নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায় তানিয়া by ওয়েছ খছরু
শনিবার
পর্যন্ত সিলেটে আলোচনায় ছিল তানিয়া আক্তার তান্নি। দ্বিতীয় স্বামী ইউসূফ
মামুন ছিল তার সঙ্গে। মানবজমিন-এ ছবি প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সে সিলেট থেকে
নিজ বাড়ি কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় পালায়। বেশ কয়েকটি মোবাইল সিম ব্যবহার
করে তানিয়া। এর মধ্যে তার একটি সিম চিহ্নিত করেছিল পিবিআই। কিন্তু শনিবার
দুপুরের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত ওই সিমটি সচল ছিল । এরপর সে মোবাইল সিম
বন্ধ করে দিয়ে নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়। তবে তানিয়ার দ্বিতীয় স্বামী
মামুন সিলেটেই ছিল। রোববার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে সিলেটের কোতোয়ালি থানা
পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর মামুনকে নিয়ে রাতে কুমিল্লার
দাউদকান্দি উপজেলার ঘুষকান্দি গ্রামে অভিযান চালায় পুলিশ। ভোররাতে পিবিআই
কর্মকর্তারা অভিযান চালিয়ে তানিয়াকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বিকাল ৩ টায়
তানিয়াকে নিয়ে সিলেটে পৌঁছে পিবিআইয়ের টিম। এরপর পিবিআই সিলেটের বিশেষ
পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এসব তথ্য
জানান। তিনি বলেন- সিলেট নগরীর মিরাবাজারের খারপাড়ার মিতালী আবাসিক এলাকার
১৫-জে নম্বর বাসায় খুন করা হয় রোকেয়া বেগম ও তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া
পুত্র রবিউল ইসলাম রূপমকে। এ ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশ তদন্তে নামে।
পাশাপাশি আইজিপি’র নির্দেশে সিলেটের পিবিআইও ছায়া তদন্তে নামে। ওই তদন্তের
এক পর্যায়ে তারা তানিয়ার একটি সচল মোবাইল ফোন সিম শনাক্ত করেন। কিন্তু সেটি
শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গিয়ে হঠাৎ করে নেটওয়ার্কের বাইরে চলে যায়।
এরপর পিবিআই প্রযুক্তিগত অনুসন্ধান চালিয়ে মামুনকে শনাক্ত করে। মামুনের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তার পিতার নাম সারজন খান। মামুন নগরীর তোপখানার কাজীরবাজারের কাদির কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলার বাসিন্দা ছিল। সে ওই বাসাতে তার পিতা-মাতাকে নিয়ে বসবাস করতো। বছর খানেক আগে থেকে মামুন পিতা-মাতার সঙ্গ ছেড়ে আলাদা বাসায় বসবাস করছিল। পিবিআই জানিয়েছে- মামুন একটি ট্রাভেলস এজেন্সিতে কাজ করে। ওই ট্রাভেল এজেন্সির মালিক তার এক আত্মীয়। তবে সে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি গ্রুপের কর্মী বলে ইতিমধ্যে পুলিশ জেনেছে। তার ই-মেইল আইডি ঘেঁটে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। রোববার রাত ৮ টার দিকে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা প্রযুক্তিগত অনুসন্ধান চালানোর পর পিবিআই ও সিলেট মহানগর পুলিশ মামুনকে গ্রেপ্তার করলে তার কাছ থেকে তানিয়ার তথ্য বেরিয়ে আসে। মামুন তখন পুলিশকে জানায়- তানিয়া তার কুমিল্লার গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে।
শনিবারই সিলেট ত্যাগ করে। তার আগ পর্যন্ত সে সিলেটেই ছিল। তবে তানিয়া ও মামুন একে-অপরকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলেও তাদের বিয়ের কোনো বৈধতা মিলেনি। তানিয়ার বয়স প্রায় ২২ বছর। রূপসী তরুণী। পিবিআই জানায়- নিজ বাড়ি কুমিল্লার তিতাসে থাকাকালে প্রায় ৪ বছর আগে তানিয়ার আরেক বিয়ে হয়েছিল। ওই স্বামী ছিল ইতালি প্রবাসী। এক সন্তানও রয়েছে তানিয়ার। কিন্তু তানিয়াই এক পর্যায়ে ডিভোর্স দেয় ইতালি প্রবাসী সেই স্বামীকে। এরপর সে চলে আসে সিলেটে। এরপর তানিয়া সিলেটে মিনারা বেগম, দিলারা বেগমের হাত ঘুরে রোকেয়ার কাছে পৌঁছে।
ইয়াবা বিক্রির আসল ডিলার তানিয়া ওরপে তান্নির। সুন্দরী হওয়ায় সিলেটে তার নেটওয়ার্কে পুরুষের অভাব নেই। ফলে তানিয়া যার কাছে যায় তাকে সে ধনাঢ্য করে তুলে। পুলিশ জানায়, তানিয়াকে গতকাল বিকেলে সিলেটে আনা হয়েছে। আনার পথে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তানিয়া কিছু ঘটনা স্বীকার করলেও অনেক কিছুই এড়িয়ে গেছে। নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। রোকেয়াকে চিনতো বলে স্বীকার করলেও খুনের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যায়। সিলেটের কোতোয়ালি থানায় রিমান্ডে রয়েছে নিহত রোকেয়ার প্রেমিক নাজমুল হাসান। তার মুখোমুখি করা হবে তানিয়াকে। পাশাপাশি শনাক্তের জন্য রাইসার কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে। সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, তানিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল সেটি পরিষ্কার। এখন এই খুনের ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত এবং কেন খুন করা হয়েছে সব তথ্য পর্যায়ক্রমে জানা যাবে। তিনি জানান- জিজ্ঞাসাবাদ সমাপ্ত হওয়ার পর তানিয়া সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তানিয়াকে গতকাল বিকেলে যখন সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয় তখন সে নির্বিকার ছিল। কোনো কথা বলেনি। মামুনের অবস্থাও ছিল একই। একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে কুমিল্লার তিতাস থেকে তাদের সিলেটের পিবিআই অফিসে নিয়ে আসা হয়। এখনো পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে নিহত রোকেয়ার প্রেমিক নাজমুল হাসান। আর ৫ বছরের রাইসা খালাকে নিয়ে কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে। সেখানে থাকলেও তার চোখ খুঁজে ফিরছে মাকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রোকেয়া বেগম জানিয়েছেন- ‘যতটুকু সম্ভব আমরা রাইসাকে হাসিখুশির মধ্যে রাখতে চাইছি। তারপরও মায়ের জন্য প্রায় সময় কান্না করে।’
ভয়ঙ্কর তানিয়া ওরফে তান্নি: সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক গতকাল জানিয়েছেন সব অপরাধে পটু তানিয়া ওরফে তান্নি। সিলেটের ইয়াবা বিক্রির নেটওয়ার্কে সে ছিল পরিচিত মুখ। এতো কিছুর পর তার চেহারায় কোনো বিষণ্নতার ছাপ নেই। এটা কেবল পেশাদার অপরাধীর বেলায় ঘটে। সিলেট মহানগর পুলিশ ইতিমধ্যে তানিয়া সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। সিলেটে সব সময় বোরকা পড়া থাকতো তানিয়া। নিহত রোকেয়ায় বাসায়ও সে বসবাস করেছে। কিন্তু আশপাশের লোকজন কখনো তার মুখ দেখেনি। বাসার বাইরে বের হলেই সে বোরকা পরে বের হতো। তার নেটওয়ার্কে সবাই মেসেজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করতেন। খুনের ঘটনার এ রকম একটি মেসেজের সন্ধান পেয়েছিল সিলেট পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া নাজমুল হাসানের হাতঘুরে তানিয়ার আরেক সহযোগীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুনের নির্দেশনার একটি ম্যাসেজ নানা প্রশ্নের দেখা দেয়।
এরপর পিবিআই প্রযুক্তিগত অনুসন্ধান চালিয়ে মামুনকে শনাক্ত করে। মামুনের বাড়ি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়। তার পিতার নাম সারজন খান। মামুন নগরীর তোপখানার কাজীরবাজারের কাদির কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলার বাসিন্দা ছিল। সে ওই বাসাতে তার পিতা-মাতাকে নিয়ে বসবাস করতো। বছর খানেক আগে থেকে মামুন পিতা-মাতার সঙ্গ ছেড়ে আলাদা বাসায় বসবাস করছিল। পিবিআই জানিয়েছে- মামুন একটি ট্রাভেলস এজেন্সিতে কাজ করে। ওই ট্রাভেল এজেন্সির মালিক তার এক আত্মীয়। তবে সে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি গ্রুপের কর্মী বলে ইতিমধ্যে পুলিশ জেনেছে। তার ই-মেইল আইডি ঘেঁটে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ। রোববার রাত ৮ টার দিকে দীর্ঘ দুই ঘণ্টা প্রযুক্তিগত অনুসন্ধান চালানোর পর পিবিআই ও সিলেট মহানগর পুলিশ মামুনকে গ্রেপ্তার করলে তার কাছ থেকে তানিয়ার তথ্য বেরিয়ে আসে। মামুন তখন পুলিশকে জানায়- তানিয়া তার কুমিল্লার গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে।
শনিবারই সিলেট ত্যাগ করে। তার আগ পর্যন্ত সে সিলেটেই ছিল। তবে তানিয়া ও মামুন একে-অপরকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিলেও তাদের বিয়ের কোনো বৈধতা মিলেনি। তানিয়ার বয়স প্রায় ২২ বছর। রূপসী তরুণী। পিবিআই জানায়- নিজ বাড়ি কুমিল্লার তিতাসে থাকাকালে প্রায় ৪ বছর আগে তানিয়ার আরেক বিয়ে হয়েছিল। ওই স্বামী ছিল ইতালি প্রবাসী। এক সন্তানও রয়েছে তানিয়ার। কিন্তু তানিয়াই এক পর্যায়ে ডিভোর্স দেয় ইতালি প্রবাসী সেই স্বামীকে। এরপর সে চলে আসে সিলেটে। এরপর তানিয়া সিলেটে মিনারা বেগম, দিলারা বেগমের হাত ঘুরে রোকেয়ার কাছে পৌঁছে।
ইয়াবা বিক্রির আসল ডিলার তানিয়া ওরপে তান্নির। সুন্দরী হওয়ায় সিলেটে তার নেটওয়ার্কে পুরুষের অভাব নেই। ফলে তানিয়া যার কাছে যায় তাকে সে ধনাঢ্য করে তুলে। পুলিশ জানায়, তানিয়াকে গতকাল বিকেলে সিলেটে আনা হয়েছে। আনার পথে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তানিয়া কিছু ঘটনা স্বীকার করলেও অনেক কিছুই এড়িয়ে গেছে। নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। রোকেয়াকে চিনতো বলে স্বীকার করলেও খুনের ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি এড়িয়ে যায়। সিলেটের কোতোয়ালি থানায় রিমান্ডে রয়েছে নিহত রোকেয়ার প্রেমিক নাজমুল হাসান। তার মুখোমুখি করা হবে তানিয়াকে। পাশাপাশি শনাক্তের জন্য রাইসার কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে। সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, তানিয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল সেটি পরিষ্কার। এখন এই খুনের ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত এবং কেন খুন করা হয়েছে সব তথ্য পর্যায়ক্রমে জানা যাবে। তিনি জানান- জিজ্ঞাসাবাদ সমাপ্ত হওয়ার পর তানিয়া সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তানিয়াকে গতকাল বিকেলে যখন সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয় তখন সে নির্বিকার ছিল। কোনো কথা বলেনি। মামুনের অবস্থাও ছিল একই। একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে কুমিল্লার তিতাস থেকে তাদের সিলেটের পিবিআই অফিসে নিয়ে আসা হয়। এখনো পুলিশি রিমান্ডে রয়েছে নিহত রোকেয়ার প্রেমিক নাজমুল হাসান। আর ৫ বছরের রাইসা খালাকে নিয়ে কোতোয়ালি থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে। সেখানে থাকলেও তার চোখ খুঁজে ফিরছে মাকে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রোকেয়া বেগম জানিয়েছেন- ‘যতটুকু সম্ভব আমরা রাইসাকে হাসিখুশির মধ্যে রাখতে চাইছি। তারপরও মায়ের জন্য প্রায় সময় কান্না করে।’
ভয়ঙ্কর তানিয়া ওরফে তান্নি: সিলেট পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক গতকাল জানিয়েছেন সব অপরাধে পটু তানিয়া ওরফে তান্নি। সিলেটের ইয়াবা বিক্রির নেটওয়ার্কে সে ছিল পরিচিত মুখ। এতো কিছুর পর তার চেহারায় কোনো বিষণ্নতার ছাপ নেই। এটা কেবল পেশাদার অপরাধীর বেলায় ঘটে। সিলেট মহানগর পুলিশ ইতিমধ্যে তানিয়া সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে। সিলেটে সব সময় বোরকা পড়া থাকতো তানিয়া। নিহত রোকেয়ায় বাসায়ও সে বসবাস করেছে। কিন্তু আশপাশের লোকজন কখনো তার মুখ দেখেনি। বাসার বাইরে বের হলেই সে বোরকা পরে বের হতো। তার নেটওয়ার্কে সবাই মেসেজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করতেন। খুনের ঘটনার এ রকম একটি মেসেজের সন্ধান পেয়েছিল সিলেট পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া নাজমুল হাসানের হাতঘুরে তানিয়ার আরেক সহযোগীর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুনের নির্দেশনার একটি ম্যাসেজ নানা প্রশ্নের দেখা দেয়।
No comments