ক্লিন ঢাকা গ্রিন ঢাকা গড়তে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাইলেন মেয়র আনিসুল হক
হোটেল সোনারগাঁওয়ে গতকাল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময় : নয়া দিগন্ত |
ক্লিন
ঢাকা, গ্রিন ঢাকা গড়তে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাইলেন ঢাকা উত্তর সিটি
করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, শুধু মেয়রের একার
পক্ষে ক্লিন ও গ্রিন ঢাকা গড়া সম্ভব নয়। ঢাকা চেঞ্জ করতে হলে জনমত সৃষ্টি
করতে হবে। এজন্য ব্যাপক জনসচেতনতা প্রয়োজন। আর এ কাজটি একমাত্র গণমাধ্যমই
করতে পারে।
গতকাল রাজধানী হোটেল সোনারগাঁওয়ে পত্রিকা ও অনলাইন সম্পাদকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় অংশগ্রহণকারী সম্পাদকেরাও মেয়রের ভালো কাজে সব সময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত সভায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ার, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমীমা হোসেন, ডেইলি এশিয়ান এজ সম্পাদক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, ইউএনবির সিএনই মাহফুজুর রহমান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মেসবাহুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মেয়র আনিসুল হক গত আট মাসে ডিএনসিসির নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। আগামী পরিকল্পনাগুলোও সবিস্তারে বর্ণনা করেন তিনি। আনিসুল হক বলেন, প্রতিদিন যতই ময়লা পরিষ্কার করি ঢাকা শহর কিন থাকে না। আজ পরিষ্কার করলে পরদিন আবার আগের অবস্থায় চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের মাঝখানে টন টন ময়লা জমে গেছে। ড্রেনের মধ্যে ময়লা সিমেন্টের মতো জমে গেছে। রাস্তার পাশে ডাস্টবিন দিলে রাতের মধ্যে চুরি হয়ে যাচ্ছে। খাল-বিল দখল হয়ে গেছে। ৪৩টি খালের মধ্যে ২৩টিরই মাথা দখল করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মানুষ সচেতন না হলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে না। মেয়র একা কিছুই করতে পারবে না। মানুষের মগজের মধ্যে ঢুকাতে হবে, তাদের ম্যাসেজ দিতে হবে, ময়লা ফেলা যাবে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর এ কাজটি গণমাধ্যমই একমাত্র করতে পারে।
মেয়র যানজট নিরসন, আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ইউলুপ নির্মাণ, ময়লা পরিষ্কার, সেকেন্ডরি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ, ফুটপাথ দখলমুক্ত করা, ফুটওভার ব্রিজে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, ৩৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে দুইটি করে মোট ৭২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬০টির ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগামী মার্চ মাসে এগুলো তৈরি শেষ হলে রাজধানীর ময়লা সব এখানে ফেলা হবে। তখন অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। রাস্তায় বড় কোনো ময়লা থাকবে না। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি তাদের দোকানের সামনে কোনো ময়লা রাখা যাবে না। তারা যদি না শোনে তাহলে দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে। ২০ হাজার বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, এ জন্য অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে। আপস করতে হয়েছে। আবার বিলবোর্ড ফিরবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিলবোর্ড হবে আধুনিক ও পরিবেশসম্মত। দেয়ালে আর কোনো লেখালেখি করতে দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা লেখেন তাদের নিষেধ করে ফোন দেয়া হচ্ছে। এরপর তাদের অফিসে হানা দেয়া হবে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে ফুটপাথ দোকানমুক্ত করা হবে বলেও জানান মেয়র। যানজট আগামী বছর আরো বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, তেজগাঁও, গাবতলী, মোহাম্মদপুরসহ ১০টি জায়গায় পার্কিং বন্ধ করা হয়েছে। এতে বেশ উপকার পাওয়া গেছে। যত্রতত্র বাস থামানো বন্ধ করা হচ্ছে। বর্তমানে ৯০টি সংস্থার মাধ্যমে দুই হাজার মালিক রাজধানীতে বাস চালাচ্ছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, এদেরকে পাঁচটি কোম্পানির অধীন আনা হচ্ছে। পাঁচটি এলাকায় ভিন্ন রঙের এসব বাস চলবে। এ ছাড়া তিন হাজার নতুন বাস নামানো হবে। এর মধ্যে এক হাজার থাকবে এসি বাস। জোড়-বিজোড় সিরিয়ালে গাড়ি চালানো যায় কিনা তারও পরীক্ষা করা হবে। তবে বাস ব্যবসায় কঠিন সিন্ডিকেট ও হাজার কোটি টাকার লেনদেন রয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, বাস মালিকদের কোম্পানির অধীন আনতে রাজি করাতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থির উন্নতি ঘটাতে পুরো ডিএনসিসি এলাকা সিটিটিভির আওতায় আসছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে গুলশান-বনানী এলাকায় ৯০টি সিসিটিভি রয়েছে। এতে ত্রিশ ভাগ অপরাধ কমে গেছে। পুরো সিটি এলাকায় পর্যায়ক্রমে আড়াই হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। এগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ। কোথায় কোনো অপরাধ ঘটলে তখন দোষী ধরতে সহজ হবে। মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা ফেললে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এ ক্যামেরা দিয়ে দেখা যাবে। গ্রিন ঢাকা গড়তে বাড়িতে বাড়িতে ফুলগাছ, সার পৌঁছে দেয়া হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, বাস সার্ভিস থাকবে। তাদের জানালেই বাড়িতে গাছ পৌঁছে দেবে। তাদের মাসিক একটা চার্জ দিতে হবে। সিএনজি স্টেশনগুলোতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে জানিয়ে বলেন, তারা সহযোগিতা না করলে খবর আছে। রাজউকের অধীনে থাকা বড় পার্কগুলো সিটি করপোরেশনের অধীনে দেয়ার অনুরোধ করেন মেয়র। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজধানীর খালগুলো পরিষ্কারের কার্যক্রম মেয়রের এখতিয়ারে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ অভিযান প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আপাতত অভিযান বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে পার্কিং স্থান না রেখে বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করা হবে।
সভায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ার মেয়রকে ভালো কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, রাজনীতিবিদেরাও আপনার মতো হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। তবে তিনি আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণে আরো সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। বিলবোর্ডে সুন্দরী নারীদের ছবি না রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
আলমগীর মহিউদ্দিন মেয়রের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, ঢাকাবাসী এবার অন্তত ভালো কিছু দেখবে। তিনি আরো বলেন, ঢাকার জন্য প্রথম একটি মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়েছিল, এতে ছয়টি পার্কিং এরিয়া ছিল, সেগুলোর এখন একটাও নেই। সেগুলো থাকলে অনেক ভালো হতো। ডিএনসিসির ভালো কার্যক্রমে সব সময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন আলমগীর মহিউদ্দিন।
আতিকউল্লাহ খান মাসুদ হকার উচ্ছেদে মেয়রকে একই জায়গায় বারবার অভিযান চালানোর পরামর্শ দেন।
মতিউর রহমান চৌধুরী তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা ফাঁকা করায় মেয়রের প্রশংসা করে বলেন, তবে আবারো দখল করে নেয়ার পাঁয়তারা চলছে।
নঈম নিজাম মূল সড়ক থেকে ডাস্টবিন সরানোর আহ্বান জানান। ফাইওভার নির্মাণে প্রতি বছর সময় বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটি কাজ কেয়ামত পর্যন্ত চলতে পারে না।
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, অতীতে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখেছি। তবে এবার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
তাসমীমা হোসেন বলেন, ফার্মগেটে একটি পার্ক দখল করে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সাথে কয়েকজন মন্ত্রীরও সমর্থন রয়েছে। এভাবে শহরের মধ্যে যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, তাবলিগ বন্ধ করা উচিত। মসজিদ থেকে মাইকে উচ্চ শব্দে আজান দিয়ে শব্দ দূষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যাদের আজান শোনা দরকার তারা প্রয়োজনে মসজিদের সাথে ইলেট্রনিক মাধ্যমে নিজেদের কানে লাগিয়ে শুনতে পারে।
গতকাল রাজধানী হোটেল সোনারগাঁওয়ে পত্রিকা ও অনলাইন সম্পাদকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় অংশগ্রহণকারী সম্পাদকেরাও মেয়রের ভালো কাজে সব সময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত সভায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ার, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন, ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক তাসমীমা হোসেন, ডেইলি এশিয়ান এজ সম্পাদক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, ইউএনবির সিএনই মাহফুজুর রহমান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মেসবাহুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় মেয়র আনিসুল হক গত আট মাসে ডিএনসিসির নেয়া বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। আগামী পরিকল্পনাগুলোও সবিস্তারে বর্ণনা করেন তিনি। আনিসুল হক বলেন, প্রতিদিন যতই ময়লা পরিষ্কার করি ঢাকা শহর কিন থাকে না। আজ পরিষ্কার করলে পরদিন আবার আগের অবস্থায় চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের মাঝখানে টন টন ময়লা জমে গেছে। ড্রেনের মধ্যে ময়লা সিমেন্টের মতো জমে গেছে। রাস্তার পাশে ডাস্টবিন দিলে রাতের মধ্যে চুরি হয়ে যাচ্ছে। খাল-বিল দখল হয়ে গেছে। ৪৩টি খালের মধ্যে ২৩টিরই মাথা দখল করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মানুষ সচেতন না হলে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে না। মেয়র একা কিছুই করতে পারবে না। মানুষের মগজের মধ্যে ঢুকাতে হবে, তাদের ম্যাসেজ দিতে হবে, ময়লা ফেলা যাবে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। রাজধানীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আর এ কাজটি গণমাধ্যমই একমাত্র করতে পারে।
মেয়র যানজট নিরসন, আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ইউলুপ নির্মাণ, ময়লা পরিষ্কার, সেকেন্ডরি ট্রান্সফার স্টেশন নির্মাণ, ফুটপাথ দখলমুক্ত করা, ফুটওভার ব্রিজে গাছ লাগানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, ৩৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে দুইটি করে মোট ৭২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৬০টির ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। আগামী মার্চ মাসে এগুলো তৈরি শেষ হলে রাজধানীর ময়লা সব এখানে ফেলা হবে। তখন অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। রাস্তায় বড় কোনো ময়লা থাকবে না। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি তাদের দোকানের সামনে কোনো ময়লা রাখা যাবে না। তারা যদি না শোনে তাহলে দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে। ২০ হাজার বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, এ জন্য অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছে। আপস করতে হয়েছে। আবার বিলবোর্ড ফিরবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিলবোর্ড হবে আধুনিক ও পরিবেশসম্মত। দেয়ালে আর কোনো লেখালেখি করতে দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, যারা লেখেন তাদের নিষেধ করে ফোন দেয়া হচ্ছে। এরপর তাদের অফিসে হানা দেয়া হবে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে ফুটপাথ দোকানমুক্ত করা হবে বলেও জানান মেয়র। যানজট আগামী বছর আরো বেড়ে যাবে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, তেজগাঁও, গাবতলী, মোহাম্মদপুরসহ ১০টি জায়গায় পার্কিং বন্ধ করা হয়েছে। এতে বেশ উপকার পাওয়া গেছে। যত্রতত্র বাস থামানো বন্ধ করা হচ্ছে। বর্তমানে ৯০টি সংস্থার মাধ্যমে দুই হাজার মালিক রাজধানীতে বাস চালাচ্ছেন জানিয়ে মেয়র বলেন, এদেরকে পাঁচটি কোম্পানির অধীন আনা হচ্ছে। পাঁচটি এলাকায় ভিন্ন রঙের এসব বাস চলবে। এ ছাড়া তিন হাজার নতুন বাস নামানো হবে। এর মধ্যে এক হাজার থাকবে এসি বাস। জোড়-বিজোড় সিরিয়ালে গাড়ি চালানো যায় কিনা তারও পরীক্ষা করা হবে। তবে বাস ব্যবসায় কঠিন সিন্ডিকেট ও হাজার কোটি টাকার লেনদেন রয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, বাস মালিকদের কোম্পানির অধীন আনতে রাজি করাতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থির উন্নতি ঘটাতে পুরো ডিএনসিসি এলাকা সিটিটিভির আওতায় আসছে জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে গুলশান-বনানী এলাকায় ৯০টি সিসিটিভি রয়েছে। এতে ত্রিশ ভাগ অপরাধ কমে গেছে। পুরো সিটি এলাকায় পর্যায়ক্রমে আড়াই হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। এগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে পুলিশ। কোথায় কোনো অপরাধ ঘটলে তখন দোষী ধরতে সহজ হবে। মানুষ যেখানে সেখানে ময়লা ফেললে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এ ক্যামেরা দিয়ে দেখা যাবে। গ্রিন ঢাকা গড়তে বাড়িতে বাড়িতে ফুলগাছ, সার পৌঁছে দেয়া হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, বাস সার্ভিস থাকবে। তাদের জানালেই বাড়িতে গাছ পৌঁছে দেবে। তাদের মাসিক একটা চার্জ দিতে হবে। সিএনজি স্টেশনগুলোতে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা হবে জানিয়ে বলেন, তারা সহযোগিতা না করলে খবর আছে। রাজউকের অধীনে থাকা বড় পার্কগুলো সিটি করপোরেশনের অধীনে দেয়ার অনুরোধ করেন মেয়র। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজধানীর খালগুলো পরিষ্কারের কার্যক্রম মেয়রের এখতিয়ারে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ অভিযান প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আপাতত অভিযান বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে পার্কিং স্থান না রেখে বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করা হবে।
সভায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ার মেয়রকে ভালো কাজে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, রাজনীতিবিদেরাও আপনার মতো হলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। তবে তিনি আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণে আরো সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। বিলবোর্ডে সুন্দরী নারীদের ছবি না রাখারও আহ্বান জানান তিনি।
আলমগীর মহিউদ্দিন মেয়রের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, ঢাকাবাসী এবার অন্তত ভালো কিছু দেখবে। তিনি আরো বলেন, ঢাকার জন্য প্রথম একটি মাস্টার প্লান তৈরি করা হয়েছিল, এতে ছয়টি পার্কিং এরিয়া ছিল, সেগুলোর এখন একটাও নেই। সেগুলো থাকলে অনেক ভালো হতো। ডিএনসিসির ভালো কার্যক্রমে সব সময় পাশে থাকার আশ্বাস দেন আলমগীর মহিউদ্দিন।
আতিকউল্লাহ খান মাসুদ হকার উচ্ছেদে মেয়রকে একই জায়গায় বারবার অভিযান চালানোর পরামর্শ দেন।
মতিউর রহমান চৌধুরী তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ডের সামনের রাস্তা ফাঁকা করায় মেয়রের প্রশংসা করে বলেন, তবে আবারো দখল করে নেয়ার পাঁয়তারা চলছে।
নঈম নিজাম মূল সড়ক থেকে ডাস্টবিন সরানোর আহ্বান জানান। ফাইওভার নির্মাণে প্রতি বছর সময় বাড়ানোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটি কাজ কেয়ামত পর্যন্ত চলতে পারে না।
ইমদাদুল হক মিলন বলেন, অতীতে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখেছি। তবে এবার বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
তাসমীমা হোসেন বলেন, ফার্মগেটে একটি পার্ক দখল করে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সাথে কয়েকজন মন্ত্রীরও সমর্থন রয়েছে। এভাবে শহরের মধ্যে যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, তাবলিগ বন্ধ করা উচিত। মসজিদ থেকে মাইকে উচ্চ শব্দে আজান দিয়ে শব্দ দূষণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যাদের আজান শোনা দরকার তারা প্রয়োজনে মসজিদের সাথে ইলেট্রনিক মাধ্যমে নিজেদের কানে লাগিয়ে শুনতে পারে।
No comments