জম্মু-কাশ্মিরে বিজেপির জঘন্য নীলনক্সা by আনন্দ বাখতো
জম্মু ও কাশ্মিরের গভর্নর সত্য পাল মালিক |
জম্মু
ও কাশ্মিরের আসন্ন রাজ্য বিধান সভার নির্বাচন এবং রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত
রাজ্যটিতে বিজেপি’র প্রাধান্য বিস্তার পরিকল্পনায় সম্ভাব্য বিপর্যয় নিয়ে
উপত্যকাজুড়ে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। এর পেছনে রয়েছে দিল্লিতে
বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকারের জম্মুর আসন সংখ্যা বাড়ানোর মাধ্যমে রাজ্যটিতে
নিজেদের সরকার গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বলে খবর। রাজ্যটির
বিধান সভার বর্তমান আসন হলো ৮৭। এর মধ্যে কাশ্মিরের ৪৬, জম্মুর ৩৭, লাদাখ
৪টি।
গভর্নর সত্য পাল মালিক এ ধরনের কিছুর সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেও সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি ছাড়াও বিজেপির রাজ্যটির সাংবিধানিক মর্যাদার প্রতি অতি সক্রিয় আচরণ, জম্মুতে দলটির রাজনৈতিক ও নির্বাচনী উদ্যোগ কাশ্মিরের জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা মানতে নারাজ। ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) উভয়েই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে যে ভবিষ্যতের সরকারে কাশ্মিরের যেকোনো ধরনের হ্রাস কিংবা এর রাজনৈতিক কণ্ঠ রোধ করা হলে বিপদ নেমে আসবে। স্থানীয় জঙ্গিদের তৎপরতা বৃদ্ধি এবং যুবকেরা সামান্যতম উস্কানিতেও রাস্তায় নেমে আসার জন্য প্রস্তুত থাকার প্রেক্ষাপটে দল দুটি এ মন্তব্য করল। তারা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে তারা আসন পরিবর্তনের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে লড়াই করবে। তারা এই চেষ্টাকে সাম্প্রদায়িক রেখায় আবেগগত বিভক্তিকরণ হিসেবে অভিহিত করেছে।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি টুইট করেছেন, জম্মু ও কাশ্মিরের রাজ্য বিধান সভার আসন পুনঃবিন্যাসের পরিকল্পনা শোনাটা বিতৃষ্ণাকর ব্যাপার। এ ধরনের কিছু হলে পুরনো ক্ষত নতুন করে ঘা সৃষ্টির কারণ হবে। ভারত সরকার কাশ্মিরিদের যন্ত্রণা সৃষ্টি করছে।
এনসি নেতা ওমর আবদুল্লাহ এ ব্যাপারে আরো সোচ্চার। তিনি ৪ জুন টুইটে এ ধরনের উদ্যোগ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আমলা থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া শাহ ফয়সাল একইভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কিছু করা হলে রাজ্যে বিপজ্জনক পরিণত ঘটবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে কাশ্মিরবিষয়ক একটি সভার পর আসন পুনঃবিন্যাস নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়। এতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গোবা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাশ্মির বিভাগের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর তিন দিন আগে সত্য পাল মালিক সাক্ষাত করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে। আসন পুনঃবিন্যাসের বিষয়টি বিজেপির জম্মু শাখার এজেন্ডার মধ্যে রয়েছে। তারা রাজ্যের তফসিলি সম্প্রদায়ের (রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১১ ভাগ) জন্য আসন বরাদ্দ করতে চায়। এর আগে ১৯৯৫ সালে রাজ্যের আসন পুনঃবিন্যাস করা হয়েছিল। তখনো রাজ্যটি ছিল রাষ্ট্রপতির শাসনে।
জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে এই উদ্যোগের খবরে উপত্যকার তরুণদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা সামাজিক মাধ্যমে এর বিরোধিতা করে যাচ্ছে।
এদিকে উপত্যকাভিত্তিক সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন পুনঃবিন্যাসের কাজটি সহজ নয়। এটি করতে হলে সংবিধানের ৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনতে হবে। আর তা করতে হলে রাজ্যের নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের বেশির ভাগের সমর্থন প্রয়োজন হবে। কাশ্মিরের বর্ষীয়ান সাংবাদিকেরা মনে করছেন, গভর্নরের পক্ষে এ ধরনের পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
তবে বিজেপির জম্মু নেতারা উত্তাপ বজায় রেখেছেন। রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক অশোক কাউল মিডিয়াকে বলেছেন যে আসন পুনঃবিন্যাস নতুন কোনো ইস্যু নয়। এটা বিজেপি যখন পিডিপির সাথে জোট গড়েছিল, তখনই তাদের এজেন্ডায় ছিল। জোট ক্ষমতায় থাকার সময় কাজটি হয়নি। তবে এর মানে এই নয় যে এটি আর হবে না। কাশ্মিরি মিডিয়ার একটি অংশ মনে করছে, লোকসভার নির্বাচনের মতো জম্মুতেও একই ধরনের সাফল্য লাভের জন্যই তারা এমনটা করে থাকতে পারে।
রাজ ভবনের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বিজেপি যে রাজ্য বিধান সভায় জম্মুর আসন বাড়াতে চায়, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর এর মধ্যেই তাদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বাড়বে।
তবে এখন তারা জম্মু ও লাদাখের জনসাধারণের কাছে যে বার্তাটি পাঠাতে চায় তা হলো, তারা হাল ছাড়ছে না।
পিডিপি ও এনসি উধামপুরে প্রার্থী না দেয়া সত্ত্বেও বিজেপির জিতেন্দ্র সিং ৩.৫৭ লাখ ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেসের বিক্রমাদিত্যকে পরাজিত করেছেন। এটি ছিল জম্মু ও কাশ্মিরে যেকোনো প্রার্থীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবধানে জয়। বিজেপি জম্মু ও লাদাখের আসনগুলোও ধরে রেখেছে। এর ফলে বিজেপি রাজ্য বিধান সভায় ২৮টি আসন নিজেদের রাখল। এটি ২০১৪ সালের ২৫ আসনের চেয়ে তিনটি বেশি।
দলটি ‘৩৫+৯’ ফরমুলায় নিজের শক্তিতেই রাজ্যের ক্ষমতা গ্রহণ করতে চায়। এই ফরমুলা হলো, জম্মু ও লাদাখের ৩৫টি ও উপত্যকা থেকে ৯টি আসন। এর মাধ্যমে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারবে বলে তারা মনে করছে।
রাজনৈতিক ঝড়
ষড়যন্ত্র চলছে। প্রশাসন ৮ জুন আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে জম্মু ও কাশ্মির ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ আহমদকে বরখাস্ত করে। তবে ব্যাংকটিতে পর্দার আড়ালে ঠিকই নিয়োগ চলছে। এসব নিয়ে তরুণদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক চলছে। তরুণদের একটি অংশ মনে করছে, অবসর গ্রহণের মাত্র চার মাস আগে পারভেজকে বরখাস্ত করাটা আসলে রাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফাঁপা করে দেয়ার একটি চক্রান্ত। এর পরপরই জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশের ৫ সদস্যকে হত্যা করে। আল উমর মুজাহিদিন এই হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছে।
এদিকে কাশ্মিরের মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজের গ্রুপগুলো জানিয়েছে, গভর্নরের শাসনে কাজ করা তাদের জন্য কঠিন হচ্ছে। সরকার এমনকি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে কাশ্মিরের মানবাধিকারবিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে দেয়নি। ওই প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি জননিরাপত্তা আইনের দোহাই দিয়ে কোনো অভিযোগ ছাড়াই গ্রেফতারের তীব্র সমালোচনা করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার এক সিনিয়র অফিসার বলেন, আমরা জেলা ম্যাজেস্ট্রেট অফিসকে বলেছি, এমন গ্রেফতার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
সর্বদলীয় হুরিয়াত সম্মেলনের (এপিএইচসি) চেয়ারম্যান মিরওয়াজ উমর ফারুক গত মার্চে এই প্রতিবেদককে বলেন, গণতান্ত্রিক কণ্ঠ রুদ্ধ করা, স্বাধীনতাকামদের মূল এলাকায় সফর করতে বাধা দেয়ার ফলে স্বাধীনতা-পূর্ব নেতৃত্ব গ্রামের তরুণদের হাতে চলে গেছে। এর ফলে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমীকরণ পাল্টে গেছে। এর রেশ ধরে ইসলামিক স্টেট, লস্কর-ই-ইসলাম নামের সংগঠনগুলোর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এসব সংগঠন প্রচলিত জঙ্গি সংগঠনগুলো থেকে আলাদা। এগুলো আইএসের আদর্শে উদ্দীপ্ত, তারা কাশ্মিরকে বিবেচনা করে বৃহত্তর ইসলামি বিপ্লবের অংশবিশেষ।
গভর্নর সত্য পাল মালিক এ ধরনের কিছুর সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেও সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক কর্মসূচি ছাড়াও বিজেপির রাজ্যটির সাংবিধানিক মর্যাদার প্রতি অতি সক্রিয় আচরণ, জম্মুতে দলটির রাজনৈতিক ও নির্বাচনী উদ্যোগ কাশ্মিরের জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা মানতে নারাজ। ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) ও পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিপি) উভয়েই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে যে ভবিষ্যতের সরকারে কাশ্মিরের যেকোনো ধরনের হ্রাস কিংবা এর রাজনৈতিক কণ্ঠ রোধ করা হলে বিপদ নেমে আসবে। স্থানীয় জঙ্গিদের তৎপরতা বৃদ্ধি এবং যুবকেরা সামান্যতম উস্কানিতেও রাস্তায় নেমে আসার জন্য প্রস্তুত থাকার প্রেক্ষাপটে দল দুটি এ মন্তব্য করল। তারা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে তারা আসন পরিবর্তনের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে লড়াই করবে। তারা এই চেষ্টাকে সাম্প্রদায়িক রেখায় আবেগগত বিভক্তিকরণ হিসেবে অভিহিত করেছে।
সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি টুইট করেছেন, জম্মু ও কাশ্মিরের রাজ্য বিধান সভার আসন পুনঃবিন্যাসের পরিকল্পনা শোনাটা বিতৃষ্ণাকর ব্যাপার। এ ধরনের কিছু হলে পুরনো ক্ষত নতুন করে ঘা সৃষ্টির কারণ হবে। ভারত সরকার কাশ্মিরিদের যন্ত্রণা সৃষ্টি করছে।
এনসি নেতা ওমর আবদুল্লাহ এ ব্যাপারে আরো সোচ্চার। তিনি ৪ জুন টুইটে এ ধরনের উদ্যোগ প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
আমলা থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া শাহ ফয়সাল একইভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কিছু করা হলে রাজ্যে বিপজ্জনক পরিণত ঘটবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে কাশ্মিরবিষয়ক একটি সভার পর আসন পুনঃবিন্যাস নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়। এতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজীব গোবা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাশ্মির বিভাগের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর তিন দিন আগে সত্য পাল মালিক সাক্ষাত করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে। আসন পুনঃবিন্যাসের বিষয়টি বিজেপির জম্মু শাখার এজেন্ডার মধ্যে রয়েছে। তারা রাজ্যের তফসিলি সম্প্রদায়ের (রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ১১ ভাগ) জন্য আসন বরাদ্দ করতে চায়। এর আগে ১৯৯৫ সালে রাজ্যের আসন পুনঃবিন্যাস করা হয়েছিল। তখনো রাজ্যটি ছিল রাষ্ট্রপতির শাসনে।
জম্মু ও কাশ্মির নিয়ে এই উদ্যোগের খবরে উপত্যকার তরুণদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা সামাজিক মাধ্যমে এর বিরোধিতা করে যাচ্ছে।
এদিকে উপত্যকাভিত্তিক সাংবিধানিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন পুনঃবিন্যাসের কাজটি সহজ নয়। এটি করতে হলে সংবিধানের ৪৭ নম্বর অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনতে হবে। আর তা করতে হলে রাজ্যের নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের বেশির ভাগের সমর্থন প্রয়োজন হবে। কাশ্মিরের বর্ষীয়ান সাংবাদিকেরা মনে করছেন, গভর্নরের পক্ষে এ ধরনের পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
তবে বিজেপির জম্মু নেতারা উত্তাপ বজায় রেখেছেন। রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক অশোক কাউল মিডিয়াকে বলেছেন যে আসন পুনঃবিন্যাস নতুন কোনো ইস্যু নয়। এটা বিজেপি যখন পিডিপির সাথে জোট গড়েছিল, তখনই তাদের এজেন্ডায় ছিল। জোট ক্ষমতায় থাকার সময় কাজটি হয়নি। তবে এর মানে এই নয় যে এটি আর হবে না। কাশ্মিরি মিডিয়ার একটি অংশ মনে করছে, লোকসভার নির্বাচনের মতো জম্মুতেও একই ধরনের সাফল্য লাভের জন্যই তারা এমনটা করে থাকতে পারে।
রাজ ভবনের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, বিজেপি যে রাজ্য বিধান সভায় জম্মুর আসন বাড়াতে চায়, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর এর মধ্যেই তাদের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা বাড়বে।
তবে এখন তারা জম্মু ও লাদাখের জনসাধারণের কাছে যে বার্তাটি পাঠাতে চায় তা হলো, তারা হাল ছাড়ছে না।
পিডিপি ও এনসি উধামপুরে প্রার্থী না দেয়া সত্ত্বেও বিজেপির জিতেন্দ্র সিং ৩.৫৭ লাখ ভোটের ব্যবধানে কংগ্রেসের বিক্রমাদিত্যকে পরাজিত করেছেন। এটি ছিল জম্মু ও কাশ্মিরে যেকোনো প্রার্থীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবধানে জয়। বিজেপি জম্মু ও লাদাখের আসনগুলোও ধরে রেখেছে। এর ফলে বিজেপি রাজ্য বিধান সভায় ২৮টি আসন নিজেদের রাখল। এটি ২০১৪ সালের ২৫ আসনের চেয়ে তিনটি বেশি।
দলটি ‘৩৫+৯’ ফরমুলায় নিজের শক্তিতেই রাজ্যের ক্ষমতা গ্রহণ করতে চায়। এই ফরমুলা হলো, জম্মু ও লাদাখের ৩৫টি ও উপত্যকা থেকে ৯টি আসন। এর মাধ্যমে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে পারবে বলে তারা মনে করছে।
রাজনৈতিক ঝড়
ষড়যন্ত্র চলছে। প্রশাসন ৮ জুন আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে জম্মু ও কাশ্মির ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ আহমদকে বরখাস্ত করে। তবে ব্যাংকটিতে পর্দার আড়ালে ঠিকই নিয়োগ চলছে। এসব নিয়ে তরুণদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক চলছে। তরুণদের একটি অংশ মনে করছে, অবসর গ্রহণের মাত্র চার মাস আগে পারভেজকে বরখাস্ত করাটা আসলে রাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফাঁপা করে দেয়ার একটি চক্রান্ত। এর পরপরই জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশের ৫ সদস্যকে হত্যা করে। আল উমর মুজাহিদিন এই হামলার দায়দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছে।
এদিকে কাশ্মিরের মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজের গ্রুপগুলো জানিয়েছে, গভর্নরের শাসনে কাজ করা তাদের জন্য কঠিন হচ্ছে। সরকার এমনকি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে কাশ্মিরের মানবাধিকারবিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে দেয়নি। ওই প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি জননিরাপত্তা আইনের দোহাই দিয়ে কোনো অভিযোগ ছাড়াই গ্রেফতারের তীব্র সমালোচনা করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্ডিয়ার এক সিনিয়র অফিসার বলেন, আমরা জেলা ম্যাজেস্ট্রেট অফিসকে বলেছি, এমন গ্রেফতার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
সর্বদলীয় হুরিয়াত সম্মেলনের (এপিএইচসি) চেয়ারম্যান মিরওয়াজ উমর ফারুক গত মার্চে এই প্রতিবেদককে বলেন, গণতান্ত্রিক কণ্ঠ রুদ্ধ করা, স্বাধীনতাকামদের মূল এলাকায় সফর করতে বাধা দেয়ার ফলে স্বাধীনতা-পূর্ব নেতৃত্ব গ্রামের তরুণদের হাতে চলে গেছে। এর ফলে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমীকরণ পাল্টে গেছে। এর রেশ ধরে ইসলামিক স্টেট, লস্কর-ই-ইসলাম নামের সংগঠনগুলোর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এসব সংগঠন প্রচলিত জঙ্গি সংগঠনগুলো থেকে আলাদা। এগুলো আইএসের আদর্শে উদ্দীপ্ত, তারা কাশ্মিরকে বিবেচনা করে বৃহত্তর ইসলামি বিপ্লবের অংশবিশেষ।
No comments