চামড়া নিয়ে কান্না
কোরবানির
পশুর চামড়া নিয়ে এক সময় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা ছিল।
মুহূর্তে দাম উঠতো। যা ৩-৪ হাজারে গিয়েও ঠেকতো। আর সন্ধ্যার পর অন্ধকারে
চামড়ার বাজার দখল নিতে গোলাগুলি পর্যন্ত হতো। ঘটেছে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও।
এখন দৃশ্যপট পাল্টেছে। পাড়ায় আগের দৃশ্য নেই। চামড়া কিনতে নেই তোড়জোড়, নেই প্রতিযোগিতাও।
আর গোলাগুলিও নেই। বরং এবার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গী হয়েছে চোখের জল। লাভ দূরে থাক, পুরো পুঁজিই ভেসে গেছে চোখের জলের সঙ্গে।
দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তার চেয়েও অনেক কম দামে কেনা হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া। আবার ক্রেতা না পেয়ে বিনামূল্যেও মৌসুমি ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসার এতিমখানায় পশুর চামড়া দিয়ে দিয়েছেন অনেকে। এরপরও মুক্তি নেই।
মৌসুুমি ব্যবসায়ীদের মতে, আড়ৎদাররা প্রথম দিকে চামড়াপ্রতি ১৫০ টাকা দর দেয়। সন্ধ্যার পর তো আর ক্রেতাই ছিল না। বিনামূল্যে নেয়ার লোকও মেলেনি। কারণ সংরক্ষণের জন্য লবণের দাম এক লাফে কয়েকগুণ বেশি, তাই সেই উপায়ও ছিল না।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন সড়কের দু’পাশে ছিল চামড়ার স্তূপ। ক্রেতা নেই। খোঁজ মিলছিল না চামড়ার মালিকেরও। একপর্যায়ে সব ফেলে বিক্রেতা উধাও। কারণ পচনশীল চামড়া গলার ফাঁস হওয়ার উপক্রম। এমন অবস্থায় চামড়া ফেলে বাড়ি ফিরে যাওয়াই নিরাপদ যেন।
নগরীর আতুরার ডিপো, বিবিরহাট, সল্টগোলাসহ অনেক স্থানে লক্ষাধিক চামড়া ছিল বেওয়ারিশ অবস্থায়। শেষ পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এগিয়ে এলো। ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে রোগ জীবাণু থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেয়া হয়েছে দেড় লাখ চামড়া।
এদিকে সংগ্রহ করা চামড়া নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। শনিবার থেকে চামড়া কেনা শুরুর কথা থাকলেও ঢাকার ট্যানারি মালিকরা এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামের কোনো আড়ৎদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তাই তারা উদ্বিগ্ন।
নগরীর আতুরার ডিপোর চামড়ার আড়ৎদার শাহ আলম জানান, ট্যানারি মালিকরা যোগাযোগ না করায় ঈদের দিন থেকে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা বিপুল পরিমাণ চামড়া বিক্রি করে টাকা উঠানো যাবে কি না তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন চট্টগ্রামের আড়ৎদাররা।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ১১২ জন তালিকাভুক্ত আড়ৎদারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি চামড়া কিনেননি এবার। গুদামসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থাকলেও ক্যাশ টাকার অভাবে তারা চামড়া কিনতে পারেননি। তারা বলছেন, গত দুইবছর ধরে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করা চামড়ার টাকা তারা এখনো পাননি। ফলে এবারও তারা টাকা বাকি রাখার আশঙ্কায় চামড়া কিনেননি।
ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রামে এবার ছয় লাখের মতো পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে দেড় লাখ পিস চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। চার লাখ পিসের মতো চামড়া বিভিন্ন আড়ৎদার কিনেছেন। গ্রাম-গঞ্জের ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসায়ও বেশকিছু চামড়া কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা কেনা শুরু করলে এসব চামড়া নগরীতে চলে আসবে। পরে সব চামড়া যাবে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ করেননি। চামড়াগুলো তারা কিনবেন নাকি আবারো আমাদেরকে বাকিতে দিয়ে আসতে হবে, তা বুঝতে পারছি না।
শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজের আড়ৎদার আবুল কাসেম বলেন, ঈদের দিন চামড়াগুলো না কিনলে পচে যেত। তবে এখন কিনে সেগুলো বিক্রি কিভাবে করব তা নিয়ে চিন্তায় আছি। এবারও যদি ঢাকার ট্যানারি মালিকদের বকেয়ায় চামড়া দিতে হয় তাহলে আগামী বছর হয়তো চট্টগ্রামে আর কোনো আড়ৎদার চামড়া কিনবেন না।
আড়ৎদাররা দাবি করেন, আগে চট্টগ্রামের ট্যানারিগুলো সচল থাকা অবস্থায় চামড়া বিক্রির টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। তারা ঠিকমতো টাকাগুলো পরিশোধ করত। কিন্তু বর্তমানে পরিবেশগত জটিলতায় ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে চামড়া ব্যবসায়ীরা মহাদুর্ভোগে পড়েছেন। তারা বন্ধ থাকা ২০টি ট্যানারির মধ্যে অন্তত ৫টি বিশেষ ব্যবস্থায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়ৎদার সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত চার লাখ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই চামড়া সংরক্ষণ এবং বিক্রি করার মতো অবকাঠামো চট্টগ্রামে নেই। ঢাকার ট্যানারি মালিকেরাও কোনো যোগাযোগ করছেন না। এই অবস্থায় আমাদেরকে ভবিষ্যতে কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে তা এখনো বুঝতে পারছি না। তিনিও চট্টগ্রামের বন্ধ থাকা ট্যানারিগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় চালুর দাবি জানান।
তিনি জানান, এবার সংগৃহীত সাড়ে চার লাখ চামড়ায় অন্তত ১ কোটি ফুট ওয়েট ব্লু লেদার পাওয়া যাবে। অনেকটা কাঁচা এই চামড়ার ব্যাপক চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে। গতকালের বাজারদরে সাড়ে চার লাখ পিস চামড়ার মূল্য দুইশ’ কোটি টাকারও বেশি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এখন দৃশ্যপট পাল্টেছে। পাড়ায় আগের দৃশ্য নেই। চামড়া কিনতে নেই তোড়জোড়, নেই প্রতিযোগিতাও।
আর গোলাগুলিও নেই। বরং এবার মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গী হয়েছে চোখের জল। লাভ দূরে থাক, পুরো পুঁজিই ভেসে গেছে চোখের জলের সঙ্গে।
দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। তার চেয়েও অনেক কম দামে কেনা হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া। আবার ক্রেতা না পেয়ে বিনামূল্যেও মৌসুমি ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসার এতিমখানায় পশুর চামড়া দিয়ে দিয়েছেন অনেকে। এরপরও মুক্তি নেই।
মৌসুুমি ব্যবসায়ীদের মতে, আড়ৎদাররা প্রথম দিকে চামড়াপ্রতি ১৫০ টাকা দর দেয়। সন্ধ্যার পর তো আর ক্রেতাই ছিল না। বিনামূল্যে নেয়ার লোকও মেলেনি। কারণ সংরক্ষণের জন্য লবণের দাম এক লাফে কয়েকগুণ বেশি, তাই সেই উপায়ও ছিল না।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন সড়কের দু’পাশে ছিল চামড়ার স্তূপ। ক্রেতা নেই। খোঁজ মিলছিল না চামড়ার মালিকেরও। একপর্যায়ে সব ফেলে বিক্রেতা উধাও। কারণ পচনশীল চামড়া গলার ফাঁস হওয়ার উপক্রম। এমন অবস্থায় চামড়া ফেলে বাড়ি ফিরে যাওয়াই নিরাপদ যেন।
নগরীর আতুরার ডিপো, বিবিরহাট, সল্টগোলাসহ অনেক স্থানে লক্ষাধিক চামড়া ছিল বেওয়ারিশ অবস্থায়। শেষ পর্যন্ত সিটি করপোরেশন এগিয়ে এলো। ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধে রোগ জীবাণু থেকে নগরবাসীকে বাঁচাতে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেয়া হয়েছে দেড় লাখ চামড়া।
এদিকে সংগ্রহ করা চামড়া নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। শনিবার থেকে চামড়া কেনা শুরুর কথা থাকলেও ঢাকার ট্যানারি মালিকরা এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামের কোনো আড়ৎদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তাই তারা উদ্বিগ্ন।
নগরীর আতুরার ডিপোর চামড়ার আড়ৎদার শাহ আলম জানান, ট্যানারি মালিকরা যোগাযোগ না করায় ঈদের দিন থেকে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা বিপুল পরিমাণ চামড়া বিক্রি করে টাকা উঠানো যাবে কি না তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন চট্টগ্রামের আড়ৎদাররা।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ১১২ জন তালিকাভুক্ত আড়ৎদারের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি চামড়া কিনেননি এবার। গুদামসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থাকলেও ক্যাশ টাকার অভাবে তারা চামড়া কিনতে পারেননি। তারা বলছেন, গত দুইবছর ধরে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করা চামড়ার টাকা তারা এখনো পাননি। ফলে এবারও তারা টাকা বাকি রাখার আশঙ্কায় চামড়া কিনেননি।
ব্যবসায়ীরা জানান, চট্টগ্রামে এবার ছয় লাখের মতো পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে দেড় লাখ পিস চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। চার লাখ পিসের মতো চামড়া বিভিন্ন আড়ৎদার কিনেছেন। গ্রাম-গঞ্জের ব্যবসায়ী ও মাদ্রাসায়ও বেশকিছু চামড়া কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ঢাকার ট্যানারি মালিকরা কেনা শুরু করলে এসব চামড়া নগরীতে চলে আসবে। পরে সব চামড়া যাবে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ করেননি। চামড়াগুলো তারা কিনবেন নাকি আবারো আমাদেরকে বাকিতে দিয়ে আসতে হবে, তা বুঝতে পারছি না।
শাহ আমানত এন্টারপ্রাইজের আড়ৎদার আবুল কাসেম বলেন, ঈদের দিন চামড়াগুলো না কিনলে পচে যেত। তবে এখন কিনে সেগুলো বিক্রি কিভাবে করব তা নিয়ে চিন্তায় আছি। এবারও যদি ঢাকার ট্যানারি মালিকদের বকেয়ায় চামড়া দিতে হয় তাহলে আগামী বছর হয়তো চট্টগ্রামে আর কোনো আড়ৎদার চামড়া কিনবেন না।
আড়ৎদাররা দাবি করেন, আগে চট্টগ্রামের ট্যানারিগুলো সচল থাকা অবস্থায় চামড়া বিক্রির টাকা নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। তারা ঠিকমতো টাকাগুলো পরিশোধ করত। কিন্তু বর্তমানে পরিবেশগত জটিলতায় ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রামে চামড়া ব্যবসায়ীরা মহাদুর্ভোগে পড়েছেন। তারা বন্ধ থাকা ২০টি ট্যানারির মধ্যে অন্তত ৫টি বিশেষ ব্যবস্থায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়ৎদার সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত চার লাখ চামড়া সংগ্রহ হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই চামড়া সংরক্ষণ এবং বিক্রি করার মতো অবকাঠামো চট্টগ্রামে নেই। ঢাকার ট্যানারি মালিকেরাও কোনো যোগাযোগ করছেন না। এই অবস্থায় আমাদেরকে ভবিষ্যতে কী ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে তা এখনো বুঝতে পারছি না। তিনিও চট্টগ্রামের বন্ধ থাকা ট্যানারিগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় চালুর দাবি জানান।
তিনি জানান, এবার সংগৃহীত সাড়ে চার লাখ চামড়ায় অন্তত ১ কোটি ফুট ওয়েট ব্লু লেদার পাওয়া যাবে। অনেকটা কাঁচা এই চামড়ার ব্যাপক চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে। গতকালের বাজারদরে সাড়ে চার লাখ পিস চামড়ার মূল্য দুইশ’ কোটি টাকারও বেশি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
No comments