বৃটেনের জাতীয় নির্বাচনে লড়ছেন ১২ বাংলাদেশী by তানজির আহমেদ রাসেল
এ বিজয়ে বিলেতে বাংলাদেশীদের কয়েক দশকের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়েছিল।
এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগামী ৭ই মে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ১২ বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে লেবার দল থেকে আটজন, কনজারভেটিভ দল থেকে একজন ও লিবারেল ডেমোক্রেট দল থেকে তিনজন মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১০ সালে পার্লামেন্টে প্রথম বাংলাদেশী এমপির অভিষেকের পর এবার একাধিক এমপি বৃটিশ পার্লামেন্টে নিজেদের স্থান করে নিবেন বলে আশা করেছেন বৃটিশ বাংলাদেশীরা।
১. রুশনারা আলী এমপি
বৃটিশ পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশী এমপি রুশনারা আলী। ২০১০ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত বৃটেনের জাতীয় নির্বাচনে বেথনালগ্রীন ও বো আসন থেকে এক ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে ইতিহাস গড়েন। প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশী এমপি হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেন অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বুরকী গ্রামের মেয়ে রুশনারা। এবারও রুশনারা বেথনালগ্রীন ও বো আসন থেকে লেবার দলের প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিশ্রুতিশীল ও মেধাবী হওয়ার কারণে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়েই লেবার রাজনীতির সামনের কাতারে চলে আসেন। দায়িত্ব পান শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টার ও লেবার পার্টির সাউথ এশিয়াবিষয়ক মুখপাত্রের। কিছুদিন পর দপ্তর পরিবর্তন করে তাকে করা হয় শ্যাডো এডুকেশন মিনিস্টার। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাউস অব কমন্সে ‘ইরাকে দ্বিতীয় দফা বোমা হামলা বিলে’র পক্ষে সই না দিয়ে শ্যাডো মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন রুশনারা আলী। পরে তিনি লেবার পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে হাউস অব কমন্সের ১৩ সদস্যবিশিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এই কমিটি গ্রেট বৃটেনের অর্থ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি তদারকি করে থাকে। ১৯৭৫ সালের ১৪ই মার্চ সিলেটের বিশ্বনাথে জন্ম নেয়া রুশনারা মাত্র ৭ বছর বয়সে তার পরিবারের সঙ্গে বিলেতে আসেন এবং পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে বসবাস শুরু করেন। বিখ্যাত মালবারী গার্লস স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে টাওয়ার হ্যামলেটস কলেজে ভর্তি হন রুশনারা। এরপর বিশ্বখ্যাত ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতির উপর ডিগ্রি নেন তিনি। লেবার পার্টির রাজনীতিবিদ হাউস অব লর্ডসের সাবেক সদস্য মাইকেল ইয়াং-এর রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে রুশনারা আলী তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি বেথনালগ্রীন ও বো আসনের সাবেক এমপি ওনা কিং-এর পার্লামেন্টারি এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসে ও ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত রিচার্স ফেলো হিসেবে ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক পলিসি রিচার্সে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন রুশনারা। হোম অফিসের কমিউনিটিজ বিভাগেও ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি।
২. টিউলিপ সিদ্দিক
লন্ডনের শ্বেতাঙ্গ-অশ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত হ্যাম্পট্যাড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির হয়ে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। লেবারদলীয় এমপি ও সাবেক অভিনেত্রী গ্লেন্ডা জ্যাকসন বার্ধক্যজনিত কারণে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিলে শফিক সিদ্দিক-শেখ রেহানা দম্পতির মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির প্রায় ৯শ’ সদস্যের সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর স্যালি গিমসন ও হ্যাকনি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র সোফি লিন্ডেনকে পরাজিত করে মনোনয়ন লাভ করেন। টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের মেরটন কাউন্সিলের মিচাম এলাকায় ১৯৮২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ, ব্রুনেই, ভারত, সিঙ্গাপুর, স্পেনে বাল্যকাল কাটিয়েছেন। পশ্চিম লন্ডন থেকে ১৯৮৮ সালে তিনি উত্তর লন্ডনে চলে আসেন এবং এ-লেভেল সম্পন্ন করেন। টিউলিপ ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যের উপর আন্ডারগ্রাজুয়েট ডিগ্রি এবং কিংস কলেজ অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১১ সালে তিনি পলিটিক্স, পলিসি অ্যান্ড গর্ভমেন্টের উপর দ্বিতীয়বারের মতো মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ২০১০ সালের মে মাসে ক্যামডেন রিজেন্ট পার্ক ওয়ার্ডের প্রথম বাঙালি মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ফিলিপ গ্লাউড এসোসিয়েটস, সেভ দ্যা চিলড্রেন, বেথনালগ্রীন অ্যান্ড বো আসনের সাবেক লেবার এমপি ওনা কিং, টুটিং এলাকার লেবার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী সাদেক খান, লেইটন ওয়ানস্টেড এলাকার সাবেক লেবার এমপি হেরী কোহেনের সঙ্গে কাজ করেছেন। ক্যামডেন ও ইজলিংটন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের গভর্নর, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ইউকের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের লেবার লিডার এড মিলিব্যান্ডের ক্যাম্পেইন ও এমপি টিসা জোয়েলের পলিসি এডভাইজার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সঙ্গেও কাজ করেছেন টিউলিপ।
৩. ড. রূপা হক
ড. রূপা হক লন্ডনের কিংস্টন ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার। পিএইচডি করেছেন কালচারাল স্টাডিজের উপর। ক্যামব্রিজ গ্র্যাজুয়েট ড. রূপা হক লেবার পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে। রূপার বাবা-মা ১৯৬০ সালে বৃটেনে আসেন। ১৯৭২ সালে লন্ডনের হেমারস্মিথে জন্ম নেয়া রূপা ১৯৯১ সালে লেবার পার্টির সদস্য হন। তিনি একাধারে লেখক, কলামিস্ট, মিউজিক ডিজে। বৃটেনের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক গার্ডিয়ান, সানডে অবজারভার পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি। ২০১০ সালে তিনি লন্ডনের ইলিং কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তিনি লেবার পার্টির স্থানীয় সদস্যদের ভোটে পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন পান। রূপা হকের ছোট বোন কনি হক বিখ্যাত বিবিসি প্রোগ্রাম ব্লু পিটারের একজন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা। তার আদি বাড়ি পাবনায়।
৪. মেরিনা আহমেদ
লন্ডনের বেকেনহাম আসনে লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মেয়ে ব্যারিস্টার মেরিনা আহমেদ। মাত্র ৬ মাস বয়সে বাবা-মা’র সঙ্গে বৃটেনে আসেন মেরিনা। ওয়েস্ট সাসেক্সের ক্রাউলিতে ছোট চার ভাইয়ের সঙ্গে বেড়ে উঠেন। ইউনিভার্সিটি অব সারে থেকে ইংরেজি এবং ইতিহাসে স্নাতক মেরিনা আহমেদ সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব বাথ থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা করেন তিনি। মেরিনার স্বামী ডা. মো. ইমরুল কয়েস পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল আলবিয়ন জিপি সার্জারিতে কাজ করছেন। দুই সন্তানের জননী মেরিনা আহমেদ দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কেবিনেট অফিসে কাজ করার পাশাপাশি ক্রাউন প্রসিকিউশন টিমেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজ আসনে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে তিনি যুক্ত।
৫. ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া
বৃটেনের নর্থহ্যামটন শহরে বেড়ে ওঠা ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া লন্ডনের ওয়েলউইন অ্যান্ড হার্টফিল্ড আসন থেকে লেবার দলীয় প্রার্থী। তিনি লড়বেন কনজারভেটিভ দলের চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপের সঙ্গে। ১৯৭২ সালে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর গ্রামে জন্ম নেয়া ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়ার চেম্বার লন্ডনের বিখ্যাত চ্যান্সেরি লেইনে। তিনি ইউকে-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউকেবিসিসিআই)’র একজন পরিচালক।
৬. সুমন হক
স্কটল্যান্ডে জন্ম নেয়া সুমন হক স্কটল্যান্ডের এভারডিনশায়ারের বেনফ অ্যান্ড বুখান আসন থেকে লেবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। এভারডিন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সুমন প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী, যিনি স্কটল্যান্ডের আসন থেকে মনোনয়ন পেলেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে স্কটিশ লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সুমন হকের দেশের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে।
৭. আখলাকুল ইসলাম
লুটন শহরের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী আখলাকুল ইসলাম লুটনের রিগেইট অ্যান্ড বেনস্ট্যাড আসনে চারজন প্রতিযোগীকে পরাজিত করে লেবার দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তরুণ রাজনীতিবিদ আখলাকুল ইসলাম ১৯৬০ সালে পরিবারের সঙ্গে বৃটেনে আসেন। তিনি বৃটিশ রেডক্রস ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে তাদের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে।
৮. এমরান হোসাইন
বৃটেনের নর্থ ইস্ট হ্যাম্পশায়ার আসন থেকে লেবার পার্টির প্রার্থী হয়েছেন এমরান হোসাইন। বৃটিশ আর্মির রিজার্ভ সদস্য ও ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর ন্যাশনাল ডেলিভারি অফিসার এমরান হোসেন প্রায় ১০ বছর থেকে লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়াশুনা শেষে এখন রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়েও পড়াশুনা করছেন। এমরানের আদিনিবাস সিলেটের গোলাপগঞ্জে।
কনজারভেটিভ দলের এক প্রার্থী
৯. মিনা রহমান
কনজারভেটিভ দল থেকে লন্ডনের বার্কিং অ্যান্ড ডাগেনহাম আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেটের ছাতকে জন্ম নেয়া মিনা রহমান। তিনি দলটির একমাত্র বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী। মাত্র ২১ দিন বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে বৃটেনে আসেন মিনা। বিখ্যাত মালবারী গার্লস স্কুলে শিক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেন তিনি। বর্তমানে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি হাউজিং
কোম্পানির ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। দুই কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানের জননী মিনা রহমান বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।
১০. আশুক আহমদ এমবিই
লুটন সাউথ আসনে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হয়েছেন আশুক আহমদ এমবিই। লুটন শহরের বাসিন্দা আশুক আহমদ ১৯৭৬ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পদে কাজ করা আশুক আহমদ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। ২০০৯ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক সম্মানজনক ‘মেম্বার অব দ্যা অর্ডার অব দ্যা বৃটিশ অ্যাম্পায়ার’ (এমবিই) খেতাবে ভূষিত হন তিনি। আশুক আহমদের জন্ম সিলেটের বিয়ানীবাজারে।
১১. প্রিন্স সাদিক চৌধুরী
মাত্র দুই মাস বয়সে মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান প্রিন্স সাদিক চৌধুরী। এবার তিনি নর্থহ্যাম্পটন সাউথ আসনে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের হয়ে বৃটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০০৭ সালে নর্থহ্যাম্পটনশায়ার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রথম কোন বাংলাদেশী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৩ সালে সিলেটে জন্ম নেয়া প্রিন্স সাদিক পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট প্রিন্স সাদিক ওয়েস্ট নর্থহ্যামটন শায়ার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের কমিটি মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রিন্স সাদিক চৌধুরীর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে।
১২. মোহাম্মদ সুলতান
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জন্ম মোহাম্মদ সুলতানের। তরুণ বয়সে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। স্থানীয় বেনগোর সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবারের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ওয়েলসের আরফন আসন থেকে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হয়েছেন। পেশায় তিনি একজন সফল রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী।
এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগামী ৭ই মে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে ১২ বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে লেবার দল থেকে আটজন, কনজারভেটিভ দল থেকে একজন ও লিবারেল ডেমোক্রেট দল থেকে তিনজন মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১০ সালে পার্লামেন্টে প্রথম বাংলাদেশী এমপির অভিষেকের পর এবার একাধিক এমপি বৃটিশ পার্লামেন্টে নিজেদের স্থান করে নিবেন বলে আশা করেছেন বৃটিশ বাংলাদেশীরা।
১. রুশনারা আলী এমপি
বৃটিশ পার্লামেন্টের প্রথম বাংলাদেশী এমপি রুশনারা আলী। ২০১০ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত বৃটেনের জাতীয় নির্বাচনে বেথনালগ্রীন ও বো আসন থেকে এক ঐতিহাসিক বিজয়ের মাধ্যমে ইতিহাস গড়েন। প্রথম বৃটিশ বাংলাদেশী এমপি হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেন অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বুরকী গ্রামের মেয়ে রুশনারা। এবারও রুশনারা বেথনালগ্রীন ও বো আসন থেকে লেবার দলের প্রার্থী হয়েছেন। প্রতিশ্রুতিশীল ও মেধাবী হওয়ার কারণে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হয়েই লেবার রাজনীতির সামনের কাতারে চলে আসেন। দায়িত্ব পান শ্যাডো ডিএফআইডি মিনিস্টার ও লেবার পার্টির সাউথ এশিয়াবিষয়ক মুখপাত্রের। কিছুদিন পর দপ্তর পরিবর্তন করে তাকে করা হয় শ্যাডো এডুকেশন মিনিস্টার। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাউস অব কমন্সে ‘ইরাকে দ্বিতীয় দফা বোমা হামলা বিলে’র পক্ষে সই না দিয়ে শ্যাডো মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন রুশনারা আলী। পরে তিনি লেবার পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে হাউস অব কমন্সের ১৩ সদস্যবিশিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ট্রেজারি সিলেক্ট কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এই কমিটি গ্রেট বৃটেনের অর্থ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি তদারকি করে থাকে। ১৯৭৫ সালের ১৪ই মার্চ সিলেটের বিশ্বনাথে জন্ম নেয়া রুশনারা মাত্র ৭ বছর বয়সে তার পরিবারের সঙ্গে বিলেতে আসেন এবং পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে বসবাস শুরু করেন। বিখ্যাত মালবারী গার্লস স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে টাওয়ার হ্যামলেটস কলেজে ভর্তি হন রুশনারা। এরপর বিশ্বখ্যাত ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতির উপর ডিগ্রি নেন তিনি। লেবার পার্টির রাজনীতিবিদ হাউস অব লর্ডসের সাবেক সদস্য মাইকেল ইয়াং-এর রিসার্চ এসিস্ট্যান্ট হিসেবে রুশনারা আলী তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি বেথনালগ্রীন ও বো আসনের সাবেক এমপি ওনা কিং-এর পার্লামেন্টারি এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মানবাধিকার ইস্যু নিয়ে ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসে ও ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত রিচার্স ফেলো হিসেবে ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক পলিসি রিচার্সে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন রুশনারা। হোম অফিসের কমিউনিটিজ বিভাগেও ২০০২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন তিনি।
২. টিউলিপ সিদ্দিক
লন্ডনের শ্বেতাঙ্গ-অশ্বেতাঙ্গ অধ্যুষিত হ্যাম্পট্যাড অ্যান্ড কিলবার্ন আসন থেকে লেবার পার্টির হয়ে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক। লেবারদলীয় এমপি ও সাবেক অভিনেত্রী গ্লেন্ডা জ্যাকসন বার্ধক্যজনিত কারণে অবসর নেয়ার ঘোষণা দিলে শফিক সিদ্দিক-শেখ রেহানা দম্পতির মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির প্রায় ৯শ’ সদস্যের সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর স্যালি গিমসন ও হ্যাকনি কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র সোফি লিন্ডেনকে পরাজিত করে মনোনয়ন লাভ করেন। টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের মেরটন কাউন্সিলের মিচাম এলাকায় ১৯৮২ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ, ব্রুনেই, ভারত, সিঙ্গাপুর, স্পেনে বাল্যকাল কাটিয়েছেন। পশ্চিম লন্ডন থেকে ১৯৮৮ সালে তিনি উত্তর লন্ডনে চলে আসেন এবং এ-লেভেল সম্পন্ন করেন। টিউলিপ ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডন থেকে ইংরেজি সাহিত্যের উপর আন্ডারগ্রাজুয়েট ডিগ্রি এবং কিংস কলেজ অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১১ সালে তিনি পলিটিক্স, পলিসি অ্যান্ড গর্ভমেন্টের উপর দ্বিতীয়বারের মতো মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
টিউলিপ সিদ্দিক ২০১০ সালের মে মাসে ক্যামডেন রিজেন্ট পার্ক ওয়ার্ডের প্রথম বাঙালি মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ফিলিপ গ্লাউড এসোসিয়েটস, সেভ দ্যা চিলড্রেন, বেথনালগ্রীন অ্যান্ড বো আসনের সাবেক লেবার এমপি ওনা কিং, টুটিং এলাকার লেবার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী সাদেক খান, লেইটন ওয়ানস্টেড এলাকার সাবেক লেবার এমপি হেরী কোহেনের সঙ্গে কাজ করেছেন। ক্যামডেন ও ইজলিংটন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের গভর্নর, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ইউকের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের লেবার লিডার এড মিলিব্যান্ডের ক্যাম্পেইন ও এমপি টিসা জোয়েলের পলিসি এডভাইজার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের সঙ্গেও কাজ করেছেন টিউলিপ।
৩. ড. রূপা হক
ড. রূপা হক লন্ডনের কিংস্টন ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার। পিএইচডি করেছেন কালচারাল স্টাডিজের উপর। ক্যামব্রিজ গ্র্যাজুয়েট ড. রূপা হক লেবার পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লন্ডনের ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসন থেকে। রূপার বাবা-মা ১৯৬০ সালে বৃটেনে আসেন। ১৯৭২ সালে লন্ডনের হেমারস্মিথে জন্ম নেয়া রূপা ১৯৯১ সালে লেবার পার্টির সদস্য হন। তিনি একাধারে লেখক, কলামিস্ট, মিউজিক ডিজে। বৃটেনের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক গার্ডিয়ান, সানডে অবজারভার পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি। ২০১০ সালে তিনি লন্ডনের ইলিং কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে তিনি লেবার পার্টির স্থানীয় সদস্যদের ভোটে পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন পান। রূপা হকের ছোট বোন কনি হক বিখ্যাত বিবিসি প্রোগ্রাম ব্লু পিটারের একজন জনপ্রিয় উপস্থাপিকা। তার আদি বাড়ি পাবনায়।
৪. মেরিনা আহমেদ
লন্ডনের বেকেনহাম আসনে লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মেয়ে ব্যারিস্টার মেরিনা আহমেদ। মাত্র ৬ মাস বয়সে বাবা-মা’র সঙ্গে বৃটেনে আসেন মেরিনা। ওয়েস্ট সাসেক্সের ক্রাউলিতে ছোট চার ভাইয়ের সঙ্গে বেড়ে উঠেন। ইউনিভার্সিটি অব সারে থেকে ইংরেজি এবং ইতিহাসে স্নাতক মেরিনা আহমেদ সিটি ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব বাথ থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিপ্লোমা করেন তিনি। মেরিনার স্বামী ডা. মো. ইমরুল কয়েস পূর্ব লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেল আলবিয়ন জিপি সার্জারিতে কাজ করছেন। দুই সন্তানের জননী মেরিনা আহমেদ দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কেবিনেট অফিসে কাজ করার পাশাপাশি ক্রাউন প্রসিকিউশন টিমেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। নিজ আসনে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে তিনি যুক্ত।
৫. ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া
বৃটেনের নর্থহ্যামটন শহরে বেড়ে ওঠা ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়া লন্ডনের ওয়েলউইন অ্যান্ড হার্টফিল্ড আসন থেকে লেবার দলীয় প্রার্থী। তিনি লড়বেন কনজারভেটিভ দলের চেয়ারম্যান ও মন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপের সঙ্গে। ১৯৭২ সালে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর গ্রামে জন্ম নেয়া ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল মিয়ার চেম্বার লন্ডনের বিখ্যাত চ্যান্সেরি লেইনে। তিনি ইউকে-বাংলাদেশ ক্যাটালিস্ট অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউকেবিসিসিআই)’র একজন পরিচালক।
৬. সুমন হক
স্কটল্যান্ডে জন্ম নেয়া সুমন হক স্কটল্যান্ডের এভারডিনশায়ারের বেনফ অ্যান্ড বুখান আসন থেকে লেবার দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। এভারডিন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সুমন প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী, যিনি স্কটল্যান্ডের আসন থেকে মনোনয়ন পেলেন। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে স্কটিশ লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সুমন হকের দেশের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে।
৭. আখলাকুল ইসলাম
লুটন শহরের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী আখলাকুল ইসলাম লুটনের রিগেইট অ্যান্ড বেনস্ট্যাড আসনে চারজন প্রতিযোগীকে পরাজিত করে লেবার দলের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তরুণ রাজনীতিবিদ আখলাকুল ইসলাম ১৯৬০ সালে পরিবারের সঙ্গে বৃটেনে আসেন। তিনি বৃটিশ রেডক্রস ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে তাদের বাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জে।
৮. এমরান হোসাইন
বৃটেনের নর্থ ইস্ট হ্যাম্পশায়ার আসন থেকে লেবার পার্টির প্রার্থী হয়েছেন এমরান হোসাইন। বৃটিশ আর্মির রিজার্ভ সদস্য ও ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর ন্যাশনাল ডেলিভারি অফিসার এমরান হোসেন প্রায় ১০ বছর থেকে লেবার পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। চিকিৎসা শাস্ত্র নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়াশুনা শেষে এখন রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়েও পড়াশুনা করছেন। এমরানের আদিনিবাস সিলেটের গোলাপগঞ্জে।
কনজারভেটিভ দলের এক প্রার্থী
৯. মিনা রহমান
কনজারভেটিভ দল থেকে লন্ডনের বার্কিং অ্যান্ড ডাগেনহাম আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সিলেটের ছাতকে জন্ম নেয়া মিনা রহমান। তিনি দলটির একমাত্র বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী। মাত্র ২১ দিন বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে বৃটেনে আসেন মিনা। বিখ্যাত মালবারী গার্লস স্কুলে শিক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেন তিনি। বর্তমানে পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস কমিউনিটি হাউজিং
কোম্পানির ম্যানেজারের দায়িত্বে আছেন। দুই কন্যা ও দুই পুত্র সন্তানের জননী মিনা রহমান বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।
১০. আশুক আহমদ এমবিই
লুটন সাউথ আসনে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হয়েছেন আশুক আহমদ এমবিই। লুটন শহরের বাসিন্দা আশুক আহমদ ১৯৭৬ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পদে কাজ করা আশুক আহমদ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আছেন। ২০০৯ সালে বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কর্তৃক সম্মানজনক ‘মেম্বার অব দ্যা অর্ডার অব দ্যা বৃটিশ অ্যাম্পায়ার’ (এমবিই) খেতাবে ভূষিত হন তিনি। আশুক আহমদের জন্ম সিলেটের বিয়ানীবাজারে।
১১. প্রিন্স সাদিক চৌধুরী
মাত্র দুই মাস বয়সে মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান প্রিন্স সাদিক চৌধুরী। এবার তিনি নর্থহ্যাম্পটন সাউথ আসনে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের হয়ে বৃটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে এমপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০০৭ সালে নর্থহ্যাম্পটনশায়ার কাউন্সিল নির্বাচনে প্রথম কোন বাংলাদেশী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭৩ সালে সিলেটে জন্ম নেয়া প্রিন্স সাদিক পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট প্রিন্স সাদিক ওয়েস্ট নর্থহ্যামটন শায়ার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের কমিটি মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রিন্স সাদিক চৌধুরীর বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে।
১২. মোহাম্মদ সুলতান
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় জন্ম মোহাম্মদ সুলতানের। তরুণ বয়সে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। স্থানীয় বেনগোর সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবারের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ওয়েলসের আরফন আসন থেকে লিবারেল ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী হয়েছেন। পেশায় তিনি একজন সফল রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী।
No comments