বন্ধ হচ্ছে নৃশংস ভার্চুয়াল গেমস by জিয়া চৌধুরী
গেমিং
জগতে আলোচিত নাম পাবজি বা পিইউবিজি। সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে
আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় এই ভার্চুয়াল
গেম। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের সদস্যকে ঘায়েল করে ক্ষমতায়
টিকে থাকতে হয় সাইবার জগতের এ খেলায়। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে ভয়ানক
সব মারণাস্ত্র দিয়ে নিঃশেষ করতে হয় প্রতিপক্ষকে। ভয়ঙ্কর সব অস্ত্র,
গ্রেনেডের মতো বিস্ফোরক দিয়ে চোখের পলকেই খুন করতে হয় আরেকজনকে। তবে, গতকাল
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে একটি মসজিদে আধুনিক মারণাস্ত্র দিয়ে এক
খ্রিস্টান যুবকের গুলি চালানোর ঘটনার পর আবারো আলোচনায় এসেছে পাবজি গেম।
প্রায় তিন মিনিটের এই নির্মম হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৪৯ জন। নিউজিল্যান্ডে নির্মম এই হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাবজি গেমের সঙ্গে এর মিল আছে বলে দাবি করেন অনেকে।
ক্রাইস্টচার্চের ওই মসজিদে আততায়ী যেভাবে গুলি চালিয়েছে, জনপ্রিয় পাবজি গেমেও কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ ছাড়াই শুধুমাত্র নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৃশংস আক্রমণ করতে হয়। তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তরুণদের হিংস্রতা ও অপরাধপ্রবণতা ঠেকাতে গেমটি বন্ধের দাবি জানান অনেকে। তবে, এই হামলার আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে পাবজি গেমটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধের আভাস দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগ। তবে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকলেও এরইমধ্যে ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলের রাজ্য গুজরাটে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাবজি গেম।
নিষেধাজ্ঞার পরও গেমটি খেলার অপরাধে গত ১৩ই মার্চ ১০ তরুণ শিক্ষার্থীকে আটক করে রাজ্য পুলিশ। পরে অবশ্য ভয়ঙ্কর পাবজি না খেলার শর্তে তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও সমালোচিত পাবজি গেম নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম গেমটি নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের মন্তব্যের কথা তুলে ধরে বলেন, পাবজি গেম খেললে তরুণ প্রজন্ম ও শিশুদের মধ্যে সহজেই প্রতিহিংসা ছড়াতে পারে। আমি নিজেও বিষয়টার সঙ্গে একমত। ভার্চুয়াল জগতে গেমটি খেলে রোমাঞ্চ পেলেও বাস্তব জীবনে যে কোনো ধরনের নৃশংস কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে শিশুরা। এসব ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশে গেমটি বন্ধ করার চিন্তা-ভাবনা আছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখো গেছে এরই মধ্যে পাবজি গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে শিশু ও তরুণরা। ঢাকার বাইরে খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেছে একই চিত্র।
রাজধানীর শুক্রাবাদ কাঁচাবাজার এলাকার একটি চা দোকানে দেখা যায় মাথা নিচু করে মুঠোফোনে নিমগ্ন কয়েক তরুণকে। এদের একজন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনিও নিয়মিত পাবজি খেলেন। সিয়াম জাহানের কাছ থেকে পাবজি গেমের আদ্যোপান্ত জানার চেষ্টা করা হয়। মানবজমিনকে জানান, অনান্য মিশনভিত্তিক গেমের সঙ্গে পাবজির বিশাল ফারাক রয়েছে। নিয়মিত গেমটি খেললে যেকোনো তরুণ হিংস্র কাজ ও অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও জানান সিয়াম জাহান। তিনি বলেন, অন্য সব গেমে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দুষ্ট প্রতিপক্ষের হাত থেকে নিজেদের বাঁচানো নানা যৌক্তিক কারণে লড়াই করে যেতে হয়। কিন্তু পাবজি গেমের ক্ষেত্রে পুরোটাই উল্টো। কোনো লক্ষ্য বা ভালো উদ্দেশ্য ছাড়াই নিজের আধিপত্য ও ক্ষমতার লড়াইয়ে অন্য সবাইকে মেরে ফেলতে হয়। এ ছাড়া, অন্য সব গেমে একটি নির্দিষ্ট পর্বের পর গেমটি শেষ হয়ে গেলে গেমটির প্রতি গেমার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু পাবজি গেমে কোনো শেষ নেই।
প্রতিটি ধাপে বিজয়ী হলেও পাওয়া যায় পয়েন্ট। এসব পয়েন্ট দিয়ে অস্ত্র ও অনান্য গোলাবারুদ কেনা যায়। যাতে করে আরো বিধ্বংসী ও নৃশংস হয়ে ওঠেন গেমার। নিজে গেমটি খেললেও অপরাধপ্রবণতা কমাতে গেমটি নিষিদ্ধ করা হতে পারে ডিএমপির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান সিয়াম। তবে, তরুণদের অনেকে পাবজি গেমটি বন্ধ করার পক্ষপাতী নয়। মমিন হাসান শুভ নামে একজন গেমার জানান তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে গেম খেলেন। ভায়োলেন্সের রেকর্ড আছে কি না এমন প্রশ্নে জানান, একবার তিনি একজনের নাক ফাটিয়েছেন। তবে, গেম খেলা থেকে অপরাধ প্রবণতার হার বিবেচনা করে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে দাবি করেন। কাওসার আহসান নামে আরেক গেমার জানান, গেম চলার সময় তার রুমমেটের অভিভাবকরা ফোন করলেও সে বিরক্ত হয়। অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে, এ কারণে গেমটি বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
প্রায় তিন মিনিটের এই নির্মম হামলায় প্রাণ হারান অন্তত ৪৯ জন। নিউজিল্যান্ডে নির্মম এই হামলার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাবজি গেমের সঙ্গে এর মিল আছে বলে দাবি করেন অনেকে।
ক্রাইস্টচার্চের ওই মসজিদে আততায়ী যেভাবে গুলি চালিয়েছে, জনপ্রিয় পাবজি গেমেও কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ ছাড়াই শুধুমাত্র নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য নৃশংস আক্রমণ করতে হয়। তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তরুণদের হিংস্রতা ও অপরাধপ্রবণতা ঠেকাতে গেমটি বন্ধের দাবি জানান অনেকে। তবে, এই হামলার আগের দিন বৃহস্পতিবার রাতে পাবজি গেমটি বাংলাদেশে নিষিদ্ধের আভাস দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগ। তবে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকলেও এরইমধ্যে ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলের রাজ্য গুজরাটে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পাবজি গেম।
নিষেধাজ্ঞার পরও গেমটি খেলার অপরাধে গত ১৩ই মার্চ ১০ তরুণ শিক্ষার্থীকে আটক করে রাজ্য পুলিশ। পরে অবশ্য ভয়ঙ্কর পাবজি না খেলার শর্তে তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। ভারতের পর এবার বাংলাদেশেও সমালোচিত পাবজি গেম নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি ও ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. নাজমুল ইসলাম গেমটি নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের মন্তব্যের কথা তুলে ধরে বলেন, পাবজি গেম খেললে তরুণ প্রজন্ম ও শিশুদের মধ্যে সহজেই প্রতিহিংসা ছড়াতে পারে। আমি নিজেও বিষয়টার সঙ্গে একমত। ভার্চুয়াল জগতে গেমটি খেলে রোমাঞ্চ পেলেও বাস্তব জীবনে যে কোনো ধরনের নৃশংস কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে শিশুরা। এসব ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশে গেমটি বন্ধ করার চিন্তা-ভাবনা আছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখো গেছে এরই মধ্যে পাবজি গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে শিশু ও তরুণরা। ঢাকার বাইরে খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেছে একই চিত্র।
রাজধানীর শুক্রাবাদ কাঁচাবাজার এলাকার একটি চা দোকানে দেখা যায় মাথা নিচু করে মুঠোফোনে নিমগ্ন কয়েক তরুণকে। এদের একজন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনিও নিয়মিত পাবজি খেলেন। সিয়াম জাহানের কাছ থেকে পাবজি গেমের আদ্যোপান্ত জানার চেষ্টা করা হয়। মানবজমিনকে জানান, অনান্য মিশনভিত্তিক গেমের সঙ্গে পাবজির বিশাল ফারাক রয়েছে। নিয়মিত গেমটি খেললে যেকোনো তরুণ হিংস্র কাজ ও অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে বলেও জানান সিয়াম জাহান। তিনি বলেন, অন্য সব গেমে নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, দুষ্ট প্রতিপক্ষের হাত থেকে নিজেদের বাঁচানো নানা যৌক্তিক কারণে লড়াই করে যেতে হয়। কিন্তু পাবজি গেমের ক্ষেত্রে পুরোটাই উল্টো। কোনো লক্ষ্য বা ভালো উদ্দেশ্য ছাড়াই নিজের আধিপত্য ও ক্ষমতার লড়াইয়ে অন্য সবাইকে মেরে ফেলতে হয়। এ ছাড়া, অন্য সব গেমে একটি নির্দিষ্ট পর্বের পর গেমটি শেষ হয়ে গেলে গেমটির প্রতি গেমার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কিন্তু পাবজি গেমে কোনো শেষ নেই।
প্রতিটি ধাপে বিজয়ী হলেও পাওয়া যায় পয়েন্ট। এসব পয়েন্ট দিয়ে অস্ত্র ও অনান্য গোলাবারুদ কেনা যায়। যাতে করে আরো বিধ্বংসী ও নৃশংস হয়ে ওঠেন গেমার। নিজে গেমটি খেললেও অপরাধপ্রবণতা কমাতে গেমটি নিষিদ্ধ করা হতে পারে ডিএমপির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানান সিয়াম। তবে, তরুণদের অনেকে পাবজি গেমটি বন্ধ করার পক্ষপাতী নয়। মমিন হাসান শুভ নামে একজন গেমার জানান তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে গেম খেলেন। ভায়োলেন্সের রেকর্ড আছে কি না এমন প্রশ্নে জানান, একবার তিনি একজনের নাক ফাটিয়েছেন। তবে, গেম খেলা থেকে অপরাধ প্রবণতার হার বিবেচনা করে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে দাবি করেন। কাওসার আহসান নামে আরেক গেমার জানান, গেম চলার সময় তার রুমমেটের অভিভাবকরা ফোন করলেও সে বিরক্ত হয়। অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে, এ কারণে গেমটি বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
No comments