সিসির পেছন থেকে সরে যাচ্ছে আমিরাত? by ডেভিড হার্স্ট
আবুধাবির
যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের জন্য তৈরীকৃত
একটি অত্যন্ত গোপনীয় কৌশলগত দলিলে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত মিসরের
প্রেসিডেন্টের উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থরক্ষা করার সামর্থ্যরে
ব্যাপারে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। বিন জায়েদের টিমের একজন এই দলিলটি প্রস্তুত
করেন। ১২ অক্টোবর দলিলটি প্রস্তুত করা হয়।
ওই দলিলের প্রধান দু’টি উদ্ধৃতির বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, বিন জায়েদ সিসির ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, আল সিসির সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার সময় সৌদি আরবের সাথে বিন জায়েদ শত শত কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিলেন। এতে বলা হয়, তার জানা উচিত আমি এটিএম মেশিন নই। এতে আরো প্রকাশ হয় যে, আমিরাতের দলিলে দু’টি প্রধান বিষয় উল্লেখ করা হয়। দলিলে বিন জায়েদ সিসির ব্যাপারে যে হতাশা ব্যক্ত করেছেন, তার উল্লেখ করা হয়। এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, সিসির সামরিক অভ্যুত্থানের সময় যুবরাজ নিজে এবং সৌদি আরব মিলে সিসিকে কয়েকশত কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিলেন। এতে বলা হয়, এই ধূর্ত লোকের জানা প্রয়োজন যে, আমি এটিএম মেশিন নই। এতে আমিরাত মিসরকে অর্থ সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখলে তাদের এর জন্য যে বিরাট রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে তার উল্লেখ করা হয়।
আমিরাতের ভবিষ্যৎ নীতি বা কৌশল কিসের ভিত্তিতে হওয়া উচিত তার উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়, ভবিষ্যৎ নীতি কেবল মিসর সরকারকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে নয়, বরং তা হওয়া উচিত মিসর সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করার নীতির ভিত্তিতে। সংক্ষেপে এভাবে বলা যায়Ñ ‘এখন আমি দেবো, তবে তা আমার শর্তাধীনে, আমি দিলে আমি শাসন করব।’ মিসর আমিরাতের নগদ অর্থের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি তারা মিসরীয় পাউন্ডের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার চেষ্টা করে। আমিরাত মিসরের বৃহত্তম বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগকারীতে পরিণত হয়েছে। গত মার্চে শারম আল শেখে এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম জানান, আমিরাত মিসরকে ইতোমধ্যে ১৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন তথা এক হাজার ৩৯০ কোটি ডলার দিয়েছে এবং আরো ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ৩০৯ কোটি ডলার দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আমিরাতের কাছ থেকে সিসি প্রায় দুই হাজার ৫০০ বিলিয়ন বা প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি ডলার পেয়েছেন। এই পরিসংখ্যান হচ্ছে মিসর উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে যে মোট সহায়তা পেয়েছেন তার প্রায় অর্ধেক। কেবল ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের স্বর্ণ আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিসরের একজন সাবেক কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানান। বাকি অর্থ হচ্ছে ঋণের মাধ্যমে। এই অর্থ দু’মাসের মৌলিক পণ্য আমদানির জন্য যথেষ্ট নয়। এই দলিলটি একচেটিয়ো এমইই (মিডল ইস্ট আই) দেখেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিন জায়েদ কি তার বিনিয়োগের যথাযথ রিটার্ন পাবেন? এতে মিসরীয় কর্মকর্তাদের সাথে অসন্তোষের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। আমিরাতিরা মনে করে, তাদের রিক্রুট করা হয়েছে। কারণ এটা তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে, তারা মিসরের কাছে যেমন অনুগত তেমনি আমিরাতের প্রতি অনুগত নয়।
তিন পর্যায়
কৌশলপত্রে বলা হয়, ভবিষ্যতে আমিরাতিদের মিসরে তাদের অংশীদারদের অধিকতর সতর্কতার সাথে বাছাই করতে হবে। মিসরের মিডিয়ায় সৌদি আরবের নতুন শাসক বাদশাহ সালমান এবং তার ছেলে মুহাম্মদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর উদ্ধৃতি দেয়া হয়। সিরিয়ার ব্যাপারে সৌদি ভূমিকা এবং মিসরকে বলপ্রয়োগে দমন করার অভিযোগে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে মনে করা হয়। দলিলে বলা হয়, তাদের কথার যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কারণ এটা আমিরাতের স্বার্থে আঘাত করছে।
কৌশলগত দলিলে মিসরে বিনিয়োগের তিনটি পর্যায়ের বর্ণনা দেয়া হয়। এই বিনিয়োগ আগামী বছরের প্রথমার্ধে শুরু করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে আমিরাত অর্থ যোগানদাতা থেকে ‘পূর্ণ অংশীদার’ হতে চায়। কৌশলগত দলিলে বলা হয়, আমিরাতকে অবশ্যই মিসরীয় থিংক ট্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং মিডিয়া আউটলেটে রিক্রুট ও অর্থায়ন করতে হবে। এতে আরো সরাসরি বলা হয়, এসব সরাসরি বিনিয়োগের অবশ্যই একটি সুস্পষ্ট নীতি বা কৌশল এবং ভিশন বা লক্ষ্য থাকতে হবে এবং প্রত্যেক ডাউনপেমেন্ট আবুধাবির কল্যাণের জন্য হওয়ার ব্যাপারে পরীক্ষিত হতে হবে। এতে যেসব শর্তাবলি রয়েছে সেগুলো হলো : আগামী তিন বছরে পেট্রলের ওপর থেকে সাবসিডি তুলে নেয়া। ক্রমান্বয়ে সাবসিডি ৩০ শতাংশ করে হ্রাস করা। প্রথমে ৩০ শতাংশ এবং পরে বার্ষিক ৪০ শতাংশ হারে। মার্কিন ডলারের সাথে তুলনা করে মিসরীয় পাউন্ডের মূল্য নির্ধারণের জন্য আমিরাতকে নীতিনির্ধারণ করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়। এর মাধ্যমে মিসরের আর্থিক নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এরপর আমলাতন্ত্রকে হ্রাস করতে হবে। এগুলোর প্রত্যেকটি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ নীতি।
দলিলে আরো উল্লেখ করা হয়, সিসি তার সাহায্যদাতাদের হতাশ করেছেন। দুই দেশের মধ্যে অবনতিশীল সম্পর্ক নিয়ে গবেষণারত একজন বিশ্লেষক বলেন, ‘এই সমালোচনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা সিসিকে নিয়ে খুশি নন এবং তিনি তাদের লক্ষ্য পূরণ করছেন না। আমিরাতের প্রধান ধারণা হচ্ছে এমবিজেডই (বিন জায়েদ) মিসরের সত্যিকারের শাসক হওয়া উচিত। যে বা যিনিই দায়িত্বে থাকবেন তাকে অবশ্যই তারা (আমিরাতিরা) যা করতে বলবেন তা করতে হবে।’
উদ্বেগের কারণ
আমিরাতিদের উদ্বেগের তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, আমিরাতিরা মনে করে, মিসর এবং সৌদি আরবের মধ্যে যে মিডিয়াযুদ্ধ শুরু হয়েছে তা আবুধাবির স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
গত মাসে মিসরের সংবাদপত্র আল ইয়ায়ূম আল সাবিত জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল আহকাম মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ এস সায়েদ আল নাজ্জার এবং মিসরে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আহমদ কাতানের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। আল আহকাম দাবি করে যে, কায়রোর কেন্দ্রস্থলের একটি ভবন ও সৌদি আরব থেকে পুরনো। সরকারপন্থী টিভি সাংবাদিক ইব্রাহীম ঈশা সিরিয়ায় সন্ত্রাসী গ্রুপকে অর্থ সহায়তা দেয়ার জন্য সৌদি আরবকে দায়ী করে। সিসিকে তিনি ‘রিয়াদের একজন বন্দী বা রিয়াদের কাছে আবদ্ধ থাকা’ বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি মিসরের প্রতি সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞাবদ্ধ থাকার সম্পর্ক থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
দ্বিতীয়ত, ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন অভিযানে স্থলসৈন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় আমিরাত সিসির ওপর অসন্তুষ্ট। সংযুক্ত আরব আমিরাত সৈন্য পাঠাতে প্রতিশ্রুতি দিতে তাদের বাধ্য করেছিল। সিসি মিসরীয় আরবি ভাষায় তার বক্তব্যে বলেন, ‘মাসাফাহ এস শিফাহ’ অর্থাৎ তারা সামরিক সহায়তার প্রয়োজন বোধ করলে উপসাগরীয় দেশগুলোকে সহায়তা দেয়ার জন্য তাকে সময় দিতে হবে। এ পর্যন্ত ইয়েমেনে স্থলবাহিনীতে মিসরের কোনো সৈন্য দেয়া হয়নি।
তৃতীয়ত, তারা অভিযোগ করেন, তারা অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার বা তারা একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসেবে সুশাসনের দাবি জানালে সিসি তাদের কথা শোনেননি। ‘আবুধাবির দৃষ্টিকোণ থেকে সিসি কাজ সম্পাদন করেননি। অর্থনৈতিক সংস্কারের ব্যাপারে তার কোনো কর্মকৌশল বা নীতি নেই। সার্ভিস খুবই খারাপ। আমিরাতের দৃষ্টিকোণ থেকে, সিসি যা করবেন বলেছিলেন তা তিনি করছেন না।’ এমইই’র সাথে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিশ্লেষক বলেন, আসন্ন পর্যায় শুরু হবে আগামী বছরের প্রথমে আমিরাত এই ব্যাপক অভিযানের পরিকল্পনা করছে। তারা সিসিকে পরিত্যাগ করেনি। তিনি এখনো তাদের লোক। কিন্তু তারা তাকে নিয়ে খুশি নয়। তারা চায় পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ, যাতে তারাই সত্যিকারের শাসক হতে পারে।
রিয়াদের সাথে সম্পর্ক
রিয়াদের সাথেও সিসির সম্পর্ক খুব খারাপের পর্যায়ে চলে গেছে। মিসরের সেনাবাহিনীর একজন প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল গত দু’সপ্তাহ ধরে সৌদি আরবে অবস্থান করে গোপনে আলোচনা করছেন বলে জানতে পেরে সৌদির সাথে সিসির সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সৌদি আরবের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মিসরের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগ সাবেক সেনাপ্রধান সামি আনান কেন সৌদি রয়েছেন তা সৌদি আরবের কাছে জানতে চেয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আনান বেসরকারি সফরে সৌদি আরবে আছেন এবং রিয়াদ সরকারের এ ব্যাপারে কিছু করার নেই। ২০১১ সালে মোবারককে যখন ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তখন মুহাম্মাদ হোসেইন তান-তাবীর পর দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন আনান। ২০১২ সালে মুরসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আনানকে বরখাস্ত করেছিলেন। এক বছর পর এক সামরিক অভ্যুত্থানে মুরসি যখন ক্ষমতাচ্যুত হন, তখন আনান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে তার উচ্চাভিলাষের কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার বয়স ৭০ বছর এবং তাকে ওয়াশিংটনের সাথে ঘনিষ্ঠ হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। ২৫ জানুয়ারির বিপ্লবের সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।
ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, সিসির স্থলাভিষিক্ত করার জন্য যে তিনজনের নাম বিবেচনা করা হচ্ছে আনান হচ্ছেন তাদের একজন। অন্যরা হচ্ছেন আহমদ শফিক- সাবেক জেনারেল। যিনি বর্তমানে প্রবাসে আবুধাবিতে রয়েছেন। অপরজন হচ্ছেন সাধারণ গোয়েন্দা পরিদফতরের সাবেক প্রধান মুরাদ মুয়াফি। আনানের মতোই তাকেও মুরসি বরখাস্ত করেছিলেন। শফিক এবং মুয়াফি দু’জনকেই আমিরাতের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সাথে কথোপকথনের সময় সৌদি বাদশাহ সালমান মিসরের দায়িত্বে সেনাবাহিনীকে রাখার ব্যাপারে তার ইচ্ছার কথা গোপন রাখেননি। সৌদি আরব মিসরের সেনাবাহিনীকে দেশটির স্থিতিশীলতার একমাত্র গ্যারান্টার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গণতন্ত্রের চেয়ে স্থিতিশীলতাই প্রয়োজন বলে সৌদি আরব মনে করে। গণতন্ত্রের ব্যাপারে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যাই হোক না কেন, গত তিন মাসে হিসাব পরিবর্তন হয়ে গেছে। বাদশাহ সালমান সিসিকে আর মিসরের স্থিতিশীল নেতা বলে মনে করেন না। তারা মনে করেন, নেতা হিসেবে সিসির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই তারা সামরিক বাহিনীর মধ্যে কে দায়িত্ব নিতে পারেন তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন, সাথে সাথে তারা বিরোধী সব রাজনৈতিক সেকশনের কাছে পৌঁছার চেষ্টা করছেনÑ বিশেষত যাদের অধিকাংশই প্রবাসে আছেন তাদের সাথেই যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আনানকে শান্ত প্রকৃতির কিন্তু ধূর্ত নেতা যাকে স্বাভাবিকভাবে ঝুঁকিবিমুখ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তিনি একজন প্রধান পছন্দের প্রার্থী। মিসরের সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব কারার ব্যাপারে তার জোরালো দাবি রয়েছে।
কিন্তু মিসরের বিরোধী দলগুলোর কাছে তিনি তেমন একটা বিশ্বস্ত নন। বিরোধী দলগুলো সুপ্রিম কাউন্সিল অব দ্য আর্মড ফোর্সেসের দায়িত্বে থাকার সময়ে তার দিনগুলোর কথা স্মরণ করে। মোবারককে ক্ষমতাচ্যুত করে মুরসির নির্বাচন পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে ছিলেন এবং দেশের তত্ত্বাবধান করেন। তখন কায়রোর তাহরির স্কোয়ারে প্রতিবাদকারীদের রক্ত ঝরে ছিল।
তারা যদি একজন সামরিক ব্যক্তিত্বকে খোঁজেন তাহলে আনান হচ্ছেন তাদের বেষ্ট অপশন। কিন্তু সামরিক বাহিনী দিয়ে কেউ গ্রহণযোগ্য হলে সংখ্যাগরিষ্ঠদের দিয়ে তিনি গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে হয়তো আনানকে নিয়ে সমস্যা হতে পারে। মিসরের বিরোধী রাজনৈতিক দলের একজন সদস্য এ কথা বলেন।
মিডল ইস্ট আই থেকে ভাষান্তর
মুহাম্মদ খায়রুল বাশার
ওই দলিলের প্রধান দু’টি উদ্ধৃতির বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, বিন জায়েদ সিসির ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, আল সিসির সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করার সময় সৌদি আরবের সাথে বিন জায়েদ শত শত কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিলেন। এতে বলা হয়, তার জানা উচিত আমি এটিএম মেশিন নই। এতে আরো প্রকাশ হয় যে, আমিরাতের দলিলে দু’টি প্রধান বিষয় উল্লেখ করা হয়। দলিলে বিন জায়েদ সিসির ব্যাপারে যে হতাশা ব্যক্ত করেছেন, তার উল্লেখ করা হয়। এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, সিসির সামরিক অভ্যুত্থানের সময় যুবরাজ নিজে এবং সৌদি আরব মিলে সিসিকে কয়েকশত কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিলেন। এতে বলা হয়, এই ধূর্ত লোকের জানা প্রয়োজন যে, আমি এটিএম মেশিন নই। এতে আমিরাত মিসরকে অর্থ সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখলে তাদের এর জন্য যে বিরাট রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে তার উল্লেখ করা হয়।
আমিরাতের ভবিষ্যৎ নীতি বা কৌশল কিসের ভিত্তিতে হওয়া উচিত তার উল্লেখ করতে গিয়ে বলা হয়, ভবিষ্যৎ নীতি কেবল মিসর সরকারকে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে নয়, বরং তা হওয়া উচিত মিসর সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করার নীতির ভিত্তিতে। সংক্ষেপে এভাবে বলা যায়Ñ ‘এখন আমি দেবো, তবে তা আমার শর্তাধীনে, আমি দিলে আমি শাসন করব।’ মিসর আমিরাতের নগদ অর্থের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি তারা মিসরীয় পাউন্ডের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার চেষ্টা করে। আমিরাত মিসরের বৃহত্তম বিদেশী সরাসরি বিনিয়োগকারীতে পরিণত হয়েছে। গত মার্চে শারম আল শেখে এক অর্থনৈতিক সম্মেলনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম জানান, আমিরাত মিসরকে ইতোমধ্যে ১৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন তথা এক হাজার ৩৯০ কোটি ডলার দিয়েছে এবং আরো ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ৩০৯ কোটি ডলার দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, আমিরাতের কাছ থেকে সিসি প্রায় দুই হাজার ৫০০ বিলিয়ন বা প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি ডলার পেয়েছেন। এই পরিসংখ্যান হচ্ছে মিসর উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে যে মোট সহায়তা পেয়েছেন তার প্রায় অর্ধেক। কেবল ১৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার অবশিষ্ট রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের স্বর্ণ আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিসরের একজন সাবেক কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য জানান। বাকি অর্থ হচ্ছে ঋণের মাধ্যমে। এই অর্থ দু’মাসের মৌলিক পণ্য আমদানির জন্য যথেষ্ট নয়। এই দলিলটি একচেটিয়ো এমইই (মিডল ইস্ট আই) দেখেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিন জায়েদ কি তার বিনিয়োগের যথাযথ রিটার্ন পাবেন? এতে মিসরীয় কর্মকর্তাদের সাথে অসন্তোষের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। আমিরাতিরা মনে করে, তাদের রিক্রুট করা হয়েছে। কারণ এটা তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে, তারা মিসরের কাছে যেমন অনুগত তেমনি আমিরাতের প্রতি অনুগত নয়।
তিন পর্যায়
কৌশলপত্রে বলা হয়, ভবিষ্যতে আমিরাতিদের মিসরে তাদের অংশীদারদের অধিকতর সতর্কতার সাথে বাছাই করতে হবে। মিসরের মিডিয়ায় সৌদি আরবের নতুন শাসক বাদশাহ সালমান এবং তার ছেলে মুহাম্মদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর উদ্ধৃতি দেয়া হয়। সিরিয়ার ব্যাপারে সৌদি ভূমিকা এবং মিসরকে বলপ্রয়োগে দমন করার অভিযোগে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে মনে করা হয়। দলিলে বলা হয়, তাদের কথার যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। কারণ এটা আমিরাতের স্বার্থে আঘাত করছে।
কৌশলগত দলিলে মিসরে বিনিয়োগের তিনটি পর্যায়ের বর্ণনা দেয়া হয়। এই বিনিয়োগ আগামী বছরের প্রথমার্ধে শুরু করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে আমিরাত অর্থ যোগানদাতা থেকে ‘পূর্ণ অংশীদার’ হতে চায়। কৌশলগত দলিলে বলা হয়, আমিরাতকে অবশ্যই মিসরীয় থিংক ট্যাংক, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এবং মিডিয়া আউটলেটে রিক্রুট ও অর্থায়ন করতে হবে। এতে আরো সরাসরি বলা হয়, এসব সরাসরি বিনিয়োগের অবশ্যই একটি সুস্পষ্ট নীতি বা কৌশল এবং ভিশন বা লক্ষ্য থাকতে হবে এবং প্রত্যেক ডাউনপেমেন্ট আবুধাবির কল্যাণের জন্য হওয়ার ব্যাপারে পরীক্ষিত হতে হবে। এতে যেসব শর্তাবলি রয়েছে সেগুলো হলো : আগামী তিন বছরে পেট্রলের ওপর থেকে সাবসিডি তুলে নেয়া। ক্রমান্বয়ে সাবসিডি ৩০ শতাংশ করে হ্রাস করা। প্রথমে ৩০ শতাংশ এবং পরে বার্ষিক ৪০ শতাংশ হারে। মার্কিন ডলারের সাথে তুলনা করে মিসরীয় পাউন্ডের মূল্য নির্ধারণের জন্য আমিরাতকে নীতিনির্ধারণ করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়। এর মাধ্যমে মিসরের আর্থিক নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এরপর আমলাতন্ত্রকে হ্রাস করতে হবে। এগুলোর প্রত্যেকটি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ নীতি।
দলিলে আরো উল্লেখ করা হয়, সিসি তার সাহায্যদাতাদের হতাশ করেছেন। দুই দেশের মধ্যে অবনতিশীল সম্পর্ক নিয়ে গবেষণারত একজন বিশ্লেষক বলেন, ‘এই সমালোচনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা সিসিকে নিয়ে খুশি নন এবং তিনি তাদের লক্ষ্য পূরণ করছেন না। আমিরাতের প্রধান ধারণা হচ্ছে এমবিজেডই (বিন জায়েদ) মিসরের সত্যিকারের শাসক হওয়া উচিত। যে বা যিনিই দায়িত্বে থাকবেন তাকে অবশ্যই তারা (আমিরাতিরা) যা করতে বলবেন তা করতে হবে।’
উদ্বেগের কারণ
আমিরাতিদের উদ্বেগের তিনটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, আমিরাতিরা মনে করে, মিসর এবং সৌদি আরবের মধ্যে যে মিডিয়াযুদ্ধ শুরু হয়েছে তা আবুধাবির স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
গত মাসে মিসরের সংবাদপত্র আল ইয়ায়ূম আল সাবিত জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল আহকাম মিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ এস সায়েদ আল নাজ্জার এবং মিসরে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত আহমদ কাতানের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। আল আহকাম দাবি করে যে, কায়রোর কেন্দ্রস্থলের একটি ভবন ও সৌদি আরব থেকে পুরনো। সরকারপন্থী টিভি সাংবাদিক ইব্রাহীম ঈশা সিরিয়ায় সন্ত্রাসী গ্রুপকে অর্থ সহায়তা দেয়ার জন্য সৌদি আরবকে দায়ী করে। সিসিকে তিনি ‘রিয়াদের একজন বন্দী বা রিয়াদের কাছে আবদ্ধ থাকা’ বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি মিসরের প্রতি সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞাবদ্ধ থাকার সম্পর্ক থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
দ্বিতীয়ত, ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন অভিযানে স্থলসৈন্য পাঠানোর প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় আমিরাত সিসির ওপর অসন্তুষ্ট। সংযুক্ত আরব আমিরাত সৈন্য পাঠাতে প্রতিশ্রুতি দিতে তাদের বাধ্য করেছিল। সিসি মিসরীয় আরবি ভাষায় তার বক্তব্যে বলেন, ‘মাসাফাহ এস শিফাহ’ অর্থাৎ তারা সামরিক সহায়তার প্রয়োজন বোধ করলে উপসাগরীয় দেশগুলোকে সহায়তা দেয়ার জন্য তাকে সময় দিতে হবে। এ পর্যন্ত ইয়েমেনে স্থলবাহিনীতে মিসরের কোনো সৈন্য দেয়া হয়নি।
তৃতীয়ত, তারা অভিযোগ করেন, তারা অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার বা তারা একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্রের ভিত্তি হিসেবে সুশাসনের দাবি জানালে সিসি তাদের কথা শোনেননি। ‘আবুধাবির দৃষ্টিকোণ থেকে সিসি কাজ সম্পাদন করেননি। অর্থনৈতিক সংস্কারের ব্যাপারে তার কোনো কর্মকৌশল বা নীতি নেই। সার্ভিস খুবই খারাপ। আমিরাতের দৃষ্টিকোণ থেকে, সিসি যা করবেন বলেছিলেন তা তিনি করছেন না।’ এমইই’র সাথে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিশ্লেষক বলেন, আসন্ন পর্যায় শুরু হবে আগামী বছরের প্রথমে আমিরাত এই ব্যাপক অভিযানের পরিকল্পনা করছে। তারা সিসিকে পরিত্যাগ করেনি। তিনি এখনো তাদের লোক। কিন্তু তারা তাকে নিয়ে খুশি নয়। তারা চায় পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ, যাতে তারাই সত্যিকারের শাসক হতে পারে।
রিয়াদের সাথে সম্পর্ক
রিয়াদের সাথেও সিসির সম্পর্ক খুব খারাপের পর্যায়ে চলে গেছে। মিসরের সেনাবাহিনীর একজন প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল গত দু’সপ্তাহ ধরে সৌদি আরবে অবস্থান করে গোপনে আলোচনা করছেন বলে জানতে পেরে সৌদির সাথে সিসির সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সৌদি আরবের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, মিসরের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগ সাবেক সেনাপ্রধান সামি আনান কেন সৌদি রয়েছেন তা সৌদি আরবের কাছে জানতে চেয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আনান বেসরকারি সফরে সৌদি আরবে আছেন এবং রিয়াদ সরকারের এ ব্যাপারে কিছু করার নেই। ২০১১ সালে মোবারককে যখন ক্ষমতাচ্যুত করা হয়, তখন মুহাম্মাদ হোসেইন তান-তাবীর পর দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন আনান। ২০১২ সালে মুরসি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আনানকে বরখাস্ত করেছিলেন। এক বছর পর এক সামরিক অভ্যুত্থানে মুরসি যখন ক্ষমতাচ্যুত হন, তখন আনান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে তার উচ্চাভিলাষের কথা ঘোষণা করেছিলেন। তার বয়স ৭০ বছর এবং তাকে ওয়াশিংটনের সাথে ঘনিষ্ঠ হিসেবে মনে করা হয়ে থাকে। ২৫ জানুয়ারির বিপ্লবের সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন।
ওয়াকিবহাল সূত্র জানায়, সিসির স্থলাভিষিক্ত করার জন্য যে তিনজনের নাম বিবেচনা করা হচ্ছে আনান হচ্ছেন তাদের একজন। অন্যরা হচ্ছেন আহমদ শফিক- সাবেক জেনারেল। যিনি বর্তমানে প্রবাসে আবুধাবিতে রয়েছেন। অপরজন হচ্ছেন সাধারণ গোয়েন্দা পরিদফতরের সাবেক প্রধান মুরাদ মুয়াফি। আনানের মতোই তাকেও মুরসি বরখাস্ত করেছিলেন। শফিক এবং মুয়াফি দু’জনকেই আমিরাতের ঘনিষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সাথে কথোপকথনের সময় সৌদি বাদশাহ সালমান মিসরের দায়িত্বে সেনাবাহিনীকে রাখার ব্যাপারে তার ইচ্ছার কথা গোপন রাখেননি। সৌদি আরব মিসরের সেনাবাহিনীকে দেশটির স্থিতিশীলতার একমাত্র গ্যারান্টার হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গণতন্ত্রের চেয়ে স্থিতিশীলতাই প্রয়োজন বলে সৌদি আরব মনে করে। গণতন্ত্রের ব্যাপারে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যাই হোক না কেন, গত তিন মাসে হিসাব পরিবর্তন হয়ে গেছে। বাদশাহ সালমান সিসিকে আর মিসরের স্থিতিশীল নেতা বলে মনে করেন না। তারা মনে করেন, নেতা হিসেবে সিসির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তাই তারা সামরিক বাহিনীর মধ্যে কে দায়িত্ব নিতে পারেন তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন, সাথে সাথে তারা বিরোধী সব রাজনৈতিক সেকশনের কাছে পৌঁছার চেষ্টা করছেনÑ বিশেষত যাদের অধিকাংশই প্রবাসে আছেন তাদের সাথেই যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আনানকে শান্ত প্রকৃতির কিন্তু ধূর্ত নেতা যাকে স্বাভাবিকভাবে ঝুঁকিবিমুখ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তিনি একজন প্রধান পছন্দের প্রার্থী। মিসরের সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিত্ব কারার ব্যাপারে তার জোরালো দাবি রয়েছে।
কিন্তু মিসরের বিরোধী দলগুলোর কাছে তিনি তেমন একটা বিশ্বস্ত নন। বিরোধী দলগুলো সুপ্রিম কাউন্সিল অব দ্য আর্মড ফোর্সেসের দায়িত্বে থাকার সময়ে তার দিনগুলোর কথা স্মরণ করে। মোবারককে ক্ষমতাচ্যুত করে মুরসির নির্বাচন পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে ছিলেন এবং দেশের তত্ত্বাবধান করেন। তখন কায়রোর তাহরির স্কোয়ারে প্রতিবাদকারীদের রক্ত ঝরে ছিল।
তারা যদি একজন সামরিক ব্যক্তিত্বকে খোঁজেন তাহলে আনান হচ্ছেন তাদের বেষ্ট অপশন। কিন্তু সামরিক বাহিনী দিয়ে কেউ গ্রহণযোগ্য হলে সংখ্যাগরিষ্ঠদের দিয়ে তিনি গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে হয়তো আনানকে নিয়ে সমস্যা হতে পারে। মিসরের বিরোধী রাজনৈতিক দলের একজন সদস্য এ কথা বলেন।
মিডল ইস্ট আই থেকে ভাষান্তর
মুহাম্মদ খায়রুল বাশার
No comments