‘গণতন্ত্র ও সন্ত্রাস সহাবস্থান করে না’
‘সহিংসতা-সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের
বিরুদ্ধে ও অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে
এক হও’ স্লোগানকে ধারণ করে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের জাতীয় কনভেনশন অনুষ্ঠিত
হয়েছে গতকাল। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এ
কনভেনশনের আলোচনা সভায় বক্তরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে
জঙ্গিবাদমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান
জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে
আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। অনুষ্ঠানে অবস্থানপত্র পাঠ করেন,
সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক ও কনভেনশনের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান।
তিনি বলেন, সংবিধান মোতাবেক রাষ্ট্রের মালিক দেশের নাগরিকরা হলেও বৃহত্তর
নাগরিক সমাজ এখন ভয়াবহ সংকটে। বর্তমানে দেশকে গড়ে তোলার পরিবর্তে ভেঙে
ফেলার প্রক্রিয়ায় ইন্ধন যোগানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে জঙ্গিবাদী নৃশংসতার শিকার
হচ্ছে মুক্তবুদ্ধির চর্চা তথা মানবতা। খলীকুজ্জামান বলেন, একাত্তরের পরাজিত
শক্তি মুক্তিযুদ্ধে যে নৃশংসতা দেখিয়েছে, আজ তারা এবং তাদের দোসররা
পেট্রলবোমা মেরে সেই একই ধরনের নৃশংসতা চালাচ্ছে। কিন্তু এরা সামাজিক শক্তি
নয়। এরা সমাজবিনাশী জঙ্গি অপশক্তি। তিনি বলেন, গণতন্ত্র ও সন্ত্রাস
সহাবস্থান করে না। তাই এই অপশক্তিকে দমন না করা পর্যন্ত দেশে শান্তি আসবে
না। শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পরাজিতদের
কৌশল হলো ঐক্য বিনষ্ট করে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করে রাখা। বহুমত গণতান্ত্রিক
সমাজের সবলতা। কিন্তু অনৈক্য গণতন্ত্রের বড় শত্রু। তাই মুক্তিযুদ্ধের
চেতনায় গণতন্ত্রের বিকাশে সকল রাজনৈতিক শক্তিকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় এগিয়ে আসতে হবে। অর্থনীতিবিদ ও কচিকাঁচার মেলার
সভাপতি খন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই
ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে। কিন্তু একাত্তরে
তারা সফল না হলেও পরবর্তীকালে তারা রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হয়েছে।
স্বাধীনতা বিরোধীরা ব্যবসা করে কোটিপতি হলেও কোন মুক্তিযোদ্ধা কোটিপতি হতে
পারেনি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার ছিল। আর এখন আছে নব্য রাজাকার। যে
জন্য আমরা ষড়যন্ত্র থেকে আজও মুক্তি পাইনি। রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে তাদের
লোকজন আছে। তাই আমাদের সাবধান থাকতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে এদের চিন্থিত করতে
হবে। এরা যেন ছদ্মবেশে আমাদের বিভ্রান্ত করতে না পারে। একাত্তরের
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংহতির
মাধ্যমে আমরা যদি দেশকে গড়ে তুলতে না পারি তাহলে তারা গণহত্যা চালিয়েই
যাবে। এই গণহত্যা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের ভাইস
চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী
বলেন, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্যই সন্ত্রাস, সহিংসতা,
পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের
বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর হলেই এরা ভয় পাবে। তাই আপিল বিভাগে
যুদ্ধাপরাধীদের যেসব মামলা রয়েছে তা দ্রুত শেষ করতে হবে। না হলে এরা কোন না
কোনভাবে ছাড়া পেয়ে আবারও দেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত
হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ভাইস
চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ বীর বিক্রম বলেন,
সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক সবকিছু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে গড়ে
তুলতে হবে। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সঙ্কটের সুযোগ নিয়ে জঙ্গিবাদী সাম্প্রদায়িক
গোষ্ঠী সমাজের প্রতিটি স্তরে ঢুকে গেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন
করে এদের প্রতিরোধ করতে হবে। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল’ অ্যান্ড
ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (আইসিএলডি) নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.)
আবদুর রশীদ বলেন, রাজনীতির মূল ভিত্তি এখন সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে।
ড. নিলুফার বানুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি একেএমএ হামিদ। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, প্রিপ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক এরোমা দত্ত, কর্মজীবী নারীর সভাপতি প্রতিমা পাল মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাহেদা আহমদ, প্রকৌশলি ড. এমএ কাশেম, নড়িয়া উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক মাজেদা শওকত আলী, কৃষি, শ্রমিক অধিকার মঞ্চের সমন্বয়ক রাহেলা রব্বানী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা। কনভেনশন শেষে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ৪২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সংগঠনের কমিটি হবে বলে নেতৃবৃন্দ জানান।
ড. নিলুফার বানুর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি একেএমএ হামিদ। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আশরাফ উদ্দিন চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুগ্ম মহাসচিব ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, প্রিপ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক এরোমা দত্ত, কর্মজীবী নারীর সভাপতি প্রতিমা পাল মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাহেদা আহমদ, প্রকৌশলি ড. এমএ কাশেম, নড়িয়া উন্নয়ন সমিতির নির্বাহী পরিচালক মাজেদা শওকত আলী, কৃষি, শ্রমিক অধিকার মঞ্চের সমন্বয়ক রাহেলা রব্বানী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা। কনভেনশন শেষে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ৪২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। পর্যায়ক্রমে সারা দেশে সংগঠনের কমিটি হবে বলে নেতৃবৃন্দ জানান।
No comments