ইউপি নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
ইউনিয়ন
পরিষদের দুই দফা ভোটে নির্বাচনের নামে যা হলো, তাতে দেশের নির্বাচনী
ব্যবস্থাই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এবারই প্রথম স্থানীয় সরকারের এই পর্যায়ের
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদটি দলীয় ভিত্তিতে হচ্ছে। দুই দফা নির্বাচনের
অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সামনের দফা
নির্বাচনগুলো থেকে সরে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে বলে খবর প্রকাশিত
হয়েছে। বিএনপির তরফে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এর ফলাফল কী হতে পারে, তা
নিয়েও আলাপ-আলোচনা চলছে। নির্বাচন থেকে কোনো দল সরে দাঁড়াক, সেটা
প্রত্যাশিত নয়। একই সঙ্গে গত দুই পর্বের ইউপি নির্বাচন যেভাবে হলো, সেটাও
অগ্রহণযোগ্য। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে
শুরু করে। বিস্ময়করভাবে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
নির্বাচিত হন। দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ইউপিতে বিএনপি
প্রার্থী দিতে পারেনি। বোঝা যায়, সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য
একটি ভয়ভীতিহীন পরিবেশ সৃষ্টি করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। দুই দফার
নির্বাচনে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা ৩৪ ছাড়িয়েছে। ভোটকেন্দ্র দখল ও কারচুপি
হয়েছে ব্যাপকভাবে। এসব কিছুই নির্বাচন কমিশন ঠেকাতে পারেনি। এ অবস্থায় যখন
বিএনপির ভোট বর্জনের প্রসঙ্গ এসেছে, তখন সরকারি দল আশঙ্কা করছে, নির্বাচন
থেকে বিএনপি সরে গেলে আওয়ামী লীগের দলীয় অন্তঃকলহ ও সংঘাত-সহিংসতা আরও
বাড়বে। তবে একই সঙ্গে তারা এটাও মনে করে যে এতে দল হিসেবে বিএনপি চরম
ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এমনকি দলটির রাজনীতিও শেষ হয়ে যেতে পারে। রাজনীতি নিয়ে
রাজনৈতিক দলগুলোর নানা হিসাব-নিকাশ, কৌশল ও মূল্যায়ন থাকবে, এটা স্বাভাবিক।
কিন্তু নির্বাচন নিয়ে দুটি রাজনৈতিক দল যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাতে এটা
পরিষ্কার যে নির্বাচন কোনো পক্ষেই গ্রহণযোগ্য হয়নি। এই ব্যর্থতার দায়
নির্বাচন কমিশনের। একই কায়দায় নির্বাচন আর নয়। ইউপি নির্বাচন নিয়ে যে
শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করার উপায় হচ্ছে সামনের নির্বাচনগুলো অবাধ ও
নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করা। নির্বাচন কমিশনকেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
No comments