থাইল্যান্ডের জঙ্গলে আরও গণকবর
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের হাত ইয়াই এলাকার একটি সমাধিক্ষেত্রে গতকাল দাফন করা হয় অভিবাসীদের দেহাবশেষ। গত শুক্র ও শনিবার ওই এলাকার একটি জঙ্গলের মধ্যে গণকবর থেকে উদ্ধার করা হয় ওই সব দেহাবশেষ |
থাইল্যান্ডের
দক্ষিণাঞ্চলের জঙ্গলে পাচারকারীদের আরও একটি অস্থায়ী ঘাঁটির সন্ধান পাওয়া
গেছে। সেখানেও আছে অভিবাসীদের অনেক কবর। সেখানে বাংলাদেশিসহ অর্ধশতাধিক
ব্যক্তির দেহাবশেষ পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর ইউএনবি,
ব্যাংকক পোস্ট ও ফুকেটওয়ান ডট কমের।
গতকাল রোববার নতুন ঘাঁটির সন্ধান পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে গত শুক্র ও শনিবার দুই দিনে মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী শংখলা প্রদেশের সাদাও এলাকার ওই জঙ্গলে এ রকম একটি ঘাঁটিতে একটি গণকবর থেকে ২৬ জন অভিবাসীর কঙ্কাল উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখান থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি।
থাই পুলিশ জানায়, প্রত্যন্ত এই এলাকায় মানব পাচারকারীদের বড় ঘাঁটি ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভবত কিছুদিন আগে তারা এলাকাটি ছেড়ে চলে গেছে। নৌকায় করে আসা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি নাগরিকদের এই ‘জঙ্গলের বন্দিশিবিরে’ আটকে রাখা হতো। পরে স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। মুক্তিপণ দিতে না পারা অনেকে বন্দিদশায় অনাহারে ও রোগে মারা যান।
খবরে বলা হয়, ‘দ্বিতীয় শিবিরটিতে অর্ধশতাধিক লোকের দেহাবশেষ পাওয়া যেতে পারে। সীমান্তের কাছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট আকারের আরও কিছু শিবিরে থাকতে পারে অল্পসংখ্যক মানুষের কবর।’
গত সপ্তাহে আনওয়ার নামে এক থাই পাচারকারীকে গ্রেপ্তারের পর প্রথম বড় আকারের ওই শিবিরের সন্ধান মেলে। এদিকে যে গণকবর থেকে ২৬ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে, সেটার কাছাকাছি স্থান থেকে ১৪ ও ১৭ বছরের দুই কিশোরকে গত শনিবার জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানকার বন্দিশিবিরে অন্তত ৮০০ অভিবাসীকে আটকে রেখেছিল পাচারকারীরা। এই দুই কিশোর জানায়, এখানে তাদের আট মাস আটকে রাখা হয়েছিল।
রয়্যাল থাই পুলিশের কর্মকর্তা জারামপর্ন সুরামানি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা করে ২৫ জনকে তাঁরা পুরুষ ও একজনকে নারী বলে শনাক্ত করেছেন।
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আরাকান প্রোজেক্ট নামের একটি বেসরকারি সংস্থার পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেন, থাইল্যান্ডের মালয়েশীয় সীমান্তবর্তী জঙ্গলগুলোতে অনুসন্ধান করলে তাঁরা এ রকম শত শত অভিবাসীর দেহাবশেষের সন্ধান পাবেন।
‘বাংলাদেশি’ জীবিত উদ্ধার: থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার ওই গণকবরের আশপাশ থেকে অনুজার (২৮) নামের এক বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকাকে অনুজার বলেন, ‘আমরা যাঁরা মুক্তিপণ দিতে পারিনি, তাঁদের এখানে আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা বাঁচি না মরি, সেদিকে তাদের (পাচারকারীদের) কোনো নজর ছিল না। আমাদের অধিকাংশকে মারধর বা নির্যাতন করা হতো। ঠিকমতো খাবার বা পানি কখনোই পাইনি। গোসলের সুযোগ হতো কদাচিৎ।’
অনুজার আরও বলেন, ‘এই বন্দিশিবিরে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন ছিলেন বাংলাদেশি ও অন্তত ৩০ জন রোহিঙ্গা। আটজন দালাল এই শিবির নিয়ন্ত্রণ করত। দালালদের কেউ ছিল রোহিঙ্গা ও কেউ মালয়েশীয়।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই বাংলাদেশি আরও জানান, কক্সবাজার থেকে অপহরণের পর তাঁকে জোরপূর্বক কয়েক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গার সঙ্গে নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। পরে থাইল্যান্ডের ওই বন্দিশিবিরে এনে পাচারকারীরা তাঁকে দিয়ে বাড়িতে ফোন করিয়ে মুক্তিপণ চায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি: থাইল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ‘বাংলাদেশি’ অনুজারের সঙ্গে তাদের একটি প্রতিনিধিদলের জরুরি সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। পুরো ঘটনা নিয়ে থাই সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
গতকাল রোববার নতুন ঘাঁটির সন্ধান পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এর আগে গত শুক্র ও শনিবার দুই দিনে মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী শংখলা প্রদেশের সাদাও এলাকার ওই জঙ্গলে এ রকম একটি ঘাঁটিতে একটি গণকবর থেকে ২৬ জন অভিবাসীর কঙ্কাল উদ্ধার করেন উদ্ধারকর্মীরা। তাঁদের মধ্যে অন্তত ১০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখান থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি।
থাই পুলিশ জানায়, প্রত্যন্ত এই এলাকায় মানব পাচারকারীদের বড় ঘাঁটি ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভবত কিছুদিন আগে তারা এলাকাটি ছেড়ে চলে গেছে। নৌকায় করে আসা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি নাগরিকদের এই ‘জঙ্গলের বন্দিশিবিরে’ আটকে রাখা হতো। পরে স্বজনদের কাছ থেকে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। মুক্তিপণ দিতে না পারা অনেকে বন্দিদশায় অনাহারে ও রোগে মারা যান।
খবরে বলা হয়, ‘দ্বিতীয় শিবিরটিতে অর্ধশতাধিক লোকের দেহাবশেষ পাওয়া যেতে পারে। সীমান্তের কাছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট আকারের আরও কিছু শিবিরে থাকতে পারে অল্পসংখ্যক মানুষের কবর।’
গত সপ্তাহে আনওয়ার নামে এক থাই পাচারকারীকে গ্রেপ্তারের পর প্রথম বড় আকারের ওই শিবিরের সন্ধান মেলে। এদিকে যে গণকবর থেকে ২৬ জনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে, সেটার কাছাকাছি স্থান থেকে ১৪ ও ১৭ বছরের দুই কিশোরকে গত শনিবার জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানকার বন্দিশিবিরে অন্তত ৮০০ অভিবাসীকে আটকে রেখেছিল পাচারকারীরা। এই দুই কিশোর জানায়, এখানে তাদের আট মাস আটকে রাখা হয়েছিল।
রয়্যাল থাই পুলিশের কর্মকর্তা জারামপর্ন সুরামানি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা করে ২৫ জনকে তাঁরা পুরুষ ও একজনকে নারী বলে শনাক্ত করেছেন।
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আরাকান প্রোজেক্ট নামের একটি বেসরকারি সংস্থার পরিচালক ক্রিস লিওয়া বলেন, থাইল্যান্ডের মালয়েশীয় সীমান্তবর্তী জঙ্গলগুলোতে অনুসন্ধান করলে তাঁরা এ রকম শত শত অভিবাসীর দেহাবশেষের সন্ধান পাবেন।
‘বাংলাদেশি’ জীবিত উদ্ধার: থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার ওই গণকবরের আশপাশ থেকে অনুজার (২৮) নামের এক বাংলাদেশিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাংকক পোস্ট পত্রিকাকে অনুজার বলেন, ‘আমরা যাঁরা মুক্তিপণ দিতে পারিনি, তাঁদের এখানে আটকে রাখা হয়েছিল। আমরা বাঁচি না মরি, সেদিকে তাদের (পাচারকারীদের) কোনো নজর ছিল না। আমাদের অধিকাংশকে মারধর বা নির্যাতন করা হতো। ঠিকমতো খাবার বা পানি কখনোই পাইনি। গোসলের সুযোগ হতো কদাচিৎ।’
অনুজার আরও বলেন, ‘এই বন্দিশিবিরে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জন ছিলেন বাংলাদেশি ও অন্তত ৩০ জন রোহিঙ্গা। আটজন দালাল এই শিবির নিয়ন্ত্রণ করত। দালালদের কেউ ছিল রোহিঙ্গা ও কেউ মালয়েশীয়।’
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই বাংলাদেশি আরও জানান, কক্সবাজার থেকে অপহরণের পর তাঁকে জোরপূর্বক কয়েক বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গার সঙ্গে নৌকায় তুলে দেওয়া হয়। পরে থাইল্যান্ডের ওই বন্দিশিবিরে এনে পাচারকারীরা তাঁকে দিয়ে বাড়িতে ফোন করিয়ে মুক্তিপণ চায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি: থাইল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ‘বাংলাদেশি’ অনুজারের সঙ্গে তাদের একটি প্রতিনিধিদলের জরুরি সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। পুরো ঘটনা নিয়ে থাই সরকারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
No comments