নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতো রাজনৈতিক দলের অভাব নেই
বিএনপি
না এলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতো রাজনৈতিক দলের অভাব নেই। বিএনপি একটি
বড় রাজনৈতিক দল অবশ্যই স্বীকার করি। নির্বাচনে না এলে জোর করে আনবো?
নির্বাচন তাদের অধিকার। এটা সরকারের দয়ার দান নয়। তাদের ডেকে আনতে হবে কেন?
বেগম জিয়া জেলে থাকাকালীন নির্বাচনে না এলে সেটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়।
গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। এ সময় এক প্রশ্নে তিনি জানান, নির্বাচনকালীন
সরকারের মন্ত্রিসভায় বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানোর কোনো পরিকল্পনা সরকারের
নেই। গতবার যাদের প্রস্তাব করা হয়েছিল, সেখানে শুধু সরকারে অংশগ্রহণ নয়,
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও বিএনপিকে অফার করা
হয়েছিল প্রকাশ্যে। এখানে গোপনীয়তার কিছু ছিল না। সেটা পার্লামেন্টে
প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে। পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্বকারী দল নয়- এমন
কাউকে আমন্ত্রণ জানানোর কোনো চিন্তা-ভাবনা সরকারের নেই। সংবিধানে এমন কোনো
সুযোগ আছে বলেও আমার জানা নেই। বিএনপি’র একটি অংশকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে
আওয়ামী লীগের কোনও প্রচেষ্টা আছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন,
বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানোর বিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো প্রচেষ্টা
নেই। তাদের নিজেদের মধ্যে সমস্যা আছে কিনা তা আগামী দিনে পরিষ্কার হবে।
নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপি’র কোনও নেতার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হওয়ার কোনও
সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় সংসদে
প্রতিনিধিত্বকারী দলের নেতা ছাড়া অন্য কাউকে সরকারের মন্ত্রী হওয়ার জন্য
আমন্ত্রণ জানাবে না আওয়ামী লীগ। তারেক রহমান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারেক
রহমানকে ফিরিয়ে আনা আইনগত বিষয়। বিদেশে পলাতক থাকাদের দেশে ফিরিয়ে আনার
বিষয়ে সরকারের একটা তাগিদ থাকে। বিএনপি কি চায় তারেক রহমান দেশে ফিরে আসুক?
বিএনপির সব নেতা কি চান? তাদের গডফাদাররা একরকম, সিনিয়র নেতারা আরেক রকম।
বিএনপি নেতারা একে-অপরকে সরকারের এজেন্ট বলেন। নিজেরাই ঠিক নেই। তারেক
রহমানের প্রশ্নে তাদের মধ্যে সমস্যা আছে, সেটা সবাই জানে। খালেদা জিয়ার
মুক্তির আন্দোলন সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়াকে ছাড়া
নির্বাচনে যাবে না। দৃশ্যত তারা তার (খালেদা জিয়া) মুক্তির দাবিতে আন্দোলনও
করতে পারছে না। তাদের চেষ্টার কোনও ত্রুটি নেই, তবে বিএনপি’র আন্দোলনে
জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। ৯ বছরে ৯ মিনিট তারা রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি। জনগণ
সাড়া দিলে আন্দোলন হতো। নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা ঠিক না করে তফসিল
ঘোষণা গ্রহণযোগ্য নয়’ বিএনপি’র এই অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ
সম্পাদক বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচনী কার্যক্রম, বিশেষ করে
নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের মতো বিষয় নির্বাচন কমিশনের আওতায় পড়ে না।
বিএনপি’র নির্বাচন প্রতিহত করার হুমকির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৪
সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে
সারাদেশে তাণ্ডব সৃষ্টি করেছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, সরকারি অফিস জ্বালিয়ে
দিয়েছে, ট্রেনের ফিসপ্লেট খুলে ফেলেছে, হাজার হাজার গাছ কেটেছে, পাঁচ
শতাধিক স্কুল পুড়িয়েছে, তাতে কি গণতন্ত্র রক্ষা করা হয়েছে, নাকি নির্বাচন
ঠেকানো গেছে? নির্বাচন হয়ে গেছে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে গেলে
বাংলাদেশের মানুষ সাড়া দেবে না। মানুষ বুঝবে বিএনপি সন্ত্রাসী পথ এখনও
ছাড়েনি। যে কারণে কানাডার আদালত সন্ত্রাসী দল হিসেবে তাদের আখ্যা দিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন সত্যি কথা স্পষ্ট করে বলেন তখন
বিএনপি’র কেন গাত্রদাহ শুরু হয় জানি। বিএনপি দুর্নীতিবাজ ও দণ্ড পাওয়াদের
নেতা বানাতে তারা তাদের গঠনতন্ত্র থেকে রাতের আঁধারে ৭ ধারা তুলে নিয়েছে।
খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের ১০ দিন আগে গঠনতন্ত্র থেকে ৭ নম্বর ধারা বাদ
দিয়ে আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দল হিসেবে নিজেরাই নিজেদের প্রকাশ করেছে।
তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, সেই
সত্যের মুখোমুখি হতে তাদের হবে। কারণ, তারাই সেই ভয় ও ভীতির কারণ সৃষ্টি
করেছেন। নিজেরাই নিজেদের ফাঁদে পড়েছেন। দুর্নীতিবাজ দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছেন। ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশের বিষয়ে আগামী সম্মেলনে
কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন,
প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন এরপর আমি কিছু বলতে চাই না।
No comments