ভারতে একবছরে বিশ হাজার কন্যাশিশুকে ধর্ষণ
ভারতের
রাজধানী দিল্লিতে আট মাসের একটি কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে সপ্তাহখানেক
আগে। তার আগে কোথাও তিন বছর, কোথাও ১০ বা ১১ বছর বয়সী কন্যাশিশুদের ধর্ষণের
খবর উঠে এসেছে সংবাদ শিরোনামে। তবে শিরোনামে না আসা শিশু ধর্ষণের সংখ্যাটা
বহুগুণ বেশি। ২০১৬ সালে - একবছরেই ভারতে ধর্ষিত হয়েছে প্রায় কুড়ি হাজার
শিশু বা কিশোরী। ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে
তেমনটাই উঠে এসেছে। তবে ধর্ষণ বা যৌন হেনস্তার শিকার যে সেখানে শুধু কন্যা
শিশুরাই হচ্ছে তা নয়।
প্রায় ১০ বছর আগে প্রকাশিত একমাত্র পরিসংখ্যানে দেখা গেছে মোট যত শিশুর ওপরে যৌন হেনস্তা হয়, তার অর্ধেকেরও বেশি ছেলেশিশু বা কিশোর। সমাজকর্মীরা বলছেন, ভারতে শিশুদের ওপরে যৌন নির্যাতনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানটি মোট ঘটনার কিছু অংশমাত্র। শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ক্রাইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর অতীন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘শিশুদের ওপরে যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে গত প্রায় এক দশক ধরে। কিন্তু গত তিনবছরে সংখ্যাটা লাফিয়ে বেড়েছে। তার অর্থ এই নয় যে এরকম ঘটনা আগে হতো না। কিন্তু হঠাৎ করে সংখ্যাটা বেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।’ ২০১৫ সালে দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য কর্ণাটকে আট বছরের একটি কন্যাশিশুকে অপহরণ করার ছবি ধরা পড়ে সিসিটিভির ফুটেজে। পরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়, তার মুখে প্লাস্টিক গুঁজে দিয়ে চুপ করিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ধর্ষণ ছাড়াও প্রায় ১২ হাজার কন্যাশিশুর ওপরে যৌন নির্যাতন চলেছে, আর যৌন হেনস্তা ঘটেছে ৯০০’রও বেশি কন্যাশিশুর সঙ্গে। কলকাতা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দীক্ষা’র প্রধান পারমিতা ব্যানার্জী বলছিলেন, ‘যৌন নির্যাতনটা আগেও চলতো, এখনো চলে। কোনো না কোনোভাবে যৌন হেনস্তা হয়নি, এমনভাবে বোধহয় ভারতের কোনো মেয়েই বড় হয় না- সেটা ভিড় বাসে শরীরে হাত দেয়া থেকে শুরু করে আরো গুরুতর কিছু - যাই হোক না কেন। আগে আমরা মেয়েরা মুখ খুলতাম না - ভয়ে, লজ্জায়, কিন্তু এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে একটু একটু করে।’ নারী আন্দোলনের কর্মী অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষও বলছিলেন, ‘অ্যাবসলিউট নাম্বারে যৌন নির্যাতন বেড়েছে তো বটেই, কিন্তু এখন বিষয়গুলো সামনে আসছে আগের থেকে অনেক বেশি। শিশু সুরক্ষা সম্বন্ধে অভিভাবক থেকে শুরু করে পুলিশ - সকলেরই সচেতনতা বেড়েছে। এখন কোনো শিশুর ওপরে যৌন নির্যাতন হলে প্রথমেই রিঅ্যাক্ট করে এই বলে যে ‘একটা বাচ্চার সঙ্গে এরকম করে পার পেয়ে যাবে!’ এই ধারণাটা বদল হয়েছে বলেই যৌন নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে অনেকে সাহস পাচ্ছেন এখন।’ যৌন নির্যাতনের শিকার অর্ধেকই ছেলেশিশু সমাজকর্মীরা বলছেন একটা বিরাট সংখ্যক পুত্র-শিশু বা কিশোররাও নিয়মিত যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে ভারতে - যার একমাত্র সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছিল ২০০৭ সালে। কথা বলেছিলাম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রাজকের প্রধান দীপ পুরকায়স্থর সঙ্গে। ‘ছেলেদের ওপরে যৌন নির্যাতনের পরিসংখ্যান খুব একটা পাওয়া যায় না। একমাত্র ওই ২০০৭ সালের সংখ্যাটা ছাড়া। আমরা যারা এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করি, তাদের একটা ধারণা ছিলই যে কী সংখ্যায় ছেলেদের ওপরে যৌন নির্যাতন চলে। আর সরকারি তথ্যে দেখা যাচ্ছে মোট যত শিশুর ওপরে যৌন নির্যাতন হয়, তার প্রায় অর্ধেক পুত্র-শিশু বা কিশোর। তার পরে আর কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই, বলছিলেন মি. পুরকায়স্থ।
(সূত্র: বিবিসি বাংলা)
প্রায় ১০ বছর আগে প্রকাশিত একমাত্র পরিসংখ্যানে দেখা গেছে মোট যত শিশুর ওপরে যৌন হেনস্তা হয়, তার অর্ধেকেরও বেশি ছেলেশিশু বা কিশোর। সমাজকর্মীরা বলছেন, ভারতে শিশুদের ওপরে যৌন নির্যাতনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানটি মোট ঘটনার কিছু অংশমাত্র। শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ক্রাইয়ের পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর অতীন্দ্রনাথ দাস বলেন, ‘শিশুদের ওপরে যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো ক্রমবর্ধমান হারে বেড়ে চলেছে গত প্রায় এক দশক ধরে। কিন্তু গত তিনবছরে সংখ্যাটা লাফিয়ে বেড়েছে। তার অর্থ এই নয় যে এরকম ঘটনা আগে হতো না। কিন্তু হঠাৎ করে সংখ্যাটা বেড়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।’ ২০১৫ সালে দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য কর্ণাটকে আট বছরের একটি কন্যাশিশুকে অপহরণ করার ছবি ধরা পড়ে সিসিটিভির ফুটেজে। পরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়, তার মুখে প্লাস্টিক গুঁজে দিয়ে চুপ করিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ধর্ষণ ছাড়াও প্রায় ১২ হাজার কন্যাশিশুর ওপরে যৌন নির্যাতন চলেছে, আর যৌন হেনস্তা ঘটেছে ৯০০’রও বেশি কন্যাশিশুর সঙ্গে। কলকাতা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দীক্ষা’র প্রধান পারমিতা ব্যানার্জী বলছিলেন, ‘যৌন নির্যাতনটা আগেও চলতো, এখনো চলে। কোনো না কোনোভাবে যৌন হেনস্তা হয়নি, এমনভাবে বোধহয় ভারতের কোনো মেয়েই বড় হয় না- সেটা ভিড় বাসে শরীরে হাত দেয়া থেকে শুরু করে আরো গুরুতর কিছু - যাই হোক না কেন। আগে আমরা মেয়েরা মুখ খুলতাম না - ভয়ে, লজ্জায়, কিন্তু এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে একটু একটু করে।’ নারী আন্দোলনের কর্মী অধ্যাপক শাশ্বতী ঘোষও বলছিলেন, ‘অ্যাবসলিউট নাম্বারে যৌন নির্যাতন বেড়েছে তো বটেই, কিন্তু এখন বিষয়গুলো সামনে আসছে আগের থেকে অনেক বেশি। শিশু সুরক্ষা সম্বন্ধে অভিভাবক থেকে শুরু করে পুলিশ - সকলেরই সচেতনতা বেড়েছে। এখন কোনো শিশুর ওপরে যৌন নির্যাতন হলে প্রথমেই রিঅ্যাক্ট করে এই বলে যে ‘একটা বাচ্চার সঙ্গে এরকম করে পার পেয়ে যাবে!’ এই ধারণাটা বদল হয়েছে বলেই যৌন নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে অনেকে সাহস পাচ্ছেন এখন।’ যৌন নির্যাতনের শিকার অর্ধেকই ছেলেশিশু সমাজকর্মীরা বলছেন একটা বিরাট সংখ্যক পুত্র-শিশু বা কিশোররাও নিয়মিত যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে ভারতে - যার একমাত্র সরকারি পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছিল ২০০৭ সালে। কথা বলেছিলাম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রাজকের প্রধান দীপ পুরকায়স্থর সঙ্গে। ‘ছেলেদের ওপরে যৌন নির্যাতনের পরিসংখ্যান খুব একটা পাওয়া যায় না। একমাত্র ওই ২০০৭ সালের সংখ্যাটা ছাড়া। আমরা যারা এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করি, তাদের একটা ধারণা ছিলই যে কী সংখ্যায় ছেলেদের ওপরে যৌন নির্যাতন চলে। আর সরকারি তথ্যে দেখা যাচ্ছে মোট যত শিশুর ওপরে যৌন নির্যাতন হয়, তার প্রায় অর্ধেক পুত্র-শিশু বা কিশোর। তার পরে আর কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই, বলছিলেন মি. পুরকায়স্থ।
(সূত্র: বিবিসি বাংলা)
No comments