জন্মের পরদিনই মায়ের কোলছাড়া শিশু
পল্টন মোড় এলাকা থেকে এই নারীকে নবজাতকসহ পুলিশ আটক করে l প্রথম আলো |
জন্ম
দেওয়ার পরদিন নিজ সন্তানকে অন্যের কাছে তুলে দিয়েছিলেন এক মা। অভাব-অনটন
ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে নিরুপায় হয়ে ওই সিদ্ধান্ত নেন বলে
জানিয়েছেন মা পারভিন বেগম। শিশুটিকে নিয়ে ঢাকা ছাড়ার আগেই আটক হয়েছেন
গুলজান বেগম নামের এক নারী। পুলিশ শিশুটিকে ভর্তি করেছে হাসপাতালে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টনে জনতা শিশু চোর সন্দেহে গুলজানকে (৫৫) ওই নবজাতকসহ পুলিশের কাছে তুলে দেয়। এরপর বেরিয়ে আসে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরদিন শিশুটির মায়ের কোলছাড়া হওয়ার কাহিনি।
বেলা পৌনে তিনটার দিকে পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিবুর রহমান ওই ছেলেশিশু ও গুলজান বেগমকে নিয়ে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মনিবুর সাংবাদিকদের বলেন, গুলজান মিনিবাসে করে যাওয়ার সময় শিশুটি খুব কাঁদছিল। অন্য যাত্রীরা জানতে চান, এত ছোট শিশু কার। গুলজান শিশুটি তাঁর বলে জানালে যাত্রীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু করলে চালক পল্টন মোড়ে বাস থামিয়ে দেন। যাত্রীরা গুলজানকে নামিয়ে এনে কিছু মারধরও করেন। এরপর পুলিশ গিয়ে গুলজানকে আটক করে।
হাসপাতালে গুলজান জানান, তিনি ধলপুরের ১৪ নম্বর বস্তিতে থাকেন। তাঁর প্রতিবেশী আক্তার মিয়া ও ফাতেমা দম্পতির কাছ থেকে শিশুটিকে নিয়েছেন তিনি। ফাতেমা একটি বেসরকারি সংস্থার ডেলিভারি সেন্টারের কর্মী।
গুলজান জানান, তাঁর ভাই ওদুদ নিঃসন্তান, ভাই-ভাবি ফরিদপুরের নগরকান্দায় থাকেন। ভাইয়ের ইচ্ছা শিশু দত্তক নেবেন। ভাইয়ের ইচ্ছার কথা তিনি ফাতেমাকে জানিয়েছিলেন। রোববার ফাতেমা দত্তক নেওয়ার মতো একটি শিশুর জন্মের খবর দিলে তিনি রাজি হন। কথা হয়েছিল, শিশুটির মাকে ‘খুশি হয়ে’ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। তিনি গতকাল দুপুরে শিশুটিকে নিয়ে ফরিদপুর যাওয়ার পথে ধরা পড়েন।
বিকেলে ধলপুর বস্তিতে গিয়ে জানা যায়, সেখানে গুলজান ও আক্তার-ফাতেমা দম্পতি প্রতিবেশী। শিশুটির হাতবদলের খবর বস্তির লোকেরা জানেন। বস্তির লোকজন গুলজানের মেয়ে পোশাকশিল্প কর্মী মুন্নী বেগমকে ডেকে দেন। তিনি জানান, এমন শিশুর খোঁজ দিতে দুই বছর আগে ফাতেমাকে অনুরোধ করেছিলেন তাঁর মা। গতকাল শিশুটিকে হাতে পান তাঁর মা।
আক্তার মিয়া জানান, গুলজানের অনুরোধে পারভিনের শিশুকে দত্তক দিতে মধ্যস্থতা করেন ফাতেমা। পারভিন সন্তান জন্ম দিতে ধলপুর ডেলিভারি সেন্টারে আসেন। তিনি ফাতেমাকে জানান, স্বামী তাঁর দেখাশোনা করেন না। তাঁর আরও দুটি শিশু রয়েছে। এই শিশুটি দত্তক দিতে চান। তখনই তাঁরা গুলজানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বেসরকারি সংস্থার ডেলিভারি সেন্টারে ছেলের জন্ম দেন পারভিন।
সন্ধ্যায় পুলিশ ফাতেমা ও নাজনীনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে পারভিন জানান, তিনি প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ করতেন। স্বামী হেলাল বোতল তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের আগের দুটি সন্তান আছে। সাত-আট মাস ধরে হেলাল তাঁদের খোঁজ নেন না। আয় না থাকায় গর্ভকালীন সময়টা খুব কষ্টে কেটেছে। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, পেটের শিশুটিকে দত্তক দেবেন। সে অনুযায়ী গতকাল দুপুরে শিশুটি তিনি গুলজানকে দেন। তবে টাকা নিয়ে কোনো কথা হয়নি।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম জানান, শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শিশুটির মা, গুলজান ও ফাতেমাকে নিয়ে পুলিশের একটি দলকে ওই বস্তিতে পাঠানো হয়েছে। বস্তির লোকজন নিশ্চিত করেছেন, রোববার পারভিন শিশুটির জন্ম দিয়েছেন এবং গতকাল ফাতেমার মধ্যস্থতায় গুলজানকে শিশুটি দান করেন। এখন হাসপাতাল মনে করলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুটির মাতৃত্বের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারে।
ওসি জানান, এ বিষয়ে শিশুর মায়ের যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে তিনি যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করতে পারেন। এমনিতে পুলিশ কোনো মামলা করছে না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটি আপাতত সুস্থ। তবে তার শ্বাসকষ্ট রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। শিশুটিকে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর পল্টনে জনতা শিশু চোর সন্দেহে গুলজানকে (৫৫) ওই নবজাতকসহ পুলিশের কাছে তুলে দেয়। এরপর বেরিয়ে আসে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরদিন শিশুটির মায়ের কোলছাড়া হওয়ার কাহিনি।
বেলা পৌনে তিনটার দিকে পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিবুর রহমান ওই ছেলেশিশু ও গুলজান বেগমকে নিয়ে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মনিবুর সাংবাদিকদের বলেন, গুলজান মিনিবাসে করে যাওয়ার সময় শিশুটি খুব কাঁদছিল। অন্য যাত্রীরা জানতে চান, এত ছোট শিশু কার। গুলজান শিশুটি তাঁর বলে জানালে যাত্রীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু করলে চালক পল্টন মোড়ে বাস থামিয়ে দেন। যাত্রীরা গুলজানকে নামিয়ে এনে কিছু মারধরও করেন। এরপর পুলিশ গিয়ে গুলজানকে আটক করে।
হাসপাতালে গুলজান জানান, তিনি ধলপুরের ১৪ নম্বর বস্তিতে থাকেন। তাঁর প্রতিবেশী আক্তার মিয়া ও ফাতেমা দম্পতির কাছ থেকে শিশুটিকে নিয়েছেন তিনি। ফাতেমা একটি বেসরকারি সংস্থার ডেলিভারি সেন্টারের কর্মী।
গুলজান জানান, তাঁর ভাই ওদুদ নিঃসন্তান, ভাই-ভাবি ফরিদপুরের নগরকান্দায় থাকেন। ভাইয়ের ইচ্ছা শিশু দত্তক নেবেন। ভাইয়ের ইচ্ছার কথা তিনি ফাতেমাকে জানিয়েছিলেন। রোববার ফাতেমা দত্তক নেওয়ার মতো একটি শিশুর জন্মের খবর দিলে তিনি রাজি হন। কথা হয়েছিল, শিশুটির মাকে ‘খুশি হয়ে’ ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। তিনি গতকাল দুপুরে শিশুটিকে নিয়ে ফরিদপুর যাওয়ার পথে ধরা পড়েন।
বিকেলে ধলপুর বস্তিতে গিয়ে জানা যায়, সেখানে গুলজান ও আক্তার-ফাতেমা দম্পতি প্রতিবেশী। শিশুটির হাতবদলের খবর বস্তির লোকেরা জানেন। বস্তির লোকজন গুলজানের মেয়ে পোশাকশিল্প কর্মী মুন্নী বেগমকে ডেকে দেন। তিনি জানান, এমন শিশুর খোঁজ দিতে দুই বছর আগে ফাতেমাকে অনুরোধ করেছিলেন তাঁর মা। গতকাল শিশুটিকে হাতে পান তাঁর মা।
আক্তার মিয়া জানান, গুলজানের অনুরোধে পারভিনের শিশুকে দত্তক দিতে মধ্যস্থতা করেন ফাতেমা। পারভিন সন্তান জন্ম দিতে ধলপুর ডেলিভারি সেন্টারে আসেন। তিনি ফাতেমাকে জানান, স্বামী তাঁর দেখাশোনা করেন না। তাঁর আরও দুটি শিশু রয়েছে। এই শিশুটি দত্তক দিতে চান। তখনই তাঁরা গুলজানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বেসরকারি সংস্থার ডেলিভারি সেন্টারে ছেলের জন্ম দেন পারভিন।
সন্ধ্যায় পুলিশ ফাতেমা ও নাজনীনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখানে পারভিন জানান, তিনি প্লাস্টিকের কারখানায় কাজ করতেন। স্বামী হেলাল বোতল তৈরির কারখানায় কাজ করেন। তাঁদের আগের দুটি সন্তান আছে। সাত-আট মাস ধরে হেলাল তাঁদের খোঁজ নেন না। আয় না থাকায় গর্ভকালীন সময়টা খুব কষ্টে কেটেছে। তখনই সিদ্ধান্ত নেন, পেটের শিশুটিকে দত্তক দেবেন। সে অনুযায়ী গতকাল দুপুরে শিশুটি তিনি গুলজানকে দেন। তবে টাকা নিয়ে কোনো কথা হয়নি।
পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোর্শেদ আলম জানান, শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শিশুটির মা, গুলজান ও ফাতেমাকে নিয়ে পুলিশের একটি দলকে ওই বস্তিতে পাঠানো হয়েছে। বস্তির লোকজন নিশ্চিত করেছেন, রোববার পারভিন শিশুটির জন্ম দিয়েছেন এবং গতকাল ফাতেমার মধ্যস্থতায় গুলজানকে শিশুটি দান করেন। এখন হাসপাতাল মনে করলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুটির মাতৃত্বের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারে।
ওসি জানান, এ বিষয়ে শিশুর মায়ের যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে তিনি যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করতে পারেন। এমনিতে পুলিশ কোনো মামলা করছে না।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটি আপাতত সুস্থ। তবে তার শ্বাসকষ্ট রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। শিশুটিকে ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে।
No comments