অপহৃত কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন সেই এসি by নুরুজ্জামান লাবু
অপহরণের
শিকার হওয়া সেই কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী
কমিশনার (এসি) শেখ রাজীবুল হাসান। নিজের স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন রেখে
মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে বিয়ে করেন তিনি। রেখেছিলেন লালমাটিয়া
এলাকায় নিজের ভাড়া করা একটি বাসায়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর কিশোরীকে গত
৫ই এপ্রিল নিজ বাড়িতে ফেরতও পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন কিশোরীর পরিবারকে চাপ
দিচ্ছেন মীমাংসা করার জন্য। এসি রাজীবের বড় বোন ও খালা মীমাংসার জন্য
চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তাদের একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও অন্যজন আইনজীবী।
তবে নিজের স্ত্রী-সন্তানের কথা গোপন রেখে ও মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে
অপহরণের পর বিয়ে করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। তারা
এসি রাজীবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। এ বিষয়ে তারা আইনি পদক্ষেপ
নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত ২রা এপ্রিল পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে এসি
রাজীবকে মোহাম্মদপুর জোন থেকে ক্লোজ করে তেজগাঁওয়ের ডিসি কার্যালয়ে সংযুক্ত
করা হয়েছে। গত ১লা ফেব্রুয়ারি বিকাল ৩টা থেকে রাজধানীর কাফরুলের বাসিন্দা
১৭ বছর বয়সী সুমাইয়া আক্তার মৌ নিখোঁজ হয়। ওই দিনই সুমাইয়ার বড় ভাই আব্দুল
বাছেত বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ৫৬) দায়ের করেন।
একদিন পর আব্দুল বাছেত র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বরাবর তার বোনকে কতিপয়
দুষ্কৃতকারী অপহরণ করেছে বলে একটি লিখিত অভিযোগ (নম্বর ৪২) করেন। পরে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুসন্ধান করে জানা যায়,
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের এসি রাজীবের সঙ্গে কিশোরী
মেয়েটির নিয়মিত ফোনালাপ হতো। অপহৃত হওয়ার আগের ১৫ দিনে এসি রাজীবের সরকারি
মোবাইল নম্বরে ৫২ বার ও অপহৃত হওয়ার পর ২ বার কথোপকথনের রেকর্ড রয়েছে।
এছাড়া, এসি রাজীবের একটি ব্যক্তিগত নম্বর দিয়ে ওই কিশোরীর সঙ্গে অসংখ্যবার
ফোনালাপের তথ্য পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যরা কিশোরীকে ফেরত পেতে একাধিকবার
এসি রাজীবের কাছে গেলেও তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
সুমাইয়ার বড় ভাই বাছেত জানান, গত ৫ই এপ্রিল তার বোন বাসায় ফেরত আসে। এসময় তারা বোনকে কোথায় ছিল জিজ্ঞাসা করলে সে লালমাটিয়ার একটি হোস্টেলে অবস্থান করেছে বলে স্বীকার করে। কিন্তু বাসায় অবস্থানের দু’দিনের মাথায় একটি ফোনকল আসার পর কিশোরী অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। একাধিকবার সে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল। পরিবারের সদস্যরা তাকে বুঝিয়ে কারণ জানতে চাইলে কিশোরী তার স্বজনদের কাছে সবকিছু খুলে বলে। কিশোরী তার পরিবারের সদস্যদের জানায়, এসি রাজীবের সঙ্গে তার দুই বছরের প্রেম চলছিল। এই দুই বছরে তারা অসংখ্যবার মেলামেশা করেছে। পরিবার থেকে বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানতে পেরে গত ১লা ফেব্রুয়ারি রাজীবের ডাকেই সে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। রাজীব তাকে লালমাটিয়ার নিবেদিকা হোস্টেলে রাখে। এরপর গত ৫ই মার্চ মোহাম্মদপুরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী আনিছুর রহমানের মাধ্যমে বিয়ে করেন তাকে। এসি রাজীবের বিয়ের নিকাহনামার একটি সত্যায়িত প্রতিলিপি এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। নিকাহনামা ঘেঁটে দেখা যায়, মেয়ের বয়স সেখানে ২১ বছর দেখানো হয়েছে। বিয়েতে এক লাখ এক টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। নিকাহনামায় এসি রাজীব তার আগের স্ত্রী ও সন্তানের কথা সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন। বিয়েতে মৌলভী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নূরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। আর বিয়ের সাক্ষী হিসেবে কেরানীগঞ্জের আটিবাজারের আটিকুটি এলাকার শমসের আলীর ছেলে মতিন, শ্যামলাপুর ঘাটারচরের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে ফারুক ও তার স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে সাক্ষী করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিবাহ রেজিস্ট্রির একদিন আগে প্রথম শ্রেণীর একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে শেখ রাজীবুল হাসান ওই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে বিবাহের হলফনামা বা কোর্ট ম্যারিজ করেন। সেখানেও দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক বলে মেয়ের বয়স ২১ বছর দেখানো হয়। সূত্র জানায়, গত দুই বছর ধরে এসি রাজীব ওই কিশোরীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেম করে আসছিলেন। কিশোরীকে নিয়ে রাজীব নিয়মিত ফার্মগেটের হোটেল গিভেন্সীতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে অবস্থান করতেন। ১লা ফেব্রুয়ারি রাজীবের ডাকে কিশোরী বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। স্বজনরা জানান, রাজীব কৌশলের আশ্রয় হিসেবেই কিশোরীকে বিয়ে করেছে। যাতে বিয়ের পর আইনিভাবে ওই কিশোরীকে তালাক দিতে পারে। এরই মধ্যে রাজীব ওই কিশোরীকে জানিয়ে দিয়েছে, তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেব না। তুমি চাইলে যা ইচ্ছা করতে পারো। এরপরই কিশোরী পুরো ঘটনা তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেয়। এর আগেই কৌশলে রাজীব ওই কিশোরীকে ভুল বুঝিয়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে থানা থেকে জিডি ও র্যাব কার্যালয় থেকে অপহরণের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়। কিশোরীর ভাই জানান, আগে বুঝতে পারলে তারা এসব অভিযোগ প্রত্যাহার করতেন না। কিশোরীর বরাত দিয়ে তার ভাই জানান, তার বোনকে ভয় দেখিয়েছে রাজীব। তা না হলে পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি হবে বলেও জানিয়েছে। একারণে সুমাইয়া তাদের কাছে সবকিছু আড়াল করে রেখেছিল। এখন সুমাইয়া তার ভুল বুঝতে পেরেছে। তাদের বলেছে, ‘তোমরা রাজীবকে ছেড়ো না। তার শাস্তি আমি দেখতে চাই। আমার সঙ্গে ও প্রতারণা করেছে। আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে।
বাছেত জানান, ইতিমধ্যে তার বোন কয়েকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটেছে। বোনের কিছু হলে এর দায়ভার নিতে হবে রাজীবকে। তারা বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তা করছেন। কিন্তু তারা হুমকি পাচ্ছেন। বিভিন্নভাবে এসি রাজীব বিষয়টি নিয়ে তাদের বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দিচ্ছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এসি রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বারবার তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তেজগাঁওয়ের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, কমিশনারের নির্দেশে তাকে মোহাম্মদপুর থেকে ক্লোজ করে ডিসি অফিসে সংযুক্ত করা রয়েছে।
সুমাইয়ার বড় ভাই বাছেত জানান, গত ৫ই এপ্রিল তার বোন বাসায় ফেরত আসে। এসময় তারা বোনকে কোথায় ছিল জিজ্ঞাসা করলে সে লালমাটিয়ার একটি হোস্টেলে অবস্থান করেছে বলে স্বীকার করে। কিন্তু বাসায় অবস্থানের দু’দিনের মাথায় একটি ফোনকল আসার পর কিশোরী অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। একাধিকবার সে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিল। পরিবারের সদস্যরা তাকে বুঝিয়ে কারণ জানতে চাইলে কিশোরী তার স্বজনদের কাছে সবকিছু খুলে বলে। কিশোরী তার পরিবারের সদস্যদের জানায়, এসি রাজীবের সঙ্গে তার দুই বছরের প্রেম চলছিল। এই দুই বছরে তারা অসংখ্যবার মেলামেশা করেছে। পরিবার থেকে বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানতে পেরে গত ১লা ফেব্রুয়ারি রাজীবের ডাকেই সে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। রাজীব তাকে লালমাটিয়ার নিবেদিকা হোস্টেলে রাখে। এরপর গত ৫ই মার্চ মোহাম্মদপুরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী আনিছুর রহমানের মাধ্যমে বিয়ে করেন তাকে। এসি রাজীবের বিয়ের নিকাহনামার একটি সত্যায়িত প্রতিলিপি এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। নিকাহনামা ঘেঁটে দেখা যায়, মেয়ের বয়স সেখানে ২১ বছর দেখানো হয়েছে। বিয়েতে এক লাখ এক টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়। নিকাহনামায় এসি রাজীব তার আগের স্ত্রী ও সন্তানের কথা সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন। বিয়েতে মৌলভী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নূরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। আর বিয়ের সাক্ষী হিসেবে কেরানীগঞ্জের আটিবাজারের আটিকুটি এলাকার শমসের আলীর ছেলে মতিন, শ্যামলাপুর ঘাটারচরের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে ফারুক ও তার স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে সাক্ষী করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিবাহ রেজিস্ট্রির একদিন আগে প্রথম শ্রেণীর একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে শেখ রাজীবুল হাসান ওই কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে বিবাহের হলফনামা বা কোর্ট ম্যারিজ করেন। সেখানেও দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক বলে মেয়ের বয়স ২১ বছর দেখানো হয়। সূত্র জানায়, গত দুই বছর ধরে এসি রাজীব ওই কিশোরীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেম করে আসছিলেন। কিশোরীকে নিয়ে রাজীব নিয়মিত ফার্মগেটের হোটেল গিভেন্সীতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে অবস্থান করতেন। ১লা ফেব্রুয়ারি রাজীবের ডাকে কিশোরী বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। স্বজনরা জানান, রাজীব কৌশলের আশ্রয় হিসেবেই কিশোরীকে বিয়ে করেছে। যাতে বিয়ের পর আইনিভাবে ওই কিশোরীকে তালাক দিতে পারে। এরই মধ্যে রাজীব ওই কিশোরীকে জানিয়ে দিয়েছে, তোমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দেব না। তুমি চাইলে যা ইচ্ছা করতে পারো। এরপরই কিশোরী পুরো ঘটনা তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেয়। এর আগেই কৌশলে রাজীব ওই কিশোরীকে ভুল বুঝিয়ে পরিবারের সদস্যদের দিয়ে থানা থেকে জিডি ও র্যাব কার্যালয় থেকে অপহরণের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়। কিশোরীর ভাই জানান, আগে বুঝতে পারলে তারা এসব অভিযোগ প্রত্যাহার করতেন না। কিশোরীর বরাত দিয়ে তার ভাই জানান, তার বোনকে ভয় দেখিয়েছে রাজীব। তা না হলে পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি হবে বলেও জানিয়েছে। একারণে সুমাইয়া তাদের কাছে সবকিছু আড়াল করে রেখেছিল। এখন সুমাইয়া তার ভুল বুঝতে পেরেছে। তাদের বলেছে, ‘তোমরা রাজীবকে ছেড়ো না। তার শাস্তি আমি দেখতে চাই। আমার সঙ্গে ও প্রতারণা করেছে। আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে।
বাছেত জানান, ইতিমধ্যে তার বোন কয়েকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে। ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কেটেছে। বোনের কিছু হলে এর দায়ভার নিতে হবে রাজীবকে। তারা বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার চিন্তা করছেন। কিন্তু তারা হুমকি পাচ্ছেন। বিভিন্নভাবে এসি রাজীব বিষয়টি নিয়ে তাদের বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দিচ্ছেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এসি রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বারবার তার মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তেজগাঁওয়ের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, কমিশনারের নির্দেশে তাকে মোহাম্মদপুর থেকে ক্লোজ করে ডিসি অফিসে সংযুক্ত করা রয়েছে।
No comments