা তুলতে পারবে বা পারবে না, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো সার্কুলার জারি করে নাই। তবে ব্যাংক কোম্পানি আইনে এ বিষয়ে সুনিদৃষ্ট করে বলা আছে। একজন গ্রাহক সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকার উপরে উত্তোলন করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজারের অনুমতি নিতে হয়। তিনি বলেন, ৫০ হাজারের উপরে গ্রাহক যদি সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা তুলতে চায়, সেটা নির্ভর করছে গ্রাহক ও ব্যাংকের সম্পর্কের ওপর।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেন, বেশির ভাগ ব্যাংকে কমবেশি ২০-৩০ হাজার কোটি টাকা পুঁজি থাকার কথা। এগুলো সাধারণ মানুষের গচ্ছিত টাকা। ব্যাংক তার নিয়মানুযায়ী এসব টাকা ঋণ দিয়ে ব্যবসা করে থাকে। সুসাশন চালু থাকলে কখনও কোনো ব্যাংকের অর্থ সংকটে পড়ার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। প্রথমে অনিয়ম দুর্নীতি করে যাকে তাকে বাল্ক প্যাকেজে ঋণ দেয়া হয়। এসব ঋণগ্রহীতা এখন খেলাপি।
মতিঝিলে কথা হয় একটি বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান কাজী সাজেদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচামাল কিনতে আরেক প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেয়ার জন্য চেক দিয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার লেনদেনকারী ব্যাংক ওই প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিতে পারেনি। ফেরত দিয়েছে। বলেছে, এত বড় অংকের টাকা দেয়া সম্ভব নয়।
সরজমিন দেখা গেছে, মতিঝিলের একটি ব্যাংকের শাখায় ৫০ লাখ টাকার চেক নিয়ে বসে আছেন একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা বারবার তাকে অপেক্ষা করতে বলছেন। ফলে এ্যাকাউন্টে টাকা থাকলেও চেক দিয়ে টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। এটা শুধু ঘটছে বড় বড় গ্রাহকের ক্ষেত্রে। তবে ছোট আকারের এ্যাকাউন্টের গ্রাহকরা সহজেই টাকা তুলতে পারছেন।
আরেকটি বেসরকারী ব্যাংকে দেখা গেছে, একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী তার ব্যবসার কাজে ৩০ লাখ টাকা তুলতে এসেছেন। কিন্তু তাকে বলা হলো, এত টাকা দেয়া সম্ভব নয়। এর জন্য সিনিয়র অফিসারের অনুমতি লাগবে। ব্যবসায়ী আরও জানান, আগেও টাকা তুলতে এসেছিলাম। ওই সময় কোনো কথা ছাড়াই টাকা পেয়েছি। কোনো ঝামেলার মুখোমুখি হইনি। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে টাকা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, মনে হয় যে পরিমাণ টাকা তুলতে এসেছি ব্যাংকে সেই পরিমাণ টাকাই নেই। তা ছাড়া টাকা না দেয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন তিনি।
আরেকটি ব্যাংকের শাখায় টাকা তোলার জন্য এসেছেন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। টাকা উত্তোলনে জন্য তিনি তার এক কর্মীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর বড় অংকের টাকা না পেয়ে ওই কর্মী জানালেন ব্যাংক এত টাকা দিতে পারছে না। বড় স্যারের অনুমতি লাগবে। পরে ব্যবসায়ী সিনিয়র কর্তাকর্তার কাছে গিয়েও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। হতাশ হয়ে কম টাকা তুলে ফিরতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, প্রাইভেট ব্যাংকের তারল্য সংকটের জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম উপেক্ষা করে তারা বেপরোয়াভাবে ঋণ দিয়েছে।
এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ব্যাংকিং খাতে যে লুটপাট হয়েছে, তার খেসারত এখন ভালো ব্যবসায়ীদের দিতে হচ্ছে। ব্যাংকে গেলে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। ঋণ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকাও নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি বলেন, সাবেক ফারমার্স ব্যাংকে মালিকদের লুটপাটের কারণে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। তার মাসুল দিয়ে যাচ্ছে পুরো ব্যাংকিং খাত।
বর্তমানে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট চলছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে ঠেকেছে যে, বড় কোনো চেক এলে কোনো কোনো ব্যাংক টাকা দিতে পারছে না। ক্ষেত্রবিশেষে এমনও শোনা যাচ্ছে, ৫ লাখ টাকার চেক রিলিজ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এদিকে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বেসরকারি ব্যাংকে রাখা তাদের বাল্ক ডিপোজিট সরিয়ে নিচ্ছে। কোনো ব্যাংক তা পরিশোধে গড়িমসি করলেও চাপ প্রয়োগ করে টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ আমানতকারীরা।
অন্যদিকে তারল্য সংকটের কারণে বেসরকা?রি খাতে ঋণ প্রবৃ?দ্ধি কমে গত ৬ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। ফলে সময়মতো ঋণ না পাওয়ায় ভুগছেন দেশি উদ্যোক্তারা। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে কমতে থাকা ঋণ প্রবৃদ্ধি জুন মাস শেষে ১১.২৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.২১ শতাংশ কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে ব্যাংক খাতে কোনো তারল্য সংকট নেই বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে তিনি এ দাবি করেন। তার মতে, চল?তি বছরের জুন শেষে ব্যাংকগুলোতে ৮৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। সেই হিসাবে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্র্তারা বলছেন, গ্রাহকরা সর্বোচ্চ কত টাকা তুলতে পারবে বা পারবে না, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো সার্কুলার জারি করে নাই। তবে ব্যাংক কোম্পানি আইনে এ বিষয়ে সুনিদৃষ্ট করে বলা আছে। একজন গ্রাহক সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকার উপরে উত্তোলন করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজারের অনুমতি নিতে হয়। তিনি বলেন, ৫০ হাজারের উপরে গ্রাহক যদি সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা তুলতে চায়, সেটা নির্ভর করছে গ্রাহক ও ব্যাংকের সম্পর্কের ওপর।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেন, বেশির ভাগ ব্যাংকে কমবেশি ২০-৩০ হাজার কোটি টাকা পুঁজি থাকার কথা। এগুলো সাধারণ মানুষের গচ্ছিত টাকা। ব্যাংক তার নিয়মানুযায়ী এসব টাকা ঋণ দিয়ে ব্যবসা করে থাকে। সুসাশন চালু থাকলে কখনও কোনো ব্যাংকের অর্থ সংকটে পড়ার কথা নয়। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। প্রথমে অনিয়ম দুর্নীতি করে যাকে তাকে বাল্ক প্যাকেজে ঋণ দেয়া হয়। এসব ঋণগ্রহীতা এখন খেলাপি।
মতিঝিলে কথা হয় একটি বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান কাজী সাজেদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচামাল কিনতে আরেক প্রতিষ্ঠানকে টাকা দেয়ার জন্য চেক দিয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার লেনদেনকারী ব্যাংক ওই প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিতে পারেনি। ফেরত দিয়েছে। বলেছে, এত বড় অংকের টাকা দেয়া সম্ভব নয়।
সরজমিন দেখা গেছে, মতিঝিলের একটি ব্যাংকের শাখায় ৫০ লাখ টাকার চেক নিয়ে বসে আছেন একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা বারবার তাকে অপেক্ষা করতে বলছেন। ফলে এ্যাকাউন্টে টাকা থাকলেও চেক দিয়ে টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। এটা শুধু ঘটছে বড় বড় গ্রাহকের ক্ষেত্রে। তবে ছোট আকারের এ্যাকাউন্টের গ্রাহকরা সহজেই টাকা তুলতে পারছেন।
আরেকটি বেসরকারী ব্যাংকে দেখা গেছে, একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী তার ব্যবসার কাজে ৩০ লাখ টাকা তুলতে এসেছেন। কিন্তু তাকে বলা হলো, এত টাকা দেয়া সম্ভব নয়। এর জন্য সিনিয়র অফিসারের অনুমতি লাগবে। ব্যবসায়ী আরও জানান, আগেও টাকা তুলতে এসেছিলাম। ওই সময় কোনো কথা ছাড়াই টাকা পেয়েছি। কোনো ঝামেলার মুখোমুখি হইনি। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে টাকা দেয়া সম্ভব নয়। তিনি বলেন, মনে হয় যে পরিমাণ টাকা তুলতে এসেছি ব্যাংকে সেই পরিমাণ টাকাই নেই। তা ছাড়া টাকা না দেয়ার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন তিনি।
আরেকটি ব্যাংকের শাখায় টাকা তোলার জন্য এসেছেন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম। টাকা উত্তোলনে জন্য তিনি তার এক কর্মীকে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর বড় অংকের টাকা না পেয়ে ওই কর্মী জানালেন ব্যাংক এত টাকা দিতে পারছে না। বড় স্যারের অনুমতি লাগবে। পরে ব্যবসায়ী সিনিয়র কর্তাকর্তার কাছে গিয়েও কোনো সুরাহা করতে পারেননি। হতাশ হয়ে কম টাকা তুলে ফিরতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, প্রাইভেট ব্যাংকের তারল্য সংকটের জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম উপেক্ষা করে তারা বেপরোয়াভাবে ঋণ দিয়েছে।
এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ব্যাংকিং খাতে যে লুটপাট হয়েছে, তার খেসারত এখন ভালো ব্যবসায়ীদের দিতে হচ্ছে। ব্যাংকে গেলে টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। ঋণ দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকাও নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি বলেন, সাবেক ফারমার্স ব্যাংকে মালিকদের লুটপাটের কারণে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। তার মাসুল দিয়ে যাচ্ছে পুরো ব্যাংকিং খাত।
No comments