আসলেই কি বাল্টিক আক্রমণ করবে রাশিয়া? by আসিফ হাসান
আন্তর্জাতিক
অঙ্গন এখন বেশ উত্তপ্ত। ইরানের সাথে পাশ্চাত্য বিশ্বের বিরোধ অবসানের পর
মনে হচ্ছিল, বিশ্বজুড়ে শান্তির বাতাস বইতে শুরু করবে। কিন্তু তা না হয়ে বরং
নতুন করে অশান্তি শুরু হয়েছে। আর এতে রাশিয়ার ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে
উঠেছে। ইউক্রেন নিয়ে ন্যাটোর সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রায় লেগেই গিয়েছিল।
ক্রিমিয়ার পর ইউক্রেনের একটি অংশও রাশিয়া দখল করে নেবে কি না সে
জল্পনা-কল্পনা চলছে। সেই উত্তেজনা একটু কমার আগেই সিরিয়া নিয়ে নতুন জটিলতা
সৃষ্টি হয়েছে। সিরিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্যকে রুখে দিতে রাশিয়া
দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রত্যক্ষ রুশ সমর্থন পেয়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল
আসাদও বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন।
এমন এক প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যান্ড করপোরেশন সম্প্রতি যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কৌতূহলপূর্ণ দৃশ্যপট উপহার দিয়েছে। র্যান্ডের বিশ্লেষক ডেভিড এ শ্লাপক ও মাইকেল জনসনের ‘রেইফরসিং ডিটারেন্স অন ন্যাটোস ইস্টার্ন ফ্রন্ট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে মূলত দুটি প্রশ্নের জবাব খোঁজার প্রয়াস চালানো হয় : রাশিয়া যদি বাল্টিক দেশ ও অঞ্চলটি পুনরায় নিজের করে নিতে চায়, তবে কী ঘটবে? এবং ন্যাটোর ভীতি এড়িয়ে সে কিভাবে কাজটি করবে?
প্রতিবেদনটিতে সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে যে চিত্র আঁকা হয়েছে তা হলো : রাশিয়ার জর্জিয়া আক্রমণ, ক্রিমিয়াকে নিজের করে নেয়া এবং এর পরপরই ইউক্রেনে হস্তক্ষেপে গত দুই দশক ধরে ইউরোপে যে শান্তি তুলনামূলক স্থিতিশীল বৈশ্বিক-ব্যবস্থা ছিল তাতে চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে। রাশিয়ার সামর্থ্য এবং সেই সাথে উদ্দেশ্য নিয়ে যে প্রশ্নই থাকুক না কেন, এটা স্বীকার করতেই হবে, সাবেক সোভিয়েত বলয়ভুক্ত এলাকায় সামরিকভাবে প্রাধান্য সৃষ্টির মতো সামর্থ্য এখনো আছে দেশটির।
প্রতিবেদনটিতে রাশিয়া বাল্টিক আক্রমণ করলে বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ন্যাটোর বর্তমান যে শক্তি রয়েছে, তা দিয়ে রুশ অগ্রগতি ঠেকানো সম্ভব নয়। রাশিয়া মাত্র তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে রিগা, তালিন ও ভিলনিয়াসে পৌঁছে যেতে পারবে। সাবেক সোভিয়েত আমলের ছায়া হওয়ায় রাশিয়া ভালোভাবেই ওই এলাকায় প্রবেশ করে বাল্টিক প্রতিরক্ষাকে তছনছ করে ফেলতে পারবে।
প্রতিবেদনটিতে ন্যাটো ও রাশিয়ার শক্তি কাঠামোর মধ্যকার পার্থক্যও তুলে ধরা হয়েছে। ন্যাটো বাহিনীর ১২টি ব্যাটালিয়ন থাকলেও সেগুলো মূলত হালকা কৌশলগত। আর রুশ ব্যাটালিয়নগুলো অনেক বেশি শক্তির, যান্ত্রিক। এমনকি রুশ বিমানবাহী ব্যাটালিয়নগুলোও তাদের ন্যাটো প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক বেশি সক্ষম।
এমন এক পরিস্থিতিতে ন্যাটো হয়তো কেবল তার আক্রমণাত্মক বিমানশক্তির ওপর নির্ভর করবে। এতে রুশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। কিন্তু তাতে তাদের অগ্রগতি প্রতিরোধ করার সম্ভাবনা থাকবে খুবই কম। রাশিয়াও তাদের বিমান শক্তির সমর্থনে এবং বিমানবিধ্বংসী অস্ত্রের সুযোগ কাজে লাগাতে চাইবে।
তবে এমন হলে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো পড়বে আরো সমস্যায়। চেচেন বিদ্রোহের সময় রুশ বাহিনী যেভাবে রাজধানী গ্রোজনিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, রাশিয়া-ন্যাটো সঙ্ঘাতে বাল্টিক নগরীগুলোর অবস্থাও তেমন হতে পারে।
দ্বিতীয় বিকল্পটি হলো স্নায়ুযুদ্ধকালীন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি। সেক্ষেত্রে ‘মিচুয়ালি এসুরড ডেস্ট্রাকশন (এমএডি)’ সক্রিয় হয়ে উঠবে।
আর তৃতীয়টি হলো নতুন একটি স্নায়ুযুদ্ধের সৃষ্টি। এমনটা হলে ক্রিমিয়ার মতো বাল্টিকও রাশিয়ার বলে গ্রহণ করে নিতে হবে।
তাহলে রাশিয়াকে মোকাবিলা করা যায় কিভাবে? র্যান্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাটো যদি তার সাত ডিভিশন সৈন্য বাল্টিক এলাকায় মোতায়েন করে, তবেই কেবল রাশিয়াকে সেখানে অভিযান চালাতে বিরত রাখা সম্ভব হতে পারে।
প্রতিবেদনটি তাত্ত্বিকভাবে খুবই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু বাস্তবে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে, সামরিক অভিযান কতটুকু নির্ভুল হবে? আর এতে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে, সেটার সংস্থান হবে কিভাবে?
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নেরও সৃষ্টি হয়। বাল্টিক অঞ্চল দখল করে রাশিয়া কি করবে? এতে রাশিয়ার কি লাভ হবে? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থায়ীভাবে রাশিয়া যে ক্ষতির শিকার হবে, সেটা কিভাবে দূর করবে?
তবে এগুলোর চেয়েও বড় কথা, বাল্টিক এলাকায় রাশিয়া হামলা চালাবে, সেটাকে দখল করবে, এমন কোনো আলামত কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। এই যেমন জর্জিয়ার উদাহরণটির কথা বলা যায়। ২০০৮ সালে অনেক সহজেই পুরো জর্জিয়া কিংবা এর কোনো অংশ দখল করে নিতে পারত। আবার সম্প্রতি ক্রিমিয়া দখল করে নিলেও পূর্ব ইউক্রেনে তেমনটি করার কোনো ইঙ্গিত দেখায়নি। এ নিয়ে ‘নভোরোসিয়া প্রজেক্ট’ নামের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলে পাশ্চাত্য মিডিয়া যে খবর প্রকাশ করছে, রাশিয়া সেটাও অস্বীকার করেছে। বরং বর্তমানে রাশিয়া মনে করছে, দখল করার চেয়ে সেখানে সঙ্ঘাতে ইন্ধন দিয়ে যাওয়ায় তার জন্য লাভজনক।
ন্যাটোর সাথে রাশিয়া স্বাভাবিক কারণেই যুদ্ধে অংশ নিতে চাইবে না। ন্যাটোর সাথে যুদ্ধ মানেই বিপুল ক্ষতি। কেবল রাশিয়ার নয়, বিশ্ব পর্যায়েই বিপর্যয় সৃষ্টি।
রাশিয়া স্বাভাবিকভাবেই এমন কোনো ঝুঁকি নিতে চাইবে না। তারা বরং তাদের স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে যাওয়ার চেষ্টা করবে। আবার র্যান্ড রিপোর্টে যেমন বলা হয়েছে, আমেরিকার ভূমিকা তার উল্টা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রই ন্যাটোকে পূর্বগামী অগ্রযাত্রার যেকোনো পরিস্থিতি প্রথম সুযোগেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারে। ন্যাটো পূর্ব ইউরোপে প্রাধান্য বিস্তার করলে রাশিয়াকে নিজ ঘর সামাল দিতেই ব্যস্ত থাকতে হবে। আর এতে করে মধ্যপ্রাচ্য এবং অন্যান্য স্থানে মাথা ঘামানোর সুযোগই পাবে না বলে পাশ্চাত্যের অনেকে মনে করেন।
দ্বিতীয় আরেকটি বিকল্প পাশ্চাত্য গ্রহণ করতে পারে। সেটা হলো ন্যাটোকে তিনটি ব্লকে ভাগ করার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাশিয়ার ভয়ে সরাসরি ভীত এমনসব দেশ যেমন পোল্যান্ড, বাল্টিক দেশগুলো ও ইউক্রেন ন্যাটোর ইস্টার্ন ব্লক হিসেবে থাকতে পারে। তারা মার্কিন ছত্রছায়ায় একটি যৌথ কমান্ডে কাজ করবে। রুশ আক্রমণের মুখে তারা দ্রুত যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সিদ্ধান্ত নিতে ন্যাটোর বেশ দেরি হয়। ইস্টার্ন ব্লক হলে তারা নিজেরাই গোয়েন্দা তথ্য সহজে সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে।
এমন প্রেক্ষাপটে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, র্যান্ডের মতো প্রতিবেদনগুলো আসলে স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা সৃষ্টির বদলে সহিংসতা উসকে দেয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন ধরনের রিপোর্টের ফলে ন্যাটো-রাশিয়া উত্তেজনা বাড়লে কারো জন্যই তা সুখকর হবে না।
এমন এক প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যান্ড করপোরেশন সম্প্রতি যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কৌতূহলপূর্ণ দৃশ্যপট উপহার দিয়েছে। র্যান্ডের বিশ্লেষক ডেভিড এ শ্লাপক ও মাইকেল জনসনের ‘রেইফরসিং ডিটারেন্স অন ন্যাটোস ইস্টার্ন ফ্রন্ট’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে মূলত দুটি প্রশ্নের জবাব খোঁজার প্রয়াস চালানো হয় : রাশিয়া যদি বাল্টিক দেশ ও অঞ্চলটি পুনরায় নিজের করে নিতে চায়, তবে কী ঘটবে? এবং ন্যাটোর ভীতি এড়িয়ে সে কিভাবে কাজটি করবে?
প্রতিবেদনটিতে সম্ভাব্য পরিস্থিতি সম্পর্কে যে চিত্র আঁকা হয়েছে তা হলো : রাশিয়ার জর্জিয়া আক্রমণ, ক্রিমিয়াকে নিজের করে নেয়া এবং এর পরপরই ইউক্রেনে হস্তক্ষেপে গত দুই দশক ধরে ইউরোপে যে শান্তি তুলনামূলক স্থিতিশীল বৈশ্বিক-ব্যবস্থা ছিল তাতে চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে। রাশিয়ার সামর্থ্য এবং সেই সাথে উদ্দেশ্য নিয়ে যে প্রশ্নই থাকুক না কেন, এটা স্বীকার করতেই হবে, সাবেক সোভিয়েত বলয়ভুক্ত এলাকায় সামরিকভাবে প্রাধান্য সৃষ্টির মতো সামর্থ্য এখনো আছে দেশটির।
প্রতিবেদনটিতে রাশিয়া বাল্টিক আক্রমণ করলে বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ন্যাটোর বর্তমান যে শক্তি রয়েছে, তা দিয়ে রুশ অগ্রগতি ঠেকানো সম্ভব নয়। রাশিয়া মাত্র তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে রিগা, তালিন ও ভিলনিয়াসে পৌঁছে যেতে পারবে। সাবেক সোভিয়েত আমলের ছায়া হওয়ায় রাশিয়া ভালোভাবেই ওই এলাকায় প্রবেশ করে বাল্টিক প্রতিরক্ষাকে তছনছ করে ফেলতে পারবে।
প্রতিবেদনটিতে ন্যাটো ও রাশিয়ার শক্তি কাঠামোর মধ্যকার পার্থক্যও তুলে ধরা হয়েছে। ন্যাটো বাহিনীর ১২টি ব্যাটালিয়ন থাকলেও সেগুলো মূলত হালকা কৌশলগত। আর রুশ ব্যাটালিয়নগুলো অনেক বেশি শক্তির, যান্ত্রিক। এমনকি রুশ বিমানবাহী ব্যাটালিয়নগুলোও তাদের ন্যাটো প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক বেশি সক্ষম।
এমন এক পরিস্থিতিতে ন্যাটো হয়তো কেবল তার আক্রমণাত্মক বিমানশক্তির ওপর নির্ভর করবে। এতে রুশ বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। কিন্তু তাতে তাদের অগ্রগতি প্রতিরোধ করার সম্ভাবনা থাকবে খুবই কম। রাশিয়াও তাদের বিমান শক্তির সমর্থনে এবং বিমানবিধ্বংসী অস্ত্রের সুযোগ কাজে লাগাতে চাইবে।
তবে এমন হলে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো পড়বে আরো সমস্যায়। চেচেন বিদ্রোহের সময় রুশ বাহিনী যেভাবে রাজধানী গ্রোজনিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, রাশিয়া-ন্যাটো সঙ্ঘাতে বাল্টিক নগরীগুলোর অবস্থাও তেমন হতে পারে।
দ্বিতীয় বিকল্পটি হলো স্নায়ুযুদ্ধকালীন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি। সেক্ষেত্রে ‘মিচুয়ালি এসুরড ডেস্ট্রাকশন (এমএডি)’ সক্রিয় হয়ে উঠবে।
আর তৃতীয়টি হলো নতুন একটি স্নায়ুযুদ্ধের সৃষ্টি। এমনটা হলে ক্রিমিয়ার মতো বাল্টিকও রাশিয়ার বলে গ্রহণ করে নিতে হবে।
তাহলে রাশিয়াকে মোকাবিলা করা যায় কিভাবে? র্যান্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ন্যাটো যদি তার সাত ডিভিশন সৈন্য বাল্টিক এলাকায় মোতায়েন করে, তবেই কেবল রাশিয়াকে সেখানে অভিযান চালাতে বিরত রাখা সম্ভব হতে পারে।
প্রতিবেদনটি তাত্ত্বিকভাবে খুবই গ্রহণযোগ্য। কিন্তু বাস্তবে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করে। বিশেষ করে, সামরিক অভিযান কতটুকু নির্ভুল হবে? আর এতে যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে, সেটার সংস্থান হবে কিভাবে?
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নেরও সৃষ্টি হয়। বাল্টিক অঞ্চল দখল করে রাশিয়া কি করবে? এতে রাশিয়ার কি লাভ হবে? আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্থায়ীভাবে রাশিয়া যে ক্ষতির শিকার হবে, সেটা কিভাবে দূর করবে?
তবে এগুলোর চেয়েও বড় কথা, বাল্টিক এলাকায় রাশিয়া হামলা চালাবে, সেটাকে দখল করবে, এমন কোনো আলামত কিন্তু দেখা যাচ্ছে না। এই যেমন জর্জিয়ার উদাহরণটির কথা বলা যায়। ২০০৮ সালে অনেক সহজেই পুরো জর্জিয়া কিংবা এর কোনো অংশ দখল করে নিতে পারত। আবার সম্প্রতি ক্রিমিয়া দখল করে নিলেও পূর্ব ইউক্রেনে তেমনটি করার কোনো ইঙ্গিত দেখায়নি। এ নিয়ে ‘নভোরোসিয়া প্রজেক্ট’ নামের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলে পাশ্চাত্য মিডিয়া যে খবর প্রকাশ করছে, রাশিয়া সেটাও অস্বীকার করেছে। বরং বর্তমানে রাশিয়া মনে করছে, দখল করার চেয়ে সেখানে সঙ্ঘাতে ইন্ধন দিয়ে যাওয়ায় তার জন্য লাভজনক।
ন্যাটোর সাথে রাশিয়া স্বাভাবিক কারণেই যুদ্ধে অংশ নিতে চাইবে না। ন্যাটোর সাথে যুদ্ধ মানেই বিপুল ক্ষতি। কেবল রাশিয়ার নয়, বিশ্ব পর্যায়েই বিপর্যয় সৃষ্টি।
রাশিয়া স্বাভাবিকভাবেই এমন কোনো ঝুঁকি নিতে চাইবে না। তারা বরং তাদের স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে যাওয়ার চেষ্টা করবে। আবার র্যান্ড রিপোর্টে যেমন বলা হয়েছে, আমেরিকার ভূমিকা তার উল্টা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রই ন্যাটোকে পূর্বগামী অগ্রযাত্রার যেকোনো পরিস্থিতি প্রথম সুযোগেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারে। ন্যাটো পূর্ব ইউরোপে প্রাধান্য বিস্তার করলে রাশিয়াকে নিজ ঘর সামাল দিতেই ব্যস্ত থাকতে হবে। আর এতে করে মধ্যপ্রাচ্য এবং অন্যান্য স্থানে মাথা ঘামানোর সুযোগই পাবে না বলে পাশ্চাত্যের অনেকে মনে করেন।
দ্বিতীয় আরেকটি বিকল্প পাশ্চাত্য গ্রহণ করতে পারে। সেটা হলো ন্যাটোকে তিনটি ব্লকে ভাগ করার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাশিয়ার ভয়ে সরাসরি ভীত এমনসব দেশ যেমন পোল্যান্ড, বাল্টিক দেশগুলো ও ইউক্রেন ন্যাটোর ইস্টার্ন ব্লক হিসেবে থাকতে পারে। তারা মার্কিন ছত্রছায়ায় একটি যৌথ কমান্ডে কাজ করবে। রুশ আক্রমণের মুখে তারা দ্রুত যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সিদ্ধান্ত নিতে ন্যাটোর বেশ দেরি হয়। ইস্টার্ন ব্লক হলে তারা নিজেরাই গোয়েন্দা তথ্য সহজে সংগ্রহ করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে।
এমন প্রেক্ষাপটে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, র্যান্ডের মতো প্রতিবেদনগুলো আসলে স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা সৃষ্টির বদলে সহিংসতা উসকে দেয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন ধরনের রিপোর্টের ফলে ন্যাটো-রাশিয়া উত্তেজনা বাড়লে কারো জন্যই তা সুখকর হবে না।
No comments