নেতাজি সম্পর্কে গোপন নথি প্রকাশ
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১১৯তম জন্মদিনে ১০০টি গোপন সরকারি নথি প্রকাশ্যে আনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে এই ফাইলগুলি এত দিন বন্দী ছিল।
নেতাজির পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আজ শনিবার জাতীয় আর্কাইভে এই নথিগুলো প্রকাশ করা হয়। যদিও প্রকাশিত নথিগুলি থেকে এ কথা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি যে, ৭০ বছর আগে ১৯৪৫ সালে তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল কি না। ১৯৬২ সালের ১৩ মে লেখা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর একটি চিঠি এই নথিগুলোর অন্যতম। নেতাজির পরিবারের সদস্য সুরেশ বসুকে লেখা সেই চিঠিতে নেহরু জানান, নেতাজির মৃত্যু নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। যা আছে তা পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ। সেই পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ওপর ভিত্তি করেই নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল বলে তাঁর বিশ্বাস। নেতাজির কন্যা অনিতা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর বিশ্বাস নেতাজি বিমান দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছেন।
নেতাজি-সম্পর্কিত যেসব তথ্য সরকারের কাছে আছে, তা প্রকাশ করার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণ দেখিয়ে এতকাল সেই সব তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের হাতে থাকা ৬৪টি ফাইল প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। অক্টোবর মাসে নেতাজির পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানান। নিজের বাসভবনে সেই বৈঠকে বসু-পরিবারের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন সরকারের হাতে থাকা অপ্রকাশিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। আজ নেতাজির পরিবারের ১২জন সদস্যের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা রাখেন।
সরকারি উদ্যোগে নেতাজির পরিবারের এই সদস্যদের দিল্লি আনা হয়। আজ সকালে তাঁরা প্রথমে যান পার্লামেন্ট ভবনে। সেখানে বিভিন্ন দলের নেতারা নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় আর্কাইভ ভবনে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নেতাজি ফাইলের ডিজিটাল সংস্করণ প্রকাশ করেন।
প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতের স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির স্ত্রীকে প্রতি মাসে পেনশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকার করায় নেতাজির কন্যা অনিতাকে মাসে ৬ হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া হতে থাকে। স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের সদস্য হিসেবেই এই পেনশন। ১৯৬৫ সালে অনিতার বিয়ে হওয়া পর্যন্ত এই পেনশন চালু ছিল। এ ছাড়া প্রকাশিত ফাইলে রয়েছে জাপানের রেনকোজি মন্দির থেকে নেতাজির চিতাভস্ম দেশে ফেরত আনা সংক্রান্ত চিঠিপত্র, নেতাজিকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া নিয়ে বিতর্ক, বিভিন্ন কমিশনের অপ্রকাশিত তথ্য। কিন্তু কোনো তথ্যেই এটা স্পষ্ট নয় যে নেতাজি ১৯৪৫ সালের পরেও বেঁচে ছিলেন কিংবা বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
নেতাজির ফাইল প্রকাশ করার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক রয়েছে কি না সেই বিতর্ক আগেও উঠেছিল, এবারেও উঠল। কংগ্রেস সরাসরি অভিযোগ করেছে, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কংগ্রেস মুখপাত্র আনন্দ শর্মা শনিবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, যেভাবে এই উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় এর পেছনে রাজনীতি রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে স্বাধীনতার সংগ্রামের বিরোধী শক্তি যারা, এই ফাইল প্রকাশের মধ্য দিয়ে তারা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এটা তাদের চক্রান্ত। জওহরলাল নেহরুর মতো কংগ্রেসের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান ছোট করে দেখানোই মোদি-সরকারের উদ্দেশ্য।
নেতাজির পরিবারের সদস্যরা অবশ্য খুশি। তাঁরা মনে করছেন, ৭০ বছর ধরে যা অপ্রকাশিত ছিল, তা প্রকাশ পাওয়াও একটা বড় বিষয়। অর্ধেন্দু বসু বলেন, অন্তর্ধান সংক্রান্ত ফাইলপত্র পাওয়া যাবে এমন আশা করিনি। তেমন কিছু থাকলে তা কেজিবি বা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাই দিতে পারবে। চিত্রা বসু বলেন, এই শুরু হওয়াটাই বড় কথা। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, সব ফাইল প্রকাশিত হওয়ার পর নতুন করে একটি কমিশন যেন গঠন করা হয় রহস্য উন্মোচনে। চন্দ্র বসু বলেন, এত দিন সব সরকারই এই সব তথ্য চেপে ছিল। মোদিই তা প্রকাশ করলেন। মোদির সরকারই সবচেয়ে স্বচ্ছ।
নেতাজির পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে আজ শনিবার জাতীয় আর্কাইভে এই নথিগুলো প্রকাশ করা হয়। যদিও প্রকাশিত নথিগুলি থেকে এ কথা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি যে, ৭০ বছর আগে ১৯৪৫ সালে তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল কি না। ১৯৬২ সালের ১৩ মে লেখা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর একটি চিঠি এই নথিগুলোর অন্যতম। নেতাজির পরিবারের সদস্য সুরেশ বসুকে লেখা সেই চিঠিতে নেহরু জানান, নেতাজির মৃত্যু নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরকারের কাছে নেই। যা আছে তা পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ। সেই পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ওপর ভিত্তি করেই নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল বলে তাঁর বিশ্বাস। নেতাজির কন্যা অনিতা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, তাঁর বিশ্বাস নেতাজি বিমান দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছেন।
নেতাজি-সম্পর্কিত যেসব তথ্য সরকারের কাছে আছে, তা প্রকাশ করার দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণ দেখিয়ে এতকাল সেই সব তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের হাতে থাকা ৬৪টি ফাইল প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। অক্টোবর মাসে নেতাজির পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানান। নিজের বাসভবনে সেই বৈঠকে বসু-পরিবারের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন সরকারের হাতে থাকা অপ্রকাশিত তথ্য প্রকাশ করা হবে। আজ নেতাজির পরিবারের ১২জন সদস্যের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা রাখেন।
সরকারি উদ্যোগে নেতাজির পরিবারের এই সদস্যদের দিল্লি আনা হয়। আজ সকালে তাঁরা প্রথমে যান পার্লামেন্ট ভবনে। সেখানে বিভিন্ন দলের নেতারা নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় আর্কাইভ ভবনে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নেতাজি ফাইলের ডিজিটাল সংস্করণ প্রকাশ করেন।
প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতের স্বাধীনতার পর কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজির স্ত্রীকে প্রতি মাসে পেনশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকার করায় নেতাজির কন্যা অনিতাকে মাসে ৬ হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া হতে থাকে। স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের সদস্য হিসেবেই এই পেনশন। ১৯৬৫ সালে অনিতার বিয়ে হওয়া পর্যন্ত এই পেনশন চালু ছিল। এ ছাড়া প্রকাশিত ফাইলে রয়েছে জাপানের রেনকোজি মন্দির থেকে নেতাজির চিতাভস্ম দেশে ফেরত আনা সংক্রান্ত চিঠিপত্র, নেতাজিকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া নিয়ে বিতর্ক, বিভিন্ন কমিশনের অপ্রকাশিত তথ্য। কিন্তু কোনো তথ্যেই এটা স্পষ্ট নয় যে নেতাজি ১৯৪৫ সালের পরেও বেঁচে ছিলেন কিংবা বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
নেতাজির ফাইল প্রকাশ করার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক রয়েছে কি না সেই বিতর্ক আগেও উঠেছিল, এবারেও উঠল। কংগ্রেস সরাসরি অভিযোগ করেছে, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কংগ্রেস মুখপাত্র আনন্দ শর্মা শনিবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, যেভাবে এই উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় এর পেছনে রাজনীতি রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে স্বাধীনতার সংগ্রামের বিরোধী শক্তি যারা, এই ফাইল প্রকাশের মধ্য দিয়ে তারা জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এটা তাদের চক্রান্ত। জওহরলাল নেহরুর মতো কংগ্রেসের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদান ছোট করে দেখানোই মোদি-সরকারের উদ্দেশ্য।
নেতাজির পরিবারের সদস্যরা অবশ্য খুশি। তাঁরা মনে করছেন, ৭০ বছর ধরে যা অপ্রকাশিত ছিল, তা প্রকাশ পাওয়াও একটা বড় বিষয়। অর্ধেন্দু বসু বলেন, অন্তর্ধান সংক্রান্ত ফাইলপত্র পাওয়া যাবে এমন আশা করিনি। তেমন কিছু থাকলে তা কেজিবি বা মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাই দিতে পারবে। চিত্রা বসু বলেন, এই শুরু হওয়াটাই বড় কথা। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলেছেন, সব ফাইল প্রকাশিত হওয়ার পর নতুন করে একটি কমিশন যেন গঠন করা হয় রহস্য উন্মোচনে। চন্দ্র বসু বলেন, এত দিন সব সরকারই এই সব তথ্য চেপে ছিল। মোদিই তা প্রকাশ করলেন। মোদির সরকারই সবচেয়ে স্বচ্ছ।
No comments