প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনঃ ভালো ভালো কথায়ও আড়াল হয়নি বিভেদ
প্যারিসে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে কয়েকটি দ্বীপরাষ্ট্রের নেতাদের সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এ দ্বীপরাষ্ট্রগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিপন্ন l ছবি: রয়টার্স |
প্যারিসের
জলবায়ু সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে এসে কথা বলছিলেন
কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট অ্যানোটে টং। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রটি
জলবায়ু পরিবর্তনের চরম শিকার। অ্যানোটে টং এবারের সম্মেলনে একটি শক্ত,
আইনি বাধ্যবাধকতাসম্পন্ন চুক্তির পক্ষে কথা বলেছেন। কার্বন সৃষ্টিকারী
কয়লা উত্তোলন স্থগিত করে দেওয়ার পক্ষেও ছোট এই রাষ্ট্রটির প্রেসিডেন্ট।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের কথা শুনে বেশ উদ্দীপ্ত কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট। বললেন, এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বনেতারা কিছু একটা করবেন বলে মনে হয়। বিশ্বনেতাদের প্রত্যেকের জন্য তিন মিনিট সময় বরাদ্দ ছিল কথা বলার। তবে সবাই তাঁদের ইচ্ছামতো সময় নিয়েছেন। ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে কথা বলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, এই জায়গাটায় আসতে ২০ বছর সময় লাগল কেন? আর বিশ্বনেতারা যে গরম গরম কথা বললেন, তাতে কিরিবাতির প্রেসিডেন্টের আশাবাদী হওয়ার কি যৌক্তিক কারণ আছে?
বিশ্বনেতাদের কথার মধ্যে অনেক ইতিবাচক দিক আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সবার কথার মধ্যে মোটামুটি একই সুর। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বিরাট সমস্যা, বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমেই এর সমাধান করতে হবে। তবে তার দেশ এই পরিবর্তন রোধে যে অনেক কিছু করছে, তা বলতেও ভোলেননি কেউ।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কঠোর কর্মসূচির পক্ষে উচ্চকণ্ঠ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ‘এখানে সাফল্য অর্জন দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানের জন্য অপরিহার্য।’
ওবামা চুক্তির পক্ষে প্রতিশ্রুতি দিলেও তাতে যে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে, সে বিষয়ে অঙ্গীকার করেননি। কারণ, তিনি জানেন, আইনি বাধ্যবাধকতা আছে—এমন কোনো চুক্তি রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে পাস করা দুরূহ হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি চুক্তির পক্ষে বললেন। কিন্তু রাশিয়া কীভাবে অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা করছে এবং কার্বন নিঃসরণ কমাচ্ছে, সে বিষয় বিশদে বলেননি।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কার্বন নিঃসরণে ধনী ও গরিব দেশের দায়িত্বশীলতা বণ্টনের পক্ষে অবস্থান নেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতোই শি চান, ধনী দেশগুলোই বেশি করে কার্বন নিঃসরণ কমাক। এ ক্ষেত্রে আর্থিক দায়বদ্ধতাও নিক ধনী দেশগুলো।
এখন বিশ্বের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ কার্বনই নিঃসরণ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো। তবে ভারত ও চীন মনে করে, দূষণ সৃষ্টিতে ধনী দেশগুলোর ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা আছে।
২০০৯ সালে কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে ধনী দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নে যে এক হাজার কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারও বাস্তবায়ন চান শি। এবারের সম্মেলনে এসবই আলোচনায় আসবে। তবে আগামী দুই সপ্তাহে নানা ধারার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কিছু উন্নতি হতেও পারে, না-ও পারে।
প্যারিস সম্মেলনে অংশ নেওয়া একজন আলোচক বলছিলেন, মূল বিষয়টি হচ্ছে বিশ্বনেতারা এখানে আসবেন, কথা বলবেন এবং খুব সযত্নে তৈরি করা বিভাজন ভেঙে দিতে কোনো কিছু না করেই খুশিমনে বাড়ি ফিরবেন।
ওই আলোচক আরও বলেন, বিশ্বনেতারা রাজনৈতিক জটিলতাগুলো ভালো করেই বোঝেন। কিছু কৌশলী পরামর্শ দিতেই এখানে তাদের আগমন। আমাদের দায়িত্ব এসব পরামর্শ লিখে রাখা।
সূত্র: বিবিসি।
লক্ষ্যমাত্রা: এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সীমা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা। শতাধিক দরিদ্র এবং দ্বীপ দেশের দাবি, এই লক্ষ্যমাত্রা আরও কঠোর করে দেড় ডিগ্রি করা হোক।
স্বচ্ছতা: উন্নয়নশীল দেশগুলোর দাবি, শিল্পোন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ রোধে বর্তমানের চেয়ে আরও বেশি দায়িত্ব নিক। কারণ, তারাই বেশি দূষণকারী। তবে শিল্পোন্নত দেশগুলো চায়, সবাইকেই সমানভাবে নিঃসরণ রোধ করতে হবে।
অর্থায়ন: কোপেনহেগেন সম্মেলনে ২০২০ সালের মধ্যে এক হাজার কোটি ডলার দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ধনী দেশগুলো, যাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে প্রযুক্তি ও অবকাঠামো তৈরি করা যায়। কিন্তু কোত্থেকে সেই অর্থ আসবে এবং কীভাবে এর বণ্টন হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের কথা শুনে বেশ উদ্দীপ্ত কিরিবাতির প্রেসিডেন্ট। বললেন, এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বনেতারা কিছু একটা করবেন বলে মনে হয়। বিশ্বনেতাদের প্রত্যেকের জন্য তিন মিনিট সময় বরাদ্দ ছিল কথা বলার। তবে সবাই তাঁদের ইচ্ছামতো সময় নিয়েছেন। ব্যাপক উৎসাহ নিয়ে কথা বলেছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, এই জায়গাটায় আসতে ২০ বছর সময় লাগল কেন? আর বিশ্বনেতারা যে গরম গরম কথা বললেন, তাতে কিরিবাতির প্রেসিডেন্টের আশাবাদী হওয়ার কি যৌক্তিক কারণ আছে?
বিশ্বনেতাদের কথার মধ্যে অনেক ইতিবাচক দিক আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সবার কথার মধ্যে মোটামুটি একই সুর। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বিরাট সমস্যা, বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমেই এর সমাধান করতে হবে। তবে তার দেশ এই পরিবর্তন রোধে যে অনেক কিছু করছে, তা বলতেও ভোলেননি কেউ।
জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কঠোর কর্মসূচির পক্ষে উচ্চকণ্ঠ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ‘এখানে সাফল্য অর্জন দীর্ঘদিনের এই সমস্যা সমাধানের জন্য অপরিহার্য।’
ওবামা চুক্তির পক্ষে প্রতিশ্রুতি দিলেও তাতে যে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে, সে বিষয়ে অঙ্গীকার করেননি। কারণ, তিনি জানেন, আইনি বাধ্যবাধকতা আছে—এমন কোনো চুক্তি রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত সিনেটে পাস করা দুরূহ হবে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি চুক্তির পক্ষে বললেন। কিন্তু রাশিয়া কীভাবে অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা করছে এবং কার্বন নিঃসরণ কমাচ্ছে, সে বিষয় বিশদে বলেননি।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কার্বন নিঃসরণে ধনী ও গরিব দেশের দায়িত্বশীলতা বণ্টনের পক্ষে অবস্থান নেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতোই শি চান, ধনী দেশগুলোই বেশি করে কার্বন নিঃসরণ কমাক। এ ক্ষেত্রে আর্থিক দায়বদ্ধতাও নিক ধনী দেশগুলো।
এখন বিশ্বের ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ কার্বনই নিঃসরণ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো। তবে ভারত ও চীন মনে করে, দূষণ সৃষ্টিতে ধনী দেশগুলোর ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা আছে।
২০০৯ সালে কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনে ধনী দেশগুলো ২০২০ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নে যে এক হাজার কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারও বাস্তবায়ন চান শি। এবারের সম্মেলনে এসবই আলোচনায় আসবে। তবে আগামী দুই সপ্তাহে নানা ধারার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কিছু উন্নতি হতেও পারে, না-ও পারে।
প্যারিস সম্মেলনে অংশ নেওয়া একজন আলোচক বলছিলেন, মূল বিষয়টি হচ্ছে বিশ্বনেতারা এখানে আসবেন, কথা বলবেন এবং খুব সযত্নে তৈরি করা বিভাজন ভেঙে দিতে কোনো কিছু না করেই খুশিমনে বাড়ি ফিরবেন।
ওই আলোচক আরও বলেন, বিশ্বনেতারা রাজনৈতিক জটিলতাগুলো ভালো করেই বোঝেন। কিছু কৌশলী পরামর্শ দিতেই এখানে তাদের আগমন। আমাদের দায়িত্ব এসব পরামর্শ লিখে রাখা।
সূত্র: বিবিসি।
লক্ষ্যমাত্রা: এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সীমা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা। শতাধিক দরিদ্র এবং দ্বীপ দেশের দাবি, এই লক্ষ্যমাত্রা আরও কঠোর করে দেড় ডিগ্রি করা হোক।
স্বচ্ছতা: উন্নয়নশীল দেশগুলোর দাবি, শিল্পোন্নত দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ রোধে বর্তমানের চেয়ে আরও বেশি দায়িত্ব নিক। কারণ, তারাই বেশি দূষণকারী। তবে শিল্পোন্নত দেশগুলো চায়, সবাইকেই সমানভাবে নিঃসরণ রোধ করতে হবে।
অর্থায়ন: কোপেনহেগেন সম্মেলনে ২০২০ সালের মধ্যে এক হাজার কোটি ডলার দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ধনী দেশগুলো, যাতে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে প্রযুক্তি ও অবকাঠামো তৈরি করা যায়। কিন্তু কোত্থেকে সেই অর্থ আসবে এবং কীভাবে এর বণ্টন হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
No comments