আফগানিস্তানে শান্তির সম্ভাবনা by এম সাঈদ খালিদ
মাত্র
কয়েক দিন আগে এক বন্ধুর কাছে আমি আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় উন্মুক্ত সঙ্ঘাত
নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছিলাম। কেন আমি আশাহত তা তিনি জানতে চাইছিলেন। অবশ্য
বিদেশী শক্তির সম্পৃক্ততায় চলমান দুটি গৃহযুদ্ধ নিয়ে কিছু বলার আগে বলে নেই
যে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই মনে হচ্ছে।
তালেবানের সাথে আলোচনায় সফলতা অর্জনের ব্যাপারে জালমি খালিলজাদ আশাবাদ প্রকাশ করলেও ‘সাম্রাজ্যবাদের কবরস্থানে’ বিশ্বের পরাশক্তিটি কিভাবে তার যুদ্ধ সমাপ্তি করে সেদিকে বিশ্ব কিছুটা অবিশ্বাস আর সন্ত্রস্ত্রতার সাথে নজর রাখছে।
আফগান সঙ্ঘাতের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি নিয়ে আশাবাদের সঞ্চার হওয়া সম্ভব হয়েছে একদিকে খালিলজাদ ও তালেবানের মধ্যে ফলাফল অর্জনকেন্দ্রিক আলোচনা ও অন্যদিকে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও অতি সম্প্রতি জার্মানির মতো দেশগুলোর প্রবল প্রয়াসের কারণে। দোহায় মার্কিন-তালেবান আলোচনার সর্বশেষ দফায় কোনো মধ্যস্ততা ছাড়াই আফগানদের মধ্যে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তালেবান পক্ষ বলছে, তারা আফগান সরকারের কোনো প্রতিনিধির সাথে বসেনি, আলোচনা হয়েছে ওইসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে।
তবে এখানেই জটিলতার অবসান হয়নি। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তানে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্র এর আগেই শান্তিপ্রক্রিয়ায় সমাপ্তি আনতে চায়। আর তালেবান চায় বিদেশী সৈন্য প্রত্যহারের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার ঘোষণা। যুক্তরাষ্ট্র একটি প্যাকেজের আলোকে পুরো সমস্যাটির সমাধান কামনা করে। তারা আফগানিস্তানে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপকে আশ্রয় না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে বলছে তালেবানকে।
খালিলজাদ তালেবানের সাথে আলোচনায় সন্তুষ্ট। তিনি তালেবানের সাথে সর্বশেষ রাউন্ডের আলোচনাকে এ পর্যন্ত হওয়া আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে সফল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তালেবানও স্বীকার করেছে, এখন পর্যন্ত যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। তবে আশরাফ ঘানির প্রশাসনের সাথে কিভাবে ক্ষমতার ভাগাভাগি করা হবে সে ব্যাপারে তারা এখনো সমঝোতায় আসতে পারেনি।
বেইজিংয়ে ১০-১১ জুলাই হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-চীন-রাশিয়া-পাকিস্তান এই চার দেশের যৌথ বিবৃতিতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ থাকার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। সাম্প্রতিক আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেও এই চার জাতির বিবৃতিতে অবিলম্বে তালেবান, আফগান সরকার ও অন্যান্য পক্ষের মধ্যে আন্তঃআফগান আলোচনা শুরুর ওপর জোর দেয়া হয়। এতে জোর দিয়ে বলা হয় যে যত দ্রুত সম্ভব একটি শান্তি কাঠামোর মধ্যে এসব পক্ষের আলোচনা হওয়া দরকার। এই কাঠামোতে আফগানদের কাছে গ্রহণযোগ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির দায়িত্বশীল পরিবর্তনের নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের আফগান সরকার নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ থাকার ওপর জোর দেয়া হয়।
এতে সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে একটি ব্যাপকভিত্তিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপরও জোর দেয়া হয়।
বিশ্বের পরাশক্তিটি ১৭ বছর ধরে যুদ্ধ করার পর এখন সামরিক অভিযানের নিষ্ফলতার বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। তারা এখন একসময় তাদের ঘোষিত সন্ত্রাসীদের সাথে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছে। উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আগামী নির্বাচনের আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে পারেন, তবে দেশে নানা সমস্যা সত্ত্বেও তার আবারো জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
বেইজিংয়ে সমবেত তিনটি শক্তি একমত হয় যে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে যৌথ বিবৃতিতে স্বীকার করে নেয়া হয় যে আফগাননেতৃত্বাধীন ও আফগান মালিকানায় আন্তঃআফগান আলোচনা হওয়া উচিত। তবে ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত প্রত্যাহারের পর থেকে যা হয়নি, এখন তা কতটুকু হতে পারবে, তাই একটি বড় প্রশ্ন।
অধিকন্তু, তালেবান পক্ষ অর্জিত সাফল্য ছেড়ে দেবে, এমনটা আশা করা কঠিন। তাছাড়া অন্তর্ভুক্তমূলক রাজনৈতিক সমঝোতা ও ব্যাপকভিত্তিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলে তালেবানের মধ্যে বিভেদ দেখা দিতে পারে। সমঝোতা হলে তালেবানকে তাদের নিজস্ব ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠার ইচ্ছাও বাদ দিতে হবে।
তবে এখন পর্যন্ত যতটুকু সাফল্য এসেছে তার কৃতিত্ব দাবি করতে পারে পাকিস্তান। ওয়াশিংটনে ইমরান খান ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে আসন্ন বৈঠকে পাকিস্তান তার অবস্থান আরো জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারবে।
তবে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত দেখা দেয়ায় ভারতে সতর্ক ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। অবশ্য এসবের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেও পর্দার আড়ালে আলোচনার ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে। তবে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে স্থবির হয়ে থাকা আলোচনা আবার শুরু হতে যাচ্ছে, এমনটা বলার সময় এখনো আসেনি। আর ভারতীয় নেতারাও এখন স্বীকার করে নিতে বাধ্য হচ্ছেন যে পাকিস্তানকে একঘরে করার জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তাতে সাফল্য পেয়েছেন খুবই সামান্য।
তালেবানের সাথে আলোচনায় সফলতা অর্জনের ব্যাপারে জালমি খালিলজাদ আশাবাদ প্রকাশ করলেও ‘সাম্রাজ্যবাদের কবরস্থানে’ বিশ্বের পরাশক্তিটি কিভাবে তার যুদ্ধ সমাপ্তি করে সেদিকে বিশ্ব কিছুটা অবিশ্বাস আর সন্ত্রস্ত্রতার সাথে নজর রাখছে।
আফগান সঙ্ঘাতের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি নিয়ে আশাবাদের সঞ্চার হওয়া সম্ভব হয়েছে একদিকে খালিলজাদ ও তালেবানের মধ্যে ফলাফল অর্জনকেন্দ্রিক আলোচনা ও অন্যদিকে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও অতি সম্প্রতি জার্মানির মতো দেশগুলোর প্রবল প্রয়াসের কারণে। দোহায় মার্কিন-তালেবান আলোচনার সর্বশেষ দফায় কোনো মধ্যস্ততা ছাড়াই আফগানদের মধ্যে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তালেবান পক্ষ বলছে, তারা আফগান সরকারের কোনো প্রতিনিধির সাথে বসেনি, আলোচনা হয়েছে ওইসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে।
তবে এখানেই জটিলতার অবসান হয়নি। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তানে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্র এর আগেই শান্তিপ্রক্রিয়ায় সমাপ্তি আনতে চায়। আর তালেবান চায় বিদেশী সৈন্য প্রত্যহারের একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার ঘোষণা। যুক্তরাষ্ট্র একটি প্যাকেজের আলোকে পুরো সমস্যাটির সমাধান কামনা করে। তারা আফগানিস্তানে কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপকে আশ্রয় না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে বলছে তালেবানকে।
খালিলজাদ তালেবানের সাথে আলোচনায় সন্তুষ্ট। তিনি তালেবানের সাথে সর্বশেষ রাউন্ডের আলোচনাকে এ পর্যন্ত হওয়া আলোচনার মধ্যে সবচেয়ে সফল হিসেবে অভিহিত করেছেন। তালেবানও স্বীকার করেছে, এখন পর্যন্ত যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। তবে আশরাফ ঘানির প্রশাসনের সাথে কিভাবে ক্ষমতার ভাগাভাগি করা হবে সে ব্যাপারে তারা এখনো সমঝোতায় আসতে পারেনি।
বেইজিংয়ে ১০-১১ জুলাই হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-চীন-রাশিয়া-পাকিস্তান এই চার দেশের যৌথ বিবৃতিতে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ থাকার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। সাম্প্রতিক আলোচনায় অগ্রগতি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেও এই চার জাতির বিবৃতিতে অবিলম্বে তালেবান, আফগান সরকার ও অন্যান্য পক্ষের মধ্যে আন্তঃআফগান আলোচনা শুরুর ওপর জোর দেয়া হয়। এতে জোর দিয়ে বলা হয় যে যত দ্রুত সম্ভব একটি শান্তি কাঠামোর মধ্যে এসব পক্ষের আলোচনা হওয়া দরকার। এই কাঠামোতে আফগানদের কাছে গ্রহণযোগ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির দায়িত্বশীল পরিবর্তনের নিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের আফগান সরকার নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ থাকার ওপর জোর দেয়া হয়।
এতে সহিংসতা বন্ধের লক্ষ্যে একটি ব্যাপকভিত্তিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপরও জোর দেয়া হয়।
বিশ্বের পরাশক্তিটি ১৭ বছর ধরে যুদ্ধ করার পর এখন সামরিক অভিযানের নিষ্ফলতার বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। তারা এখন একসময় তাদের ঘোষিত সন্ত্রাসীদের সাথে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়েছে। উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আগামী নির্বাচনের আগেই আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে পারেন, তবে দেশে নানা সমস্যা সত্ত্বেও তার আবারো জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
বেইজিংয়ে সমবেত তিনটি শক্তি একমত হয় যে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে যৌথ বিবৃতিতে স্বীকার করে নেয়া হয় যে আফগাননেতৃত্বাধীন ও আফগান মালিকানায় আন্তঃআফগান আলোচনা হওয়া উচিত। তবে ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত প্রত্যাহারের পর থেকে যা হয়নি, এখন তা কতটুকু হতে পারবে, তাই একটি বড় প্রশ্ন।
অধিকন্তু, তালেবান পক্ষ অর্জিত সাফল্য ছেড়ে দেবে, এমনটা আশা করা কঠিন। তাছাড়া অন্তর্ভুক্তমূলক রাজনৈতিক সমঝোতা ও ব্যাপকভিত্তিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলে তালেবানের মধ্যে বিভেদ দেখা দিতে পারে। সমঝোতা হলে তালেবানকে তাদের নিজস্ব ধরনের সরকার প্রতিষ্ঠার ইচ্ছাও বাদ দিতে হবে।
তবে এখন পর্যন্ত যতটুকু সাফল্য এসেছে তার কৃতিত্ব দাবি করতে পারে পাকিস্তান। ওয়াশিংটনে ইমরান খান ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে আসন্ন বৈঠকে পাকিস্তান তার অবস্থান আরো জোরালোভাবে তুলে ধরতে পারবে।
তবে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত দেখা দেয়ায় ভারতে সতর্ক ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। অবশ্য এসবের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেও পর্দার আড়ালে আলোচনার ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে। তবে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে স্থবির হয়ে থাকা আলোচনা আবার শুরু হতে যাচ্ছে, এমনটা বলার সময় এখনো আসেনি। আর ভারতীয় নেতারাও এখন স্বীকার করে নিতে বাধ্য হচ্ছেন যে পাকিস্তানকে একঘরে করার জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তাতে সাফল্য পেয়েছেন খুবই সামান্য।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সম্প্রতি সাক্ষাত করেন বিশেষ মার্কিন দূত জালমি খালিলজাদ (বাঁ থেকে তৃতীয়) |
No comments