সাংবাদিকদের নিয়ে পিকনিকে যাবেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী
প্রকাশ্যে
গালি দেয়ার চার মাস পর তৈরি হওয়া দূরত্ব ঘোচাতে সিলেটের সাংবাদিকদের সঙ্গে
মতবিনিময় করেছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী। এসময় তিনি সাংবাদিকদের
নিয়ে পিকনিকে যাওয়ার ঘোষণা দেন। মতবিনিময়কালে মন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে
পড়েন। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ করেছি। শরীরে এখনও বুলেটের চিহ্ন। নিজেও
সাংবাদিকতা করেছি। এ কারণে অনেক কিছুই বলে ফেলি। আগামীতে আমরা এক সঙ্গে
থাকবো। সকল ভুল বোঝাবুঝি দূর করে আমাদের সকলকে এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।’
গত ৯ই আগস্ট সিলেটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ‘খবিস’ বলে গালি দিয়েছিলেন
মন্ত্রী। এরপর থেকে সিলেটের সাংবাদিকদের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।
সাংবাদিকরা মন্ত্রীর এরকম বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে আন্দোলনে নামেন।
কেউ কেউ তার সংবাদ প্রচার থেকে বিরত ছিলেন। মন্ত্রীর ঘনিষ্টজনরা
জানিয়েছেন, বিষয়টি অনুধাবন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির অবসান
ঘটানোর তাগিদ দেন মন্ত্রী। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে উঠেনি। অবশেষে সিলেটের
নান্দনিক শহীদ মিনারের উদ্বোধনকে সামনে রেখে এ বিষয়টি অবসানের উদ্যোগ নেন
সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের
সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী। তাদের পরামর্শে আজ দ্বিধাবিভক্ত
সাংবাদিক সমাজের দুই অংশের সঙ্গে পৃথক পৃথক মত বিনিময় করেন সমাজকল্যাণ
মন্ত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় প্রথমে তিনি সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সদস্যের
সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় মন্ত্রী বলেন, আর কোন ভুল বোঝাবুঝি নয়। আমরা
সবাই এক সঙ্গে থাকবো। মন্ত্রী বলেন, ‘সিলেটেই অভুক্ত থেকে যুদ্ধ করেছি।
দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি। অথচ রানা প্লাজার অপ প্রচারের
কারণে আমাদের জিএসপি চলে গেছে। দেশের ক্ষতি হয়- এরকম সাংবাদিকতা মেনে নেয়া
কষ্ট হয়। এতে মনে কষ্ট পাই। যে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি সে দেশের কোন ক্ষতি
হলে মনে আঘাত পাই। তিনি দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সাংবাদিকদের সহায়তা কামনা
করেন। এসময় তিনি বলেন, সিলেটের সাংবাদিকদের নিয়ে এই ডিসেম্বরে আমি পিকনিক
করবো। আপনারা মৌলভীবাজারে আসবেন। এক সঙ্গে গোটা দিন কাটাবো। অনুষ্ঠানে
সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, প্রেসক্লাব ফাউন্ডেশনের
সভাপতি আল আজাদ, সিনিয়র সাংবাদিক সালাম মশরুর ও তাপশ দাস পুরকায়স্থ বক্তব্য
রাখেন। পরে রাত পৌনে ৯ টায় মন্ত্রী সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের
সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সিলেট প্রেসক্লাবেও মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
মন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানেও আগামীর বাংলাদেশ গড়তে সকলের সহায়তা কামনা করেন।
বলেন, যুদ্ধ করেছি দেশের জন্য। এই দেশকে এগিয়ে নিতে বৃদ্ধ বয়সে কাজ করছি।
এখন আপনারা কাজ করুন, দেশ গড়–ন। অনুষ্ঠানে সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল
সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত
ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানেও মন্ত্রী সাংবাদিকদের মৌলভীবাজারে তার বাড়িতে যাওয়ার
আমন্ত্রণ জানান।
No comments