ফুলের রক্তিম আভায় একাকার তাহিরপুরের শিমুল বাগান
শীতের
পর বসন্তের বাতাশ জানান দিচ্ছে শিমুল ফুল ফোটার সময় এসেছে। শিমুল ফুলের
রক্তিম আভা বসন্তের বাতাশে দোল খাচ্ছে যাদুকাট নদীর তীরে শিমুল বাগানটিতে।
হাওর,পাহাড়,নদীর পাশেই এখন নতুন আকর্শনীয় স্থান লালে লাল তাহিরপুরের শিমুল
বাগান। মাঘের শুরুতেই শুরু হয় শেষ ভাগ থেকে ফালগুন পর্যন্ত শিমুল বাগানে
রক্তিম আভা এই বাগানের মুল আকর্ষণ। বসন্তের সুরে সুর মিলিয়ে ইতিমধ্যে ফুটতে
শুরু করেছে সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো গাছে গাছে রক্ত মাখা শিমুল ফুল। পাপড়ি
মেলে থাকা শিমুলের রক্তিম আভা আর শুভাশ মন রাঙ্গিয়ে ঘুম ভাঙ্গায় সৌখিন
হ্নদয়ে এ যেনো কল্পনার রঙ্গে সাজানো এক শিমুলের প্রান্তর। সেই সোন্দর্য
উপভোগ করতে সময় দল বেঁেধ হাজার হাজার পর্যটক ও দশনার্থীরা ছুঠে আসছে এই
শিমুল বাগানে। স্থানীয় সূত্রে জানাযায়,সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার
মানিগাওঁ গ্রাম সংলগ্ন শিমুল বাগানটি পর্যটকদের কাছে দিনদিন আকর্শনীয় হয়ে
উঠেছে। শীত,বর্ষায় সব সময় দল বেঁধে হাজার হাজার পর্যটক ও দশনার্থীরা ছুঠে
আসছে এই শিমুল বাগানের সৌর্ন্দয উপভোগ করতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার
পর্যটকদের কাছে নতুন এক আকর্শন জেগেছে। ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। মাঝে
চোখ জুড়ানো মায়াবী যাদুকাটা নদী,বারেকটিলা আর এ পাড়ে শিমুল বাগান। সব মিলে
মিশে মানিগাঁও গ্রামটি গড়ে উঠেছে প্রাকৃতির এক অপরুপ এক অনবদ্র কাব্যবিক
ভাবনায় প্রান্তর। বানিজ্যিক চিন্তা ধারনা থেকে যাদুকাটা নদীর পাড়ে গড়ে
উঠেছে সুনামগঞ্জের আলোচিত বিশাল এলাকা নিয়ে এই শিমুল বাগান। বর্ষা ও শুষ্ক
মৌসুমে এই শিমুল বাগানে সারি সারি গাছের সবুজ পাতার সুনিবির ছায়ায়
পর্যটকদের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। আর বসন্তের ডালে ডালে ফুটে থাকা রক্ত মাখা
লাল ফুলে আন্দোলিত করে সেই সাথে রাঙ্গিয়ে দেয় দর্শনার্থীদের মন।
বর্ষা,বসন্তে আর হেমন্তেÍ এর একেক সময় একেক রুপ দেখা যায়। যা দেখে এক অন্য
রখম ভাল লাগার অনুভুতি জন্ম নিয়েছে সৌন্দর্য পিপাসু লোকজনের মনে।
জানাযায়,২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন
উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের যাদুকাটা নদী সংলগ্ন ৯৮বিঘা অনাবাদী
জমি ক্রয় করেন। এই জমিটি বালু আবরিত থাকায় বানিজ্যিক ভাবেই এই শিমুল বাগান
তৈরী করার জন্য তিনি প্রাথমিক ভাবে চিন্তার করেন। এই চিন্তা থেকেই তিনি এ
বাগানে সারিবদ্ধ ভাবে ৩হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপন করেন।
শুরু থেকে
এপর্যন্ত ১৬বছরের ব্যবধানে শিমুল চারা এখন ডালপালা পুষ্প পল্ববে এক অতুলনীয়
দৃষ্টি নন্দত বাগানে পরিনত হয়েছে। শুধু তাই নয় এই বাগানে বিভিন্ন ছবি,নাটক
ও গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং হচ্ছে। এই বাগানে বেড়াতে আসা স্থানীয় সোহেল
আহমেদ সাজু,মাসুদসহ পর্যটক,দর্শনার্থীরা ও স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন,এই
বাগানটি দেখতে অসাধারন। খোলা মেলা অবস্থান এত বড় শিমুল বাগান দেশের কোথাও
আর দেখে নি। এই বাগানে প্রচুর দর্শানার্থী আসে খুবেই ভাল লাগার মত এলাকা।
নদী,পাহাড় আর শিমুল বাগান প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলন মেলা। যার ফলে বাগানের
ভিতরটায় গেলে দর্শনার্থী ও পর্যটকগন এক অন্য রখম ভাল লাগার জন্ম নেয়।
হারিয়ে যায় অন্য এক অজানা ভুবনে। এই বাগানটিকে আরো আধুনিক করে সাজালে এটি
হবে এই জেলার আলোচিত পর্যটন স্পট। এই শিমুল বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন
হাজার হাজার পর্যটন ও সৌন্দর্য পিপাসু লোকজন আসছেন অনেক কষ্ট করে। শিমুল
বাগানের প্রতিষ্টাতা জয়নাল আবেদিনের ছেলে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক
চেয়ারম্যান রাখাব উদ্দিন বলেন,আমার বাবা একজন বৃক্ষ প্রেমী ছিলেন তিনি
যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগান ই লাগান নি টাংগুয়ার হাওরের যে দৃষ্টি
নন্দন হিজর করছ আছে সেগুলোও তিনিই লাগিয়েছেন। বাবা নেই আছে তার রেখে যাওয়া
এক অনবদ্য সৃষ্টি। যার জন্য এখনও সবাই আমার বাবার কথা মনের করছে। বাবার
রেখে যাওয়া এই দৃষ্টি নন্দন শিমুল বাগানটি আমি দেখা শুনা করছি। আরো কি ভাবে
ভাল রাখা যায় সৌন্দর্য ভাড়ানো যায় সে চেষ্টা করছি। এছাড়াও এই বাগানটিকে
ঘিরে পর্যটকদের স্বার্থে ও জেলায় একটি আতœর্জাতিক মানের রিসোর্স করা যায় সে
চেষ্টাও করছি। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল
বলেন,পাহাড় ঘেড়া সুন্দর্য পর্যটনের পাশে আরেক নতুন আকর্শন তাহিরপুর উপজেলার
এই শিমুল বাগানটি দিন দিন সবার কাছে আকর্শনীয় হয়ে উঠেছে। যার ফলে অনেক
দর্শনার্থী ও পর্যটকগন পূর্বে না আসলেও এখন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেই আসছে
এক পলক দেখার জন্য এ বাগানটি।
No comments