পৌর নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি : ছহুল হোসাইন by কাজী জেবেল
৩০
ডিসেম্বর দেশের ২৩৪ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে; অন্যদিকে বিজিত বিএনপি নির্বাচনী ফল
প্রত্যাখ্যান করেছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন পৌরসভা নির্বাচনের
বিভিন্ন দিক নিয়ে যুগান্তরের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার মতে, এ নির্বাচন
গ্রহণযোগ্য হয়নি। তিনি আরও মনে করেন, নির্বাচনে সহিংসতা হলে তা গণতন্ত্রের
জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দেবে, দেশে জঙ্গিবাদের মতো বড় সমস্যারও উদ্ভব ঘটবে।
প্রশ্ন : পৌরসভা নির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
উত্তর : পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনগুলোতে দেখেছি, অনেক কেন্দ্রে বিপুলভাবে আচরণবিধি লংঘনের ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া দেখা গেছে। সহিংসতাও হয়েছে। আবার অনেক কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণ হতে দেখা গেছে। ভোটের দিন আওয়ামী লীগের পক্ষে এইচটি ইমাম সাহেবকে নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ করতে দেখেছি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনে অনেক পৌরসভায় বিএনপি-জামায়াত ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। অপরদিকে বিএনপিকেও অভিযোগ করতে দেখেছি। ভোটের দিন তারাও দফায় দফায় অভিযোগ করেছে। অর্থাৎ উভয়পক্ষই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছে। এসব বিবেচনায় বলা যায়, পৌর নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। একটি স্বচ্ছ নির্বাচন সবার প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
প্রশ্ন : নির্বাচনে গড়ে ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। আওয়ামী লীগ কোথাও কোথাও ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে- এটি যৌক্তিক কিনা?
উত্তর : এটা বিভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা যেতে পারে। প্রথমত, স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ২০টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে কাউন্সিলর পদে নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হতে কাউন্সিলররা ভোটারদের ধরে ধরে কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। এদিক বিবেচনায় এ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ বেশি ছিল। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে কারচুপির কারণে বেশি ভোট পড়েছে। বড় দুটি দলই অভিযোগ করেছে, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তবে তদন্ত করে দেখা দরকার, কী কারণে এ পরিমাণ ভোট পড়েছে। সঠিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়া এ বিষয়ে মন্তব্য সঠিক হবে না।
হামলা-মামলার কারণে দীর্ঘদিন বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে ছিলেন না। অপরদিকে সরকারি দল মাঠ দখল করে রেখেছিল। নির্বাচনের জন্য এটা সাংঘাতিক বিষয়। কারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দল হওয়ার পরও বিএনপির লোকজন এদিক-সেদিক লুকিয়ে ছিলেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে নির্বাচনের আগে ও পরে অনেক অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এসব অভিযোগ তদন্ত করেছে এমনটি কখনোই জানায়নি।
প্রশ্ন : ৭ জন মেয়র ও ১৪০ জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
উত্তর : এটি অবিশ্বাস্য। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। বড় দুই দলই অনেক চেষ্টা করেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে ৭টি মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়ার বিষয়টি অবিশ্বাস্য। এসব পৌরসভায় কিছু একটা ঘটেছিল বলেই অনুমেয়। তিনি বলেন, যেসব পৌরসভায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, সেসব এলাকায় তদন্ত করে দেখা দরকার কী কারণে অন্য কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসেননি। নাকি সেখানকার অন্য প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এগুলো এখনই খতিয়ে দেখা দরকার। যদিও গেজেট হওয়ার পর এসব নির্বাচন বন্ধের সুযোগ নেই। তবুও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
প্রশ্ন : নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর কারণ কী হতে পারে?
উত্তর : ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র, যেগুলো নির্বাচন কমিশনের ভাষায় অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলা হয়- এসব কেন্দ্রে সহিংসতা বেশি দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাহলে সঙ্গত কারণে প্রশ্ন ওঠে- তারা কী দায়িত্ব পালন করেছে? কার কী কাজ বণ্টন করা হয়েছিল? তারা সঠিকভাবে সেগুলো পালন করেছিল কিনা? নির্বাচন কমিশন এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানায়নি। গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচনের ফল পরিবর্তন হয়- এমন অভিযোগের তদন্ত করা যায় না। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কিনা, তা তদন্ত করতে কোনো বাধা নেই। নির্বাচন কমিশন চাইলে এখনও এসব বিষয় তদন্ত করতে পারে।
প্রশ্ন : বিএনপি পৌর নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে- বিষয়টি কতটুকু গ্রহণযোগ্য?
উত্তর : রাজনৈতিকভাবে বিএনপি বিপদে ছিল। হামলা-মামলার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা এলাকার বাইরে পালিয়ে ছিলেন। নির্বাচন উপলক্ষে তারা কমবেশি মাঠে ফিরেছেন। জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। অপরদিকে নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রেখে নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব দিক বিবেচনায় এ নির্বাচনে হেরে গেলেও একে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে বিজয় হিসেবে দেখছেন। তবে চিন্তার বিষয় হচ্ছে- ৩০-৩২ শতাংশ বিএনপির একনিষ্ঠ ভোটার রয়েছেন। কিছু কিছু এলাকা বিএনপি অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত। ওইসব পৌরসভায়ও বিএনপির পরাজয় হয়েছে। এখন তদন্তের বিষয় হচ্ছে- বিএনপির এসব একনিষ্ঠ ভোটার কি দলবদল করেছেন, নাকি তারা ভোট দেয়ার সুযোগ পাননি।
প্রশ্ন : তিন সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের সহিংসতার প্রভাব ইউনিয়ন পরিষদে পড়ার আশংকা আছে কিনা?
উত্তর : নির্বাচনের মানের যে নিম্নগামিতা দেখা দিয়েছে তাতে ধরে নেয়া যায়, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একই ধরনের ঘটনার আশংকা রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূল পর্যায়ের লোকজন অংশ নেন। এ নির্বাচনে যারা হেরে যাবেন, তাদের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। সব নির্বাচনে একটি পক্ষ সহিংসতার চেষ্টা চালায়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হয়। নির্বাচন কমিশন যদি এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়, তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ করে তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে বাধ্য। এজন্য নির্বাচনে ইসির অ্যাকশনগুলো দৃশ্যমান করা দরকার। তাহলে মাস্তান, সন্ত্রাসীরা ভয় পাবে। নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা বাহিনী সঠিকভবে দায়িত্ব পালন করবে।
নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ। নির্বাচনে সহিংসতা হলে তা গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দেবে। দেশে জঙ্গিবাদের মতো বড় বড় সমস্যার উদ্ভব ঘটবে।
উত্তর : পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনগুলোতে দেখেছি, অনেক কেন্দ্রে বিপুলভাবে আচরণবিধি লংঘনের ঘটনা ঘটেছে। কোথাও কোথাও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া দেখা গেছে। সহিংসতাও হয়েছে। আবার অনেক কেন্দ্রে নির্বিঘ্নে ভোট গ্রহণ হতে দেখা গেছে। ভোটের দিন আওয়ামী লীগের পক্ষে এইচটি ইমাম সাহেবকে নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ করতে দেখেছি। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, নির্বাচনে অনেক পৌরসভায় বিএনপি-জামায়াত ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। অপরদিকে বিএনপিকেও অভিযোগ করতে দেখেছি। ভোটের দিন তারাও দফায় দফায় অভিযোগ করেছে। অর্থাৎ উভয়পক্ষই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছে। এসব বিবেচনায় বলা যায়, পৌর নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। একটি স্বচ্ছ নির্বাচন সবার প্রত্যাশা ছিল। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
প্রশ্ন : নির্বাচনে গড়ে ৭৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। আওয়ামী লীগ কোথাও কোথাও ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে- এটি যৌক্তিক কিনা?
উত্তর : এটা বিভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা যেতে পারে। প্রথমত, স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ২০টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে কাউন্সিলর পদে নির্দলীয়ভাবে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হতে কাউন্সিলররা ভোটারদের ধরে ধরে কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। এদিক বিবেচনায় এ নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ বেশি ছিল। দ্বিতীয়ত, নির্বাচনে কারচুপির কারণে বেশি ভোট পড়েছে। বড় দুটি দলই অভিযোগ করেছে, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তবে তদন্ত করে দেখা দরকার, কী কারণে এ পরিমাণ ভোট পড়েছে। সঠিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়া এ বিষয়ে মন্তব্য সঠিক হবে না।
হামলা-মামলার কারণে দীর্ঘদিন বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে ছিলেন না। অপরদিকে সরকারি দল মাঠ দখল করে রেখেছিল। নির্বাচনের জন্য এটা সাংঘাতিক বিষয়। কারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দল হওয়ার পরও বিএনপির লোকজন এদিক-সেদিক লুকিয়ে ছিলেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে নির্বাচনের আগে ও পরে অনেক অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এসব অভিযোগ তদন্ত করেছে এমনটি কখনোই জানায়নি।
প্রশ্ন : ৭ জন মেয়র ও ১৪০ জন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
উত্তর : এটি অবিশ্বাস্য। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন। বড় দুই দলই অনেক চেষ্টা করেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে ৭টি মেয়র পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়ার বিষয়টি অবিশ্বাস্য। এসব পৌরসভায় কিছু একটা ঘটেছিল বলেই অনুমেয়। তিনি বলেন, যেসব পৌরসভায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, সেসব এলাকায় তদন্ত করে দেখা দরকার কী কারণে অন্য কোনো প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আসেননি। নাকি সেখানকার অন্য প্রার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে এগুলো এখনই খতিয়ে দেখা দরকার। যদিও গেজেট হওয়ার পর এসব নির্বাচন বন্ধের সুযোগ নেই। তবুও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
প্রশ্ন : নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর কারণ কী হতে পারে?
উত্তর : ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র, যেগুলো নির্বাচন কমিশনের ভাষায় অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র বলা হয়- এসব কেন্দ্রে সহিংসতা বেশি দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তাহলে সঙ্গত কারণে প্রশ্ন ওঠে- তারা কী দায়িত্ব পালন করেছে? কার কী কাজ বণ্টন করা হয়েছিল? তারা সঠিকভাবে সেগুলো পালন করেছিল কিনা? নির্বাচন কমিশন এসব বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছুই জানায়নি। গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচনের ফল পরিবর্তন হয়- এমন অভিযোগের তদন্ত করা যায় না। কিন্তু নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন কিনা, তা তদন্ত করতে কোনো বাধা নেই। নির্বাচন কমিশন চাইলে এখনও এসব বিষয় তদন্ত করতে পারে।
প্রশ্ন : বিএনপি পৌর নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছে- বিষয়টি কতটুকু গ্রহণযোগ্য?
উত্তর : রাজনৈতিকভাবে বিএনপি বিপদে ছিল। হামলা-মামলার কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা এলাকার বাইরে পালিয়ে ছিলেন। নির্বাচন উপলক্ষে তারা কমবেশি মাঠে ফিরেছেন। জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। অপরদিকে নির্বাচন ইস্যুতে সরকারকে চাপে রেখে নানা ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। এসব দিক বিবেচনায় এ নির্বাচনে হেরে গেলেও একে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে বিজয় হিসেবে দেখছেন। তবে চিন্তার বিষয় হচ্ছে- ৩০-৩২ শতাংশ বিএনপির একনিষ্ঠ ভোটার রয়েছেন। কিছু কিছু এলাকা বিএনপি অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত। ওইসব পৌরসভায়ও বিএনপির পরাজয় হয়েছে। এখন তদন্তের বিষয় হচ্ছে- বিএনপির এসব একনিষ্ঠ ভোটার কি দলবদল করেছেন, নাকি তারা ভোট দেয়ার সুযোগ পাননি।
প্রশ্ন : তিন সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচনের সহিংসতার প্রভাব ইউনিয়ন পরিষদে পড়ার আশংকা আছে কিনা?
উত্তর : নির্বাচনের মানের যে নিম্নগামিতা দেখা দিয়েছে তাতে ধরে নেয়া যায়, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একই ধরনের ঘটনার আশংকা রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তৃণমূল পর্যায়ের লোকজন অংশ নেন। এ নির্বাচনে যারা হেরে যাবেন, তাদের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। সব নির্বাচনে একটি পক্ষ সহিংসতার চেষ্টা চালায়। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হয়। নির্বাচন কমিশন যদি এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়, তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ করে তাহলেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে বাধ্য। এজন্য নির্বাচনে ইসির অ্যাকশনগুলো দৃশ্যমান করা দরকার। তাহলে মাস্তান, সন্ত্রাসীরা ভয় পাবে। নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা বাহিনী সঠিকভবে দায়িত্ব পালন করবে।
নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ। নির্বাচনে সহিংসতা হলে তা গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি হয়ে দেখা দেবে। দেশে জঙ্গিবাদের মতো বড় বড় সমস্যার উদ্ভব ঘটবে।
No comments