হরতাল নেই, আছে অস্বস্তি
ঢাকায়
হরতালের চিরাচরিত দৃশ্য গত দুই মাসে কখনোই ছিল না। এখন হরতালে যানজট যেন
স্বাভাবিক ঘটনা। ঢাকার বাইরেও হরতাল হচ্ছে না। তার পরও হরতালের ঘোষণা আছে।
তাই একটু অস্বস্তি আছে সর্বত্রই। বেশি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি শিক্ষাঙ্গনে।
বিএনপি-জামায়াতসহ ২০-দলীয় জোট গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ এবং ১৫ জানুয়ারি থেকে দফায় দফায় হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে। কখনো সরকারের পদত্যাগ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান, আবার কখনো জোটের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার-নির্যাতনের প্রতিবাদে শুক্র-শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই হরতাল ঘোষণা করা হচ্ছে।
চলতি দফায় গত রোববার সকাল ছয়টা থেকে ৭২ ঘণ্টার (কাল বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত) যে হরতাল ঘোষণা করা হয়, তা পঞ্চদশ দফা। এই দফারও ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের হরতাল কর্মসূচিতে দেশের কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষেরই সাড়া মেলেনি।
সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যক্তিগত—সব ধরনের অফিস নিয়মিত চলছে। সব অফিসে উপস্থিতি ও কাজকর্ম স্বাভাবিক আছে। উচ্চতম থেকে নিম্নতম পর্যায় পর্যন্ত সকল আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি, কাজকর্ম, বিভিন্ন বিষয়ে বিদেশি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সভা-বৈঠক সবই নিয়মিত ও স্বাভাবিকভাবে চলছে।
তবে সচিবালয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এটিকে বরং সচিবালয়ের কর্মপরিবেশের জন্য ভালো মনে করছেন। দর্শনার্থী কম থাকায় কাজে সময় বেশি দেওয়া যাচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি।
রাস্তায় সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক। ঢাকায় যাঁরা নিত্যযাত্রী, অপরিহার্য প্রয়োজনে যাঁদের প্রতিদিন ঘরের বাইরে বের হতে হয়, বাস-ট্যাক্সি, রিকশা-টেম্পোতে চেপে যাতায়াত করতে হয়, তাঁরা রাস্তায় তীব্র যানজটে পড়ছেন। হঠাৎ করে গরম পড়ায় জটের মধ্যে যানবাহনে অস্থির অনেককে বলতে শোনা যায়, ‘ছাতুর হরতাল। মোটামুটি একটু হরতাল হলেও তো এত যানজট হতো না। একটু আরামে কাজকর্ম সেরে বাসায় ফেরা যেত।’ যানবাহনের যেমন অভাব নেই, তেমনি যাত্রীসংখ্যায়ও কমতি নেই।
ঢাকার সঙ্গে দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলার নৌ ও রেল যোগাযোগ সব সময়ই প্রায় স্বাভাবিক ছিল। এখন সড়ক যোগাযোগও স্বাভাবিক হয়ে আসছে। দিনের বেলায় দূরপাল্লার বাস-ট্রাক চলাচল এখন প্রায় স্বাভাবিক। তবে রাতের যাত্রা নিয়ে এখনো কিছুটা শঙ্কা রয়েছে সবার মধ্যেই। যানবাহনের মালিকদের মতো যাত্রীরাও রাতে চলাচল এখনো সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে করতে পারছেন না। তাই এখনো রাতে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল কম। যাত্রীও সীমিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ এখনো রাতে ভ্রমণ করতে ভরসা পাচ্ছেন না। তবে ক্রমান্বয়ে রাতে যানবাহনের চলাচল ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে।
ব্যবসায়ী-দোকানদারেরা কিছুদিন আগেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটের এক দরজা খুলে আরেক দরজা বন্ধ রাখতেন। এখন তাঁরা সব দরজা খুলে বসছেন পসরা সাজিয়ে। পাইকারি ও খুচরা সব ক্ষেত্রে বেচাকেনাও জমে উঠছে। ঢাকার মৌলভীবাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেছেন, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকেও আজকাল অনেক ক্রেতা আসছেন। ক্রমেই তাঁদের সংখ্যা বাড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা কখনোই কমেনি। চাল-ডাল, তেল-লবণ, শাকসবজি, মাছ-মাংস প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহও কমেনি হরতাল-অবরোধের কারণে। তবে জামা-কাপড়, জুতা-ছাতা, মনোহারি ও প্রসাধন সামগ্রীসহ শৌখিন দ্রব্যাদির বেচাকেনায় বেশ খানিকটা খরা চলছিল। এখন আর তা নেই।
উত্তরার রাজলক্ষ্মী বিপণিবিতানের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা এখন বুঝে গেছি কখন কী ঘোষণা আসবে, কতক্ষণ ঘোষক বিশ্রাম নেবেন। আর আমাদের কী করতে হবে। আমরা ঘোষণা শুনব। কাজকর্মও করব। কাজ ছাড়া তো আমাদের চলবে না। তবে একটু সাবধানে থাকতে হবে। কারণ, মানুষের জীবনের দাম তো কমেই চলেছে।’
রাজধানীর যেসব স্কুলে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা যায়, সেই স্কুলগুলোতে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এসব স্কুলের ক্লাস ও পরীক্ষা দুই মাস ধরে শুক্র ও শনিবারকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। যেসব স্কুলে আশপাশের এলাকার শিক্ষার্থীরা যায়, সেগুলোতে আবার ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিতই হচ্ছে। এ অবস্থায় অভিভাবকেরা গৃহশিক্ষক ও কোচিং ক্লাসের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়েছেন।
রাজধানীর কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবগুলোই খোলা। তবে কোনো কোনোটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এখনো কিছুটা কম। কারণ, অনেক অভিভাবক শঙ্কায় সন্তানদের পাঠাচ্ছেন না। অবশ্য এ সংখ্যাও ক্রমে বাড়ছে। তার পরও চলমান হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে আছে শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষার্থীরা।
বিএনপি-জামায়াতসহ ২০-দলীয় জোট গত ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ এবং ১৫ জানুয়ারি থেকে দফায় দফায় হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে। কখনো সরকারের পদত্যাগ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান, আবার কখনো জোটের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার-নির্যাতনের প্রতিবাদে শুক্র-শনিবার ছাড়া প্রতিদিনই হরতাল ঘোষণা করা হচ্ছে।
চলতি দফায় গত রোববার সকাল ছয়টা থেকে ৭২ ঘণ্টার (কাল বুধবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত) যে হরতাল ঘোষণা করা হয়, তা পঞ্চদশ দফা। এই দফারও ৪৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের হরতাল কর্মসূচিতে দেশের কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষেরই সাড়া মেলেনি।
সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যক্তিগত—সব ধরনের অফিস নিয়মিত চলছে। সব অফিসে উপস্থিতি ও কাজকর্ম স্বাভাবিক আছে। উচ্চতম থেকে নিম্নতম পর্যায় পর্যন্ত সকল আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি, কাজকর্ম, বিভিন্ন বিষয়ে বিদেশি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সভা-বৈঠক সবই নিয়মিত ও স্বাভাবিকভাবে চলছে।
তবে সচিবালয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এটিকে বরং সচিবালয়ের কর্মপরিবেশের জন্য ভালো মনে করছেন। দর্শনার্থী কম থাকায় কাজে সময় বেশি দেওয়া যাচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি।
রাস্তায় সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক। ঢাকায় যাঁরা নিত্যযাত্রী, অপরিহার্য প্রয়োজনে যাঁদের প্রতিদিন ঘরের বাইরে বের হতে হয়, বাস-ট্যাক্সি, রিকশা-টেম্পোতে চেপে যাতায়াত করতে হয়, তাঁরা রাস্তায় তীব্র যানজটে পড়ছেন। হঠাৎ করে গরম পড়ায় জটের মধ্যে যানবাহনে অস্থির অনেককে বলতে শোনা যায়, ‘ছাতুর হরতাল। মোটামুটি একটু হরতাল হলেও তো এত যানজট হতো না। একটু আরামে কাজকর্ম সেরে বাসায় ফেরা যেত।’ যানবাহনের যেমন অভাব নেই, তেমনি যাত্রীসংখ্যায়ও কমতি নেই।
ঢাকার সঙ্গে দেশের অন্যান্য জেলা-উপজেলার নৌ ও রেল যোগাযোগ সব সময়ই প্রায় স্বাভাবিক ছিল। এখন সড়ক যোগাযোগও স্বাভাবিক হয়ে আসছে। দিনের বেলায় দূরপাল্লার বাস-ট্রাক চলাচল এখন প্রায় স্বাভাবিক। তবে রাতের যাত্রা নিয়ে এখনো কিছুটা শঙ্কা রয়েছে সবার মধ্যেই। যানবাহনের মালিকদের মতো যাত্রীরাও রাতে চলাচল এখনো সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে করতে পারছেন না। তাই এখনো রাতে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল কম। যাত্রীও সীমিত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ এখনো রাতে ভ্রমণ করতে ভরসা পাচ্ছেন না। তবে ক্রমান্বয়ে রাতে যানবাহনের চলাচল ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে।
ব্যবসায়ী-দোকানদারেরা কিছুদিন আগেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটের এক দরজা খুলে আরেক দরজা বন্ধ রাখতেন। এখন তাঁরা সব দরজা খুলে বসছেন পসরা সাজিয়ে। পাইকারি ও খুচরা সব ক্ষেত্রে বেচাকেনাও জমে উঠছে। ঢাকার মৌলভীবাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেছেন, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকেও আজকাল অনেক ক্রেতা আসছেন। ক্রমেই তাঁদের সংখ্যা বাড়ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়ে আসছে।
রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে ক্রেতার সংখ্যা কখনোই কমেনি। চাল-ডাল, তেল-লবণ, শাকসবজি, মাছ-মাংস প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহও কমেনি হরতাল-অবরোধের কারণে। তবে জামা-কাপড়, জুতা-ছাতা, মনোহারি ও প্রসাধন সামগ্রীসহ শৌখিন দ্রব্যাদির বেচাকেনায় বেশ খানিকটা খরা চলছিল। এখন আর তা নেই।
উত্তরার রাজলক্ষ্মী বিপণিবিতানের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা এখন বুঝে গেছি কখন কী ঘোষণা আসবে, কতক্ষণ ঘোষক বিশ্রাম নেবেন। আর আমাদের কী করতে হবে। আমরা ঘোষণা শুনব। কাজকর্মও করব। কাজ ছাড়া তো আমাদের চলবে না। তবে একটু সাবধানে থাকতে হবে। কারণ, মানুষের জীবনের দাম তো কমেই চলেছে।’
রাজধানীর যেসব স্কুলে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা যায়, সেই স্কুলগুলোতে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এসব স্কুলের ক্লাস ও পরীক্ষা দুই মাস ধরে শুক্র ও শনিবারকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। যেসব স্কুলে আশপাশের এলাকার শিক্ষার্থীরা যায়, সেগুলোতে আবার ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিতই হচ্ছে। এ অবস্থায় অভিভাবকেরা গৃহশিক্ষক ও কোচিং ক্লাসের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়িয়েছেন।
রাজধানীর কলেজ ও সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবগুলোই খোলা। তবে কোনো কোনোটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি এখনো কিছুটা কম। কারণ, অনেক অভিভাবক শঙ্কায় সন্তানদের পাঠাচ্ছেন না। অবশ্য এ সংখ্যাও ক্রমে বাড়ছে। তার পরও চলমান হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে আছে শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষার্থীরা।
No comments