এখন আর্চওয়ে তখন ছিল না by আল-আমিন
হোসনি
দালানে নারকীয় বোমা হামলা হয়েছে শুক্রবার রাতে। একজনের প্রাণ গেছে। আহত
হয়েছেন শতাধিক। মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন একজন। বোমা হামলার পর থেকে ঘটনাস্থলের
আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। বসানো
হয়েছে আর্চওয়ে। মেটাল ডিটেক্টর ও স্ক্যানার দিয়ে দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে
প্রত্যেকের। হোসনি দালানের দুই গেট দিয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা
হয়েছে। হোসনি দালান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনার দিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার
নজরদারি থাকলেও এখনকার মতো ছিল না। তখন আর্চওয়ে ও স্ক্যানার ব্যবহার করলে
হয়তো ওই ঘটনা নাও ঘটতে পারতো।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাজিয়া মিছিল ও হোসনি দালানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশের লালবাগ জোনের এডিসি সঞ্জিত কুমার রায় জানান, ঘটনার সময় তল্লাশির জন্য সেখানে আর্চওয়ে ও স্ক্যানার ছিল না এটা ঠিক। তবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তিনি আরও জানান, তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে বহু লোকের সমাগম হয়েছিল। নারী ও শিশুদের সংখ্যাও ছিল বিপুল। মিছিলে অংশগ্রহণকারী সবাই ছিলেন আবেগ-আপ্লুত। এতগুলো লোককে তল্লাশি করা খুব কঠিন কাজ। তবুও আমরা সন্দেহভাজন পুরুষ ও নারীদের তল্লাশি করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। সব পন্থা ব্যবহার করে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাতে তাজিয়া মিছিল শুরুর সময় কবরস্থানের পশ্চিম গেটে তিনটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সানজু নামে এক স্কুলছাত্র মারা যায়। ঢাকার ৪০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হোসনি দালানে লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। দুই গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া কালো পোশাক পরিহিত হোসনি দালানের স্বেচ্ছাসেবকদের পালন করছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্ব। অন্যান্য বছর মহররমের দিন থেকে শুরু করে পরের প্রায় ৪০ দিন পর্যন্ত ওই স্থানে লোকজনের ভিড় লেগেই থাকতো। বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মানত করতে আসতেন সবাই। কিন্তু বোমা হামলার পর লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। একজন পুরুষ ও চারজন মহিলাকে দেখা গেছে প্র্রার্থনারত অবস্থায়। ওই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এসেছেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে। বাকি দুজন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বিবির মাজার থেকে। স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
এ বিষয়ে হোসেইন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সৈয়দ গোলাম মহাসিন জানান, বোমা বিস্ফোরণের পর এখন পুলিশের যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তা যদি আগে হতো তাহলে এমন বর্বরোচিত হামলা নাও হতে পারতো। এখন যেমন গেটে আর্চওয়ে ও স্ক্যানার দিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে, নারীদের ক্ষেত্রে যেমন নারী-পুলিশ নিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। দুঃখ্যজনক, তখন এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। পুলিশ দুই গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। আর নাজিমউদ্দীন গেট ও বকশীবাজারের রাস্তার মাথায় র্যাবের দুটি গাড়ি ছিল। অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশ কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুললো না তা বোধগম্য হচ্ছে না। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে দুর্বৃত্তরা কেউ না কেউ ধরা পড়তো। আর তারা ধরা পড়লে হামলার পেছনে কাদের মদত ছিল তা বের হয়ে আসতো।
মাজারের খাদেম সৈয়দ সালিম হোসেন বলেন, মহররম এলে কারবালা ময়দানে শাহাদত হওয়া হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাতি হোসাইনকে স্মরণ করে তাজিয়া মিছিল বের করি। সারারাত হোসনি দালানের প্রতিটি গেট খোলা থাকে। ফজরের আজান পর্যন্ত লোকজনের আনাগোনা থাকে। প্রচণ্ড ভিড় থাকতো। রাতের তাজিয়া মিছিলে হোসাইনের ভক্তরা অংশ নেন। এ ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দা ও বাইরের এলাকা থেকে লোকজন ঘুরতে আসেন। কেউবা আগ্রহ করে দেখতে আসেন। বলা যায়, এক মহাধর্মীয় সমাবেশ।
তিনি আরও জানান, আমরা ঐতিহ্যগতভাবে এভাবে মহররম দিনটি পালন করে আসছি। কিন্তু এবার হয়েছে উল্টোটা। এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বোমা বিস্ফোরণের পর লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। আমাদের দেশ সম্প্রতির দেশ। সবাই সবাইকে শ্রদ্ধা করে থাকেন। কিন্তু এমন আমরা নিজেরাই মর্মাহত হয়েছি। আরেক খাদেম আলহাজ হুসাইন জানান, একটি ধর্মীয় সমাবেশে ও নবীজির নাতির শোকের দিবসে এমন ঘটনা ঘটবে তা আমরা ভাবতেই পারছি না। বোমা হামলার পর পুরো এলাকার পরিবেশ নীরব হয়ে গেছে। আমরা কল্পনা করতে পারেনি, এমন একটি হামলার ঘটনা ঘটবে। কেননা এখানে এটির কোন উদহারণ নেই। তবে তিনি স্বীকার করেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের রাতে মিছিল করতে নিষেধ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা রাতে তাজিয়া মিছিল করি, এটাই আমাদের ঐতিহ্য। পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছিল যেন তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে। মাজারে প্রার্থনা করতে আসা ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সৈয়দা আমেনা বেগম জানান, মহররমের দিন এমনিতেই তো শোকের দিন। ওইদিন নারকীয় হামলা চালিয়ে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছে। যারা এ হামলা করেছে তারা এজিদের বংশধর। তারা আজ হোক কাল হোক নিপাত যাবে। তাদের করুণ পরিণতি দেশের মানুষ দেখবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাজিয়া মিছিল ও হোসনি দালানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রধান সমন্বয়কারী পুলিশের লালবাগ জোনের এডিসি সঞ্জিত কুমার রায় জানান, ঘটনার সময় তল্লাশির জন্য সেখানে আর্চওয়ে ও স্ক্যানার ছিল না এটা ঠিক। তবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তিনি আরও জানান, তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে বহু লোকের সমাগম হয়েছিল। নারী ও শিশুদের সংখ্যাও ছিল বিপুল। মিছিলে অংশগ্রহণকারী সবাই ছিলেন আবেগ-আপ্লুত। এতগুলো লোককে তল্লাশি করা খুব কঠিন কাজ। তবুও আমরা সন্দেহভাজন পুরুষ ও নারীদের তল্লাশি করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটিয়েছে। সব পন্থা ব্যবহার করে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার রাতে তাজিয়া মিছিল শুরুর সময় কবরস্থানের পশ্চিম গেটে তিনটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সানজু নামে এক স্কুলছাত্র মারা যায়। ঢাকার ৪০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হোসনি দালানে লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। দুই গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া কালো পোশাক পরিহিত হোসনি দালানের স্বেচ্ছাসেবকদের পালন করছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্ব। অন্যান্য বছর মহররমের দিন থেকে শুরু করে পরের প্রায় ৪০ দিন পর্যন্ত ওই স্থানে লোকজনের ভিড় লেগেই থাকতো। বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মানত করতে আসতেন সবাই। কিন্তু বোমা হামলার পর লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। একজন পুরুষ ও চারজন মহিলাকে দেখা গেছে প্র্রার্থনারত অবস্থায়। ওই পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এসেছেন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে। বাকি দুজন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বিবির মাজার থেকে। স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।
এ বিষয়ে হোসেইন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সৈয়দ গোলাম মহাসিন জানান, বোমা বিস্ফোরণের পর এখন পুলিশের যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, তা যদি আগে হতো তাহলে এমন বর্বরোচিত হামলা নাও হতে পারতো। এখন যেমন গেটে আর্চওয়ে ও স্ক্যানার দিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে, নারীদের ক্ষেত্রে যেমন নারী-পুলিশ নিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। দুঃখ্যজনক, তখন এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। পুলিশ দুই গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। আর নাজিমউদ্দীন গেট ও বকশীবাজারের রাস্তার মাথায় র্যাবের দুটি গাড়ি ছিল। অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। দেশের প্রতিকূল পরিস্থিতি অনুযায়ী পুলিশ কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুললো না তা বোধগম্য হচ্ছে না। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে দুর্বৃত্তরা কেউ না কেউ ধরা পড়তো। আর তারা ধরা পড়লে হামলার পেছনে কাদের মদত ছিল তা বের হয়ে আসতো।
মাজারের খাদেম সৈয়দ সালিম হোসেন বলেন, মহররম এলে কারবালা ময়দানে শাহাদত হওয়া হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাতি হোসাইনকে স্মরণ করে তাজিয়া মিছিল বের করি। সারারাত হোসনি দালানের প্রতিটি গেট খোলা থাকে। ফজরের আজান পর্যন্ত লোকজনের আনাগোনা থাকে। প্রচণ্ড ভিড় থাকতো। রাতের তাজিয়া মিছিলে হোসাইনের ভক্তরা অংশ নেন। এ ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দা ও বাইরের এলাকা থেকে লোকজন ঘুরতে আসেন। কেউবা আগ্রহ করে দেখতে আসেন। বলা যায়, এক মহাধর্মীয় সমাবেশ।
তিনি আরও জানান, আমরা ঐতিহ্যগতভাবে এভাবে মহররম দিনটি পালন করে আসছি। কিন্তু এবার হয়েছে উল্টোটা। এক অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বোমা বিস্ফোরণের পর লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। আমাদের দেশ সম্প্রতির দেশ। সবাই সবাইকে শ্রদ্ধা করে থাকেন। কিন্তু এমন আমরা নিজেরাই মর্মাহত হয়েছি। আরেক খাদেম আলহাজ হুসাইন জানান, একটি ধর্মীয় সমাবেশে ও নবীজির নাতির শোকের দিবসে এমন ঘটনা ঘটবে তা আমরা ভাবতেই পারছি না। বোমা হামলার পর পুরো এলাকার পরিবেশ নীরব হয়ে গেছে। আমরা কল্পনা করতে পারেনি, এমন একটি হামলার ঘটনা ঘটবে। কেননা এখানে এটির কোন উদহারণ নেই। তবে তিনি স্বীকার করেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের রাতে মিছিল করতে নিষেধ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা রাতে তাজিয়া মিছিল করি, এটাই আমাদের ঐতিহ্য। পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছিল যেন তারা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করে। মাজারে প্রার্থনা করতে আসা ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের সৈয়দা আমেনা বেগম জানান, মহররমের দিন এমনিতেই তো শোকের দিন। ওইদিন নারকীয় হামলা চালিয়ে আমাদের সম্প্রদায়ের লোকজনকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছে। যারা এ হামলা করেছে তারা এজিদের বংশধর। তারা আজ হোক কাল হোক নিপাত যাবে। তাদের করুণ পরিণতি দেশের মানুষ দেখবে।
No comments