ইভানের শিকার বহু নারী by মহিউদ্দিন অদুল
অবিবাহিত।
ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। বড় লোকের সন্তান। এমন নানা পরিচয়ের ফাঁদ পাততে দক্ষ
বাহাউদ্দিন ইভান। সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন। প্রেমের নিখুঁত অভিনয়। এমন কৌশলে
নারীদের কাছে টানতো সে। বন্ধু-বান্ধব, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ও ফেসবুকের
মাধ্যমে ফেলতো প্রেমের ফাঁদে। তারপর সুযোগ বুঝে ধর্ষণ। বারবার ধর্ষণের জন্য
কৌশলে সে দৃশ্যের ভিডিওচিত্র ধারণ করে জিম্মি করতো। এভাবে তার শিকারে
পরিণত হয়েছে বহু নারী। হারিয়েছে সম্ভ্রম। কৈশোর থেকেই তার এ নারীলিপ্সা ও
বহুগামিতার কথা জানতো পরিবার। অপকর্ম থেকে সরাতে কম বয়সে ২০০৮ সালে তার
বিয়ে দেয়া হয়। তার সর্বশেষ শিকার এক টেলিভিশন অভিনেত্রী। গত মঙ্গলবার রাতে
বনানীর ২ নম্বর সড়কের ন্যাম ভিলেজে নিজেদের ভাড়া বাসায়। কিন্তু এবার আর ছাড়
মিলেনি। ধর্ষণের শিকার তরুণীর মামলায় গতকাল ইভানকে ৪ দিনের রিমান্ডে
নিয়েছে বনানী থানা পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ থেকে
গ্রেপ্তারের পর গতকাল দুপুরের দিকে র্যাব তাকে বনানী থানা পুলিশের কাছে
হস্তান্তর করে। এরপর ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করলে
ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর আগে সকালে
রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে নেয়া হয় তাকে।
র্যাব-১১ এর এএসপি শাকিল আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা তাকে খুঁজতে গিয়ে তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তার বিষয়ে অনুসন্ধান করেছি। সে বিভিন্নভাবে বহু মেয়েকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছে। পতিতাদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছে। সে বহুগামী। এসব কথা তার আত্মীয়স্বজনরাও জানে। প্রায় অভিন্ন কথা বলেন, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান। তিনি বলেন, নারীর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার বদনাম রয়েছে।
এদিকে বনানীর ২ নম্বর সড়কের ন্যাম ভিলেজের যে ৫/এ নম্বর ভবনে তারা ভাড়ায় থাকে তা সংলগ্ন উত্তর পাশের প্লটেই রয়েছে তার নানীর একটি প্লট। বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ির ডি ব্লকের ২৯৮ নম্বর হোল্ডিংয়ের সেই নাজভীন ভিলা (ইতি)তে টিনশেড বাসায় বেশ কয়েকটি বাসা ভাড়া দেয়া হয়েছে। সেখানকার ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে একই তথ্য। অন্তত ৪ ভাড়াটিয়া পুরুষ ও নারী নাম প্রকাশ না করে মানবজমিনকে বলেন, তার চরিত্র ভালো না। সে মাঝে মাঝে এখানে আসতো। একাধিক কক্ষে সময় কাটায়। নারী নিয়ে খারাপ কাজ করে বলে শুনেছি।
জিজ্ঞাসাবাদে ইভানের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইভান রাজধানীর ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুলে ৯বম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। এরপর পড়ালেখা ছেড়ে দেয়। বনানীর ৮ নম্বর রোডে পিতার ইলেক্ট্রিক দোকানে বসতো। ব্যবসা দেখাশোনা করতো। সেই কিশোর বয়স থেকে নারী নিয়ে নানা অপকর্ম করতে থাকে। তার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে ২০০৮ সালে অল্প বয়সে পরিবার তার বিয়ে দেয়। পুরান ঢাকার মেয়ে ইসমত আরা টুম্পার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার আবরান নামে পাঁচ বছরের এক ছেলে ও অলিভিয়া নামে দেড় বছরের এক কন্যা রয়েছে। এরপরও সে বহুগামিতা ছাড়েনি। ২০০৫ সাল থেকে সে মাদক সেবন করে আসছে। এরপর আগে দু’বার তাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাও দেয়া হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, বুধবার সকালে ওই নারী থানায় গিয়ে পুলিশসহ বাসায় যাওয়ার সময় ইভান সেই ভবনেই ছিল। লুকিয়ে ছিল বাড়ির ছাদে। পুলিশ বাড়ি ত্যাগ করলে সে বাসা থেকে বের হয়ে পড়ে। প্রথমে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় আত্মগোপন করে। সন্ধ্যায় যায় উত্তরার কাওলা এলাকায়। এরপর দক্ষিণ খান এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে রাত কাটায়। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরা থেকে নারায়ণগঞ্জে খালা শান্তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। প্রথমে উত্তরা থেকে বাসে চড়ে গুলিস্থান যায়। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া। তারপর ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগের মাসদাইর এলাকার ২৬০/২ নম্বর বাড়িতে খালার বাসায়। সেখান থেকে ওই দিন বিকালে র্যাব সদস্যরা তাকে আটকের পর প্রথমে র্যাব-১১ এর কার্যালয়ে নেয়া হয়েছিল।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে সেই নারীকে ধর্ষণের আগে একাধিকবার নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয় বলে জানিয়েছেন বনানী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সুলতানা আক্তার। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীর বর্ণনার বরাত দিয়ে মানবজমিনকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর থেকে ধর্ষিতা তেজগাঁওয়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দু’একটি ধারাবাহিক নাটকের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। মঙ্গলবার তাকে বাসায় জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে ইভান মায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে ফোন করে আসতে বলে। এজন্য সে তার বাসায় যান। পরদিন তার শ্যুটিং ছিল বলে ব্যাগে টাকা ও কিছু কাপড়-চোপড়সহ বের হয়েছিলেন বলে জানান। ভিকটিমের পড়াশুনা এইচএসসি পর্যন্ত। ঘটনার পর এক পথচারীর মাধ্যমে ভোর ৪টার দিকে তিনি থানায় আসেন। তবে পথ দেখিয়ে দেয়ার পর ওই পথচারী থানায় না ঢুকে বাইরে থেকে চলে যায়। সেই রাতে ফোন করে বাসায় আনার পর তরুণীকে ডাল, মুরগী ও ভাত খেতে দেয়। এরপর দু’দফায় তাকে ইয়াবা সেবন করায়। তার স্ত্রী থাকার কথা সে আগে জানায়নি। নিজেকে অবিবাহিত ও ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিল। কয়েক মাস আগে ফেসবুকে তাদের পরিচয়। এসব ঘটনা এখনও কুড়িগ্রামে তরুণীর পরিবার জানে কি না জানতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তা। এদিকে গত বুধবার ইভানের বাসা থেকে দুটি মোবাইল ফোন সেট ও তরুণীর পরিধান করা পোশাক জব্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সুলতানা।
গতকাল দুপুরে ইভানের বাসায় গিয়ে তার বাবা বোরহান উদ্দিন বেলাল, মা নাজনীন জাহান ইতি বা তার স্ত্রী ইসরাত আরা টুম্পাকে পাওয়া যায়নি। বাসায় তার এক শালী ও তিন কাজের মেয়ে নিলুফা, মৌসুমি ও আসমাকে দেখা গেছে। বুধবার সকালে পুলিশ নিয়ে ওই তরুণী সে বাসায় গেলেই আগের রাতের ঘটনার বিষয়ে তারা জানতে পারে বলে জানায়। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে ভিকটিম তার জিনিস দাবি করে বাসার কিছু জিনিসপত্রও নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন তারা।
র্যাব-১১ এর এএসপি শাকিল আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, আমরা তাকে খুঁজতে গিয়ে তার আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তার বিষয়ে অনুসন্ধান করেছি। সে বিভিন্নভাবে বহু মেয়েকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছে। পতিতাদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছে। সে বহুগামী। এসব কথা তার আত্মীয়স্বজনরাও জানে। প্রায় অভিন্ন কথা বলেন, র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসান। তিনি বলেন, নারীর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তার বদনাম রয়েছে।
এদিকে বনানীর ২ নম্বর সড়কের ন্যাম ভিলেজের যে ৫/এ নম্বর ভবনে তারা ভাড়ায় থাকে তা সংলগ্ন উত্তর পাশের প্লটেই রয়েছে তার নানীর একটি প্লট। বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ির ডি ব্লকের ২৯৮ নম্বর হোল্ডিংয়ের সেই নাজভীন ভিলা (ইতি)তে টিনশেড বাসায় বেশ কয়েকটি বাসা ভাড়া দেয়া হয়েছে। সেখানকার ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে কথা বলেও জানা গেছে একই তথ্য। অন্তত ৪ ভাড়াটিয়া পুরুষ ও নারী নাম প্রকাশ না করে মানবজমিনকে বলেন, তার চরিত্র ভালো না। সে মাঝে মাঝে এখানে আসতো। একাধিক কক্ষে সময় কাটায়। নারী নিয়ে খারাপ কাজ করে বলে শুনেছি।
জিজ্ঞাসাবাদে ইভানের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইভান রাজধানীর ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুলে ৯বম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। এরপর পড়ালেখা ছেড়ে দেয়। বনানীর ৮ নম্বর রোডে পিতার ইলেক্ট্রিক দোকানে বসতো। ব্যবসা দেখাশোনা করতো। সেই কিশোর বয়স থেকে নারী নিয়ে নানা অপকর্ম করতে থাকে। তার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে ২০০৮ সালে অল্প বয়সে পরিবার তার বিয়ে দেয়। পুরান ঢাকার মেয়ে ইসমত আরা টুম্পার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার আবরান নামে পাঁচ বছরের এক ছেলে ও অলিভিয়া নামে দেড় বছরের এক কন্যা রয়েছে। এরপরও সে বহুগামিতা ছাড়েনি। ২০০৫ সাল থেকে সে মাদক সেবন করে আসছে। এরপর আগে দু’বার তাকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাও দেয়া হয়েছে।
র্যাব আরও জানায়, বুধবার সকালে ওই নারী থানায় গিয়ে পুলিশসহ বাসায় যাওয়ার সময় ইভান সেই ভবনেই ছিল। লুকিয়ে ছিল বাড়ির ছাদে। পুলিশ বাড়ি ত্যাগ করলে সে বাসা থেকে বের হয়ে পড়ে। প্রথমে বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় আত্মগোপন করে। সন্ধ্যায় যায় উত্তরার কাওলা এলাকায়। এরপর দক্ষিণ খান এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে রাত কাটায়। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরা থেকে নারায়ণগঞ্জে খালা শান্তার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। প্রথমে উত্তরা থেকে বাসে চড়ে গুলিস্থান যায়। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া। তারপর ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগের মাসদাইর এলাকার ২৬০/২ নম্বর বাড়িতে খালার বাসায়। সেখান থেকে ওই দিন বিকালে র্যাব সদস্যরা তাকে আটকের পর প্রথমে র্যাব-১১ এর কার্যালয়ে নেয়া হয়েছিল।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে সেই নারীকে ধর্ষণের আগে একাধিকবার নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয় বলে জানিয়েছেন বনানী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সুলতানা আক্তার। জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীর বর্ণনার বরাত দিয়ে মানবজমিনকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর থেকে ধর্ষিতা তেজগাঁওয়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছেন। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দু’একটি ধারাবাহিক নাটকের চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। মঙ্গলবার তাকে বাসায় জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে ইভান মায়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে ফোন করে আসতে বলে। এজন্য সে তার বাসায় যান। পরদিন তার শ্যুটিং ছিল বলে ব্যাগে টাকা ও কিছু কাপড়-চোপড়সহ বের হয়েছিলেন বলে জানান। ভিকটিমের পড়াশুনা এইচএসসি পর্যন্ত। ঘটনার পর এক পথচারীর মাধ্যমে ভোর ৪টার দিকে তিনি থানায় আসেন। তবে পথ দেখিয়ে দেয়ার পর ওই পথচারী থানায় না ঢুকে বাইরে থেকে চলে যায়। সেই রাতে ফোন করে বাসায় আনার পর তরুণীকে ডাল, মুরগী ও ভাত খেতে দেয়। এরপর দু’দফায় তাকে ইয়াবা সেবন করায়। তার স্ত্রী থাকার কথা সে আগে জানায়নি। নিজেকে অবিবাহিত ও ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিল। কয়েক মাস আগে ফেসবুকে তাদের পরিচয়। এসব ঘটনা এখনও কুড়িগ্রামে তরুণীর পরিবার জানে কি না জানতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তা। এদিকে গত বুধবার ইভানের বাসা থেকে দুটি মোবাইল ফোন সেট ও তরুণীর পরিধান করা পোশাক জব্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সুলতানা।
গতকাল দুপুরে ইভানের বাসায় গিয়ে তার বাবা বোরহান উদ্দিন বেলাল, মা নাজনীন জাহান ইতি বা তার স্ত্রী ইসরাত আরা টুম্পাকে পাওয়া যায়নি। বাসায় তার এক শালী ও তিন কাজের মেয়ে নিলুফা, মৌসুমি ও আসমাকে দেখা গেছে। বুধবার সকালে পুলিশ নিয়ে ওই তরুণী সে বাসায় গেলেই আগের রাতের ঘটনার বিষয়ে তারা জানতে পারে বলে জানায়। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে ভিকটিম তার জিনিস দাবি করে বাসার কিছু জিনিসপত্রও নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন তারা।
No comments