এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমঝোতা
এশিয়ার পারস্পরিক ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতারা নিজেদের মধ্যে নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদারে একমত হয়েছেন। সেই সঙ্গে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনেও তারা পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিন বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ত্রিদেশীয় এক সম্মেলন শেষে রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়। ২০১২ সালের পর এ প্রথম তিন দেশের নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন-হাই, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং। বৈঠকে নেতারা অন্যান্য আরও অর্থনৈতিক সহযোগিতার ব্যাপারেও একমত হয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়। যৌথ ওই বিবৃতিতে নেতারা বলেন, আমরা ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করেছি। ১৬ জাতির মুক্তবাজার সৃষ্টিতে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে (আরসিইপি) আরও জোরদারে একমত হয়েছি। পার্ক জিউন-হাই পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, তিন নেতা উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার ব্যাপারেও একমত হয়েছেন।
সোমবার আবে ও পার্কের মধ্যে আলাদা বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলন উপলক্ষে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের প্রতিবাদে সম্মেলন কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ করে একদল জাপানবিরোধী। এ সময় তাদের জাপানের পতাকা ছিঁড়তে দেখা যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি সেনাদের দক্ষিণ কোরীয় নারীদের যৌন দাসত্বে বাধ্য করার প্রতিবাদ জানান এবং ওই ঘটনার জন্য জাপানি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। তারা বলেন, ‘আমরা অ্যাবের দক্ষিণ কোরিয়া সফরের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা না চেয়ে তার এ সফরকে আমরা মেনে নিতে পারছি না।’ এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ কার্টার বলেছেন, দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত জলসীমার কারণে ওই অঞ্চলের দেশগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিতেই, বেইজিংয়ের নির্মিত কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জের বারো নটিক্যাল মাইল দূরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ পাঠানো হয়েছে। সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে অ্যাশ কার্টারের। ২০১২ সালের আগ পর্যন্ত দেশ তিনটি এমন ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে নিয়মিত অংশ নিয়ে আসছিল। তবে এবারের আলোচনায় অর্থনীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে এবং বিদ্যমান সমস্যার সমাধানে আলোচনা প্রয়োজন বলে মন্তব্যও করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
No comments