সমঝোতা না নিঃশেষ! by সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু
জাতিসঙ্ঘের
বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাটি শুরু হয়েছে গতকাল ফ্রান্সের
রাজধানী প্যারিসে। প্যারিসের লে ব্যুর্জে অবস্থিত সুবিশাল ‘এক্সিবিশন
অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টার’-এ অনুষ্ঠিত মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকে ৪৮ পাতার একটি
খসড়া নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এই আলোচনাকে বিশ্লেষকেরা নামকরণ করেছেনÑ
আপস ও গুরুত্বপূর্ণ। আর অনেকে একে দেখাছেন, আপস না নিঃশেষ’ হিসেবে। এই
আলোচনার মাধ্যমে সম্মেলনে যোগ দেয়া ১৫১ দেশের মন্ত্রীদের বেশ কিছু বিষয়ে
সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে। তাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে, আগামী ২১০০ সাল
পর্যন্ত বৈশ্বিক তাপমাত্রা কতটুকু বৃদ্ধি পাবে। এর পরিমাণ কী সর্বোচ্চ দেড়
ডিগ্রি সেলিয়াস থাকবে না দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে। আরো সিদ্ধান্ত নিতে হবে
পরিবেশ দূষণকারী কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কিভাবে কমানো হবে। এর জন্য তাদের
একটি সময়সীমাও নির্ধারণ করতে হবে।
আর সর্বশেষ সিদ্ধান্তে আসতে হবে- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে কী পরিমাণ সহায়তা দেবে। এ বিষয়ে চুক্তি যাই করা হোক না কেন, এটি আইনিভাবে মেনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে কি না- নাকি শুধু এটি একটি কাগুজে চুক্তি হয়ে থাকবেÑ সে বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে। এই কঠিন সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহের মধ্যে ১৫১ দেশের প্রতিনিধিদের নিতে হবে। তাই এখানে বিশ্বকে বাঁচাতে আপস করা হবে, নাকি আপস না করে নিঃশেষের পথে এগিয়ে যাওয়া হবে সে বিষয়টি টের পাওয়া যাবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে।
এ দিকে, জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই ভাগের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি চুক্তি করার ওপর আবারো জোর দিয়েছেন। তিনি গতকাল প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।
বান কি মুন তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, অনেক অনুন্নত ও নিচু অববাহিকার দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে তাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হবে।
নয় বছর আগে তার দায়িত্ব নেয়ার দিনের কথা উল্লেখ করে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বলেন, নয় বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকেই আমি জলবায়ু পরিবর্তনকে আমাদের সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করেছিলাম। যা কি না আমাদের কাছে ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। আর এখন, এই প্যারিসে আমাদের সামনে একটি অভিন্ন সুযোগ এসে উপস্থিত হয়েছে। যেখানে আমরা ভবিষ্যৎকে সংজ্ঞায়িত করতে পারব। এক সপ্তাহ আগে এই এখানে ১৫০ জন বিশ্বনেতা জড়ো হয়েছিলেন জলবায়ুু পরিবর্তন মোকবেলায় একটি বৈশ্বিক চুক্তি করার জন্য। আর এখন বিশ্বের শতাধিক দেশের মেয়র এখানে এসেছেন তাদের সহায়তা প্রস্তাব নিয়ে।
বান কি মুন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই নেতৃত্ব দেয়ার সম্মতি দিতে হবে। অন্য দিকে, উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী দায়িত্ববোধ বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে। এখানে এমন একটি চুক্তি করতে হবে যাতে উন্নয়নশীল দেশ বিশেষ করে দরিদ্রতম ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তার কথা উল্লেখ থাকবে। সর্বশেষে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অবশ্যই ২০২০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ( ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার) ডলার সংগ্রহের বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
এরপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট মোজেনস লাইকেটফট বলেন, ২০১৫ সাল হচ্ছে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার বছর। আর ২০১৬ সাল হবে এই চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের বছর। তিনি বলেন, আগামী বছর এপ্রিলে নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে যেখানে চলতি বছরে ঐকমত্য হওয়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে সহায়তা করা হবে।
আলোচনায় অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, ২০৬০-৮০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরির কাজ করছেন তারা। একই সাথে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৮০ শতাংশ কমাতে একটি ল্যমাত্রাও তাদের রয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া খসড়ার বিষয়গুলো মন্ত্রীপর্যায়ে ঐকমত্য হলেই কেবল একটি চুক্তিতে পৌঁছা সম্ভব হবে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘অ্যাডহক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ডারবান প্লাটফর্ম ফর এনহ্যান্স অ্যাকশন’-এর সদস্যরা ৪৮ পৃষ্ঠার খসড়া তৈরি করে মন্ত্রীপর্যায়ে বৈঠকে জমা দিয়েছেন। খসড়ায় এক শ’র অধিক মতবিরোধ ও ৯৩৯টি ব্র্যাকেট রয়েছে। চার বছর আগে কোপেনহেগেনে জলবায়ু সম্মেলন হলেও ওই সময় কোনো ধরনের খসড়া চূড়ান্ত করা যায়নি। এবার খসড়া চূড়ান্ত হওয়ায় সবাই সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
আর সর্বশেষ সিদ্ধান্তে আসতে হবে- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ধনী দেশগুলো গরিব দেশগুলোকে কী পরিমাণ সহায়তা দেবে। এ বিষয়ে চুক্তি যাই করা হোক না কেন, এটি আইনিভাবে মেনে চলার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে কি না- নাকি শুধু এটি একটি কাগুজে চুক্তি হয়ে থাকবেÑ সে বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে। এই কঠিন সিদ্ধান্ত চলতি সপ্তাহের মধ্যে ১৫১ দেশের প্রতিনিধিদের নিতে হবে। তাই এখানে বিশ্বকে বাঁচাতে আপস করা হবে, নাকি আপস না করে নিঃশেষের পথে এগিয়ে যাওয়া হবে সে বিষয়টি টের পাওয়া যাবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে।
এ দিকে, জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ দুই ভাগের নিচে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি চুক্তি করার ওপর আবারো জোর দিয়েছেন। তিনি গতকাল প্যারিসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের মন্ত্রীপর্যায়ের বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন।
বান কি মুন তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন, অনেক অনুন্নত ও নিচু অববাহিকার দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে তাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হবে।
নয় বছর আগে তার দায়িত্ব নেয়ার দিনের কথা উল্লেখ করে জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বলেন, নয় বছর আগে দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকেই আমি জলবায়ু পরিবর্তনকে আমাদের সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করেছিলাম। যা কি না আমাদের কাছে ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করে তুলতে পারে। আর এখন, এই প্যারিসে আমাদের সামনে একটি অভিন্ন সুযোগ এসে উপস্থিত হয়েছে। যেখানে আমরা ভবিষ্যৎকে সংজ্ঞায়িত করতে পারব। এক সপ্তাহ আগে এই এখানে ১৫০ জন বিশ্বনেতা জড়ো হয়েছিলেন জলবায়ুু পরিবর্তন মোকবেলায় একটি বৈশ্বিক চুক্তি করার জন্য। আর এখন বিশ্বের শতাধিক দেশের মেয়র এখানে এসেছেন তাদের সহায়তা প্রস্তাব নিয়ে।
বান কি মুন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই নেতৃত্ব দেয়ার সম্মতি দিতে হবে। অন্য দিকে, উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী দায়িত্ববোধ বৃদ্ধির দিকে নজর দিতে হবে। এখানে এমন একটি চুক্তি করতে হবে যাতে উন্নয়নশীল দেশ বিশেষ করে দরিদ্রতম ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য পর্যাপ্ত সহায়তার কথা উল্লেখ থাকবে। সর্বশেষে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অবশ্যই ২০২০ সাল নাগাদ প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ( ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার) ডলার সংগ্রহের বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
এরপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট মোজেনস লাইকেটফট বলেন, ২০১৫ সাল হচ্ছে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার বছর। আর ২০১৬ সাল হবে এই চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের বছর। তিনি বলেন, আগামী বছর এপ্রিলে নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে যেখানে চলতি বছরে ঐকমত্য হওয়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে সহায়তা করা হবে।
আলোচনায় অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অনানুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, ২০৬০-৮০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি চূড়ান্ত পরিকল্পনা তৈরির কাজ করছেন তারা। একই সাথে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৮০ শতাংশ কমাতে একটি ল্যমাত্রাও তাদের রয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া খসড়ার বিষয়গুলো মন্ত্রীপর্যায়ে ঐকমত্য হলেই কেবল একটি চুক্তিতে পৌঁছা সম্ভব হবে।
প্যারিস জলবায়ু চুক্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘অ্যাডহক ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ডারবান প্লাটফর্ম ফর এনহ্যান্স অ্যাকশন’-এর সদস্যরা ৪৮ পৃষ্ঠার খসড়া তৈরি করে মন্ত্রীপর্যায়ে বৈঠকে জমা দিয়েছেন। খসড়ায় এক শ’র অধিক মতবিরোধ ও ৯৩৯টি ব্র্যাকেট রয়েছে। চার বছর আগে কোপেনহেগেনে জলবায়ু সম্মেলন হলেও ওই সময় কোনো ধরনের খসড়া চূড়ান্ত করা যায়নি। এবার খসড়া চূড়ান্ত হওয়ায় সবাই সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
No comments