ভেঙে যাচ্ছে হেফাজত by আহমেদ জামাল
নেতৃত্বের
টানাপড়েন, আমীরপুত্র আনাসের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টাসহ নানা কারণে
ভেঙে যাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম। ইতিমধ্যে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন
নীতিনির্ধারকরা। দেড় বছর আগে ১৩ দফা আন্দোলনে অস্বাভাবিক উত্থান হয় এ
সংগঠনের। বছর ঘুরে আসতেই নুয়ে পড়ে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব। এ নিয়ে তীব্র
প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সংগঠনের সর্বস্তরে- যা আলোচিত সংগঠনটির কেবল ভাঙন
ত্বরান্বিত করছে। এরই মধ্যে আলোচিত অপর এক নেতার নেতৃত্বে সংগঠনটি বিভক্ত
হয়ে যাচ্ছে- এমন বক্তব্য হেফাজতের অভ্যন্তরে ঘুরপাক খাচ্ছে। সংগঠনের
দায়িত্বশীল সূত্রে বিষয়টি স্বীকার করে বলা হয়, পিতার শারীরিক দুর্বলতার
অজুহাতে সংগঠনের কর্তৃত্ব কুক্ষিগত করতে চান আমীর-পুত্র আনাস। এ নিয়ে
সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে চলছে পিতাপুত্রের টানাপড়েন। সম্প্রতি পদচ্যুত মন্ত্রী
আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর ইস্যুতে এ সঙ্কট আরও প্রকট হয়। এ ইস্যুতে হেফাজতের
রহস্যময় আচরণে ক্ষুব্ধ হয় সর্বস্তরের নেতাকর্মী। ব্যাপক সমালোনার মুখেও
নীরবতা ভাঙেনি তাদের। এ পর্যায়ে নেতৃত্বের পরিবর্তন চাইছেন সংগঠনের বিভিন্ন
সারির নেতাকর্মীরা। মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে হেফাজতকে
গতিশীল করতে চান অনেকেই। এ নিয়ে হেফাজতের বৃহৎ একটি অংশ মাঠে নেমেছে। ওদিকে
একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে হাটহাজারীর ঐতিহাসিক দারুল উলুম মাদরাসায়। এ
প্রতিষ্ঠানের তহবিলসহ সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন আনাস। আহমদ শফীর অবর্তমানে
ওই মাদরাসার মহাপরিচালকের দায়িত্বটিও পেতে মরিয়া তিনি- এমন তথ্য
সংশ্লিষ্টদের। এ ব্যাপারে হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা
মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, আনাস দারুল উলুম মাদরাসার দায়িত্ব নিতে চান বলে
শুনেছি, তবে হেফাজতের আমীর হতে চান কিনা আমার জানা নেই। অবশ্য তিনি চাইলেই এ
সংগঠনের আমীর হতে পারবেন না। কারণ, সেই দক্ষতা গ্রহণযোগ্যতা এখনও হয়নি
তার। হেফাজতের নিষ্ক্রিয়তার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এখন দেশে
অস্ত্রতান্ত্রিক রাজনীতি চলছে। আমাদের অস্ত্র নেই। অস্ত্রের ভাষায় আমরা কথা
বলতে পারি না। তবে শাপলা ট্র্যাজেডির পর সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে আর কোন
বৈঠক না হওয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বেশ কয়েক জন হেফাজত নেতা মনে করেন, গত বছর ২৭শে ডিসেম্বর উচ্চপদস্থ এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর থেকেই হেফাজত আমীরের আচরণে পরিবর্তন শুরু হয়। সেই থেকে ১৩ দফা দাবি নিয়ে কোন বক্তৃতা-বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি তাকে। তারা মনে করেন, আন্দোলন থামিয়ে দেয়ার শর্তে আমীর পুত্রের ক্ষমতাসীন মহলের দিক থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ এবং আমীরের তহবিল থেকে হাতিয়ে নেয়া হেফাজতের কোটি কোটি টাকা ও সন্দেহজনক সম্পদ সম্পর্কে সরকারি তদন্তের ভয়ে কেন্দ্রীয় কোন নেতাকেই সরাসরি হুজুরের সঙ্গে কথা বলতে দেন না আনাস। লালদীঘির ময়দানে শানে রেসালাত সম্মেলনের শেষ দিন মঞ্চে হেফাজত বিরোধী হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন আলেমের উপস্থিতিও অনেক রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এজন্য সংঠনের ভেতরেই অনেক কানাঘুষা চলেছে। অনেকের মতে বার্ধক্যের কারণে হেফাজত আমীর সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা অক্ষম হয়ে পুত্রের প্রতি অত্যধিক স্নেহ ও নির্ভরশীল হয়ে পড়ার সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে অর্থের পাহাড় গড়েছেন আনাস। সূত্র জানায়, ৫ই মে শাপলা অপারেশনের কয়েক দিন পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে হেফাজত আমীরের কথা হয়। এ সময় আল্লামা শফী মন্ত্রীকে বলেছেন, দয়া করে আমি এবং আমার ছেলেকে গ্রেপ্তার করবেন না। উত্তরে মন্ত্রী বলেছেন, আপনার কথা আমার মনে থাকবে। কিন্তু আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে যে ২১ জন লোক মারা গেছে, তাদের বিষয়টাও তো আমাদের বিবেচনা করতে হবে। ঢাকা মহানগরী ও হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতার মতে, ১৩ দফা আন্দোলনের পক্ষ ও বিপক্ষ বিভিন্ন সূত্র থেকে আর্থিক সুবিধার ধারা ঠিক রাখার জন্যই ৫ই মের শাপলা চত্বরের ট্র্যাজেডির পর ঘন ঘন কর্মসূচি দেয়া ও প্রত্যাহারের খেলা চালু রাখা হয়েছিল। ঢাকা মহানগরীর এক হেফাজত নেতা বলেন, গত বছরের ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকা মহাসমাবেশ কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর জরুরি আলোচনার জন্য মহানগরীর প্রায় ৩০ নেতা আমীরের সঙ্গে আলোচনার জন্য গেলে তখন আনাস তাদের সঙ্গে চরম দুর্বব্যহার করেন। সারাদিন তাদের অভুক্ত রেখে আমীরের সঙ্গে কোন সাক্ষাৎ করতে দেননি। সর্বশেষ আছরের নামাজের পর সাংগঠনিক কোন কথা ছাড়া শুধু সালাম বিনিময় ও দোয়া নেয়ার শর্তে ৫ মিনিটের জন্য সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়।
তখন থেকে বেশির ভাগ নেতাই হাটহাজারী মাদরাসামুখী হন না। এমনকি, সংগঠনটির সিনিয়র নায়েবে আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ২৩শে মে’র ব্যর্থ শূরা বৈঠক ছাড়া আহমদ শফীর সঙ্গে আর কোন বৈঠকে শরিক হননি। বিষয়টি স্বীকার করে মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, অনেক দিন হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের কোন বৈঠক হচ্ছে না। আমরাও যাচ্ছি না। তবে এরই মধ্যে যে কয়টা বৈঠক হয়েছে, তাতে আমীরপুত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন এবং আর্থিক অনিয়মে জড়িত বিতর্কিত কয়েকজন ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কোন নেতাকেই দেখা যায়নি। বিশেষ করে ২৩শে মে শূরা বৈঠক চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই কার্যত হেফাজত আমীর এক ঘরে হয়ে পড়েছেন। এতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোন অঞ্চলের সক্রিয় নেতাদের কেউই এখন কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী হন না। এর মধ্যে পটিয়া মাদরাসা, দারুল মাআরিফ মাদরাসা, ষোলশহর মাদরাসা, বাবুনগর মাদরাসা, মেখল মাদরাসা, জিরি মাদরাসাসহ চট্টগ্রামের বড় বড় কওমি মাদরাসাসমূহের পরিচালকরা অনেকটাই তাকে এড়িয়ে চলেন। এসব মাদরাসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের অনেকেই হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাসমূহের প্রাণকেন্দ্র হাটহাজারী মাদরাসা বর্তমানে তার গৌরবময় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আনাসের প্ররোচনায় হাটহাজারী মাদরাসার অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষককে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর যে সব প্রভাবশালী শিক্ষক মারা গেছেন, সে সব শূন্যপদে গুরুত্বপূর্ণ কাউকে নিয়োগ না দিয়ে নিম্নস্তরের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ক্ষমতা সুসংহত করে যাচ্ছেন আনাস। সংশ্লিষ্টদের মতে, মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর মতো দেশবরেণ্য আলেমকে শিক্ষকতা ছাড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোন পদে রাখা হয়নি। এ নিয়ে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও শুভাকাঙক্ষীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এবার হজ করে আসা ঢাকার এক হেফাজত নেতা জানান, শাপলা চত্বরের ট্র্যাজেডির পর ২০১৩ সালের জুলাইয়ে আহমদ শফিপুত্র আনাস, পিএস শফিকে নিয়ে সৌদি আরব সফরকালে সেখানে তাকে এক নজর দেখার জন্য এবং তার প্রোগ্রামে শরিক হওয়ার জন্য প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে এবার হজের সফরে মাসজুড়ে আহমদ শফি অনেকটা নিঃসঙ্গ সময় কাটিয়েছেন। আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে প্রবাসীদের কানাঘুষা ও অসন্তোষ লক্ষ্য করে আমীরপুত্র আনাস চলাফেরাও খুব সীমিত রেখেছিলেন সৌদি আরবে। হেফাজতের এক নেতা জানান, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তারের দাবি এবং ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচি দেয় হেফাজত। কিন্তু তার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর শোনার পর তড়িঘড়ি বিক্ষোভ স্থগিত ও হরতাল প্রত্যাহারে অনেকেই বিস্মিত হন। নেতাদের অনেকেই জানান, ধর্ম অবমাননার আইন পাশের গুরুত্বপূর্ণ দাবি অপূরণ এবং লতিফকে গ্রেপ্তারের নাটকের সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করায় কর্মীরা চরম হতাশ হয়ে পড়েন। এমনকি কোন কোন মিডিয়ায় সরকারকে আমীরের ধন্যবাদ জানানোর খবরও প্রকাশিত হয়।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বেশ কয়েক জন হেফাজত নেতা মনে করেন, গত বছর ২৭শে ডিসেম্বর উচ্চপদস্থ এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর থেকেই হেফাজত আমীরের আচরণে পরিবর্তন শুরু হয়। সেই থেকে ১৩ দফা দাবি নিয়ে কোন বক্তৃতা-বিবৃতি দিতে দেখা যায়নি তাকে। তারা মনে করেন, আন্দোলন থামিয়ে দেয়ার শর্তে আমীর পুত্রের ক্ষমতাসীন মহলের দিক থেকে মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ এবং আমীরের তহবিল থেকে হাতিয়ে নেয়া হেফাজতের কোটি কোটি টাকা ও সন্দেহজনক সম্পদ সম্পর্কে সরকারি তদন্তের ভয়ে কেন্দ্রীয় কোন নেতাকেই সরাসরি হুজুরের সঙ্গে কথা বলতে দেন না আনাস। লালদীঘির ময়দানে শানে রেসালাত সম্মেলনের শেষ দিন মঞ্চে হেফাজত বিরোধী হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজন আলেমের উপস্থিতিও অনেক রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এজন্য সংঠনের ভেতরেই অনেক কানাঘুষা চলেছে। অনেকের মতে বার্ধক্যের কারণে হেফাজত আমীর সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা অক্ষম হয়ে পুত্রের প্রতি অত্যধিক স্নেহ ও নির্ভরশীল হয়ে পড়ার সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে অর্থের পাহাড় গড়েছেন আনাস। সূত্র জানায়, ৫ই মে শাপলা অপারেশনের কয়েক দিন পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে হেফাজত আমীরের কথা হয়। এ সময় আল্লামা শফী মন্ত্রীকে বলেছেন, দয়া করে আমি এবং আমার ছেলেকে গ্রেপ্তার করবেন না। উত্তরে মন্ত্রী বলেছেন, আপনার কথা আমার মনে থাকবে। কিন্তু আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে যে ২১ জন লোক মারা গেছে, তাদের বিষয়টাও তো আমাদের বিবেচনা করতে হবে। ঢাকা মহানগরী ও হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটির অনেক নেতার মতে, ১৩ দফা আন্দোলনের পক্ষ ও বিপক্ষ বিভিন্ন সূত্র থেকে আর্থিক সুবিধার ধারা ঠিক রাখার জন্যই ৫ই মের শাপলা চত্বরের ট্র্যাজেডির পর ঘন ঘন কর্মসূচি দেয়া ও প্রত্যাহারের খেলা চালু রাখা হয়েছিল। ঢাকা মহানগরীর এক হেফাজত নেতা বলেন, গত বছরের ২৪শে ডিসেম্বর ঢাকা মহাসমাবেশ কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর জরুরি আলোচনার জন্য মহানগরীর প্রায় ৩০ নেতা আমীরের সঙ্গে আলোচনার জন্য গেলে তখন আনাস তাদের সঙ্গে চরম দুর্বব্যহার করেন। সারাদিন তাদের অভুক্ত রেখে আমীরের সঙ্গে কোন সাক্ষাৎ করতে দেননি। সর্বশেষ আছরের নামাজের পর সাংগঠনিক কোন কথা ছাড়া শুধু সালাম বিনিময় ও দোয়া নেয়ার শর্তে ৫ মিনিটের জন্য সাক্ষাতের সুযোগ দেয়া হয়।
তখন থেকে বেশির ভাগ নেতাই হাটহাজারী মাদরাসামুখী হন না। এমনকি, সংগঠনটির সিনিয়র নায়েবে আমীর মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী ২৩শে মে’র ব্যর্থ শূরা বৈঠক ছাড়া আহমদ শফীর সঙ্গে আর কোন বৈঠকে শরিক হননি। বিষয়টি স্বীকার করে মহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, অনেক দিন হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের কোন বৈঠক হচ্ছে না। আমরাও যাচ্ছি না। তবে এরই মধ্যে যে কয়টা বৈঠক হয়েছে, তাতে আমীরপুত্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন এবং আর্থিক অনিয়মে জড়িত বিতর্কিত কয়েকজন ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ কোন নেতাকেই দেখা যায়নি। বিশেষ করে ২৩শে মে শূরা বৈঠক চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই কার্যত হেফাজত আমীর এক ঘরে হয়ে পড়েছেন। এতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কোন অঞ্চলের সক্রিয় নেতাদের কেউই এখন কেন্দ্রীয় কার্যালয়মুখী হন না। এর মধ্যে পটিয়া মাদরাসা, দারুল মাআরিফ মাদরাসা, ষোলশহর মাদরাসা, বাবুনগর মাদরাসা, মেখল মাদরাসা, জিরি মাদরাসাসহ চট্টগ্রামের বড় বড় কওমি মাদরাসাসমূহের পরিচালকরা অনেকটাই তাকে এড়িয়ে চলেন। এসব মাদরাসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের অনেকেই হতাশা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাসমূহের প্রাণকেন্দ্র হাটহাজারী মাদরাসা বর্তমানে তার গৌরবময় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আনাসের প্ররোচনায় হাটহাজারী মাদরাসার অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষককে অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর যে সব প্রভাবশালী শিক্ষক মারা গেছেন, সে সব শূন্যপদে গুরুত্বপূর্ণ কাউকে নিয়োগ না দিয়ে নিম্নস্তরের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ক্ষমতা সুসংহত করে যাচ্ছেন আনাস। সংশ্লিষ্টদের মতে, মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীর মতো দেশবরেণ্য আলেমকে শিক্ষকতা ছাড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কোন পদে রাখা হয়নি। এ নিয়ে হাটহাজারী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও শুভাকাঙক্ষীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এবার হজ করে আসা ঢাকার এক হেফাজত নেতা জানান, শাপলা চত্বরের ট্র্যাজেডির পর ২০১৩ সালের জুলাইয়ে আহমদ শফিপুত্র আনাস, পিএস শফিকে নিয়ে সৌদি আরব সফরকালে সেখানে তাকে এক নজর দেখার জন্য এবং তার প্রোগ্রামে শরিক হওয়ার জন্য প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে এবার হজের সফরে মাসজুড়ে আহমদ শফি অনেকটা নিঃসঙ্গ সময় কাটিয়েছেন। আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে প্রবাসীদের কানাঘুষা ও অসন্তোষ লক্ষ্য করে আমীরপুত্র আনাস চলাফেরাও খুব সীমিত রেখেছিলেন সৌদি আরবে। হেফাজতের এক নেতা জানান, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তারের দাবি এবং ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ ও হরতাল কর্মসূচি দেয় হেফাজত। কিন্তু তার গ্রেপ্তার হওয়ার খবর শোনার পর তড়িঘড়ি বিক্ষোভ স্থগিত ও হরতাল প্রত্যাহারে অনেকেই বিস্মিত হন। নেতাদের অনেকেই জানান, ধর্ম অবমাননার আইন পাশের গুরুত্বপূর্ণ দাবি অপূরণ এবং লতিফকে গ্রেপ্তারের নাটকের সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করায় কর্মীরা চরম হতাশ হয়ে পড়েন। এমনকি কোন কোন মিডিয়ায় সরকারকে আমীরের ধন্যবাদ জানানোর খবরও প্রকাশিত হয়।
No comments