চামড়া বিক্রি করছেন না আড়তদাররা
পাওনা
টাকা পরিশোধ না করলে এবার ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করবে না
বলে জানিয়ে দিয়েছেন পুরান ঢাকার পোস্তার কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা। গতকাল
রাজধানীর লালবাগের পোস্তায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান কাঁচা চামড়া আড়তদারদের
সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ)
সভাপতি দেলোয়ার হোসেন। এ সময় সংগঠনের সেক্রেটারি হাজী মো. টিপু সুলতানসহ
অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে কাঁচা চামড়া চাইলেই রপ্তানির করা যাবে
এমন সুযোগ কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিএইচএসএমএ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, কাঁচা চামড়া ওয়েট ব্লু রপ্তানির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা তার সঙ্গে একমত। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেবো। তিনি বলেন, গতকাল থেকে সারা দেশে ট্যানারি মালিকদের কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বকেয়া টাকা না পেলে কাঁচা চামড়া বিক্রি করবো না।
তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকরা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের পাওয়া টাকা নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ট্যানারি মালিকদের কাছে আমাদের পোস্তায় ব্যবসায়ীদের পাওনা ১০০ কোটি টাকা এবং সারা দেশের কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এইটাকা পরিশোধ হলেই কেবল আমরা কাঁচা চামড়া বিক্রি করবো। অন্যথায় আমরা চামড়া বিক্রি বন্ধ রাখবো।
তিনি বলেন, আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বৈঠক হবে। বৈঠকে পাওনা টাকা পরিশোধের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কাঁচা চামড়া বিক্রি বন্ধ থাকবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হলে চামড়া বিক্রির বিষয়ে পরবর্তী করণীয় জানিয়ে দেয়া হবে।
ট্যানারি মালিকদের কারণে চামড়ার দাম কমেছে অভিযোগ করে আড়তদারদের এ নেতা বলেন, ট্যানারিগুলো বকেয়া টাকা না দেয়ায় এবার অর্থের অভাবে চামড়া কিনতে পারিনি। অন্যান্য বছর ঈদের আগের দিন আড়তদারদের সঙ্গে আলোচনা করলেও এবার তারা কোনো কথা বলেনি। তারা যদি আমাদের আশ্বস্ত করতো ন্যায্য দামে চামড়া কিনতে তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। কিন্তু এটি না করে উল্টো মিডিয়ার কাছে নানা কথা বলেছেন। এ কারণে আরো দর কমেছে। তাই ট্যানারি মালিকরাই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে কবে কাঁচা চামড়া রপ্তানি হয়েছে তা আমার জানা নেই। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে কিছু কাঁচা চামড়া আমদানি করা হয়ে থাকে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চামড়া কিনছি বিক্রির জন্যই। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা আমাদের জিম্মি করে রেখেছে, আমরা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চাই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে চামড়া নিয়ে যা ঘটছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। এই ঘটনাটি একমাত্র ঘটেছে ট্যানারি মালিকদের কারণে। তারা যদি আড়তদারদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতো, তাহলে আমরা খরিতদারদের টাকা দিতাম চামড়া কেনার জন্য। আর এটা করা গেলে চামড়া নিয়ে এত বড় ঘটনা ঘটতো না।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কোরবানির পশুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করেছেন ট্যানারি মালিকরা। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা ট্যানারি মালিকরা লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করেছি। আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে আগামী দুই মাস চামড়া সংগ্রহ করবো। যেসব চামড়া ভালোভাবে সঠিক সময়ে লবণ দিয়েছে ওইসব চামড়া ভালো দামে কেনা হবে।
এদিকে এবার কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। পানির দামে চামড়া কেনেন ব্যবসায়ীরা। আবার অনেক চামড়া বিক্রি না হওয়ায় রাস্তায় পচেছে। এবারের কাঁচা চামড়া গত ত্রিশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন হয়। কোরবানির পশুর চামড়া রাস্তায় পচে নষ্ট হয়। বিনা মূল্যেও নেয়নি। এ নিয়ে বিপাকে পড়েন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সিন্ডিকেট করে ফায়দা লুটছে পোস্তার আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা। এ নিয়ে দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে।
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে নড়েচড়ে বসে ট্যানারি মালিকরা। দেশীয় শিল্প রক্ষায় কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছে। দেশের চামড়া ও দেশীয় শিল্পের বিকাশের স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করিনি। তবে ঢালাওভাবে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করার অনুমোদন দিলে দেশে চামড়া শিল্প উন্নয়নে কিছু বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা চাই না একটা সম্ভাবনাময় খাত বাধাগ্রস্ত হোক। আবার এ-ও হতে দিতে পারি না যে, দাম না পেয়ে মানুষ চামড়া পুঁতে ফেলবে, নদীতে ফেলে দেবে। তাই কেস টু কেস ভিত্তিতে কাঁচা চামড়া রপ্তানিতে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
হঠাৎ করে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তে এই শিল্প খাতের কোনো উপকার হবে না বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন আড়তদাররা। কারণ যা ক্ষতি হওয়ার গত কয়েক দিনেই হয়ে গেছে। আবার সিদ্ধান্ত নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রপ্তানি করা যাবে এমন সুযোগও কম।
চামড়া রপ্তানির বিষয়ে সিপিডি’র সিনিয়র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি যৌক্তিক বলেই মনে হয়। কিন্তু এর জন্য প্রস্তুতির দরকার আছে। কারণ আমাদের চামড়া যেসব দেশ আমদানি করবে তাদেরও কিছু নিয়ম-নীতি ও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। যেমন চামড়ায় কোনো ত্রুটি আছে কিনা, চামড়ায় কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তারা এগুলো ভালোভাবে নিরীক্ষা করার পরই আমাদের কাঁচা চামড়া আমদানি করবে। আবার এসব প্রক্রিয়াগুলো শেষ করতে সময় লাগে। কিন্তু আমদানিকারক দেশ যদি পরিচিত হয়, সেক্ষেত্রে সময় কিছুটা কম লাগে। আবার একেক দেশের জন্য একেক সময় লাগে। তার মতে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও সর্বনিম্ন সময় ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবেই। তিনি বলেন, চামড়া পচনশীল। তাই কাঁচা চামড়া ভালোভাবে লবণজাত না করলে সংরক্ষণ করাও সম্ভব নয়। কিন্তু এর মাঝে চামড়ার দর পতন হয়েছে তা তো আর ফেরত আনা যাবে না।
তার মতে, এ বছর যদি নাও হয়, আগামী বছর যেন এবারের মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, চামড়া রপ্তানি কত দিনের জন্য তা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে সরকারকে। কারণ স্থানীয় উদ্যোক্তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে পারছে না বাংলাদেশের চামড়া শিল্প। বিশ্বজুড়ে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বাড়লেও এ খাতের রপ্তানিতে কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এমনকি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৬ শতাংশ কম হয়েছে।
বিএইচএসএমএ সভাপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, কাঁচা চামড়া ওয়েট ব্লু রপ্তানির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা তার সঙ্গে একমত। তারা যে সিদ্ধান্ত দেবে আমরা তা মেনে নেবো। তিনি বলেন, গতকাল থেকে সারা দেশে ট্যানারি মালিকদের কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করার কথা রয়েছে। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বকেয়া টাকা না পেলে কাঁচা চামড়া বিক্রি করবো না।
তিনি বলেন, ট্যানারি মালিকরা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের পাওয়া টাকা নিয়ে মিথ্যাচার করেছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ট্যানারি মালিকদের কাছে আমাদের পোস্তায় ব্যবসায়ীদের পাওনা ১০০ কোটি টাকা এবং সারা দেশের কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এইটাকা পরিশোধ হলেই কেবল আমরা কাঁচা চামড়া বিক্রি করবো। অন্যথায় আমরা চামড়া বিক্রি বন্ধ রাখবো।
তিনি বলেন, আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বৈঠক হবে। বৈঠকে পাওনা টাকা পরিশোধের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত সব ধরনের কাঁচা চামড়া বিক্রি বন্ধ থাকবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হলে চামড়া বিক্রির বিষয়ে পরবর্তী করণীয় জানিয়ে দেয়া হবে।
ট্যানারি মালিকদের কারণে চামড়ার দাম কমেছে অভিযোগ করে আড়তদারদের এ নেতা বলেন, ট্যানারিগুলো বকেয়া টাকা না দেয়ায় এবার অর্থের অভাবে চামড়া কিনতে পারিনি। অন্যান্য বছর ঈদের আগের দিন আড়তদারদের সঙ্গে আলোচনা করলেও এবার তারা কোনো কথা বলেনি। তারা যদি আমাদের আশ্বস্ত করতো ন্যায্য দামে চামড়া কিনতে তাহলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। কিন্তু এটি না করে উল্টো মিডিয়ার কাছে নানা কথা বলেছেন। এ কারণে আরো দর কমেছে। তাই ট্যানারি মালিকরাই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে কবে কাঁচা চামড়া রপ্তানি হয়েছে তা আমার জানা নেই। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে কিছু কাঁচা চামড়া আমদানি করা হয়ে থাকে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চামড়া কিনছি বিক্রির জন্যই। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা আমাদের জিম্মি করে রেখেছে, আমরা এই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চাই।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে চামড়া নিয়ে যা ঘটছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। এই ঘটনাটি একমাত্র ঘটেছে ট্যানারি মালিকদের কারণে। তারা যদি আড়তদারদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতো, তাহলে আমরা খরিতদারদের টাকা দিতাম চামড়া কেনার জন্য। আর এটা করা গেলে চামড়া নিয়ে এত বড় ঘটনা ঘটতো না।
এদিকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কোরবানির পশুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করেছেন ট্যানারি মালিকরা। বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা ট্যানারি মালিকরা লবণযুক্ত কাঁচা চামড়া কেনা শুরু করেছি। আমরা সরকার নির্ধারিত মূল্যে আগামী দুই মাস চামড়া সংগ্রহ করবো। যেসব চামড়া ভালোভাবে সঠিক সময়ে লবণ দিয়েছে ওইসব চামড়া ভালো দামে কেনা হবে।
এদিকে এবার কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে চলছে নৈরাজ্য। পানির দামে চামড়া কেনেন ব্যবসায়ীরা। আবার অনেক চামড়া বিক্রি না হওয়ায় রাস্তায় পচেছে। এবারের কাঁচা চামড়া গত ত্রিশ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন হয়। কোরবানির পশুর চামড়া রাস্তায় পচে নষ্ট হয়। বিনা মূল্যেও নেয়নি। এ নিয়ে বিপাকে পড়েন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। সিন্ডিকেট করে ফায়দা লুটছে পোস্তার আড়তদার ও ট্যানারি মালিকরা। এ নিয়ে দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছে।
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরে নড়েচড়ে বসে ট্যানারি মালিকরা। দেশীয় শিল্প রক্ষায় কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছে। দেশের চামড়া ও দেশীয় শিল্পের বিকাশের স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, আমরা কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করিনি। তবে ঢালাওভাবে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করার অনুমোদন দিলে দেশে চামড়া শিল্প উন্নয়নে কিছু বাধাগ্রস্ত হবে। আমরা চাই না একটা সম্ভাবনাময় খাত বাধাগ্রস্ত হোক। আবার এ-ও হতে দিতে পারি না যে, দাম না পেয়ে মানুষ চামড়া পুঁতে ফেলবে, নদীতে ফেলে দেবে। তাই কেস টু কেস ভিত্তিতে কাঁচা চামড়া রপ্তানিতে অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
হঠাৎ করে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্তে এই শিল্প খাতের কোনো উপকার হবে না বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন আড়তদাররা। কারণ যা ক্ষতি হওয়ার গত কয়েক দিনেই হয়ে গেছে। আবার সিদ্ধান্ত নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রপ্তানি করা যাবে এমন সুযোগও কম।
চামড়া রপ্তানির বিষয়ে সিপিডি’র সিনিয়র গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সরকার কাঁচা চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি যৌক্তিক বলেই মনে হয়। কিন্তু এর জন্য প্রস্তুতির দরকার আছে। কারণ আমাদের চামড়া যেসব দেশ আমদানি করবে তাদেরও কিছু নিয়ম-নীতি ও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে। যেমন চামড়ায় কোনো ত্রুটি আছে কিনা, চামড়ায় কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তারা এগুলো ভালোভাবে নিরীক্ষা করার পরই আমাদের কাঁচা চামড়া আমদানি করবে। আবার এসব প্রক্রিয়াগুলো শেষ করতে সময় লাগে। কিন্তু আমদানিকারক দেশ যদি পরিচিত হয়, সেক্ষেত্রে সময় কিছুটা কম লাগে। আবার একেক দেশের জন্য একেক সময় লাগে। তার মতে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও সর্বনিম্ন সময় ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগবেই। তিনি বলেন, চামড়া পচনশীল। তাই কাঁচা চামড়া ভালোভাবে লবণজাত না করলে সংরক্ষণ করাও সম্ভব নয়। কিন্তু এর মাঝে চামড়ার দর পতন হয়েছে তা তো আর ফেরত আনা যাবে না।
তার মতে, এ বছর যদি নাও হয়, আগামী বছর যেন এবারের মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয়। তিনি বলেন, চামড়া রপ্তানি কত দিনের জন্য তা নির্দিষ্ট করে দিতে হবে সরকারকে। কারণ স্থানীয় উদ্যোক্তারা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে পারছে না বাংলাদেশের চামড়া শিল্প। বিশ্বজুড়ে চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা বাড়লেও এ খাতের রপ্তানিতে কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। এমনকি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আগের অর্থবছরের তুলনায় ৬ শতাংশ কম হয়েছে।
No comments