মা-বাবার চোখের অশ্রু আজও শুকায়নি
ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় হত্যার দু’বছর পূর্ণ হল আজ। কিন্তু এখনও স্বাভাবিক হতে পারেনি নিলয়ের পরিবার। নিলয়ের বৃদ্ধ বাবা তারাপদ চট্টোপাধ্যায় ও মা অর্পণা রানীর চোখের পানি আজও শুকায়নি। রাত পোহালেই ছুটে যান বাড়ির আঙ্গিনায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়া একমাত্র ছেলের চিতার পাশে। আর শাড়ির আঁচল দিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে চিৎকার দিয়ে বলে ওঠেন, ‘ও নান্টু, নান্টুরে, (নিলয়ের পরিবার এ নামেই তাকে ডাকত) তুই আমাগো কোন সাগরে ভাসাইয়া গেলি, তোরে আর এ জনমে পামুনা...’। ছেলে হত্যার প্রকৃত বিচার নিয়ে নিলয়ের পরিবার আজও ধোঁয়াশায়। পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন তাদের স্বজনরা। তারা কোনো ভাবেই জানতে পারছেন না মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে। রোববার পিরোজপুর সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত জনপদ চলিশা গ্রামে নিলয়ের বাড়িতে গিয়ে জানা গেল, পরিবারের কেউই জানে না ঢাকার খিলগাঁও থানায় দায়েরকৃত মামলার অগ্রগতি কী। নিলয়ের স্ত্রী দাবিদার আশামনি নামের একজন বাদী হয়ে ওই থানায় নাকি একটি মামলা করেছেন। নিলয়ের ছোট একমাত্র বোন পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী জয়শ্রী চট্টোপাধ্যায় (গাপা) যুগান্তরকে ক্ষোভের সঙ্গে জানান, ‘আমার দাদা বিয়েই করেনি, দাদা যদি বিয়ে করেই থাকেন- তবে সেতো (আশামনি) আমার দাদার লাশের সঙ্গে বাড়িতে আসতে পারত, তার গায়ে কেন রক্তের দাগ লাগেনি, দুটি বছর কেটে যাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে একবারের জন্যও হলেও ফোন করে কোনো খোঁজখবর নেয়নি। সে কি করে আমার ভাইয়ের স্ত্রী হয়?’ নিলয়ের বাবা-মা ও বোন সরকারের কাছে দাবি করে বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তাহীনতার কারণে ঢাকায় যেতে পারি না। নিলয় হত্যার সু®ু¤ বিচার দাবি আদায়ে নতুন করে পিরোজপুরে মামলা করতেও প্রস্তুত, সরকার যদি আমাদের সে ব্যবস্থা ও আশ্বাস দেয়। ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট রাজধানীর খিলগাঁওয়ে নিজ বাসায় দুর্বৃত্তদের অস্ত্রের আঘাতে নির্মমভাবে খুন হন পিরোজপুরের মেধাবী ছাত্র ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় ওরফে নান্টু।
No comments