নিউ ইয়র্কে এমপি হওয়ার দৌড়ে বাংলাদেশি মেরি জোবায়দা by মনির হায়দার
নিউ
ইয়র্কের সাবেক কংগ্রেসম্যান (সংসদ সদস্য) যোসেফ ক্রাউলি মার্কিন রাজনীতিতে
অত্যন্ত সুপরিচিত একটি নাম। সাবেক এই ডেমোক্রেট নেতা টানা প্রায় তিন দশক
ধরে অনেকটা বাধাহীনভাবে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ
রিপ্রেজেনটেটিভের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের সচেতন মানুষদের কাছেও তিনি বেশ
পরিচিত। কারণ দীর্ঘদিন তিনি মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের প্রধান
ছিলেন। কিন্তু বটবৃক্ষ এই রাজনীতিক ২০১৮ সালে জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি
খেয়েছেন নিজের নাতনির বয়সী পুয়ের্তোরিকান বংশোদ্ভূত মেয়ে আলেক্সান্দ্রিয়া
ওকাসিও কর্টেজের কাছে। ডেমোক্রেট প্রাইমারিতে এই বাচ্চা মেয়ের কাছে ধরাশায়ী
হওয়ার পর রেগেমেগে ক্রাউলি নিজের দীর্ঘদিনের দল ছেড়ে অন্য একটি নামসর্বস্ব
দলের হয়ে লড়েছিলেন কংগ্রেসের মূল নির্বাচনে। কিন্তু সেখানেও তাকে বড়
ব্যবধানে হারিয়ে নতুন ইতিহাসের জন্ম দেন ওকাসিও। মার্কিন পার্লামেন্টের
সবচেয়ে কম বয়সী সদস্য হওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি।
এবার একই রকম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন নিউ ইয়র্কের আরেক বটবৃক্ষ ডেমোক্রেট রাজনীতিক। টানা সাড়ে তিন দশক ধরে রীতিমতো নির্বিঘ্নে নিউ ইয়র্ক রাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য থাকা ক্যাথেরিন নোল্যানের (ক্যাথে নোল্যান হিসাবেই পরিচিত) সামনে বিপদ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন বাংলাদেশি তরুণী মেরি জোবায়দা। এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এরই মধ্যে গরম হয়ে উঠেছে। ক্রাউলির পথ ধরেই বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছেন কিনা রাজ্য পার্লামেন্টে শিক্ষা কমিটির চেয়ার নোল্যান- সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত সাদা চমড়ার ক্যাথে নোল্যান ১৯৮৪ সাল থেকে টানা নিউ ইয়র্কের অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্স-৩৭ (সংসদীয় এলাকা) এর এমপি।
আর গত দশ বছর ধরে পর পর পাঁচটি নির্বাচনে দলের ভেতরে কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জই জানায়নি। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, ক্যাথে নোল্যানের জন্য রাজ্য পার্লামেন্টের এই আসনটি যেন স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া! এই অদ্ভুত ব্যাপারটিই নাড়া দেয় নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ড সিটির বাসিন্দা বাংলাদেশি-আমেরিকান সমাজকর্মী মেরি জোবায়দাকে। এ কেমন গণতন্ত্র? ডেমোক্রেট প্রাইমারির ব্যালট পেপারে একটি মাত্র নাম, একজনই মাত্র প্রার্থী! বছরের পর বছর একই চিত্র। এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন অবস্থা হলে সেটা গণতন্ত্রের প্রকৃত চেতনাকে ম্লান ও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এসব ভাবতে ভাবতেই কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়ে ফেললেন নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট মেরি। ক্যাথে নোল্যানকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন তিনি।
প্রার্থী হবেন ডেমোক্রেট প্রাইমারিতে। বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আলাপ তুলতেই পেয়ে গেলেন ব্যাপক সমর্থন। সবাই তাঁর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়। তারপর নেমে পড়েন মেরি জোবয়াদা। এখন আর পেছন ফেরার কোনো অবস্থা নেই। ফিরতে চানও না তিনি। ঝানু রাজনীতিক ক্যাথে নোল্যানের সামনে সত্যিকার চ্যালেঞ্জ গড়ে তুলতে পুরোদমে তৎপর হয়েছেন এরই মধ্যে। ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন সংগঠন, ক্লাব, এথনিক ও ধর্মীয় গ্রুপ থেকে শুরু করে সর্বত্র। আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে ডেমোক্রেট দলের প্রাইমারি বা দলীয় প্রার্থী বাছাই-পর্ব। তাতে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্স-৩৭ আসনে এখন পর্যন্ত দু’জনই প্রার্থী। ক্যাথেরিন নোল্যান ও মেরি জোবায়দা। প্রাইমারি নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হবেন তিনিই হবেন ২০২০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের আনুষ্ঠানিক প্রার্থী। আর নিউ ইয়র্ক নগরীর আসনগুলোতে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হতে পারা মানে নিশ্চিতভাবেই জয়ী হওয়া। কারণ এখনকার আসনগুলোতে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থী দেয়া হয় কেবল মাত্র নিয়ম রক্ষার জন্য। দীর্ঘকাল ধরে খুব সামান্য ভোটই পেয়ে থাকেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা।
বলে রাখা ভালো যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় আইনসভার মতো নিউ ইয়র্ক স্টেটেও দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা চালু রয়েছে। নিম্নকক্ষ বা স্টেট অ্যাসেম্বলিতে ১৫০টি আসন এবং উচ্চকক্ষ বা স্টেট সিনেটে ৬৩টি। যদিও নিউ ইয়র্ক স্টেটের সংবিধানে এটাকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা হিসাবে উল্লেখ করা হয়নি। স্টেট লেজিসলেচার বা রাজ্য আইনসভা সম্পর্কে সংবিধানে বলা হয়েছে যে, স্টেট সিনেট ও স্টেট অ্যাসম্বলির সমন্বয়ে রাজ্যের আইনসভা গঠিত হবে। রাজ্যের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সিনেটর ও অ্যাসেম্বলি সদস্যদের মেয়াদ দুই বছর করে। প্রত্যেক জোড়সংখ্যার বছরের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এই নির্বাচন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬৩ আসনের সিনেটে ডেমোক্রেটরা বিজয়ী হয় ৩৯ আসনে এবং ১৫০ আসনের অ্যাসেম্বলিতে তাদের বিজিত আসন সংখ্যা ১০৬। রিপাবলিকানরা এখানে স্থায়ী বিরোধী দল।
নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ এর ভোটারদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩৮ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ। বাকিদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ হিসপ্যানিক (স্প্যানিষভাষী দক্ষিণ আমেরিকান), ১৪ শতাংশ এশিয়ান, ১০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বা আফ্রিকান-আমেরিকান এবং ১ শতাংশ অন্যান্য। সবমিলিয়ে অশ্বেতাঙ্গ ভোটার প্রায় ৬২ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও এতদিন ক্যাথেরিন নোল্যানের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নিশ্চিন্তে জিতে এসেছেন তিনি। দীর্ঘকাল পর এবারই প্রথম এক বাঙালি-মুসলিম তরুণীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়লেন। স্বাভাবিকভাবেই গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠে নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য মরিয়া তিনি। ডিস্ট্রিক্স-৩৭ আসনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীর বসবাস। এ ছাড়াও রয়েছে বিপুল সংখ্যক আরব মুসলিম। এদের বড় অংশই মেরির প্রতি সমর্থন জানাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের অন্যতম প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্সের নিউ ইয়র্ক স্টেট ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালনকারী মৌমিতা আহমেদ এরই মধ্যে মেরি জোবায়দার জেনারেল কনসালট্যান্ট হিসাবে যোগ দিয়েছেন। নবাগত এই প্রার্থীর প্রতি কার্যকরভাবে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল তৈরির কাজ শুরু করেছেন তিনি।
এ কথা বলাই বাহুল্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূলের কমিউনিটি বোর্ড পর্যন্ত সকল পর্যায়ের নির্বাচনই দলীয়ভাবে হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশি তথা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের জন্য বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এসব নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের নেতাদের কোনো ভূমিকাই থাকে না। প্রাইমারি নির্বাচন-পদ্ধতির মাধ্যমে দলগুলোর সাধারণ সমর্থকরাই ঠিক করেন মূল নির্বাচনে তাদের প্রার্থী কে হবেন। এমন অবাধ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণেই রিপাবলিকান দলের কোনো নেতা না হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র একজন সমর্থক হিসাবেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নেমেছিলেন ব্যবসায়ী ডনাল্ড ট্রাম্প এবং শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থিতা লাভ তো বটেই এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রেও কেউ আটকাতে পারেনি তাকে। ঠিক একইভাবে রাজনীতিতে ঠিকভাবে নিজের নাম লেখানোর আগেই কেবলমাত্র সাধারণ সমর্থকদের পছন্দের কারণে জোসেফ ক্রাউলির মতো বটবৃক্ষ-নেতাকে হটিয়ে প্রথমে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থিতা লাভ এবং পরে কংগ্রেসওম্যান হতে পেরেছেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ। একইভাবে অল্প বয়সেই মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন দুই অভিবাসী তরুণী ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিব। বাংলাদেশি-আমেরিকান মেরি জোবায়দাও এখন মার্কিন গণতন্ত্রের সেই সৌন্দর্যের সুবাদে ক্যাথে নোল্যানের মতো হেভিওয়েট ডেমোক্রেট রাজনীতিককে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস খুঁজে পেয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকেই মেরি ডেমোক্রেট রাজনীতির একজন সমর্থক। কিন্তু কখনও কাঠামোগত নেতৃত্বে যাওয়ার চেষ্ট করেননি। সব সময় সক্রিয় থেকেছেন ইস্যুভিত্তিক নানা ধরনের সমাজকর্মে।
বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলায় জন্ম মেরি জোবায়দার। সেখানে স্কুলজীবন পেরিয়ে ঢাকার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ ও সিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর বিয়ের সূত্রে ১৮ বছর আগে ছাত্রজীবনেই পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। এখানে এসেও পড়ালেখা অব্যাহত রাখেন। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়ে যান সাংগঠিনক কর্মকাণ্ডে। নিউ ইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির অধীন লাগুয়ার্ডিয়া কমিউনিটি কলেজ স্টুডেন্ট গভর্নমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এপিআই লিডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি সিটি ইউনিভার্সিটির কমিটি ফর চাইল্ড কেয়ারের সিনেটর ছিলেন। এরপর বিখ্যাত নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি বা এনওয়াইইউ থেকে মিডিয়া, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভের পর কমিউনিটি ভিত্তিক সমাজকর্মের পাশাপাশি কর্মজীবনে পা রাখেন মেরি। নিউ ইয়র্কের পাবলিক স্কুলগুলোতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য হালাল খাবার পরিবেশন ও ঈদের ছুটি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। এ ছাড়া আন্দোলন করছেন ধর্মীয় পোশাকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য। ইতিমধ্যেই দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দু’বছর আগে নিউ ইয়র্ক রাজ্য সরকার মুসলমানদের দুই ঈদের দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। মেরি বর্তমানে কাজ করছেন আরবান হেলথ প্ল্যান নেটওয়ার্কের আউটরিচ স্পেশালিস্ট হিসাবে। এই সংস্থায় তাঁর কাজটিও অনেকটা সমাজকর্মের মতোই। নিয়মিতই তাঁকে যেতে হয় সাধারণ মানুষের কাছে। বসতে হয় বিভিন্ন কমিউনিটি, এথনিক ও ধর্মীয় গ্রুপের সঙ্গে। এর আগে নিউ ইয়র্ক থেকে সম্প্রচার হওয়া বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল টাইম টিভির প্রোগ্রাম হেড হিসাবেও কাজ করেছিলেন কিছুকাল। তাঁর স্বামী নিউ ইয়র্কের সুপরিচিত বাংলাদেশি সাংবাদিক আবু তাহের এই চ্যানেলটির উদ্যোক্তা।
মানবজমিন প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে তিন সন্তানের জননী মেরি জোবায়দা বলেন, মার্কিন গণতন্ত্রের সৌন্দর্য কাজে লাগিয়ে এখানকার গণতন্ত্রকে আরো কার্যকর, আরো অর্থবহ করার উদ্দেশ্যেই তিনি নির্বাচনে প্রার্থিতার দৌড়ে নেমেছেন। “এই দেশ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এখন দেশকে আমার দেয়ার পালা” বলেন তিনি। ইতিমধ্যেই নিজের নির্বাচনী এজেন্ডাগুলো সমর্থকদের সামনে হাজির করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম এজেন্ডা হলো, আইন সভার সদস্য তথা পাবলিক অফিসগুলোর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সবমিলিয়ে ৮ বছরের বেশি এসব পদে থাকতে না পারার বিধান সম্বলিত আইন পাশের উদ্যোগ নেয়া, নির্বাচনে প্রার্থীদের পাবলিক ফাইনান্সিং নিশ্চিত করা, বর্তমানে চালু থাকা ৬ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটিকে এক বছরের প্যারেন্টাল ছুটিতে উন্নীত করা, ওয়ার্কিং প্যারেন্টদের জন্য ইউনিভার্সাল চাইল্ডকেয়ার সুবিধা চালু করা, পাতালরেল বা সাবওয়ে ব্যবস্থার দূষণ কমিয়ে পরিবেশ উন্নত করা এবং সামগ্রিকভাবে শিক্ষার সুবিধা সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ। প্রার্থীদের পাবলিক ফাইনান্সিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে এই সুবিধা না থাকায় প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহে অনেক সময় কায়েমী স্বার্থবাদীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন। এরপর তারা নির্বাচিত হলে সাধারণ জনগণের চেয়ে নির্বাচনী তহবিলের যোগানদাতাদের প্রতিই বেশি মুখাপেক্ষী থাকেন। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে পারে কেবলমাত্র পাবলিক ফাইনান্সিং।ইতিমধ্যেই দাবিটি সামগ্রিকভাবে জোরালো হয়ে উঠছে বলে জানান তিনি।
নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে বাংলাদেশি-আমেরিকান মেরি জোবায়দার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি এরই মধ্যে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। নেতৃস্থানীয় অনেকেই তাঁর পক্ষে মাঠে নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের কাজেও যুক্ত হতে চাইছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বাংলাদেশিদের বড় অংশটি নিউ ইয়র্কে বসবাস করলেও এখানকার মূলধারার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তাদের অংশগ্রহণ এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য নয়। কেউ কেউ ডেমোক্রেট দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারলেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এখনও সাফল্যের পালক যুক্ত হয়নি কারো। মেরি জোবায়দার হাত ধরে সেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলবে এমন প্রত্যাশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বড় অংশ।
এবার একই রকম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছেন নিউ ইয়র্কের আরেক বটবৃক্ষ ডেমোক্রেট রাজনীতিক। টানা সাড়ে তিন দশক ধরে রীতিমতো নির্বিঘ্নে নিউ ইয়র্ক রাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য থাকা ক্যাথেরিন নোল্যানের (ক্যাথে নোল্যান হিসাবেই পরিচিত) সামনে বিপদ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছেন বাংলাদেশি তরুণী মেরি জোবায়দা। এ নিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এরই মধ্যে গরম হয়ে উঠেছে। ক্রাউলির পথ ধরেই বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছেন কিনা রাজ্য পার্লামেন্টে শিক্ষা কমিটির চেয়ার নোল্যান- সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত সাদা চমড়ার ক্যাথে নোল্যান ১৯৮৪ সাল থেকে টানা নিউ ইয়র্কের অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্স-৩৭ (সংসদীয় এলাকা) এর এমপি।
আর গত দশ বছর ধরে পর পর পাঁচটি নির্বাচনে দলের ভেতরে কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জই জানায়নি। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, ক্যাথে নোল্যানের জন্য রাজ্য পার্লামেন্টের এই আসনটি যেন স্থায়ী বন্দোবস্ত দেয়া! এই অদ্ভুত ব্যাপারটিই নাড়া দেয় নিউ ইয়র্কের লং আইল্যান্ড সিটির বাসিন্দা বাংলাদেশি-আমেরিকান সমাজকর্মী মেরি জোবায়দাকে। এ কেমন গণতন্ত্র? ডেমোক্রেট প্রাইমারির ব্যালট পেপারে একটি মাত্র নাম, একজনই মাত্র প্রার্থী! বছরের পর বছর একই চিত্র। এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন অবস্থা হলে সেটা গণতন্ত্রের প্রকৃত চেতনাকে ম্লান ও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এসব ভাবতে ভাবতেই কঠিন সিদ্ধান্তটি নিয়ে ফেললেন নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট মেরি। ক্যাথে নোল্যানকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন তিনি।
প্রার্থী হবেন ডেমোক্রেট প্রাইমারিতে। বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আলাপ তুলতেই পেয়ে গেলেন ব্যাপক সমর্থন। সবাই তাঁর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়। তারপর নেমে পড়েন মেরি জোবয়াদা। এখন আর পেছন ফেরার কোনো অবস্থা নেই। ফিরতে চানও না তিনি। ঝানু রাজনীতিক ক্যাথে নোল্যানের সামনে সত্যিকার চ্যালেঞ্জ গড়ে তুলতে পুরোদমে তৎপর হয়েছেন এরই মধ্যে। ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন সংগঠন, ক্লাব, এথনিক ও ধর্মীয় গ্রুপ থেকে শুরু করে সর্বত্র। আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে ডেমোক্রেট দলের প্রাইমারি বা দলীয় প্রার্থী বাছাই-পর্ব। তাতে নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি ডিস্ট্রিক্স-৩৭ আসনে এখন পর্যন্ত দু’জনই প্রার্থী। ক্যাথেরিন নোল্যান ও মেরি জোবায়দা। প্রাইমারি নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হবেন তিনিই হবেন ২০২০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের আনুষ্ঠানিক প্রার্থী। আর নিউ ইয়র্ক নগরীর আসনগুলোতে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হতে পারা মানে নিশ্চিতভাবেই জয়ী হওয়া। কারণ এখনকার আসনগুলোতে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থী দেয়া হয় কেবল মাত্র নিয়ম রক্ষার জন্য। দীর্ঘকাল ধরে খুব সামান্য ভোটই পেয়ে থাকেন রিপাবলিকান প্রার্থীরা।
বলে রাখা ভালো যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় আইনসভার মতো নিউ ইয়র্ক স্টেটেও দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টারি ব্যবস্থা চালু রয়েছে। নিম্নকক্ষ বা স্টেট অ্যাসেম্বলিতে ১৫০টি আসন এবং উচ্চকক্ষ বা স্টেট সিনেটে ৬৩টি। যদিও নিউ ইয়র্ক স্টেটের সংবিধানে এটাকে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা হিসাবে উল্লেখ করা হয়নি। স্টেট লেজিসলেচার বা রাজ্য আইনসভা সম্পর্কে সংবিধানে বলা হয়েছে যে, স্টেট সিনেট ও স্টেট অ্যাসম্বলির সমন্বয়ে রাজ্যের আইনসভা গঠিত হবে। রাজ্যের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত সিনেটর ও অ্যাসেম্বলি সদস্যদের মেয়াদ দুই বছর করে। প্রত্যেক জোড়সংখ্যার বছরের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এই নির্বাচন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৬৩ আসনের সিনেটে ডেমোক্রেটরা বিজয়ী হয় ৩৯ আসনে এবং ১৫০ আসনের অ্যাসেম্বলিতে তাদের বিজিত আসন সংখ্যা ১০৬। রিপাবলিকানরা এখানে স্থায়ী বিরোধী দল।
নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির ডিস্ট্রিক্ট-৩৭ এর ভোটারদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩৮ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ। বাকিদের মধ্যে ৩৭ শতাংশ হিসপ্যানিক (স্প্যানিষভাষী দক্ষিণ আমেরিকান), ১৪ শতাংশ এশিয়ান, ১০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বা আফ্রিকান-আমেরিকান এবং ১ শতাংশ অন্যান্য। সবমিলিয়ে অশ্বেতাঙ্গ ভোটার প্রায় ৬২ শতাংশ হওয়া সত্ত্বেও এতদিন ক্যাথেরিন নোল্যানের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নিশ্চিন্তে জিতে এসেছেন তিনি। দীর্ঘকাল পর এবারই প্রথম এক বাঙালি-মুসলিম তরুণীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়লেন। স্বাভাবিকভাবেই গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠে নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য মরিয়া তিনি। ডিস্ট্রিক্স-৩৭ আসনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি ও দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীর বসবাস। এ ছাড়াও রয়েছে বিপুল সংখ্যক আরব মুসলিম। এদের বড় অংশই মেরির প্রতি সমর্থন জানাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের অন্যতম প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্সের নিউ ইয়র্ক স্টেট ক্যাম্পেইন কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালনকারী মৌমিতা আহমেদ এরই মধ্যে মেরি জোবায়দার জেনারেল কনসালট্যান্ট হিসাবে যোগ দিয়েছেন। নবাগত এই প্রার্থীর প্রতি কার্যকরভাবে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল তৈরির কাজ শুরু করেছেন তিনি।
এ কথা বলাই বাহুল্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে একেবারে তৃণমূলের কমিউনিটি বোর্ড পর্যন্ত সকল পর্যায়ের নির্বাচনই দলীয়ভাবে হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশি তথা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষদের জন্য বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এসব নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের নেতাদের কোনো ভূমিকাই থাকে না। প্রাইমারি নির্বাচন-পদ্ধতির মাধ্যমে দলগুলোর সাধারণ সমর্থকরাই ঠিক করেন মূল নির্বাচনে তাদের প্রার্থী কে হবেন। এমন অবাধ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কারণেই রিপাবলিকান দলের কোনো নেতা না হওয়া সত্ত্বেও কেবলমাত্র একজন সমর্থক হিসাবেই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নেমেছিলেন ব্যবসায়ী ডনাল্ড ট্রাম্প এবং শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থিতা লাভ তো বটেই এমনকি দেশের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষেত্রেও কেউ আটকাতে পারেনি তাকে। ঠিক একইভাবে রাজনীতিতে ঠিকভাবে নিজের নাম লেখানোর আগেই কেবলমাত্র সাধারণ সমর্থকদের পছন্দের কারণে জোসেফ ক্রাউলির মতো বটবৃক্ষ-নেতাকে হটিয়ে প্রথমে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থিতা লাভ এবং পরে কংগ্রেসওম্যান হতে পেরেছেন আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ। একইভাবে অল্প বয়সেই মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন দুই অভিবাসী তরুণী ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিব। বাংলাদেশি-আমেরিকান মেরি জোবায়দাও এখন মার্কিন গণতন্ত্রের সেই সৌন্দর্যের সুবাদে ক্যাথে নোল্যানের মতো হেভিওয়েট ডেমোক্রেট রাজনীতিককে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস খুঁজে পেয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকেই মেরি ডেমোক্রেট রাজনীতির একজন সমর্থক। কিন্তু কখনও কাঠামোগত নেতৃত্বে যাওয়ার চেষ্ট করেননি। সব সময় সক্রিয় থেকেছেন ইস্যুভিত্তিক নানা ধরনের সমাজকর্মে।
বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলায় জন্ম মেরি জোবায়দার। সেখানে স্কুলজীবন পেরিয়ে ঢাকার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ ও সিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। এরপর বিয়ের সূত্রে ১৮ বছর আগে ছাত্রজীবনেই পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। এখানে এসেও পড়ালেখা অব্যাহত রাখেন। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়ে যান সাংগঠিনক কর্মকাণ্ডে। নিউ ইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির অধীন লাগুয়ার্ডিয়া কমিউনিটি কলেজ স্টুডেন্ট গভর্নমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এপিআই লিডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি সিটি ইউনিভার্সিটির কমিটি ফর চাইল্ড কেয়ারের সিনেটর ছিলেন। এরপর বিখ্যাত নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি বা এনওয়াইইউ থেকে মিডিয়া, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনে ব্যাচেলর ডিগ্রি লাভের পর কমিউনিটি ভিত্তিক সমাজকর্মের পাশাপাশি কর্মজীবনে পা রাখেন মেরি। নিউ ইয়র্কের পাবলিক স্কুলগুলোতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য হালাল খাবার পরিবেশন ও ঈদের ছুটি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। এ ছাড়া আন্দোলন করছেন ধর্মীয় পোশাকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য। ইতিমধ্যেই দীর্ঘ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে দু’বছর আগে নিউ ইয়র্ক রাজ্য সরকার মুসলমানদের দুই ঈদের দিনে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। মেরি বর্তমানে কাজ করছেন আরবান হেলথ প্ল্যান নেটওয়ার্কের আউটরিচ স্পেশালিস্ট হিসাবে। এই সংস্থায় তাঁর কাজটিও অনেকটা সমাজকর্মের মতোই। নিয়মিতই তাঁকে যেতে হয় সাধারণ মানুষের কাছে। বসতে হয় বিভিন্ন কমিউনিটি, এথনিক ও ধর্মীয় গ্রুপের সঙ্গে। এর আগে নিউ ইয়র্ক থেকে সম্প্রচার হওয়া বাংলা ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল টাইম টিভির প্রোগ্রাম হেড হিসাবেও কাজ করেছিলেন কিছুকাল। তাঁর স্বামী নিউ ইয়র্কের সুপরিচিত বাংলাদেশি সাংবাদিক আবু তাহের এই চ্যানেলটির উদ্যোক্তা।
মানবজমিন প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে তিন সন্তানের জননী মেরি জোবায়দা বলেন, মার্কিন গণতন্ত্রের সৌন্দর্য কাজে লাগিয়ে এখানকার গণতন্ত্রকে আরো কার্যকর, আরো অর্থবহ করার উদ্দেশ্যেই তিনি নির্বাচনে প্রার্থিতার দৌড়ে নেমেছেন। “এই দেশ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এখন দেশকে আমার দেয়ার পালা” বলেন তিনি। ইতিমধ্যেই নিজের নির্বাচনী এজেন্ডাগুলো সমর্থকদের সামনে হাজির করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম এজেন্ডা হলো, আইন সভার সদস্য তথা পাবলিক অফিসগুলোর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সবমিলিয়ে ৮ বছরের বেশি এসব পদে থাকতে না পারার বিধান সম্বলিত আইন পাশের উদ্যোগ নেয়া, নির্বাচনে প্রার্থীদের পাবলিক ফাইনান্সিং নিশ্চিত করা, বর্তমানে চালু থাকা ৬ সপ্তাহের মাতৃত্বকালীন ছুটিকে এক বছরের প্যারেন্টাল ছুটিতে উন্নীত করা, ওয়ার্কিং প্যারেন্টদের জন্য ইউনিভার্সাল চাইল্ডকেয়ার সুবিধা চালু করা, পাতালরেল বা সাবওয়ে ব্যবস্থার দূষণ কমিয়ে পরিবেশ উন্নত করা এবং সামগ্রিকভাবে শিক্ষার সুবিধা সম্প্রসারণে উদ্যোগ গ্রহণ। প্রার্থীদের পাবলিক ফাইনান্সিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে এই সুবিধা না থাকায় প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহে অনেক সময় কায়েমী স্বার্থবাদীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন। এরপর তারা নির্বাচিত হলে সাধারণ জনগণের চেয়ে নির্বাচনী তহবিলের যোগানদাতাদের প্রতিই বেশি মুখাপেক্ষী থাকেন। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে পারে কেবলমাত্র পাবলিক ফাইনান্সিং।ইতিমধ্যেই দাবিটি সামগ্রিকভাবে জোরালো হয়ে উঠছে বলে জানান তিনি।
নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি নির্বাচনে বাংলাদেশি-আমেরিকান মেরি জোবায়দার প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি এরই মধ্যে নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বেশ আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। নেতৃস্থানীয় অনেকেই তাঁর পক্ষে মাঠে নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের কাজেও যুক্ত হতে চাইছেন অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী বাংলাদেশিদের বড় অংশটি নিউ ইয়র্কে বসবাস করলেও এখানকার মূলধারার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় তাদের অংশগ্রহণ এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য নয়। কেউ কেউ ডেমোক্রেট দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারলেও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এখনও সাফল্যের পালক যুক্ত হয়নি কারো। মেরি জোবায়দার হাত ধরে সেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দেখা মিলবে এমন প্রত্যাশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের বড় অংশ।
No comments