রং লেগেছে ডালে ডালে by আশীষ-উর-রহমান
বিদায়
নিয়েছে শিমুল-পলাশ। তবে প্রকৃতি থেকে তাদের রঙের ছটা একেবারে মুছে যায়নি।
বসন্তের সেই রক্তিম রেশ ধরে রেখেছে গ্রীষ্মের কৃষ্ণচূড়া। খররোদে তপ্ত দিনে
এই ব্যতিব্যস্ত মহানগরের পথে পথে ঘন সবুজ পত্রপুঞ্জের ভেতর উজ্জ্বল হয়ে আছে
লাল কৃষ্ণচূড়ার গুচ্ছ। রং লেগেছে কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে।
শহরকে পুষ্পশোভিত করে তুলতে কৃষ্ণচূড়া অনন্য। চৈতালি হাওয়ার ঝাপটায় পাতা ঝরে যাওয়া কৃষ্ণচূড়ার শাখা গ্রীষ্মের শুরু থেকেই যখন অজস্র ফুলে ফুলে ভরে ওঠে, প্রখর রোদের দীপ্তিতে তখন তার এই বিপুল বর্ণবৈভব চোখে প্রায় ধাঁধা লাগিয়ে দেয়। দিনে দিনে গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলের চারপাশ দিয়ে উদ্গত সবুজ পাতারা ফুলগুলোকে যেন সযতনে রচিত স্তবকে পরিণত করে তোলে। চলতি পথে আপনা থেকেই তার দিকে দৃষ্টি যায়। অনাবিল আনন্দের অনুভূতি মনকে প্রশান্ত করে।
ঢাকার পথে ফুলের শোভা বেশি চোখে পড়ে এই গ্রীষ্মেই। প্রধান ভূমিকা কৃষ্ণচূড়ার। জাতীয় সংসদ এলাকায় বিজয় সরণি, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড, রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, পুরোনো এলিফ্যান্ট রোড, বেইলি রোড, হাতিরঝিল, কাকরাইলের কৃষ্ণচূড়ার সারি লাবণ্যময় করে রেখেছে পরিবেশ। এ ছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন পথের পাশে, দপ্তর প্রাঙ্গণে বা কোনো পুরোনো বাড়ির উঠানের কোণ থেকেও কৃষ্ণচূড়ার রঙিন উচ্ছ্বাস ব্যস্ত পথিকের দৃষ্টি ছুঁয়ে যায়। তাতে মন স্নিগ্ধতার স্পর্শ পায়। আবার কারও হয়তো মনে পড়বে কবি শামসুর রাহমানের সেই অমর কাব্যপঙ্ক্তি, ‘আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে/ কেমন নিবিড় হ’য়ে। কখনো মিছিলে কখনো-বা/ একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয়-ফুল নয়, ওরা/ শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর।/ একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রঙ।’
কেবল আনন্দানুভূতির সঙ্গেই নয়, কৃষ্ণচূড়া কখন যেন জড়িয়ে গেছে আমাদের চেতনার অনুষঙ্গে। ফুলটিকে তাই বিদেশি বলে ভাবতেই বরং বিস্ময় জাগে। তবে সত্যি যে কৃষ্ণচূড়ার জন্ম এখানে হয়নি। তার আদি নিবাস সুদূর মাদাগাস্কারে। দ্বিজেন শর্মা তাঁর শ্যামলী নিসর্গতে লিখেছেন, জন্মভূমি মাদাগাস্কার থেকে ১৮২৪ সালে তার পর্যটন শুরু। প্রথমে মুরিটাস, সেখান থেকে রানির দেশ ইংল্যান্ড হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের কাছে তার পরিচয় ‘ডেলোনিক্স রিজিয়া’।
আদি বাস যেখানেই হোক, বহু বছর থেকে কৃষ্ণচূড়া আমাদের দেশে বেশ যত্নেই লালিত-পালিত হচ্ছে। সে যেমন তার অনন্য রূপমাধুরী দিয়ে মানুষের মন ভরিয়ে দিয়েছে, তেমনি মানুষও তাকে ভালোবেসে আপন করে নিয়েছে। স্থান দিয়েছে কাব্যে, হৃদয়ে। তাই কৃষ্ণচূড়াকে আর পর বলে মনে হয় না। আসলে ভালোবাসাই দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয় চিরকাল, আপন করে তোলে অপরকে; সেই যে রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছিলেন, ‘দূরকে করিলে নিকট, বন্ধু, পরকে করিলে ভাই’। সুদূর থেকে নিকটে আসা কৃষ্ণচূড়া তোমার রূপমাধুরীতে বাংলার তপ্ত গ্রীষ্মকে রাঙিয়ে দাও অনন্তদিন।
শহরকে পুষ্পশোভিত করে তুলতে কৃষ্ণচূড়া অনন্য। চৈতালি হাওয়ার ঝাপটায় পাতা ঝরে যাওয়া কৃষ্ণচূড়ার শাখা গ্রীষ্মের শুরু থেকেই যখন অজস্র ফুলে ফুলে ভরে ওঠে, প্রখর রোদের দীপ্তিতে তখন তার এই বিপুল বর্ণবৈভব চোখে প্রায় ধাঁধা লাগিয়ে দেয়। দিনে দিনে গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলের চারপাশ দিয়ে উদ্গত সবুজ পাতারা ফুলগুলোকে যেন সযতনে রচিত স্তবকে পরিণত করে তোলে। চলতি পথে আপনা থেকেই তার দিকে দৃষ্টি যায়। অনাবিল আনন্দের অনুভূতি মনকে প্রশান্ত করে।
ঢাকার পথে ফুলের শোভা বেশি চোখে পড়ে এই গ্রীষ্মেই। প্রধান ভূমিকা কৃষ্ণচূড়ার। জাতীয় সংসদ এলাকায় বিজয় সরণি, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড, রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, পুরোনো এলিফ্যান্ট রোড, বেইলি রোড, হাতিরঝিল, কাকরাইলের কৃষ্ণচূড়ার সারি লাবণ্যময় করে রেখেছে পরিবেশ। এ ছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন পথের পাশে, দপ্তর প্রাঙ্গণে বা কোনো পুরোনো বাড়ির উঠানের কোণ থেকেও কৃষ্ণচূড়ার রঙিন উচ্ছ্বাস ব্যস্ত পথিকের দৃষ্টি ছুঁয়ে যায়। তাতে মন স্নিগ্ধতার স্পর্শ পায়। আবার কারও হয়তো মনে পড়বে কবি শামসুর রাহমানের সেই অমর কাব্যপঙ্ক্তি, ‘আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে/ কেমন নিবিড় হ’য়ে। কখনো মিছিলে কখনো-বা/ একা হেঁটে যেতে যেতে মনে হয়-ফুল নয়, ওরা/ শহীদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধে ভরপুর।/ একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রঙ।’
কেবল আনন্দানুভূতির সঙ্গেই নয়, কৃষ্ণচূড়া কখন যেন জড়িয়ে গেছে আমাদের চেতনার অনুষঙ্গে। ফুলটিকে তাই বিদেশি বলে ভাবতেই বরং বিস্ময় জাগে। তবে সত্যি যে কৃষ্ণচূড়ার জন্ম এখানে হয়নি। তার আদি নিবাস সুদূর মাদাগাস্কারে। দ্বিজেন শর্মা তাঁর শ্যামলী নিসর্গতে লিখেছেন, জন্মভূমি মাদাগাস্কার থেকে ১৮২৪ সালে তার পর্যটন শুরু। প্রথমে মুরিটাস, সেখান থেকে রানির দেশ ইংল্যান্ড হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের কাছে তার পরিচয় ‘ডেলোনিক্স রিজিয়া’।
আদি বাস যেখানেই হোক, বহু বছর থেকে কৃষ্ণচূড়া আমাদের দেশে বেশ যত্নেই লালিত-পালিত হচ্ছে। সে যেমন তার অনন্য রূপমাধুরী দিয়ে মানুষের মন ভরিয়ে দিয়েছে, তেমনি মানুষও তাকে ভালোবেসে আপন করে নিয়েছে। স্থান দিয়েছে কাব্যে, হৃদয়ে। তাই কৃষ্ণচূড়াকে আর পর বলে মনে হয় না। আসলে ভালোবাসাই দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয় চিরকাল, আপন করে তোলে অপরকে; সেই যে রবীন্দ্রনাথ যেমন বলেছিলেন, ‘দূরকে করিলে নিকট, বন্ধু, পরকে করিলে ভাই’। সুদূর থেকে নিকটে আসা কৃষ্ণচূড়া তোমার রূপমাধুরীতে বাংলার তপ্ত গ্রীষ্মকে রাঙিয়ে দাও অনন্তদিন।
No comments