ইয়েমেনে ইরানি দূতাবাসে সৌদির বোমা হামলা?
ইরান অভিযোগ করেছে, ইয়েমেনের রাজধানী সানায় তাদের দূতাবাসে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বিমান থেকে বোমা হামলা চালিয়েছে। ইরানের দাবি, এতে তাঁদের বেশ কয়েকজন দূতাবাসকর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হোসাইন জাবের আনসারিকে উদ্ধৃত করে এ খবর জানায়। তবে সৌদি জোট বলেছে, ইরানের এই অভিযোগের ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নেই। এদিকে, গতকাল ইরান সরকার সৌদি আরবের সব ধরনের পণ্য সে দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। একই সঙ্গে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সব ইরানি নাগরিককে মক্কায় ওমরাহ পালন করতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। খবর আল-জাজিরার। হোসাইন জাবের আনসারি বলেন, ‘দূতাবাসের ক্ষয়ক্ষতি ও কর্মীদের আহত হওয়ার জন্য সরাসরি সৌদি সরকার দায়ী।’ তবে ঠিক কখন এ হামলা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেন সরকারের অনুরোধে দেশটির বিদ্রোহী হুতিদের ওপর বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। সৌদি জোটের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আসেরি গতকাল রয়টার্সকে বলেছেন, ইরানের অভিযোগ তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। আসেরি বলেন, সানায় পরিত্যক্ত দূতাবাসগুলোসহ বিভিন্ন বেসামরিক স্থাপনায় বিদ্রোহী হুতিরা রকেট উৎক্ষেপণব্যবস্থা পেতেছে বলে তাঁরা খবর পাচ্ছেন। ওই খবর অনুযায়ী বুধবার দিবাগত রাতে সানায় বেশ কয়েকটি স্থাপনায় তারা বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, ইরান শিয়া গোষ্ঠীভিত্তিক হুতি বিদ্রোহীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ তুলেছে।
কাজেই এই অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। সৌদির পক্ষে এবার কাতার, জিবুতি ও তুরস্ক: ইরানে সৌদি দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে হামলা এবং অগ্নিসংযোগের জেরে সৌদি আরবের পক্ষে এবার সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে কাতার। এর অংশ হিসেবে কাতার তেহরানে থাকা তার রাষ্ট্রদূতকে গত বুধবার প্রত্যাহার করে নিয়েছে। একই দিনে আফ্রিকান দেশ জিবুতি ইরানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। জর্ডান তাঁর দেশে ইরানের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। ইরানের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। এরদোয়ান গত বুধবার আঙ্কারায় দেওয়া এক ভাষণে বলেন, ‘(ইরানে) সৌদি দূতাবাসে রকেট লঞ্চার দিয়ে হামলা করা হয়েছে। ইরাকেও সৌদি দূতাবাস তছনছ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের নিরিখে এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ সৌদি আরব গত শনিবার সে দেশের প্রভাবশালী শিয়া নেতা শেখ নিমর আল-নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই শিয়াপ্রধান দেশ ইরান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। শনিবার দিবাগত রাতে তেহরানে সৌদি দূতাবাস ও ইরানের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর মাশহাদে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে বিক্ষোভকারীরা হামলা চালায় ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এর জের ধরে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে। সৌদির সমর্থনে বাহরাইন ও সুদানের পর সর্বশেষ বুধবার জিবুতিও ইরানের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে। অবশ্য ইতিমধ্যেই ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সৌদি দূতাবাসে হামলায় জড়িত বেশির ভাগ ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
No comments